দীক্ষা
দীক্ষা কি? দীক্ষা গ্রহণ করার আবশ্যকতা কোথায়?
দীক্ষা সর্বকার্যে শুদ্ধিকারক। অদীক্ষিত কোন ব্যক্তি যদি আধ্যাত্মিকতার যেকোন কার্য করুক না কেন? তৎসমুদয়ের কোন মূল নেই। তাই প্রত্যেকে দীক্ষা গ্রহণ করা অবশ্যই উচিত। দীক্ষা ব্যতীত কোন ভক্তকে ভগবান নিজেও দর্শন দেন না তা শাস্ত্রে বিধিত আছে।অর্থাৎ যে বিদ্যা দানের মাধ্যমে বিমল জ্ঞান ( মলমুক্ত জ্ঞান অর্থাৎ ব্রহ্মজ্ঞান এর পথ ) লাভ হয় এবং বহু জন্মের কর্ম বাসনা ( আরাদ্ধ + সঞ্চিত কর্ম ) ক্ষয় বা নষ্ট এর পথ লাভ হয় তাকেই "দীক্ষা" বলে l
"দীক্ষা" শুধু কোনো কানে মন্ত্র দেওয়া-নেওয়া এর নাম নয় , পরম মুক্তির মূল পথ এর প্রথম প্রবেশ বলা হয় l
তাই "দীক্ষা" ছাড়া পরম মুক্তির মূল পথ এর প্রবেশ অধিকার হয় না , তাই শাস্ত্রানুসারে মূল দীক্ষা পদ্ধতি দ্বারা দীক্ষা না পেলে তাকে দীক্ষা পাওয়া বলে না l ওটাকে কল্পনা রুপি দীক্ষা ( কাল্পনিক দীক্ষা ) বা দীক্ষা এর নাম প্রতারণা বলে l
তাই শাস্ত্রানুসারে মূল দীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত তাকে দীক্ষা পাওয়া বলে না l
দীক্ষা কি?
দীয়ন্তে জ্ঞানমত্যন্তং ক্ষীয়তে পাপসঞ্চয়ঃ। তস্মাদ্ দীক্ষেতি সা প্রোক্তা মুনির্ভিস্তত্ত্বদর্শিভিঃ।।
দিব্যজ্ঞানং যতো দদ্যাৎ কৃত্যা পাপস্য সংক্ষয়ম্।
তস্মাদীক্ষেতি সা প্রোক্তা মুনির্ভিস্তত্ত্ববেদিভিঃ।। (রুদ্রযামল ও যোগিনী তন্ত্রে)
অনুবাদঃ যে কার্য পাপক্ষয় করিয়া দিব্য জ্ঞান প্রকাশ করে, তাহাই দীক্ষা। প্রকৃতপক্ষে দীক্ষার অর্থ বর্ণ বা শব্দ বিশেষ, শ্রবণ করা নহে। বর্ণ বা বর্ণগুলি শব্দব্রহ্ম বা নাদব্রহ্ম বলিয়া পরিকীর্তিত আছে। সেই শব্দব্রহ্ম বা নাদব্রহ্মই বর্ণ। সেই বর্ণই ভগবানের নাম। নাম এবং নামী অভেদ, কিছুই প্রভেদ নাই। এইভাবে যেই নাম বা মন্ত্র গ্রহণ করা হয় তাহাই দীক্ষা। যিনি নামে এবং মন্ত্র এ মন্ত্রের অভীষ্ট দেবতাকে এক ভাবেন, তিনি প্রকৃত দীক্ষিত। দীক্ষামন্ত্র গ্রহণ করিলে শব্দব্রহ্ম বা নাদব্রহ্ম অভীষ্ট দেবতার না হয় এবং হৃদয়ে নিজ ইষ্ট দেবতার ভাব উদ্দীপন না হয়, তবে সেইরূপে মন্ত্র বা দীক্ষা গ্রহণ করিয়া দীক্ষা বা মন্ত্র গ্রহণ শব্দ প্রয়োগ না করাই শ্রেয়ঃ। দৃঢ় বিশ্বাস বা ভক্তিই মূল।
দীক্ষা গ্রহণ করার আবশ্যকতাঃ
