পুরী ও জগন্নাথ
কতগুলি অমীমাংসিত রহস্য পুরী ও জগন্নাথ মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে, যার আজ অবধি কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায় নি। পুরী ও পুরীর জগন্নাথ মন্দিরকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হওয়া চির রহস্যাবৃত, সেই আটটি ঘটনা কী কী চলুন জেনে নিই....।
১. পুরীর মন্দিরের মাথার উপর যে পতাকা রয়েছে সেই পতাকাটি সব সময় হাওয়ার বিপরীত দিকে উড়ে। কী কারনে এমনটা হয়, তার ব্যাখ্যা বৈজ্ঞানিকরাও পাননি।
২. পুরীর মন্দিরের উপরে ২০ কেজি ওজনের একটি নীলচক্র রয়েছে। যেটি পুরী শহরের যে কোন জায়গা থেকেই দেখা যায়। এত আড়াল আবডাল সত্ত্বেও কীভাবে পুরীর যে কোন জায়গা থেকেই সেটি দেখা যায়,তা নিয়েও গভীর রহস্য রয়েছে?
৩. জগন্নাথ মন্দিরের মোট চারটি দরজার মধ্যে অন্যতম হলো সিংহদ্বার। দর্শনার্থীরা সিংহদ্বারের আগে অবধি সমুদ্রের হাওয়ার শব্দ শুনতে পান। কিন্তু যখনই তারা সিংহদ্বার পেরিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করেন তখন আর তারা কোন শব্দ শুনতে পান না।
৪. পুরী মন্দিরের উপর দিয়ে কোন পাখিকে আজ অবধি উড়তে দেখা যায় নি! এমনকি এই মন্দিরের উপর দিয়ে বিমান পর্যন্ত যায় না! কেন কী রহস্য এর পেছনে তা জানা যায়নি। তবে ভক্তরা মনে করেন জগতের নাথ যিনি তার উপর দিয়ে কারোর যাওয়া সম্ভব নয়, তাই এমনটা ঘটে।
৫. পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ছায়া দিনের কোন সময়ই মাটিতে পড়ে না। এই নিয়ে যুগ যুগ ধরে চলছে নানা তর্ক-বিতর্ক, তবে সে তর্ক বিতর্কের অবসান আজও হয়নি!
৬. বিশ্বের যে কোন জায়গায় সকালবেলায় সমুদ্র থেকে তীরের দিকে হাওয়া আসে। আর বিকেলবেলা উপকূল থেকে সমুদ্রের দিকে হওয়া যায় কিন্তু পুরীর সমুদ্রের ক্ষেত্রে ঠিক তার উল্টো নিয়মটা ঘটে। এই ঘটনা সত্যিই এক বিস্ময়!
৭. পুরীর আরও এক রহস্য হলো, এই মন্দিরের পাকশালা। এই মন্দিরের প্রসাদ কখনোই নষ্ট হয় না! রেকর্ড অনুযায়ী, প্রতিদিন যত সংখ্যক পুণ্যার্থী আসুক না কেন, সকলেরই প্রসাদ খেয়ে যান এখানে। পুণ্যার্থীর সংখ্যা ২ হাজার হোক অথবা ২০ হাজার, প্রসাদ কখনো শেষ হয়ে যায় নি! কখনো এক ফোঁটা নষ্ট হয়নি! এ এক অদ্ভুত রহস্য!
৮. জগন্নাথ দেবের বিগ্রহ মাটির বা ধাতুর দ্বারা নির্মিত নয়, তা এক বিশেষ কাঠ দ্বারা নির্মিত। কথিত আছে জগন্নাথ দেবের নবকলেবর যখন হয় তখন জগন্নাথ দেবের পুরনো মূর্তি থেকে ব্রহ্ম পদার্থ নামে একটি বস্তু নতুন মূর্তিতে স্থানান্তরিত হয়। এই ব্রহ্ম পদার্থ নামক বস্তুটির প্রকৃত স্বরূপ কী তা পুরোহিতরাও জানেন না, এই সময় পুরোহিতের চোখ বাঁধা থাকে এবং হাত বাঁধা থাকে। বলা হয় যে এই সময় কেউ যদি চোখ খুলে ব্রহ্ম পদার্থ নামক বস্তুটি দেখে ফেলেন তাহলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে, এমনকি তার মৃত্যু অবধি হতে পারে। তাই কেউই এই সময় চোখ খোলার সাহস করেন না।।
************************************************************
মহাপ্রভু জগন্নাথ (শ্রী কৃষ্ণ) কে কলিযুগের ঈশ্বরও বলা হয়।
প্রতি 12 বছর পর পর মহাপ্রভুর মূর্তি বদলানো হয়, সেই সময় পুরো পুরী শহরে কালো আউট হয়, অর্থাৎ পুরো শহরের বাতি নিভিয়ে দেওয়া হয়, লাইট নিভানোর পর মন্দির চত্বর ঘিরে ফেলা হয়। সেই সময় সিআরপিএফ, কেউ মন্দিরে যেতে পারবে না!
মন্দিরের ভিতরে ঘন অন্ধকার, পুরোহিতের চোখ বেঁধে আছে, পুরোহিতের হাতে গ্লাভস আছে, তিনি পুরানো মূর্তি থেকে "ব্রহ্ম পদার্থ" বের করে নতুন মূর্তির মধ্যে ঢেলে দেন। এই ব্রহ্ম পদার্থ কী তা আজ পর্যন্ত কেউ জানে না। আজ
পর্যন্ত কেউ দেখেনি। হাজার হাজার বছর ধরে এটি এক মূর্তি থেকে অন্য প্রতিমা স্থানান্তরিত হচ্ছে।
এটি একটি অতিপ্রাকৃত ব্রহ্ম পদার্থটি ভগবান শ্রী কৃষ্ণের সাথে সম্পর্কিত।