সততা হলো জ্ঞানের প্রথম অধ্যায় সততা হলো সেরা নীতি। আমি যদি আমার সম্মান হারিয়ে ফেলি, তাহলে আমি নিজেকেই হারিয়ে ফেলবো আপনার জীবনে সৎ থাকুন, এটি ইতিবাচক শক্তি তৈরি করে, জীবনের সমস্ত অন্যায় কে থামিয়ে দেয় সৎ ব্যবসা পরিচালনা করা কঠিন, তবে অসম্ভব নয় । কোনও উত্তরাধিকার সততার মতো সমৃদ্ধ নয় সততা প্রত্যেকের সময় বাঁচায় সততা হলো ভুলকে ব্যর্থতায় পরিণত হওয়া থেকে রোধ করার দ্রুততম উপায় সততা একটি খুব দামী উপহার। সস্তা লোকের কাছ থেকে এটি আশা করবেন না । সর্বশ্রেষ্ঠ সত্য হলো সততা, এবং সবচেয়ে বড় মিথ্যাবাদী হলো অসৎ লোক সৎ হলে আপনার অনেক বন্ধু নাও হতে পারে, কিন্তু এটি আপনাকে সঠিক ব্যাক্তি বাছাই করে দিবে সততার সাথে কথা বলুন, আন্তরিকতার সাথে চিন্তা করুন এবং নিষ্ঠার সাথে কাজ করুন ভারসাম্যপূর্ণ সাফল্যের ভিত্তি প্রস্তর হ’ল সততা, চরিত্র, বিশ্বাস, প্রেম এবং আনুগত্য সততার একটি শক্তি রয়েছে যা খুব কম লোকই পরিচালনা করতে পারে জীবনের প্রতিটি পরিস্থিতিতে সততার উন্নতি হয় যারা আপনাকে ভালবাসে তাদের সাথে সৎ হয়ে যাও। তারা আপনার সততা প্রাপ্য ***************************************************************************** মানুষের মধ্যে সেই ব্যাক্তি উত্তম, যার চরিত্র সবচেয়ে সুন্দর। চরিত্র হারিয়ে গেলে সব হারিয়ে যায়। চরিত্রহীন মানুষ পশুর চেয়েও অধম মানুষের আচরণ হলো চরিত্রের সেরা প্রমাণ সুন্দর চরিত্র ফুলের চেয়েও পবিত্র আর খারাফ চরিত্র ময়লার চেয়েও অপবিত্র মানুষকে ভালোবাসা হলো সুন্দর চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য সুন্দর চেহারা থাকলেই চরিত্র সুন্দর হয় না, কিন্তু সুন্দর চরিত্রের মানুষ সত্যিকারের সুন্দর মানুষ হয়। আপনার চরিত্র নিয়ে চিন্তিত হোন, আপনার খ্যাতি নিয়ে নয় আমাদের চরিত্র নিয়ে চিন্তা করা উচিৎ সম্পদ নিয়ে নয় সব কিছু হারিয়ে গেলেও যার চরিত্র ঠিক থাকে, সে কখনো ব্যর্থ নয় যার চরিত্র নষ্ট হয়ে যায়, সে সবার কাছে মূল্যহীন হয়ে যায় নিজে চরিত্র নিয়ে কখনো অহংকার করবেন না, কারণ এটা হচ্ছে আপনার গুপ্ত সম্পদ যার চরিত্র নস্ট হয়ে গেছে, সে বেঁচে থাকার অধিকার হারিয়ে ফেলেছে চরিত্র আপনার এমন এক সম্পদ যা কেউ কখনো আপনার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে পারবে না আপনার চরিত্র ঠিক রাখুন, তাহলে সবার কাছে আপনি সমাদৃত হবেন