অদীক্ষিতাং লোকানাং দোষং শৃনু বরাননে।
অন্নং বিষ্ঠা সমং তস্য জলং মূত্র সমং স্মৃতম্।
যৎ কৃতৎ তস্য শ্রাদ্ধং সর্বং যাতিহ্যধোগতিম্।।১ (তথাহি মৎস্যর্সূক্তে)
অর্থঃ অদীক্ষিত ব্যক্তি অন্ন বিষ্ঠার সমান, জল মূত্রতুল্য। তাহারা শ্রাদ্ধাদি কার্য যাহা কিছু করে, তাহা সমস্তই বৃথা।
ন দীক্ষিতস্য কার্যং স্যাৎ তপোভির্নিয়মব্রতৈ।
ন তীর্থ গমনে নাপি চ শরীর যন্ত্রণৈঃ।।২
অদীক্ষিতা যো কুর্বন্তি তপো জপ পূজাদিকাঃ।
ন ভবতি ক্রিয়া তেষাং শিলায়ামুপ্ত বীজবৎ।।৩
অর্থঃ দীক্ষা গ্রহণ না করিলে কোন কার্য করিবার অধিকার জন্মে না। সেই জন্য জপ, তপ, নিয়ম, ব্রত, তীর্থ, ভ্রমণ উপবাসাদি শারীরিক কষ্ট দ্বারা কোন ফল দর্শিবে না। যিনি পরম মুক্তি লাভ করেছেন সেই রকম ৩২ লক্ষণ সম্পন্ন মহান সৎগুরু -মহাপুরুষ এর নিকটে গিয়ে - বহুদিন তার সঙ্গে করে , বহু দিন তার সেবা করে ,সেই মহাপুরুষ সেবাতে সন্তুষ্ট হয়েছেন এইরকম বুঝার পরে , সময়ানুকুল দেখেই তার নিকটে "দীক্ষা" প্রার্থনা করে , তিনি যদি "দীক্ষা" দিতে সম্মত হন ,তারপর তিনি যদি শাস্ত্রানুসারে আধার দেখে উপযুক্ত বিদ্যা দেন তাকে "দীক্ষা" বলে l
যদি কারো শাস্ত্র অনুসারে মহান সৎগুরু -মহাপুরুষ এর নিকটে দীক্ষা না হয় তাহলে জানতে হবে যে তার এখনো দীক্ষায় হয় নি l সে জোর করে নিজের মনকে বুঝিয়ে রেখেছে যে তার কোনো জায়গায় কোনো মন্ত্র কানে পেয়েছে- সেটাই দীক্ষা --- এটাকে শাস্ত্রে আত্মপ্রতারণা বলে অর্থাৎ শাস্ত্র অনুসারে মুল যে দীক্ষা পদ্ধতি তা হয় নি কিন্তু সে জোর করে একটা ধারণাই -কল্পনাই ধরে রেখেছে যে সে দীক্ষা নিয়েছে l
তাই শাস্ত্র জ্ঞান লাভ করে সত্য জেনে প্রকৃত দীক্ষা মহান সৎগুরু -মহাপুরুষ এর নিকটে নেন তবেই ওটা প্রকৃত দীক্ষা পাওয়া বলে নচেৎ ওটা একটা ভুল কাল্পনিক দীক্ষা l
অদীক্ষিতোহপি মরণে রৌরবং নরকং ব্রজেৎ।
অদীক্ষিতস্য মরণে পিশাচত্বং ন মুঞ্চতি।।
অদীক্ষিত ব্যক্তিগণ মৃত যদি হয়।
রৌরব নরকে বাস জানিবে নিশ্চয়।।
স্কন্ধ পুরাণেতে তার আছয়ে বর্ণন।
মৃত্যু পরে হবে তার পিশাচে জনম।।
দীক্ষা মূলং জপং সর্বং দীক্ষা মূলং পরং তপঃ।
দীক্ষামাশ্রিত্য নিবসেৎ কৃত্রশ্রমে বসদ্।।
জপ, তপ, তন্ত্র, মন্ত্র, দীক্ষা মূল হয়।
.
.সৎগুরু কি পদ্ধতিতে (কিভাবে ) দীক্ষা দেন ?
