প্রজ্ঞা, কর্ম নির্জরা ,পরোক্ষ জ্ঞান, প্রত্যক্ষ্য জ্ঞান কাকে বলে ?
1.প্রজ্ঞা কাকে বলে ?
উত্তর :-
গভীর শ্রদ্ধা, গভীর বিশ্বাস, বিনয়, নির্জনতা, স্থিরতা, পরম একাগ্রতা সহকারে প্রতক্ষ্য উপলব্ধি যুক্ত ব্যাক্তির জ্ঞান উপদেশ বা সাধন-সমাধির দ্বারা প্রতক্ষ্য উপলব্ধিজাত জ্ঞান যখন নির্মল অন্তরে প্রবেশ করে প্রাণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গভীর স্থিতি লাভ করে তখন তাকে প্রজ্ঞা বলে ।
2.কর্ম নির্জরা কাকে বলে ?
উত্তর:-- শাস্ত্রানুসারে যখন কোনো ব্যাক্তি কায়-মন-বাক্য সব ঈশ্বরে সমর্পন করে তখন সেই ব্যাক্তির ভক্তি-নিষ্ঠা হেতু নির্মল অন্তরে কোনো কামনা উৎপন্ন হয়না এবং পূর্ণরূপে নিষ্কামস্থিতি প্রাপ্ত হয় -তখন সেই ব্যাক্তি ব্যবহারিক জগৎ ও শরীরে শুধু প্রারাদ্ধ কর্মেরই ভোগ হয় এবং সেই ভোগক্ষয় মোক্ষের হেতু হয় , যার ওই নিষ্কামস্থিতিতেই সেই ভোগক্ষয় করাকেই কর্ম নির্জরা বলে ।
2.কর্ম নির্জরা কাকে বলে ?
উত্তর:-- শাস্ত্রানুসারে যখন কোনো ব্যাক্তি কায়-মন-বাক্য সব ঈশ্বরে সমর্পন করে তখন সেই ব্যাক্তির ভক্তি-নিষ্ঠা হেতু নির্মল অন্তরে কোনো কামনা উৎপন্ন হয়না এবং পূর্ণরূপে নিষ্কামস্থিতি প্রাপ্ত হয় -তখন সেই ব্যাক্তি ব্যবহারিক জগৎ ও শরীরে শুধু প্রারাদ্ধ কর্মেরই ভোগ হয় এবং সেই ভোগক্ষয় মোক্ষের হেতু হয় , যার ওই নিষ্কামস্থিতিতেই সেই ভোগক্ষয় করাকেই কর্ম নির্জরা বলে ।
3.বিশ্বাস এর অযোগ্য কে কে ?
উত্তর :
শাস্ত্রানুসারে ধর্মহীন, স্ত্রীতোষামোদকারী, অতিকৃপণ, অসৎকর্মকারী ,পিতৃ-মাতৃ সেবাহীন, শাস্ত্র-গুরু নিন্দুক , শাস্ত্র-গুরু ও ভগবৎ ভক্তিহীন , চরিত্রহীন , মিথ্যাবাদী , অসৎপথে উপার্জনকারী অন্ন ভক্ষণকারী , নিজের অধিকার বা চরিত্রসীমা লঙ্ঘনকারী ব্যাক্তি ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী ব্যাক্তি সর্বদাই বিশ্বাস এর অযোগ্য --সে নারী বা পুরুষ যেই হোক না কেন । এই সকল ব্যাক্তিকে বিশ্বাস করা আর নিজের মাথায় নিজেই কুঠার আঘাত করা একই ধরা যেতে পারে ।
4.পরোক্ষ জ্ঞান কাকে বলে ?
উত্তর:...…
গভীর শ্রদ্ধা, গভীর বিশ্বাস, বিনয়, নির্জনতা, স্থিরতা, পরম একাগ্রতা সহকারে প্রতক্ষ্য উপলব্ধি যুক্ত ব্যাক্তির নিকট জ্ঞান উপদেশর দ্বারা উপলব্ধিজাত জ্ঞানকে পরোক্ষ জ্ঞান বলে ।
5. প্রত্যক্ষ্য জ্ঞান কাকে বলে ?