গুরুদেবের কর্মযজ্ঞে সহায়তাই গুরুভক্তি গুরু মুখ নিঃশৃত বানীই সত্য, নিশ্চল, ঈশ্বরীয়, পরমের ভাবে বিরাটের ভাবে ভাবময় হয়ে শব্দ রূপে প্রকাশিত। গুরু মুখ নিঃশৃত কথাগুলিকে মনন, স্মরণ, নিধিধ্যাসনের মাধ্যমে বারবার চর্চা করতে হয়। তবেই তার মধ্যে থেকে জ্ঞানের পুর্ন বিকাশ ঘটা সম্ভব। ঈশ্বরীয় আলোচনা গুরুর মুখে শ্রবণ করার সময় শিষ্যদের খেয়াল রাখতে হয়, যে ঈশ্বরীয় কথা ঈশ্বরীয় আবেশেই গুরুর মুখ থেকে নিঃশৃত হচ্ছে, সেই সময় মন-কে পুর্ন একগ্রতার সাথে গুরুর উপর নিবেশ করতে হয়। “সংসারের মায়াকে কাটিয়ে গুরুর কাছে বসে তাঁর মুখ নিঃশৃত বানীকে শ্রবণ করা ও মনন করার নামই ‘উপনিষদ”।” “ঈশ্বরের স্বরূপ-কে বুঝতে হলে আগে গুরুসত্ত্বা ও গুরুর স্বরূপ-কে বুঝতে হবে, তাকে হৃদয়ঙ্গম করতে হবে। তবেই বোঝাটা বোঝদারের মতো হবে। বুঝদার হতে হলে আগে গুরুকে বুঝতে হবে, না হলে সব ব্যার্থ।” জগতের “বোঝার” বোধ নিয়ে কখনও গুরুর সংগ কোরো না, তা হলে ‘বোঝার’ বোধে ফাঁক থেকে যাবে।” “মানসিক বিকার থেকে মুক্ত হয়ে গুরু সংগ করতে হয়। হিংসা, ঈর্ষা, নিন্দা এসবের থেকে মুক্ত হয়ে ‘মুক্ত-মন’ নিয়ে গুরু সংগ করতে হয়।” “গুরু সংগে মনে ঈশ্বরীয় ভাবের উদয় হয়। যতক্ষণ তুমি গুরুসংগে আছো ততক্ষন পর্যন্ত তুমি সংসারের মায়া থেকে মুক্ত হয়ে ঈশ্বরীয় ভাবের জগতের পথিক।” “গুরু শক্তি স্বঃতই প্রকাশিত। তাঁকে গ্রহণ করার মতো জ্ঞান শ্রদ্ধা ভক্তি বিশ্বাসের একান্ত প্রয়োজন।” “যে মানব জীবন সৌভাগ্যক্রমে “গুরু”-র সন্ধান পেয়েছে এবং গুরুকৃপা পেয়েছে সেই মানব জীবন ধন্য।” “অনন্ত জিবনের অবসান শেষে গুরু কৃপা লাভ হয়। হতভাগয় মানুষ সেই অনন্ত কৃপাকেও কখনও কখনও দুর্ভাগ্যের বসে হারিয়ে ফ্যালে।” গুরুর সংগ করার সময় প্রতিটি শিষ্যের উচিত এমন কোন ভাব প্রকাশ না করা যাতে গুরুর সংগ করার সময় যে শক্তির বিচ্ছুরণ ঘটে তা ব্যাহত হয়। তবে সেটা হবে পরম দুর্ভাগ্যের ঘটনা।” গুরুর ভাষণ, সমস্ত মনকে একাগ্র করে শুনতে হয়। এক কথার বহু অর্থ হয়ে থাকে, তাকে হৃদয়ঙ্গম করে নিতে হয়। নইলে গুরু সংগ বৃথা।” প্রতিটি মুহুর্ত্তে গুরুর সন্তুষ্টির দিকে নজর রাখতে হয়। গুরুর সন্তুষ্টির উপরই প্রতিটি শিষ্যের অধ্যাত্তিক উন্নতী ও সাধন সিদ্ধির পথ খোলা রয়েছে। সুতরাং সাবধান।” “গুরুর স্বরূপ-কে বুঝতে জন্মান্তও লেগে যায়। তাই সব সময় সচেষ্ট থাকতে হয় জন্ম মধ্যেই যেন