উত্তর :-
প্রথমে ধৰ্মপথে প্রতিষ্ঠিত কোনো ব্যাক্তি -32 লক্ষণ সম্পন্ন মহান সৎগুরু -মহাপুরুষ এর নিকটে গিয়ে - বহুদিন তার সঙ্গে করে , বহু দিন তার সেবা করে ,সেই মহাপুরুষ সেবাতে সন্তুষ্ট হয়েছেন এইরকম বুঝার পরে , সময়ানুকুল দেখেই তার নিকটে "দীক্ষা" প্রার্থনা করে , তিনি যদি "দীক্ষা" দিতে সম্মত হন --->>
তারপর সেই 32 লক্ষণ সম্পন্ন মহান সৎগুরু -মহাপুরুষ সেই ধৰ্মপথে প্রতিষ্ঠিত ব্যাক্তির "সমাধিযোগে দিব্যদৃষ্টি এর দ্বারা " কমপক্ষে তিন জন্ম এর "ধৰ্ম যুক্ত কর্ম ও আধার এবং ধর্মস্থিতি " দেখে - সেই ব্যাক্তির উপযুক্ত "মন্ত্র - গায়িত্রী - ব্রহ্মবিদ্যা" পশন্তিনাদ থেকে শাস্ত্রানুসারের নির্ণয় প্রথমে করেন l তারপর সেই ধৰ্মপথে প্রতিষ্ঠিত ব্যাক্তির গ্রহ-নক্ষত্র অনুসারে একান্তই তার শুভ তিথি-দিন দেখে "দীক্ষার" পদ্ধতি শুরু করেন l
সেই ধৰ্মপথে প্রতিষ্ঠিত ব্যাক্তিকে প্রথমে বেশ কিছুদিন "নাম , জপ ,স্তব-স্তুতি , আসন , স্নান , ব্রত, সুরৎযোগ,নাদানুসন্ধান, অজপা ক্রিয়া ,পুনশ্চরণ , শাস্ত্রজ্ঞানপাঠ, কীর্তন , স্মরণ-মনন" ইত্যাদি একে একে করানো হলে তার পর সেই ব্যাক্তি কতটা "মূল দীক্ষা" এর কতটা উপযুক্ত হয়েছে তার পরীক্ষা হয় বিভিন্ন পদ্ধতিতে l
সেই ব্যাক্তি কতটা "মূল দীক্ষা" এর কতটা উপযুক্ত হয়েছে এটা দেখতে হয় -- যদি দেখা যাই যে উপযুক্ত হয়েছে তবে "মূল দীক্ষা" এর পদ্ধতি শুরু হয় l
আর যদি দেখা যাই যে উপযুক্ত হয় নি তাহলে পুনরায় "নাম , জপ ,স্তব-স্তুতি , আসন , স্নান , ব্রত, সুরৎযোগ,নাদানুসন্ধান, অজপা ক্রিয়া ,পুনশ্চরণ , শাস্ত্রজ্ঞানপাঠ, কীর্তন , স্মরণ-মনন" ইত্যাদি একে একে করানো হয় ততদিন পর্যন্ত যতদিন না সে "মূল দীক্ষার" উপযুক্ত হয় l
একান্তই সেই ধৰ্মপথে প্রতিষ্ঠিত ব্যাক্তির শুভ তিথি-দিন দেখে "মূল দীক্ষার" দিনে প্রথমে গুরুদেব নিজে উত্তর দিকে মুখ করে বসেন এবং শিষ্য রুপি ব্যাক্তিকে পূর্ব দিকে মুখ করে বসতে হয় শাস্ত্রানুসারে , তারপর 32 লক্ষণ সম্পন্ন মহান সৎগুরু -মহাপুরুষ তার দিব্য যোগবলে " পশ্যন্তি নাদ " থেকে শিষ্য রুপি ব্যাক্তির ধৰ্ম যুক্ত কর্ম ও আধার এবং ধর্মস্থিতি উপযুক্ত "বীজমন্ত্র" নামিয়ে নিয়ে এসে শিষ্য রুপি ব্যাক্তির ডানকর্ণে ( মহিলাশিষ্য হলে তার বামকর্ণে ) দিব্য যোগবলে প্রবিষ্ট করিয়ে - সেই মন্ত্রকে " মূলাধার - অনাহত- আজ্ঞl চক্রে " সর্বদা জন্যে প্রতিষ্টিত করে দেন ----
1."মূলাধার" এ "পশ্যন্তি নাদ বীজমন্ত্র" প্রতিষ্টিত করা মাত্র কুলকুণ্ডলিনী মহাশক্তি জাগ্রত হয়ে যায় (সেটা শুদ্ধআধার যুক্ত শিষ্য দীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে অনুভব করে), [ সৎগুরুর নিকট "মূল দীক্ষা" না পেয়ে কেউ নিজে নিজে বহু জন্ম সাধনা করলেও নিস্কাম ধার্মিক মোক্ষদায়ী কুলকুণ্ডলিনী মহাশক্তি জাগ্রত করতে পারে না ]
