বৈদিক বর্ষচক্র
বৈদিক বর্ষচক্র মূলত চন্দ্র এবং সূর্যের গতিবিধির উপর নির্ভরশীল। এটি সৌর বছর (সূর্যের গতি) এবং চান্দ্র মাস (চাঁদের কলা) উভয়কেই বিবেচনা করে। গ্রীগরীয় ক্যালেন্ডার যেখানে কেবল সূর্যের গতিকে অনুসরণ করে, সেখানে বৈদিক পদ্ধতি চন্দ্রের পর্যায়গুলিকেও গুরুত্ব দেয়।
এর প্রধান উপাদানগুলো হলো:
* মাস (Māsa): সাধারণত ১২টি চান্দ্র মাস নিয়ে এক বছর হয়। প্রতিটি চান্দ্র মাস প্রায় ২৯.৫ দিনের হয়।
* পক্ষ (Paksha): প্রতিটি মাসকে দুটি পক্ষে ভাগ করা হয় – শুক্ল পক্ষ (শুক্ল - চাঁদের উজ্জ্বল অর্ধাংশ, অমাবস্যা থেকে পূর্ণিমা পর্যন্ত) এবং কৃষ্ণ পক্ষ (কৃষ্ণ - চাঁদের অন্ধকার অর্ধাংশ, পূর্ণিমা থেকে অমাবস্যা পর্যন্ত)। প্রতিটি পক্ষে ১৫টি তিথি থাকে।
* তিথি (Tithi): এটি একটি চান্দ্র দিবস, যা চাঁদের কলা পরিবর্তনের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়। প্রতিটি তিথির দৈর্ঘ্য পরিবর্তিত হয় (২১.৫ থেকে ২৬ ঘণ্টা)।
* নক্ষত্র (Nakshatra): চাঁদ যে ২৭টি নক্ষত্রপুঞ্জের মধ্য দিয়ে পরিক্রমণ করে, তার উপর ভিত্তি করে নক্ষত্র নির্ধারিত হয়। প্রতিটি নক্ষত্র প্রায় ১ দিনের সমান।
* বার (Vāra): এটি আধুনিক সপ্তাহের দিনের অনুরূপ (যেমন - রবিবার, সোমবার ইত্যাদি), যা গ্রহের নামে নামকরণ করা হয়েছে।
* ঋতু (Ritu): বৈদিক বর্ষচক্রে ছয়টি ঋতু রয়েছে, প্রতিটি ঋতু দুটি মাস নিয়ে গঠিত।
অয়ন (Ayana) ও বছর (Varsha)
* অয়ন: দুটি অয়ন নিয়ে একটি বছর গঠিত। উত্তরায়ণ (মকর সংক্রান্তি থেকে কর্কট সংক্রান্তি) এবং দক্ষিণায়ণ (কর্কট সংক্রান্তি থেকে মকর সংক্রান্তি)।
* বছর: একটি সৌর বছর প্রায় ৩৬৫.২৫ দিনের হয়। চান্দ্র মাস এবং সৌর বছরের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখার জন্য প্রতি প্রায় ৩ বছর অন্তর একটি অধিক মাস (মল মাস বা পুরুষোত্তম মাস) যুক্ত করা হয়। এই অতিরিক্ত মাসটি চান্দ্র ক্যালেন্ডারকে সৌর ক্যালেন্ডারের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ রাখে।