তাঁকে উপলব্ধি করতে পারো।” “গুরুর কাছে আসার আগে আমার আমিত্ত্বটাকে বিসর্জন দিয়ে আসতে হয়। নইলে গুরুর স্বরুপকে আত্মগত করা যায় না।” “অহংকারী মন নিয়ে কখনও গুরুকে বুঝতে চেষ্টা কোরো না। তাতে হীতে বিপরীত ফল লাভ হয়। গুরু হলেন আয়ণার মতো, তুমি যে মন বা ভাব-কে নিয়ে তাঁর সামনে দাঁড়াবে সেটাই গুরুর মধ্যে দিয়ে প্রতিফলিত হবে।” “সহজ সরল শিশুর মতো হয়ে গুরুর কাছে যাও। দেখবে তোমার সমস্ত আকাংখাই তিনি পূরণ করেছেন। মা যেমন শিশুর সমস্ত কামনা পূরণ করেন, গুরুও তেমনি শিশু মনের শিষ্যের বায়ণা পূরণ করেন।” “সংসারের চিন্তা নিয়ে কখনও গুরু সংগ করবে না, তাতে লাভের বদলে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশী। সংসারের ‘সার’ হলেন গুরু। সুতরাং ‘সংগ’ সেজে ‘অসার’ বস্তুর সন্ধানে গুরুর কাছে না গিয়ে, গুরুর ‘সমসারের’ সঙ্গী হও। তবেই দেখবে সংসার “সমবোধের সার” হয়ে উঠেছে।” “শিষ্যের উচিত গুরুর জন্য নিবেদিত প্রাণ হওয়া, গুরুর কথার ব্যাখ্যা না বুঝে তাঁর সমালোচনা করার মতো পাপ এই জগতে আর কিছু নেই। অনন্ত জীবন এই সামান্য ভূলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। গুরু সমস্ত সমালোচনার উর্দ্ধে। তাঁর কথার সমালোচনা করা তো দুর, তাঁর কথার মানে বুঝতে হলেও শিষ্যকে বার বার জন্মাতে হতে পারে।” গুরুর কোন কথার মানে না বুঝতে পারলে তাঁকে বার বার জিজ্ঞেস করতে হয়। নতুবা নিজের মতো করে মন গড়া কোন ব্যাখ্যা করে নেওয়া ভয়ানক অপরাধ।” “গুরু বাক্য ব্রহ্মবাক্য। তা চিরকালের সত্য। কোন অবস্থাতেই তা মিথ্যে হয় না।” গুরুর সান্নিধ্যে থেকে গুরুর মতো হয়ে ওঠাই প্রতিটি শিষ্যের কর্ত্তব্য।” জগতের ভার বহন করার জন্যই গুরুর আত্মপ্রকাশ ঘটে। জগৎ সংসারের সমস্ত কিছুর মূলেই গুরুশক্তি কাজ করে চলেছে। গুরুর ভার বহন করার সাধ্য কারোর নেই।” “গুরুশক্তি অমোঘ। তাকে নাশ করার ক্ষমতা কারোর নেই। অবিনাশী শক্তিই হলো গুরু শক্তির অপর নাম।” “গুরুর জাগতিক কর্মকাণ্ড-কে কখনও সাধারণ বুদ্ধি দিয়ে বিচার করতে যেওনা। তাহলে অবশ্যই ঠকতে হবে।” কোন কোন শিষ্যের মধ্যে আধ্যাত্মিক শক্তি বর্ত্তমান থাকা সত্তেও শুধু গুরুবাক্য অবহেলা করার জন্য তাঁদের ভয়ানক আধ্যাত্মিক পতন ঘটে যায়। এর থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় অসম্ভব। এই অসম্ভব কর্ম থেকে রক্ষা পাওয়ার যদি কোন মাত্র উপায় থাকে তা কেবল “গুরুপদ শরণম”।” কোন কোন শিষ্যের মধ্যে আধ্যাত্মিক শক্তি বর্ত্তমান থাকা সত্তেও শুধু গুরুবাক্য অবহেলা করার জন্য তাঁদের ভয়ানক আধ্যাত্মিক পতন ঘটে যায়। এর থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় অসম্ভব। এই অসম্ভব কর্ম থেকে রক্ষা পাওয়ার যদি কোন মাত্র উপায় থাকে তা কেবল “গুরুপদ শরণম”।” গুরু প্রতিটি শিষ্যের মধ্যে তাঁরই রূপে বসে আছেন লীলা করবার জন্য। শিষ্যদের এটি বোঝার ক্ষমতা নেই। এই না বোঝার ফলেই ভূল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়, গুরু শিষ্য আলাদা দুটি সত্তায় পরিণত হয়।” “সহজ সরল মনে হয় গুরুর বাস, মনের সরলতাই গুরুর আনন্দের বস্তু, আর সহজতাই গুরুর কাছে আদরের ধন।” “গুরুর মুখ নিঃশৃত বানীকে শুধু শুনে গেলেই চলবে না। তাকে মনন ও চিন্তনের মাধ্যমে নিজের জীবনে প্রয়গ করতে হবে। তবেই গুরুসঙ্গ সফল।” “সংসারের চিন্তাকে সৎসঙ্গের সময় মনে স্থান দিয়ো না। তবে গুরু সান্নিধ্য লাভ করাটাই বৃথা হয়ে যাবে।” যতক্ষণ তুমি গুরু সান্নিধ্যে সময় কাঁটাবে, ততক্ষণই তোমার বিগত জন্মের প্রারব্ধের ফল নষ্ট হতে থাকবে। তোমার অজান্তেই তুমি ধীরে ধীরে দেবত্তের পথে উন্নীত হবে।” “গুরুর কাছে শুধু শুধু সময় কাঁটাবার জন্য এসো না। যখনই গুরু সান্নিধ্যে যাবে কিছু না কিছু জ্ঞান নিজের ঝুলিতে ভরে নিয়ে আসবে।” “গুরুর প্রতিটি আদেশকে যে জীবনে মান্য করতে পেরেছে, সেই প্রকৃত শিষ্য, তাঁর সব ভার গুরুই বহন করেন, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।”
শিক্ষক:- যিনি পার্থিব বা ভৌত জীবনের বা ভৌতবাদের উপরে শিক্ষা দানের বিনিময়ে পার্থীব অর্থ বা ধন বা পার্থিব বস্তু বা শরীর বা বা পার্থিবকিছু আশা করেন এরকম ব্যক্তিকেই শিক্ষক বলা হয়। অনেক সময় শিক্ষকের সংজ্ঞা না জানার কারণে, অনেক ক্ষেত্রেই আমরা শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা করার জন্য শিক্ষকদের দোষ বা গালি দিই, আসলে এটা ঠিক নয়; কারণ, ভৌতবাদের শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা করেন বলেই তিনি শিক্ষক। গুরু:: যিনি আত্মউন্নতির জন্য এবং আধ্যাত্মিকউন্নতির জন্য অথবা মুক্তির পথের উপদেশের শিক্ষা দানের বিনিময়ে পার্থীব অর্থ বা ধন বা পার্থিব বস্তু বা শরীর বা পার্থিবকিছু আশা করেন না অর্থাৎ যিনি প্রকৃত জ্ঞানের শিক্ষা দেওয়ার বিনিময়ে কারো কাছে কিছু আশা করেন না, অর্থাৎ শিক্ষা বা জ্ঞানের বিনিময়ে যিনি ব্যবসা করেন না এবং যার দেওয়া শিক্ষা পার্থিব জগত নিয়ে নয়- চৈতন্যময় জগত নিয়ে হয় এরকম ব্যক্তিকেই শাস্ত্রে প্রকৃত গুরু বলেছে। অর্থাৎ, শিক্ষকের সাথে চুক্তি জড়িত, আমি তোমাকে জড় জগতের এতটা শিক্ষা দিবো, তার বিনিময়ে তুমি আমাকে এতটা জড় জগতের অর্থ বা বস্তু দিবে। কিন্তু গুরুর বেলায় এমন কোনো চুক্তি নেই, এখানে আদান প্রদানের বিষয়টা সম্পূর্ণ আধ্যাত্মিক এবং আত্ম উন্নতির শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে- ইহা গুরুর বিবেক বিচার রুপি লোক কল্যাণ চিন্তাধারার স্বেচ্ছাধীন এবং প্রকৃত শাস্ত্রাধীন। তাই গুরুকে সর্বোচ্চ পদ- সর্বোচ্চ সমর্পণ এবং সর্বোচ্চ আন্তরিকতার এবং শ্রদ্ধার আসনে নির্দেশ শাস্ত্রে দেওয়া আছে। তাই শিক্ষক কখনো গুরু হতে পারেন না কিন্তু গুরু অবশ্যই গুরু এবং শিক্ষক উভয়ই হতে পারেন ।
শাস্ত্রমতে সদ্গুরু করণের পর সদ্গুরু ত্যাগ মহা-মহাপাপ শাস্ত্রসম্মত 24 থেকে 32 লক্ষণযুক্ত সদ্গুগুরুকেই একমাত্র প্রথম থেকেই গুরু হিসাবে গুরুকরন করবে (শাস্ত্রীয় 24 থেকে 32 লক্ষণ ছাড়া অন্য কোন কিছু দেখে সদ্ গুরু বিচার করা নিষিদ্ধ । একমাত্র শাস্ত্রীয় 24 থেকে 32 টি লক্ষণ যুক্ত ব্যক্তিকেই সদ্গুরু বলে বিচার করা অতি আবশ্যক, এছাড়া অন্য কোনভাবে অথবা অন্য কোন কিছু আচার-আচরণ, পোশাক পরিচ্ছেদ ব্যবহার বিধি বা বিবৃত প্রকার ব্যবহারিক অনুষ্ঠান দেখে সদ্গুরু বিচার করা নিষিদ্ধ করা আছে শাস্ত্রে) –তাহলে ভবিষ্যতে কখনোই গুরুকরণের পর আধ্যাত্মিক পরম উন্নতির জন্য পুনরায় গুরুত্যাগ করার প্রয়োজন পড়বে না। কোন আশ্রমযুক্ত অথবা কোনসম্প্রদায়যুক্ত অথবা গৃহস্থ অথবা সন্ন্যাসী অথবা বৈষ্ণব বা শক্তি উপাসক বা যেকোনো উপাসকী হোন না কেন শাস্ত্রসম্মত 24 থেকে 32 লক্ষণহীন ব্যক্তিকে গুরু হিসেবে গুরুকরণ না করায় অবশ্যই শ্রেয়,অর্থাৎ যাহার মধ্যে প্রত্যক্ষ সাধনার ফলে শাস্ত্রসম্মত 24 থেকে 32 টি লক্ষণের মধ্যে লক্ষণযুক্ত তার কাছেই একমাত্র গুরুকরণ করা উচিত। তাই শাস্ত্র অনুসারে জীবনে পূর্ব-পূর্ব জন্মের সৌভাগ্যক্রমে যদি কোন ব্যক্তির শাস্ত্রসম্মত 24 থেকে 32 টি লক্ষণের মধ্যে লক্ষণযুক্ত সদ্গুগুরু প্রাপ্তি হয় এবং সেই প্রাপ্তির পরেও যে ব্যক্তি মতিবিভ্রম বা কুবুদ্ধি বা কামনা বা প্রবৃত্তি /ভৌতবাদে আসক্তিবশত যদি কেউ সদ্গুরু করণের পর সদ্গুরু ত্যাগ করে সে