2. "অনাহত" এ "পশ্যন্তি নাদ বীজমন্ত্র" প্রতিষ্টিত করা মাত্র শিষ্য এর শরীরে "অনাহত মন্ত্র ধ্বনি" জাগ্রত হয়ে যায় (সেটা শুদ্ধআধার যুক্ত শিষ্য দীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে শুনতে পায় ) , [সৎগুরুর নিকট "মূল দীক্ষা" না পেয়ে কেউ নিজে নিজে বহু জন্ম সাধনা করলেও নিস্কাম ধার্মিক মোক্ষদায়ি অনাহত মন্ত্র ধ্বনি জাগ্রত করে শুনতে পায় না ]
3."আজ্ঞl চক্রে" এ "পশ্যন্তি নাদ বীজমন্ত্র" প্রতিষ্টিত করা মাত্র শিষ্য এর দিব্যদৃষ্টির উন্মিলিত হয়ে যায় (সেটা শুদ্ধআধার যুক্ত শিষ্য দীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে বহু দিব্য দর্শন আরম্ভ হয়ে যায় ) ,[ দিব্যদৃষ্টির এর উপর জন্মাতরিন 16 টা আবরণ এর মধ্যে শুধু একটা আবরণ বাকি থাকে - সেটা শিষ্যকে নিজে সাধনা করে খুলতে হয়- আর 15 টা আবরণ মহান সৎগুরু -মহাপুরুষ তার দিব্য যোগবলে খুলে দেন l দিব্যদৃষ্টির এর উপর জন্মাতরিন 16 টা আবরণ সৎগুরুর নিকট "মূল দীক্ষা" না পেয়ে কেউ নিজে নিজে বহু জন্ম সাধনা করলেও খুলতে পারে না তাই শাস্ত্র লিখেছে যে - " চুক্ষু উর্মিলিতং যেন তস্মায়শ্রী গুরুবেই নমঃ ll "]
4. "মূলাধার থেকে সাহস্রার " পর্যন্ত সমস্থ সুষুন্মাতে ব্রহ্মবিদ্যা সর্বদা এর জন্যে প্রতিষ্টিত করে দেন l (সেটা শুদ্ধআধার যুক্ত শিষ্য দীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে আত্মসূর্য এর দর্শন করতে পারে এবং এই আত্মসূর্য সর্বদা তাকে ভিতর থেকে পথ দেখতে থাকে ) , [সৎগুরুর নিকট "মূল দীক্ষা" না পেয়ে কেউ নিজে নিজে বহু জন্ম সাধনা করলেও নিস্কাম ধার্মিক মোক্ষদায়ি আত্মসূর্য কখনো দেখতে পায় না ]
5.গায়িত্রী মন্ত্র লাভ : 32 লক্ষণ সম্পন্ন মহান সৎগুরু -মহাপুরুষ "মূল দীক্ষার ' সময় মূল গায়িত্রী মন্ত্র দেন তাতে শিষ্যর সঙ্গে সঙ্গে "দ্বিজত্ব" প্রাপ্তি হয় - তার ফলে শিষ্য সামাজিক ভাবে যে জাতিতেই জন্ম নেক না কেন সে "দ্বিজত্ব" প্রাপ্তি হেতু শাস্ত্রোক্ত সব পূজা -হোম এ অধিকারী প্রাপ্ত হয় এবং শাস্ত্রোক্ত সব কর্মের অধিকারী হয় l
32 লক্ষণ সম্পন্ন মহান সৎগুরু -মহাপুরুষ এর নিকটে "মূল দীক্ষা" প্রাপ্তিতে উপরুক্ত মহান অবস্থা প্রাপ্ত হয় ও মোক্ষপথের অধিকারী হয় l যেটা 32 লক্ষণ সম্পন্ন মহান সৎগুরু -মহাপুরুষ এর নিকটে "মূল দীক্ষা" প্রাপ্তি ছাড়া কখনোই সম্ভব হয় না - কোনো কিছুতেই না - কোনো ভাবেই হয় না l এটা একমাত্র বেদান্তের শাস্ত্র বিধান এ দ্বারা প্রাপ্তি হয় l
তাই সৎগুরুর নিকট "মূল দীক্ষা" না পেয়ে বা প্রকৃত গুরুকরণ না করে যদি কেউ নিজে নিজে বহু জন্ম সাধনা করলেও নিস্কাম ধার্মিক মোক্ষদায়ী বিদ্যা না পেয়ে কারো আত্মগতি লাভ কোনো কারণেই হয় না l তাই কেউ যদি ভাবে যে আমি কাল্পনিক দীক্ষা বা প্রকৃত গুরুকরণ না করে নিয়ে ধৰ্ম - আত্মজ্ঞান লাভ করবো তার তুলনায় মূর্খ খুব কম হবে l
