জন্মাষ্টমী ব্রত
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পূজা ছাড়া জন্মাষ্টমী অসম্পূর্ণ হবে !
যার আগমনে এই ধরণী (পৃথিবী) আনন্দে পরিপূর্ণ হয়, যার স্মরণ মাত্র হৃদয় প্রফুল্লিত হয়, যার নাম কীর্তনে হৃদয়ে প্রেম ভাব জাগে, যার শ্রী বিগ্রহ দর্শনে আমার চোখ-মন-হৃদয় তৃপ্তি পায়, যার করুনা-কৃপার কথা মনে পড়া মাত্র চোখ আপনাআপনি অশ্রুসিক্ত হয়, যার লীলাকথা শোনা মাত্র হৃদয় ব্যাকুল হয়, যার বংশীধানি শোনা মাত্র মন-অহংকার আপনা-আপনি নত হয়ে যায় ও বাহ্য জগতের কথা আর মনে রাখা সম্ভব হয় না - আপনা-আপনি তার চরণে সব সমর্পন হয়ে যায়----- আমার সেই প্রাণ -গোবিন্দের চরণে আমার শতকোটি -সহস্রকোটি প্রণাম।
জন্মাষ্টমী ব্রত ভগবান শ্রী কৃষ্ণের নাম -জপ-পূজা -বন্দনা-কীর্তন-স্মরণ-নিজের সাধ্যমতো ভোগ নিবেদন প্রত্যেকের করা উচিত।
এই দিনটিতে বিশেষ ভাবে আহারশুদ্ধি রাখা উচিত।
প্রত্যেক ব্যক্তিকে এই বিশেষ দিনটি ভগবান শ্রী কৃষ্ণের চরণে সমর্পন করা উচিত।ইহা পরম মানবিক ও ধার্মিক কর্ত্যব্য।
কিভাবে পবিত্র জন্মাষ্টমী ব্রত পালন করবেন??
১। জন্মাষ্টমীর আগের দিন নিরমিষ অন্ন খেয়ে সংযম পালন করতে হবে এবং রাত ১২টার মধ্যে খেয়ে নিতে হবে। ঘুমনোর আগে অবশ্যই ভাল করে মুখ ধুয়ে ঘুমতে হবে।
২। জন্মাষ্টমীর দিন সকাল থেকে মধ্য রাত্রি পর্যন্ত উপবাস এবং জাগরণ। উপবাস থেকে হরিনাম জপ, কৃষ্ণ লীলা শ্রবণ, ভগবানকে দর্শন, ভক্ত সঙ্গে হরিনাম কীর্তন, অভিষেক দর্শন করতে হবে এবং ভগবানকে অভিষেক করে একাদশীর দিনের মতো অনুকল্প প্রসাদ সেবন করতে হবে।
৩। তবে যাঁদের উপবাস পালনে সমস্যা, অসুস্থ, তাঁরা অবশ্যই দুপুর ১২ টার পরে একটু দুধ, বা ফল খেতে পারবেন। তবে এই ব্রতে একাদশীর মতোই অন্ন-সহ পঞ্চ রবি শস্য খাবার বিধান নেই।
৪। জন্মাষ্টমীর পরের দিন সকালে স্নান করা শেষে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পারণ মন্ত্র পাঠ করে শ্রীকৃষ্ণের প্রসাদ দিয়ে পারণ করবেন।
পারণ মন্ত্র—
পারণ আরম্ভের মন্ত্র:
"সর্বায় সর্বেশ্বরায় সর্বপতয়ে সর্বসম্ভবায় গোবিন্দায় নমো নমঃ।"
পারণান্তে মন্ত্র:
"ভূতায় ভূতেশ্বরায় ভূতপতয়ে ভূতসম্ভবায় গোবিন্দায় নমো নমঃ।"
কৃষ্ণ বা শ্রীকৃষ্ণ হলেন পরম পুরুষোত্তম ভগবান। তাঁকে সর্বোচ্চ ঈশ্বর (পরম সত্ত্বা) উপাধিতে ভূষিত করা হয় এবং পবিত্র ধর্মগ্রন্থ শ্রীমদভগবদ্গীতা- এর প্রবর্তক। তিনি, বৃন্দাবনের অধীশ্বরী শ্রীরাধিকার প্রাণনাথ।
প্রতিবছর ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী (জন্মাষ্টমী) তিথিতে তার জন্মোৎসব পালন করা হয়।
ঋগ্বেদে একাধিকবার (১। ১০১, ১১৬-৭, ১৩০ ইত্যাদি) এবং ছান্দোগ্যোপনিষৎ (৩।১৭।৬-৭) এবং কৌষিতকীব্রাহ্মণে (৩০।৬) কৃষ্ণের উল্লেখ রয়েছে।
মহাভারত ও হরিবংশ এবং ভাগবতই কৃষ্ণকে জানার সবচেয়ে প্রাচীন ও নির্ভরযোগ্য মাধ্যম।
জৈন ধর্মের ২২তম তীর্থঙ্কর আরিশটা নেমিনাথ শ্রীকৃষ্ণের সম্পর্কে ভাই ছিলেন ।
শ্রীমদ্ভাগবত দশম স্কন্ধের এই শ্লোক থেকে জানা গেল, শ্রীকৃষ্ণ যেদিন অন্তর্ধান করেন সেই দিনই কলিযুগ আরম্ভ হয় ।
পঞ্জিকা মতে এই বছর 2022 ।
কলির গতাব্দ 5115 ।
অতএব 5115– 2022 = 3093 খ্রিষ্টপূর্বাব্দে শ্রীকৃষ্ণের তিরোভাব ।
