পরাপূজায় আদি শংকরাচার্য মূর্তি পূজার বিরোধীতায় লিখেছেন-
অখণ্ডে সচ্চিদানন্দে নির্বিকল্পৈকরূপিণি ।
স্থিতেঽদ্বিতীয়ভাবেঽস্মিন্ কথং পূজা বিধীয়তে ॥ ১॥
যখন দ্বিতীয় কিছুই নাই, সৰ্ব্ব সঙ্কল্প রহিত সচ্চিদানন্দ স্বরূপ আনন্দে যখন স্থিতি হয় তখন বিধি পূর্বক পূজা কিরূপে হইবে ?
পূর্ণস্যাবাহনং কুত্র সর্বাধারস্য চাসনম্ ।
স্বচ্ছস্য পাদ্যমর্ঘ্যং তু শুদ্ধস্যাচমনং কুতঃ ॥ ২॥
পুর্ণের আবাহন কোথায় ? সকল বস্তুর আধার যিনি তার আবার আসন কি ? যিনি নিতান্ত নিৰ্ম্মল তাহার পাদ্য অর্ঘ্য কিরূপ ? যিনি বিশুদ্ধ তাহার আচমনে প্রয়োজন কি ?
নির্মলস্য কুতঃ স্নানং বস্ত্রং বিশ্বোদরস্য চ ।
নিরালম্বস্যোপবীতং রম্যস্যাভরণং কুতঃ॥ ৩॥
তিনি চেতন সদা নিৰ্ম্মল তাহার স্নান কোথায় ? যাহার উদরের এক দেশে মাত্র অনন্ত কোটি বিশ্ব তাহাকে কোন বস্ত্র পরাইবে ? যিনি আপনিই আপনি কোন কিছুতে যিনি লগ্ন হন না। তাঁহাকে কোন উপবীত পরাইবে ? যাহা অপেক্ষা সুন্দর আর কিছুই নাই তাহাকে কোন আভরণ পরাইয়া সুন্দর করিবে ?
গীতায় মূর্তি পূজার বিরোধীতা-
কামৈস্তৈস্তৈর্হৃতজ্ঞানাঃ প্রপদ্যন্তেহন্যদেবতাঃ।
তং তং নিয়মমাস্থায় প্রকৃত্যা নিয়তাঃ স্বয়া ।। গীতা ৭/২০।।
অনুবাদঃ জড় কামনা-বাসনার দ্বারা যাদের জ্ঞান ভ্রষ্ট হয়েছে, তারা অন্য দেব-দেবীর শরণাগত হয় এবং তাদের স্বীয় স্বভাব অনুসারে বিশেষ নিয়ম পালন করে দেবতাদের উপাসনা করে।
নাহং প্রকাশঃ সর্বস্য যোগমায়াসমাবৃতঃ।
মূঢ়োহয়ং নাভিজানাতি লোকো মামজমব্যয়ম্ ।। গীতা ৭/২৫।।
অনুবাদঃ আমি(পরমত্মা) মূঢ়(মূর্খ) ও বুদ্ধিহীন ব্যক্তিদের কাছে কখনও প্রকাশিত হই না। আমি(পরমত্মা)যোগমায়া শক্তি দ্বারা আবৃত থাকি। তাই তাঁরা(মূর্খরা) আমার অজ(আজন্মা) ও অব্যয় (অক্ষয়, অপরিবর্তিত)স্বরূপকে জানতে পারে না।
পুরাণে মূর্তি পূজার বিরোধীতা-
যস্যাত্নবুদ্ধি কুনপে ত্রিধাতুকে।
স্বধীঃ কলত্রাদিষু ভৌম ইজ্যধীঃ।।
যত্তীর্থ বুদ্ধিঃ সলিলে ন কর্হিচিজ্জনেষবভিজ্ঞেসু স এব গোখরঃ।।
ভাগবত পুরাণ_১০/৮৪/১৩
অর্থ-যে ব্যাক্তি বায়ু,পিত্ত,কফ এই ত্রিধাতুযুক্ত শবতুল্য দেহে আত্মবুদ্ধি, মৃত্তিকা,প্রস্তর,কাষ্ঠ আদি বিকার সমুহতে ইষ্টবুদ্ধি রাখে ,কেবল জলকে তীর্থ মনে করে, এবং জ্ঞানী মহাপুরুষদের অস্বীকার করে সে ব্যক্তি মানব হয়েও পশুদের মধ্যে অধম প্রানীরূপে গন্য হয়ে থাকে।