******************************************************************************
তাই বার বার বলা হচ্ছে যে নিজের বুদ্ধিতে না চলে শাস্ত্র বুদ্ধিতে চলে কখনো আত্মা প্রতারনার শিকার হতে হয় না l তাই বেদান্তে 32 লক্ষণ সম্পন্ন মহান সৎগুরু -মহাপুরুষ এর নিকটে দীক্ষার বিধান দেওয়া আছে l
তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত যে নিজের বুদ্ধিতে না চলে বেদান্তের শাস্ত্র বুদ্ধিতে চলা l
তাহলে স্তর অনুসারে শিষ্যর কর্তব্য মূল দীক্ষা পর্যন্ত :-----
1.পূর্ণ রূপে ধৰ্ম আচরণ
2. 32 লক্ষণ সম্পন্ন মহান মহাপুরুষ সন্ধান
3. 32 লক্ষণ সম্পন্ন মহান মহাপুরুষ এর সেবা দ্বারা সন্তুষ্টি অর্জন
4. 32 লক্ষণ সম্পন্ন মহান মহাপুরুষ এর সেবা দ্বারা সন্তুষ্টি অর্জন দ্বারা দীক্ষার সম্মতি প্রার্প্ত হওয়া
5. মহাপুরুষ এর আদেশ এ প্রাথমিক দীক্ষা গ্রহণ (নামদীক্ষা , জপদীক্ষা ,স্তব-স্তুতিদীক্ষা , আসনদীক্ষা , ব্রতদীক্ষা, সুরৎযোগদীক্ষা,নাদানুসন্ধানদীক্ষা, অজপা ক্রিয়াদীক্ষা ,পুনশ্চরণদীক্ষা , শাস্ত্রজ্ঞানপাঠদীক্ষা, ইত্যাদি 24 প্রকারের দীক্ষা আছে " -- এগুলিকে প্রাথমিক দীক্ষা বলে )
6.প্রাথমিক দীক্ষা দ্বারা মূল দীক্ষা এর উপযুক্ত যোগ্যতা লাভ
7. মূল দীক্ষা / ব্রহ্মদীক্ষা গ্রহণ ( "মন্ত্র - গায়িত্রী - ব্রহ্মবিদ্যা-দিব্যচুক্ষুলাভ -আত্মসূর্য এর দর্শন-অনাহত মন্ত্র ধ্বনি লাভ )
এই উপরুক্ত ৭ টি স্তর ক্রমান্বয়ে পার করে "মূল দীক্ষা" লাভ হয় l
অনেকে আবার প্রাথমিক দীক্ষা গুলির কোনো একটা বা দুটো প্রাথমিক দীক্ষা লাভ করে ঐটাকেই মূল দীক্ষা ভেবে ভুল করবেন না l কারণ প্রাথমিক দীক্ষা শুধু মুলদীক্ষা লেভার উপযুক্ত যোগ্যতা করে -- এই গুলিকে মূল দীক্ষা বলে না l কোনো কোনো অবস্থায় শুধু "বীজমন্ত্র -গায়িত্রী-কিছু ক্রিয়া" দীক্ষাকেও
প্রাথমিক দীক্ষা বলে - যদি না ওই দীক্ষা গুলির সঙ্গে "কুলকুণ্ডলিনী মহাশক্তি জাগরণ ,অনাহত মন্ত্র ধ্বনি লাভ , আত্মসূর্য এর দর্শন এবং দিব্যচুক্ষুলাভ" না হয় l
মোট কথা বীজমন্ত্র -গায়িত্রী- ক্রিয়াদীক্ষা এর সঙ্গে সঙ্গে "কুলকুণ্ডলিনী মহাশক্তি জাগরণ ,অনাহত মন্ত্র ধ্বনি লাভ , আত্মসূর্য এর দর্শন এবং দিব্যচুক্ষুলাভ" হলে বা গুরুদেব কৃপা করে দিলেই একমাত্র তাকেই " মূলদীক্ষা / ব্রহ্মদীক্ষা " বলা হবে শাস্ত্র অনুসারে l
" মূলদীক্ষা / ব্রহ্মদীক্ষা " লাভ করলে অবশ্যাই উপরুক্ত সব লাভ হবেই ল
যার " মূলদীক্ষা / ব্রহ্মদীক্ষা " হয়েছে তার অবশ্যই "কুলকুণ্ডলিনী মহাশক্তি জাগরণ ,বীজমন্ত্র -গায়িত্রী- ক্রিয়াদীক্ষা ,অনাহত মন্ত্র ধ্বনি লাভ , আত্মসূর্য এর দর্শন এবং দিব্যচুক্ষুলাভ" হয়েছে জানতে হবে l
যদি কারো না হয়েছে তাহলে জানতে হবে যে তার এখনো " মূলদীক্ষা / ব্রহ্মদীক্ষা " হয় নি , শুধু প্রাথমিক দীক্ষাই হয়েছে l
*****************************************************************************************************************************************
4. সৎগুরু এর নিকটে "মূলদীক্ষা / ব্রহ্মদীক্ষা" প্রাপ্তির পর কি কি লাভ হয় ?
