গোবিন্দ তত্ত্ব '
গোবিন্দ তত্ত্ব '
" ঈশ্বর পরম:কৃষ্ণ: সচিদানন্দ বিগ্রহ
অনাদিরাদি গোবিন্দ সর্বকারণ: কারণম ।। "
সূর্যের চারিদিকে যে 12-16 টি গ্রহ পরিক্রমা করছে এটাকে একটি সৌরজগৎ বলে। তার মধ্যে ভূ অর্থাৎ পৃথিবীকে এই সৌরজগতের জীবজগৎ এর দৃষ্টিকোণে কেন্দ্র ধরা হয়।এই হিসাবে পৃথিবীলোককে 'ভূ-লোক' বলা হয়।
ভূ-লোককে পৃথিবীলোক বা মনুষ্য লোক বলা হয়। এর নীচে সপ্ত লোক বিদ্যমান। যেমন -
1. অতল
2. বিতল
3. সুতল
4. মহাতল
5. তলাতল
6. রসাতল
7 .পাতাল
এই পাতালের নিচে 84 প্রকার নরক কুন্ড বিদ্যমান।
ভূ -লোক কে নিয়ে আরো 6 টি লোক বিদ্যমান। যেমন -
1. ভূ -লোক (পৃথিবীলোক)
2. ভুব (পিতৃলোক)
3. স্বর্গলোক (দেবলোক)
4. মহলোক (সিদ্ধলোক)
5. জনলোক (মহাসিদ্ধলোক)
6. তপোলোক (ঋষিলোক)
7. সত্যলোক ( ব্রহ্মলোক +বিষ্ণুলোক +শিবলোক )
এই সত্যলোকের তিনটি ভাগ যথা -
1. বৈকুন্ঠলোক
2. শিবলোক
3. ব্রহ্মলোক।
এই তিনটি লোক মিলে সত্যলোক।
এই 14 লোক মিলে একটি ব্রহ্মান্ড হয়। এই ব্রহ্মান্ডের সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা, পালনকর্তা ভগবান বিষ্ণু এবং লয়কর্তা ভগবান শিব।
এইরকম কোটি কোটি ব্রহ্মান্ড একটি প্রত্যিক-কাণ্ডে অবস্থান করছে। প্রতি কোটি কোটি ব্রহ্মান্ডে (প্রতিটি ব্রহ্মান্ডে) কোটি কোটি ব্রহ্মা, কোটি কোটি বিষ্ণু এবং কোটি কোটি শিব অবস্থান করছেন। এই প্রত্যিক-কাণ্ডেকে ধারণ করে আছেন মহাবিষ্ণু।
এইরকম প্রতিকাকাণ্ডে রুপি কোটি কোটি মহাবিষ্ণু(প্রত্যিক-কাণ্ডে) মহারুদ্র কাণ্ডে অবস্থান করছে।
এইরকম কোটি কোটি রুদ্রাকান্ড যোগমায়া তে অবস্থান করছে। এই যোগমায়া শক্তি হলো মূল তত্ত্ব এর বহিরাবরণ। এই যোগমায়ারূপী বহিরাবরণের ভিতরে আল্ল্হাদিনী শক্তি (রাধা তত্ত্ব) অন্তর আবরণ রূপে আছে। আল্ল্হাদিনী শক্তি (রাধা তত্ত্ব) এর অভ্যন্তরে যে মূল তত্ত্ব তাহাই 'গোবিন্দ তত্ত্ব '।
সেজন্যই ভগবান ব্যাসদেব ব্রহ্ম সংহিতায় উল্লেখ করেছেন -
" ঈশ্বর পরম:কৃষ্ণ: সচিদানন্দ বিগ্রহ
অনাদিরাদি গোবিন্দ সর্বকারণ: কারণম ।। "
আমাদের এই ব্রহ্মান্ডে উপরোক্ত ' গোবিন্দতত্ত্ব ' ভগবান শিব নিজমুখে সর্বপ্রথম 10 জন ঋষিকে এই 'গোবিন্দ তত্ত্ব' এর গুহ্য রহস্য বর্ণনা করেছিলেন। তাই শিব মুখনিঃসৃত বাণী 'শৈব্যাগম ' শাস্ত্রে এর বিশদ বর্ণনা আছে।ভগবান শিবের কৃপায় 'শৈব্যাগম' শাস্ত্র থেকে ঋষি পরম্পরায় এই গোবিন্দ তত্ত্ব ভগবান ব্যাসদেবের কৃপায় শ্রীমদ্ভাগবত মাধ্যমে জগৎজন আমরা বা সকল মনুষ্য জানিতে পারিয়াছি ।