অবশ্যই বহুজন্মএবং কোটি যুগ পর্যন্ত নিপাতে যায় এবং দুঃখময় নরক যন্ত্রণা ভোগ করে। কিন্তু শাস্ত্র বিধান অনুসারে শাস্ত্রসম্মত 24-32 লক্ষণযুক্ত সদ্গুরু করণের পর সদ্গুরু ত্যাগ অবশ্যই মহা-মহাপাপ বলে কথিত আছে। গুরুত্যাগাদ্ ভবেন্মত্যু মন্ত্রত্যাগাদ্দরিদ্রতা ৷ গুরু-মন্ত্রপরিত্যাগাদ্ রৌরবং নরকং ব্রজেৎ ৷৷ (মেরুতন্ত্র কুলার্ণবতন্ত্র) গুরু ত্যাগ করলে মৃত্যু হয়,মন্ত্র ত্যাগ করলে দরিদ্রতা হয় ৷ গুরু ও মন্ত্র ত্যাগ করলে 'রৌরবং নরকং ব্রজেৎ' রৌরব নরকে গমন করে ৷ প্রতিপদ্য গুরুং যস্তু মোহাদ্ বিপ্রতিপদ্যতে ৷ যুগকোটি স নরকে পচ্যতে পুরুষাধমঃ ৷৷ (বরাহপুরাণ) যে ব্যক্তি গুরুবরণ করিয়া মোহবশে তাঁহাকে ত্যাগ করে সেই পুরুষাধম কোটিযুগ পর্য্যন্ত নরক ভোগ করে ৷
শাস্ত্রবিধান অনুসারে কোন্ কোন্ পরিস্থিতিতে গুরুকে পরিত্যাগ করা যেতে পারে? উত্তরঃ— সাধারণ সূত্র দিয়ে যেরূপ যজ্ঞসূত্রের কাজ চালানো যায় না,তেমনি অসদগুরু দিয়েও পারমার্থিক জীবনে উন্নতি করা যায় না। গুরুত্যাগ পাপ হলেও অসদগুরু ত্যাগ পাপ নয় –বরংচ পুনরায় শাস্ত্রবিধি অনুসারে সদগুরু করন অতি আবশ্যক আধ্যাত্মিক উন্নত জীবনের জন্য ।। কিন্তু শাস্ত্র বিধান অনুসারে শাস্ত্রসম্মত 24-32 লক্ষণযুক্ত সদ্গুরু করণের পর সদ্গুরু ত্যাগ অবশ্যই মহাপাপ বলে কথিত আছে এবং যে ব্যক্তি মতিবিভ্রম বা কুবুদ্ধি বা কামনা বা প্রবৃত্তি /ভৌতবাদে আসক্তিবশত যদি কেউ সদ্গুরু করণের পর সদ্গুরু ত্যাগ করে সে অবশ্যই বহুজন্ম নিপাতে যায়।। শাস্ত্র অনুসারে কোন কোন ক্ষেত্রে গুরুত্যাগ করলে পাপ হবে না:----- 1. গুরুদেব যদি সদগুরু না হন তাহলে বিনম্র অনুমতি নিয়ে সেই গুরুদেবকে ত্যাগ করা উচিত। 2. দুর্ভাগ্যবশত যদি জ্ঞানহীন গুরুকরণ হয়ে থাকে তাহলে বিনম্র অনুমতি নিয়ে সেই গুরুদেবকে ত্যাগ করা উচিত। 3.গুরুদেব যদি শুধুমাত্র ক্লুগুরু হন(যদি সদগুরু না হন) তাহলে বিনম্র অনুমতি নিয়ে সেই গুরুদেবকে প্রণামপূর্বক, পুনরায় শাস্ত্রবিধি অনুসারে সদগুরু করন অতি আবশ্যক আধ্যাত্মিক উন্নত জীবনের জন্য । 4.গুরুদেব এর মধ্যে শাস্ত্রসম্মত 24-32 লক্ষণ না থাকে এবং আর দুর্ভাগ্যবশত সেই গুরুকরণ হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই বিনম্র অনুমতি নিয়ে সেই গুরুদেবকে প্রণামপূর্বক, পুনরায় শাস্ত্রবিধি অনুসারে সদগুরু করন অতি আবশ্যক আধ্যাত্মিক উন্নত জীবনের জন্য । 