100টি শুভ কর্মের গণনা: ধর্ম এবং নৈতিকতার কর্ম
জানেন কি
কাশীর মণিকর্ণিকা ঘাটে চিতা যখন নিভে যায়, তখন যে ব্যক্তি মুখাগ্নি দেন, তিনি চিতাভস্মের ওপর ৯৪ লেখেন কেন ?
এই বিষয়টি সকলের জানার কথা নয়। খাঁটি বনারসী বা তার আশেপাশে বসবাসকারী লোকেরাই এই প্রথাটি সম্পর্কে অবহিত। বাইরে থেকে আসা সৎকারকারীরা এই বিষয়টি জানেন না।
জেনে রাখুন -
জীবনের শতপথ (১০০টি পথ) রয়েছে। যে ব্যক্তি ১০০টি শুভ কর্ম করেন, তিনি মৃত্যুর পর তারই ভিত্তিতে তাঁর পরবর্তী জীবন শুভ বা অশুভ রূপে লাভ করেন। এই কর্মগুলির মধ্যে ৯৪টি কর্ম মানুষের অধীনে, যা সে সম্পন্ন করতে সক্ষম। কিন্তু ৬টি কর্মের ফলাফল ব্রহ্মা জির (বিধাতার) অধীন। ক্ষতি-লাভ, জীবন-মরণ, যশ-অপযশ — এই ৬টি কর্ম বিধির নিয়ন্ত্রণে থাকে।
অতএব, আজ চিতার সঙ্গে তোমার ৯৪টি কর্ম ভস্ম হয়ে গেল। বাকি ৬টি কর্ম এবার তোমার জন্য নতুন জীবন সৃষ্টি করবে। তাই ১০০ - ৬ = ৯৪ লেখা হয়।
গীতায়ও বলা হয়েছে যে মৃত্যুর পর মন তার সঙ্গে ৫টি জ্ঞানেন্দ্রিয়কে নিয়ে যায়। এই সংখ্যাটি হলো ৬ (মন এবং পাঁচটি জ্ঞানেন্দ্রিয়)।
পরবর্তী জন্ম কোন দেশে, কোথায় এবং কাদের মাঝে হবে, তা প্রকৃতি ছাড়া অন্য কারও জানা নেই। অতএব, ৯৪টি কর্ম ভস্ম হলো এবং ৬টি সঙ্গে যাচ্ছে।
বিদায় যাত্রী। তোমার ৬টি কর্ম তোমার সঙ্গে রইল।
আপনার জন্য এই ১০০টি শুভ কর্মের বিস্তারিত বিবরণ নিচে দেওয়া হলো, যা জীবনকে ধর্ম এবং সৎকর্মের দিকে চালিত করে এবং এই তালিকা আপনাকে সৎকর্ম করার অনুপ্রেরণা দেবে...
১০০টি শুভ কর্মের গণনা: ধর্ম এবং নৈতিকতার কর্ম
১. সত্য বলা
২. অহিংসার পালন
৩. চুরি না করা
৪. লোভ থেকে বাঁচা
৫. ক্রোধের ওপর নিয়ন্ত্রণ
৬. ক্ষমা করা
৭. দয়া ভাব রাখা
৮. অন্যের সাহায্য করা
৯. দান করা (অন্ন, বস্ত্র, ধন)
১০. গুরুর সেবা
১১. মাতা-পিতার সম্মান
১২. অতিথির সৎকার
১৩. ধর্মগ্রন্থের অধ্যয়ন
১৪. বেদ ও শাস্ত্র পাঠ
১৫. তীর্থযাত্রা করা
১৬. যজ্ঞ ও হোম করা
১৭. মন্দিরে পূজা-অর্চনা
১৮. পবিত্র নদীতে স্নান
১৯. সংযম ও ব্রহ্মচর্যের পালন
২০. নিয়মিত ধ্যান ও যোগ
সামাজিক ও পারিবারিক কর্ম
২১. পরিবারের ভরণ-পোষণ
২২. সন্তানদের ভালো শিক্ষা দেওয়া
২৩. দরিদ্রদের খাবার দেওয়া
২৪. রোগীদের সেবা
২৫. অনাথদের সাহায্য
২৬. বৃদ্ধদের সম্মান