উত্তর :-
1.কুলকুণ্ডলিনী মহাশক্তি জাগরণ ঘটে
2.ইষ্টমন্ত্র রুপি জন্ম- জন্মের বীজমন্ত্র লাভ হয়
3.গায়িত্রী মন্ত্র লাভ হয়
4.আত্মক্রিয়া বিদ্যা লাভ হয়
5.অনাহতধ্বনি লাভ হয়
6.অজপা লাভ হয়
7. আত্মসূর্যর দর্শন লাভ হয়
8. দিব্যচুক্ষুলাভ বা দিব্যদৃষ্টির এর উপর 16 এর মধ্যে 15 টা আবরণ উন্মোচন হয়
9. ব্রহ্মবিদ্যা লাভ হয়
10.মূলাধার থেকে সাহস্রার " পর্যন্ত সমস্থ সুষুন্মাতে ব্রহ্মবিদ্যা সর্বদা এর জন্যে প্রতিষ্টিত হওয়া যায়
11.পরম মোক্ষ এর পথ লাভ হয়
12 গুরু নিজের সঙ্গে শিষ্যকে যুক্ত করে - মোক্ষ পর্যন্ত গুরুর সঙ্গে করুনা সম্পক লাভ হয়
13. দীক্ষার সঙ্গে সঙ্গেই দ্বিজত্ব প্রাপ্তি হয়
14. "কারণশরীর" জাগ্রত হওয়া শুরু হয়ে যায়
15. "সুক্ষশরীর বা প্রেতশরীর " দগ্ধ হওয়া শুরু হয়ে যায়
16. অমাকলা-চন্দ্রাসুধা লেভার পথ খুলে যায়
17. "সঞ্চিতকর্ম " দগ্ধ হওয়া শুরু হয়ে যায়
18. "আরাধ্হকর্ম" এর পথ চিরতরে বন্ধ হওয়া শুরু হয়ে যায়
19. জন্ম- জন্মের কে আমার "ইস্ট" ও " লক্ষ্য" - সেটা চিনতে বা জানতে পারা যায়
20 সদা-সর্বদা জন্যে আমার "ইস্ট " আমার সগেই আছেন এটা অনুভব করা যায়
21. চিন্তার চপলতা ও দিক্ভ্রষ্টতা দূর হয়ে এক সুষম ধারা ও দিক তৈরি হয়
22. গুরুশক্তির প্রভাবে ধর্মে প্রকৃত দৃঢ়তা তৈরি হয়
23. গুরু শক্তির সুরক্ষা তৈরি সবদিক দিয়ে
24. গুরুর কৃপা দৃষ্টি লাভ হয়
উপরুক্ত এই 24 প্রকার এর পরিবর্তন শুরু হয়ে যায়-- 32 লক্ষণ সম্পন্ন মহান সৎগুরু -মহাপুরুষ এর নিকটে "মূলদীক্ষা / ব্রহ্মদীক্ষা" হওয়া সঙ্গে সঙ্গেই l
তাহলে আমাদের প্রত্যেকের চিন্তা করা উচিত যে ---
১.যিনি নিজে মুক্তি লাভ করেন নি --তিনি কি করে মুক্তির পথ দেখবেন ???
২. যার নিজের কুণ্ডলী জাগ্রত হয় নি তিনি কি ভাবে অপরের কুণ্ডলী জাগ্রত করবেন ???
৩.যার নিজের দিব্যদৃষ্টি লাভ হয় নি তিনি কি ভাবে অপরের দিব্যচক্ষু এর আবরণ দূর করবেন ???