5. গুরুদেব যদি শাস্ত্রবিরুদ্ধ বা ধর্মবিরুদ্ধ / কলিস্থানসেবী / অভিমানী / ব্যভিচারী বা পাপকার্যে লিপ্ত হয়ে পড়েন তাহলে সেই গুরুদেবকে ত্যাগ করা উচিত। 6. গুরুদেব যদি নাস্তিক / সমন্বয়বাদীপাষন্ড / ভৌতবাদী হন তাহলে সেই গুরুদেবকে সঙ্গেসঙ্গ ত্যাগ করা উচিত। 7. গুরুদেব যদি মিথ্যাচারী / ধর্ম/শাস্ত্র/ ভগবদ্নিন্দুক হন তাহলে সেই গুরুদেবকে ত্যাগ করা উচিত। 8. গুরুদেব যদি শাস্ত্র ও ভগবদ্ বিদ্বেষী হয়ে পড়েন তাহলে সেই গুরুদেবকে ত্যাগ করা উচিত। 9. বিবেক বিচারহীন-অনুশাসনজ্ঞানহীন-বেদান্তশাস্ত্রজ্ঞানহীন গুরুকে অবশ্যই পরিত্যাগ করা উচিত। 10.যে গুরু জ্ঞান এবং উপদেশ দানের পরিবর্তে ধন এবং সম্পত্তি আকাঙ্ক্ষা করে সেই গুরুকে অবশ্যই পরিত্যাগ করা উচিত । 11.কৌলিক ও লৌকিক, শাস্ত্র অনুসারে প্রকৃত লোককল্যাণচিন্তাহীন এবং মন্ত্রব্যবসায়ী গুরু পরিত্যাজ্য। 12. ভগবতভক্ত বা ধার্মিকতার অভিনয়কারী এবং পার্থিব জগতে স্বার্থপর গুরু অবশ্যই পরিত্যাজ্য। 13. কর্মকান্ডী বৈদিকগনও প্রকৃত আত্মজ্ঞান রূপে গুরুত্বশূন্য হেতু সেই গুরুকে অবশ্যই পরিত্যাগ করা উচিত । 14. তত্ত্বভ্রমী গুরু এবং পরশ্রীকাতর কাতর দোষে দুষ্ট গুরু অবশ্যই পরিত্যাজ্য। 15. সম্প্রদায়অভিমানে যিনি অভিমানী- এইরকম গুরু অবশ্যই পরিত্যাজ্য। তাই শাস্ত্র বলেছে উপরোক্ত এই 15 রকম লক্ষণযুক্ত গুরুকে জীবনের আধ্যাত্মিক পরম উন্নতির জন্য প্রথম থেকেই গুরুকরণ করবে না এবং শাস্ত্রসম্মত 24 থেকে 32 লক্ষণযুক্ত সদ্গুগুরুকেই একমাত্র প্রথম থেকেই গুরু হিসাবে গুরুকরন করবে –তাহলে ভবিষ্যতে কখনোই গুরুকরণের পর আধ্যাত্মিক পরম উন্নতির জন্য পুনরায় গুরুত্যাগ করার প্রয়োজন পড়বে না। কোন আশ্রমযুক্ত অথবা কোনসম্প্রদায়যুক্ত অথবা গৃহস্থ অথবা সন্ন্যাসী অথবা বৈষ্ণব বা শক্তি উপাসক বা যেকোনো উপাসকী হোন না কেন শাস্ত্রসম্মত 24 থেকে 32 লক্ষণহীন ব্যক্তিকে গুরু হিসেবে গুরুকরণ না করায় অবশ্যই শ্রেয়,অর্থাৎ যাহার মধ্যে প্রত্যক্ষ সাধনার ফলে স্বাস্থ্যসম্মত 24 থেকে 32 টি লক্ষণের মধ্যে লক্ষণযুক্ত তার কাছেই একমাত্র গুরুকরণ করা উচিত। একমাত্র দুর্ভাগ্যবশত অথবা অজ্ঞানতা যারা যেকোনো কারণ বা যে কোনভাবেই হোক বা শাস্ত্রবিরুদ্ধভাবে গুরুকরণ করেছে তাদের জন্যই আধ্যাত্মিক পরম উন্নতির জন্য উপর লিখিত গুরুরত্যাগ পূর্বক শাস্ত্রসম্মত 24 থেকে 32 লক্ষণযুক্ত পুনরায় সদ্গুগুরুকরণ হেতু শাস্ত্র বিধান দেওয়া হইল।