ফলে 3093+125 = 3218 খ্রিষ্টপূর্ব অব্দে শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ।
বর্তমানে 2022 এ শ্রীকৃষ্ণাব্দ 3218 + 2022 = 5240 বছর ।
সুতরাং শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব দ্বাপরের শেষে পাপাক্রান্ত পৃথিবীর ভার কমানোর জন্য আজ (2022) থেকে 5240 বছর আগে 18 ই আগষ্ট ভাদ্রের কৃষ্ণা অষ্টমী তিথিতে বিষ্ণুর অষ্টম অবতার হিসাবে কংসের কারাগারে আবির্ভাব হয় ।পাপমোচন ও ধর্ম সংস্থাপন ও সাধুপরিত্রাণের জন্য ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে শ্রীকৃষ্ণের শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব হয় কংসের কারাগারে |
পাপমোচন ও ধর্ম সংস্থাপন ও সাধুপরিত্রাণের জন্য ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে শ্রীকৃষ্ণের শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব হয় কংসের কারাগারে | অত্যাচারী রাজা, ভয়ঙ্কর দস্যুও বিভীষিকাময় পশুর দমনের জন্য এবং সাধুর পরিত্রানের কারণে এই সময়ে তিনি আবির্ভাব হয়েছিলেন |
125 বছরের জীবনে তিনি কংস, শিশুপাল, কালযবন, জরাসন্ধ, পুতনা, শকটাসুর, তৃণাবর্ত, নলকুবের,মণিগ্রীব, জরাসন্ধ, পুতনা, শকটাসুর, তৃণাবর্ত, নলকুবের,মণিগ্রীব, বত্সাসুর, বকাসুর, অঘাসুর, কালিয়া, প্রণমাসুর,শঙ্খাসুর, অরস্টাসুর,ব্যোমাসুর,নরকাসুরকে বধ করেন | শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কুরুক্ষেত্রের ধর্মযুদ্ধে অর্জুনকে দেখিয়েছেন তিনিই বিশ্বের স্রষ্টা ও হন্তা | বুঝিয়েছেন ধর্মের জয় যুগে যুগে |
শ্রীকৃষ্ণের ধনুকের নাম ছিল সরঙ্গ,
তাঁর খড়গের নাম ছিল নন্দক,
তাঁর গদার নাম ছিল কৌমুদকী
তাঁর শঙ্খের নাম ছিল পাঞ্চজন্য।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী পূজার উপকারিতা:------------
1. কৃষ্ণের পূজা & হোম আপনার বাচ্চাদের নিরাপত্তার জন্য এবং সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য ভগবান বিষ্ণুর আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য চমৎকার।
2. এটি গর্ভাবস্থায় গর্ভপাত প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং একজন সুস্থ শিশুর নিরাপদ প্রসবের সাথে ব্যক্তিকে আশীর্বাদ করে।
3. এটি শিশুকে সুস্বাস্থ্য ও বুদ্ধিমত্তার আশীর্বাদও করে।
4. শিশুদের যে কোনো খারাপ নজর থেকে রক্ষা করে।
5. গর্ভাবস্থার সময় মহিলাদের সুরক্ষা দেয়।
6. সন্তানের জন্য আকুল দম্পতিদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
7. গর্ভাবস্থার সময় যেকোনো ধরনের গর্ভপাত এবং জটিলতা প্রতিরোধ করে।
8. এটি একজনকে ভগবান কৃষ্ণের কাছ থেকে আশীর্বাদ পেতে সাহায্য করে।
9. এটি একটি সুখী দাম্পত্য জীবন কাটাতে সাহায্য করে এবং সমস্ত ধরণের পার্থিব সম্পদ দিয়ে আশীর্বাদ করে৷
10. এটি দম্পতিকে সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্ত হতে এবং একে অপরের সাথে সম্পর্ক উন্নত করতে সাহায্য করবে।
11. এটি শিশুর বুদ্ধিমত্তা ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতেও সাহায্য করে।
12. যে কোন ব্যক্তির বুদ্ধিমত্তা প্রকৃত শিক্ষা জ্ঞান বৃদ্ধি হতে সাহায্য করে ।
এই কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীতে নিজের হাতে করুন নিয়ে বাল গোপালের পূজা!