উত্তর :----
গভীর শ্রদ্ধা, গভীর বিশ্বাস, বিনয়, ধর্ম আচরণ , গুরু সেবা , দেশ ভক্তি , মাতৃ-পিতৃ সেবা ,নির্জনতা, স্থিরতা, নিষ্কামতা ,পরম একাগ্রতা সহকারে প্রতক্ষ্য উপলব্ধি যুক্ত মহান 32 লক্ষণ সম্পন্ন সদ্গুরুর নিকট দীক্ষা , বিদ্যা ,জ্ঞান উপদেশর পর কঠোর সাধনা -সমাধির দ্বারা উপলব্ধিজাত জ্ঞানকে প্রত্যক্ষ্য জ্ঞান বলে ।
6. প্রকৃত ধন কি ?
উত্তর: ---
যে সম্পত্তি আমার জন্মের আগে ও মৃত্যুর পরও আমার সঙ্গে থাকবে , যাকে আমি ত্যাগ করবো না বা যে আমাকে কোনো অবস্থায় ত্যাগ করবে না ---তাহাই আমার প্রকৃত সম্পত্তি বা প্রকৃত ধন বলে ।
7. প্রকৃত ধনী কে ?
উত্তর:--
যে প্রকৃত সম্পত্তি বা প্রকৃত ধন জন্মের আগে ও মৃত্যুর পরও যার সঙ্গে আছে --
এই রকম মহাধন যিনি লাভ করেছেন তিনিই প্রকৃত ধনী ।
যেমন টাকা-জমি-বাড়ি-স্ত্রী-সন্তান-মা-বাবা এরা কেউই জন্মের আগে ছিল না এবং মৃত্যুর পরও থাকবে না - কিন্তু যে গুরু প্রদত্ত বিদ্যা-জ্ঞান লাভের পর মনুষ্য পূর্ণত্ব ও মোক্ষ লাভ করে , যাহা মৃত্যুর পরে এবং পুনঃজন্মের সঙ্গেও বিদ্যমান থাকবে তাহাই প্রকৃত ধন।
8.প্রকৃতপক্ষে শাস্ত্রে "মহাশয়" কাকে বলে ?
উত্তর:---
যিনি সমস্ত ও অনন্ত আকাশ , ব্রম্ভান্ড , গ্রহ-নক্ষত্র , অগ্নি ,বায়ু , জল , মাটি , মন , বুদ্ধি , চিত্ত ,মহত্ব , অহংকার , অনবমল ,কর্মক্ষেত্র , কর্মবীজ , কর্মফলকে আশ্রয় দিয়েছেন তিনিই একমাত্র মহাশয় -- আর যিনি নিজেকে ওই মহাশয়ের সঙ্গে যুক্ত করতে পেরেছেন তাকেও শাস্ত্রানুসারে মানব এর মধ্যেই মহাশয় বলতে পারি ।
9. প্রকৃতপক্ষে শাস্ত্রে "নিরাশ্রয়" কাকে বলে ?
উত্তর :-----
সাধক যখন সাধন প্রভাবে মন ,চিন্তা-তরঙ্গ , বুদ্ধি , চিত্ত ,মহত্ব , অহংকার , দেহবোধ , সংস্কার , কর্মফল, বাসনা ,কল্পনা , পঞ্চতন্মাত্র ইত্যাদি সব প্রকারের আশ্রয় পূর্ণরূপে ত্যাগ করে থাকে, আর কোনো আশ্রয় থাকে না ,একমাত্র তখনি তাকে প্রকৃতপক্ষে শাস্ত্রে "নিরাশ্রয়" বলে ।
শাস্ত্রে আছে যে "নিরাশ্রয় মাং জগদীশ রক্ষ:" অর্থই শাস্ত্রানুসারে যদি কেউ উপরুক্ত নিরাশ্রয় হতে পারি তো নিশ্চয় জগদীশ তাকে নিজে রক্ষা করেন ।
10.প্রকৃতপক্ষে শাস্ত্রে "ভব বা ভবসাগর " কাকে বলে ?
উত্তর :---
শাস্ত্রে প্রকৃতপক্ষে যে কোনো জীবাত্মার কর্মবশতঃ বার বার জন্ম-মৃত্যুর যে অসীম চক্র রুপি সাগর -যা ক্রমশ চলতেই থাকে -যাহা পূর্ণ ব্রহ্মজ্ঞান না হওয়া পর্যন্ত পার করা যায় না - সেই জন্ম-মৃত্যু চক্র রুপি সাগরকেই শাস্ত্রে "ভব বা ভবসাগর " বলেছে ।