৪.যার নিজের চিন্তার চপলতা ও দিক্ভ্রষ্টতা দূর হয় নি , সে অপরের চিন্তার চপলতা ও দিক্ভ্রষ্টতা দূর কি ভাবে করবেন ???
৫.যার নিজের মূলাধার থেকে সাহস্রার " পর্যন্ত সমস্থ সুষুন্মাতে ব্রহ্মবিদ্যা সর্বদা এর জন্যে প্রতিষ্টিত হন নি তিনি অপরের কিভাবে করবেন ???
৬. যার নিজের আত্মসূর্যর দর্শন লাভ হয় নি ,,, সে কিভাবে অপরকে আত্মসূর্যর দর্শন লাভ কি ভাবে করবেন ???
৭. যার নিজের আত্মক্রিয়া বিদ্যা লাভ হয় নি তিনি কিভাবে অপরকে আত্মবিদ্দ্যা দিবেন ???
তাই শাস্ত্র থেকে জানুন , যার এই গুলো নিজের লাভ হয় নি সে কিভাবে সমাজের মধ্যে কিছু ধর্মপ্রাণলোককে ধর্মের নাম প্রতারণা করছে ????
তাই বৈদিক প্রকৃত শাস্ত্র জ্ঞান লাভ করে নিজেকে আত্মউন্নতির পথে নিয়ে চলুন যার নিজেকে ধর্মের গ্লানি থেকে , প্রতারণা থেকে দূরে রাখুন l
*********************************************************************************************
শৈব মন্ত্র, শক্তি মন্ত্র, বিষ্ণুমন্ত্র,গণেশ মন্ত্র, সূর্য মন্ত্র বা যে কোন দেবদেবীর বীজমন্ত্রের দীক্ষা এ সব তন্ত্র শাস্ত্রেরই অন্তর্গত তবে বেদের সূর্য গায়ত্রী মন্ত্র বৈদিক মন্ত্র । তন্ত্রোক্ত বীজমন্ত্রের দীক্ষা+ বীজগায়ত্রী ছাড়া ব্রহ্মজ্ঞান এর পথে সাধনের উন্নতি করা সম্ভব নয় —----তর্ক- যুক্তিতে ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করা যায় না। তাই বৈদিক ধর্মআচার-অনুশাসন এর সঙ্গে তন্ত্রোক্ত দীক্ষা ও সাধনা এবং বৈদিক ব্রহ্মবিদ্যার কঠোর যোগ সাধনার দ্বারাই ব্রহ্ম-জ্ঞানের বিকাশ হয়। ব্রহ্ম-জ্ঞান লাভ করার জন্যে তন্ত্র এবং বৈদিক–এই দুই পদ্ধতির সমন্বয়ে মানসিক ও আধ্যাত্মিক ধর্মআচার-অনুশাসন এবং সাধনার প্রয়োজন। তাই তন্ত্র বাদ দিয়ে শুধু বৈদিক অথবা বৈদিক বাদ দিয়ে শুধু তন্ত্র সাধনায় পূর্ণব্রহ্ম জ্ঞানলাভ করা কারো পক্ষে সম্ভব নয় । তাই তন্ত্র + বৈদিক ধর্মআচার-অনুশাসন এবং সাধনার –এই দুই পদ্ধতির সমন্বয়ে পূর্ণব্রহ্ম জ্ঞানলাভ করা কারো পক্ষে সম্ভব ।
(বলা বাহুল্য যে তন্ত্রের আভিচারিক দিক সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করিয়া শুধু শুদ্ধ-দিব্য শৈব্যাগমতন্ত্রের বীজ+ গায়ত্রী এবং সাধনা অত্যন্ত আবশ্যক)
***********************************************
সৎগুরু এর নিকটে "মূলদীক্ষা / ব্রহ্মদীক্ষা" প্রাপ্তির পর কি কি লাভ হয় ?
