তন্ত্র এর নিম্ন মার্গের ষট্কর্ম
অথর্ব বেদ থেকে সৃষ্টি হওয়া তন্ত্র এ যেমন বিভিন্ন ঈশ্বর লাভএর বিভিন্ন উচ্চ মার্গের পথ নির্দেশিত আছে ঠিক তেমনি স্বার্থ সিদ্ধির জন্য নানান বিভিন্ন নিম্ন মার্গের তন্ত্র প্রক্রিয়া এরও বর্ণনা আছে ।
ডামর তন্ত্র, কাম্রত্ন তন্ত্র , এবং আগম তন্ত্রএর কিছু পরিচ্ছেদ সহ বিভিন্ন তন্ত্রে ষট্ কর্ম বিস্তর মন্ত্র সহ প্রক্রিয়ার বর্ণনা দেওয়া আছে।
৬ টি নিম্ন মার্গের স্বার্থ সিদ্ধি প্রক্রিয়া নিয়ে যে তন্ত্র এর বর্ণনা পাওয়া যায় তাকেই ষট্ কর্ম বলা হয়।
মানুষের মধ্যে আসু রিক শক্তি আসার দরুন সে বুহু নিরীহ নিরাপরাধ মানুষের ক্ষতি করবে তাই তাঁদের পাপের শাস্তি দিতেই মহাদেব সাধারণ মানুষের অস্ত্র হিসাবে এই পথ গুলি বলেছিলেন। কিন্তূ দুর্ভাগ্যবশত বরং আজ এগুলি কিছু অসৎ মানুষ উল্টে নিজের স্বার্থে অন্য লোকের উপর প্রয়োগ করচে।
১. মারণ
২.উচ্চাটন
৩.বশিকরন
৪.স্তম্ভন
৫.বিদ্দেষণ
৬. শান্তি সস্তায়ন
১.মারণ কর্ম
তান্ত্রিক ক্রিয়ায় সবচেয়ে ক্ষতিকর ও বিপদযুক্ত ক্রিয়া হলো মারণ। একজন সুস্থ সবল ব্যাক্তিকে বুদ্ধি হত্যা করলে যা হয় অথবা কোন কোন ক্ষেত্রে কোন সুস্থ সবল ব্যাক্তিকে চিরকালের জন্য হত্যা করার প্রক্রিয়াকে মারণ কর্ম বলা হয়ে থাকে। খুব সাবধানে এই তন্ত্রক্রিয়া করা উচিৎ। তবে সাধকদের মনে রাখতে হবে এই ক্রিয়া করতে গিয়ে সামান্য কিছু ভুলের জন্য বহু সাধক কিন্তু প্রান হারিয়েছেন। কোন সাধক বা সাধিকা যদি দেবী ছিন্নমস্তাকে তুষ্ট করেন তবে তাঁর মধ্যে মারণ ক্ষমতা জন্মায় ও সাধক বাক্ সিদ্ধি লাভ করেন। কিন্তূ এই শক্তির অপ প্রয়োগ করলে মা রুষ্ট হন এবং সঙ্গে সঙ্গেই সাধককে মেরে ফেলতে পারেন বা তাঁর শক্তি কেড়ে নিয়ে তাঁকে পঙ্গু করে দিতে পারে। এক কথায় মারণ নিরীহ মানুষের উপর প্রয়োগ করলে মা সেই সাধ কে ও সর্ব শান্ত করে তুলতে পারে।।
২. উচ্চাটন কর্ম
এই তান্ত্রিক কর্ম খুব কোঠিন। এক কথায় মনের ব্যাকুলতা জন্মানোর উদ্দেশ্যে এই তন্ত্রোক্ত ক্রিয়া করা হয়।
৩. বশীকরণ কর্ম
কোন বেক্তি কে নিজের বশে অথবা নিজের আয়ত্তের মধ্যে রাখতে , অথবা পশু,পাখি বা অন্যান্য জীব কে নিজের আয়ত্তে রাখতে যে তন্ত্র ক্রিয়া করা হয় তাকে বশীকরণ কর্ম বলা হয়। বলা বাহুল্য যার ওপর ক্রিয়া করা হবে সেই বেক্তির সান্নিধে যাওয়া প্রয়োজন ক্রিয়াকারী বেক্তির।
৪.স্তম্ভন কর্ম
জল , বাতাস , আগুন । সাধারণত এই তিনটি জিনিসের ধর্মকে আটকানোকে এক কথায় স্তম্ভন কর্ম বলা হয়ে থাকে।কেউ হয়তো আগুনের উপর দিয়ে বা গঙ্গার উপর দিয়ে বা বাতাসের উপর দিয়ে হেঁটে চলে গেল এটাই হচ্ছে স্তম্ভন কর্ম। তবে এই কর্মের দ্বারা কারো কারো বাক্ স্তম্ভন ও করা হয়। দশমহাবিদ্যার মধ্যে অষ্টম মা বগলামুখী দেবী হলেন স্তম্ভনের দেবী। উঁনি প্রসন্না হলে তবে সাধক স্তম্ভন করার শক্তি অর্জন করেন।
৫. বিদ্বেষণ কর্ম
দুই অন্তরঙ্গ বেক্তির মধ্যে ঝগড়া কলহ অশান্তির সৃষ্টি করে দেওয়া হয় এই তান্ত্রিক কর্মের দ্বারা। এই বিদ্বেষণ কর্মের দেবী হলেন মা ধূমাবতী। আমার মতে এই তান্ত্রিক ক্রিয়া করা উচিত নয়।
৬. শান্তি কর্ম
মানুষ প্রতিদিন কোন না কোন অশান্তিতে ভোগেন, সেই অশান্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিজে বা অন্য কোন তান্ত্রিক ধরে যে তান্ত্রিক ক্রিয়া করা হয় তাকে শান্তি ক্রিয়া বলা হয়।