২৭. সমাজে শান্তি স্থাপন
২৮. মিথ্যা তর্ক-বিতর্ক থেকে বাঁচা
২৯. অন্যের নিন্দা না করা
৩০. সত্য ও ন্যায়ের সমর্থন
৩১. পরোপকার করা
৩২. সামাজিক কাজে অংশ নেওয়া
৩৩. পরিবেশের রক্ষা
৩৪. বৃক্ষরোপণ করা
৩৫. জল সংরক্ষণ
৩৬. পশু-পাখির রক্ষা
৩৭. সামাজিক ঐক্য বৃদ্ধি করা
৩৮. অন্যদের অনুপ্রাণিত করা
৩৯. সমাজের দুর্বল অংশের উন্নয়ন
৪০. ধর্মের প্রচারে সহযোগিতা
আধ্যাত্মিক ও ব্যক্তিগত কর্ম
৪১. নিয়মিত জপ করা
৪২. ঈশ্বরের স্মরণ
৪৩. প্রাণায়াম করা
৪৪. আত্মচিন্তন
৪৫. মনের শুদ্ধি
৪৬. ইন্দ্রিয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ
৪৭. লালসা থেকে মুক্তি
৪৮. মোহ-মায়া থেকে দূরত্ব
৪৯. সাধারণ জীবন যাপন করা
৫০. স্বাধ্যায় (আত্ম-অধ্যয়ন)
৫১. সাধু-সন্তদের সঙ্গ
৫২. সৎসঙ্গে অংশ নেওয়া
৫৩. ভক্তিতে মগ্ন হওয়া
৫৪. কর্মফল ঈশ্বরকে সমর্পণ করা
৫৫. তৃষ্ণা ত্যাগ
৫৬. ঈর্ষা থেকে বাঁচা
৫৭. শান্তির বিস্তার
৫৮. আত্মবিশ্বাস বজায় রাখা
৫৯. অন্যের প্রতি উদারতা
৬০. ইতিবাচক চিন্তা রাখা
সেবা ও দানের কর্ম
৬১. ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান
৬২. বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দান
৬৩. গৃহহীনকে আশ্রয় দান
৬৪. শিক্ষার জন্য দান
৬৫. চিকিৎসার জন্য সাহায্য
৬৬. ধর্মীয় স্থান নির্মাণ
৬৭. গো-সেবা
৬৮. পশুকে খাদ্য দেওয়া
৬৯. জলাশয়ের পরিষ্করণ
৭০. রাস্তা নির্মাণ
৭১. পান্থশালা নির্মাণ
৭২. স্কুলকে সাহায্য
৭৩. পাঠাগার স্থাপন
৭৪. ধর্মীয় উৎসবে সহযোগিতা
৭৫. দরিদ্রদের জন্য বিনামূল্যে ভোজন
৭৬. বস্ত্র দান
৭৭. ঔষধ দান
৭৮. বিদ্যা দান
৭৯. কন্যা দান
৮০. ভূমি দান
নৈতিক ও মানবিক কর্ম
৮১. বিশ্বাসঘাতকতা না করা
৮২. প্রতিজ্ঞা পালন
৮৩. কর্তব্যনিষ্ঠা
৮৪. সময়ানুবর্তিতা
৮৫. ধৈর্য রাখা
৮৬. অন্যের অনুভূতির প্রতি সম্মান
৮৭. সত্যের জন্য সংগ্রাম
৮৮. অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া
৮৯. দুঃখীদের অশ্রু মোছা
৯০. শিশুদের নৈতিক শিক্ষা
৯১. প্রকৃতির প্রতি কৃতজ্ঞতা
৯২. অন্যদের উৎসাহ প্রদান
৯৩. মন, বাক্য, কর্মে শুদ্ধতা
৯৪. জীবনে ভারসাম্য বজায় রাখা
****বিধির অধীন ৬ কর্ম******
৯৫. ক্ষতি (हानि)
৯৬. লাভ (लाभ)
৯৭. জীবন (जीवन)
৯৮. মরণ (मरण)
৯৯. যশ (यश)
১০০. অপযশ (अपयश)