উত্তর :-
1.কুলকুণ্ডলিনী মহাশক্তি জাগরণ ঘটে
2.ইষ্টমন্ত্র রুপি জন্ম- জন্মের বীজমন্ত্র লাভ হয়
3.গায়িত্রী মন্ত্র লাভ হয়
4.আত্মক্রিয়া বিদ্যা লাভ হয়
5.অনাহতধ্বনি লাভ হয়
6.অজপা লাভ হয়
7. আত্মসূর্যর দর্শন লাভ হয়
8. দিব্যচুক্ষুলাভ বা দিব্যদৃষ্টির এর উপর 16 এর মধ্যে 15 টা আবরণ উন্মোচন হয়
9. ব্রহ্মবিদ্যা লাভ হয়
10.মূলাধার থেকে সাহস্রার " পর্যন্ত সমস্থ সুষুন্মাতে ব্রহ্মবিদ্যা সর্বদা এর জন্যে প্রতিষ্টিত হওয়া যায়
11.পরম মোক্ষ এর পথ লাভ হয়
12 গুরু নিজের সঙ্গে শিষ্যকে যুক্ত করে - মোক্ষ পর্যন্ত গুরুর সঙ্গে করুনা সম্পক লাভ হয়
13. দীক্ষার সঙ্গে সঙ্গেই দ্বিজত্ব প্রাপ্তি হয়
14. "কারণশরীর" জাগ্রত হওয়া শুরু হয়ে যায়
15. "সুক্ষশরীর বা প্রেতশরীর " দগ্ধ হওয়া শুরু হয়ে যায়
16. অমাকলা-চন্দ্রাসুধা লেভার পথ খুলে যায়
17. "সঞ্চিতকর্ম " দগ্ধ হওয়া শুরু হয়ে যায়
18. "আরাধ্হকর্ম" এর পথ চিরতরে বন্ধ হওয়া শুরু হয়ে যায়
19. জন্ম- জন্মের কে আমার "ইস্ট" ও " লক্ষ্য" - সেটা চিনতে বা জানতে পারা যায়
20 সদা-সর্বদা জন্যে আমার "ইস্ট " আমার সগেই আছেন এটা অনুভব করা যায়
21. চিন্তার চপলতা ও দিক্ভ্রষ্টতা দূর হয়ে এক সুষম ধারা ও দিক তৈরি হয়
22. গুরুশক্তির প্রভাবে ধর্মে প্রকৃত দৃঢ়তা তৈরি হয়
23. গুরু শক্তির সুরক্ষা তৈরি সবদিক দিয়ে
24. গুরুর কৃপা দৃষ্টি লাভ হয়
উপরুক্ত এই 24 প্রকার এর পরিবর্তন শুরু হয়ে যায়-- 32 লক্ষণ সম্পন্ন মহান সৎগুরু -মহাপুরুষ এর নিকটে "মূলদীক্ষা / ব্রহ্মদীক্ষা" হওয়া সঙ্গে সঙ্গেই l
তাহলে আমাদের প্রত্যেকের চিন্তা করা উচিত যে ---
১.যিনি নিজে মুক্তি লাভ করেন নি --তিনি কি করে মুক্তির পথ দেখবেন ???
২. যার নিজের কুণ্ডলী জাগ্রত হয় নি তিনি কি ভাবে অপরের কুণ্ডলী জাগ্রত করবেন ???
৩.যার নিজের দিব্যদৃষ্টি লাভ হয় নি তিনি কি ভাবে অপরের দিব্যচক্ষু এর আবরণ দূর করবেন ???
৪.যার নিজের চিন্তার চপলতা ও দিক্ভ্রষ্টতা দূর হয় নি , সে অপরের চিন্তার চপলতা ও দিক্ভ্রষ্টতা দূর কি ভাবে করবেন ???
৫.যার নিজের মূলাধার থেকে সাহস্রার " পর্যন্ত সমস্থ সুষুন্মাতে ব্রহ্মবিদ্যা সর্বদা এর জন্যে প্রতিষ্টিত হন নি তিনি অপরের কিভাবে করবেন ???
৬. যার নিজের আত্মসূর্যর দর্শন লাভ হয় নি ,,, সে কিভাবে অপরকে আত্মসূর্যর দর্শন লাভ কি ভাবে করবেন ???
৭. যার নিজের আত্মক্রিয়া বিদ্যা লাভ হয় নি তিনি কিভাবে অপরকে আত্মবিদ্দ্যা দিবেন ???
তাই শাস্ত্র থেকে জানুন , যার এই গুলো নিজের লাভ হয় নি সে কিভাবে সমাজের মধ্যে কিছু ধর্মপ্রাণলোককে ধর্মের নাম প্রতারণা করছে ????
তাই বৈদিক প্রকৃত শাস্ত্র জ্ঞান লাভ করে নিজেকে আত্মউন্নতির পথে নিয়ে চলুন যার নিজেকে ধর্মের গ্লানি থেকে , প্রতারণা থেকে দূরে রাখুন l