বাংলার ১২ মাসের মধ্যে ফাল্গুন মাস বিষ্ণু ও শিব ভক্তদের অনুকূল বলে মনে করা হয়। ঠিক এই কারনেই বিষ্ণু ও শিবের মন্দিরে হাজার হাজার ভক্তদের সমাগম হয়ে থাকে। কারণ এই মাসেই পালিত সকল ব্রতের সেরা শিবচতুর্দশী ব্রত বা মহাশিবরাত্রি ব্রত। তাই এই মাসে নিষ্ঠা সহকারে কয়েকটি বিশেষ নিয়ম পালন করে দেবাদিদেব মহাদেব তুষ্ট হন সহজেই। তাই ফাল্গুন মাস জুড়ে মেনে চলুন এই সাধারণ নিয়মগুলি তাহলেই ঈশ্বরের কৃপাদৃষ্টি বজায় থাকবে আপনার উপর। জেনে নেওয়া যাক সেই নিয়মগুলি- 1.ফাল্গুন মাসের প্রতিদিন সন্ধ্য়াবেলা পূর্ব পুরুষের উদ্দেশে প্রদীপ দান করুন। পুরো মাস এই নিয়ম পালন করুন প্রতিদিন সন্ধ্যে বেলা। 2.সম্ভব হলে প্রতি সোমবার সকালে স্নান সেরে শিবলিঙ্গে জল ঢালুন। তিনটি নিঁখুত বেলপাতা ও বাতাসা দিলেই তুষ্ট হন মহাদেব। 3.প্রদীপ জ্বালিয়ে এক মনে স্মরণ করুন মহাদেবের, আরাধনা করুন। মহাদেব সন্তুষ্ট হলে আপনার সকল মনোবাঞ্ছা পূরণ করবেন। 4.এই মাসে কোনও দুঃস্থ ব্যক্তি সাহায্য চাইলে তাকে ফেরাবেন না। সাধ্যমত দান করুন, সব সময় আর্থিক দান হতে হবে তা নয়। আপনার যেমন সাধ্য সেই মতই দান করুন। 5.পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন বাড়ির আনাচ-কানাচ, এই মাসে ঘর-বাড়ির কোনও অংশ নোংরা করে রাখবেন না। 6.সেই সঙ্গে বাড়ির প্রধান দরজার সামনে সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই ঘর থেকে কেউ বাইরে যাওয়ার আগে দরজার সামনের অংশ জল দিয়ে ধুয়ে দিন। পুরো ফাল্গুন মাস জুড়ে পালন করুন এই কটি নিয়ম। তাহলেই ঈশ্বরের কৃপাদৃষ্টি বজায় থাকবে আপনার উপর। জীবনের সমস্ত বাধা কাটিয়ে উঠতে পারবেন সহজেই। ফাল্গুন মাস জুড়ে পালন করুন এই নিয়ম, সমস্ত বাধা কাটিয়ে উঠতে পারবেন সহজেই
শিবরাত্রিতে ভুলেও এই কাজগুলি করবেন না-রুষ্ট হবেন মহাদেব পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে মহাশিবরাত্রির উৎসব পালন .. করা হবে। মানা হয় যে, মহাশিবরাত্রি ভগবান শিবের উপাসনার জন্য সর্বোচ্চ দিন বলে মনে করা হয়। আজকে মহাশিবরাত্রির ব্রত রাখবেন সকলে। এইদিন ব্রত যাঁরা রাখেন তাঁদের কিছু বিশেষ নিয়ম পালন করে চলতে হয়— মহাশিবরাত্রির ব্রত রাখার সময় কোন কোন কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কালো পোশাক নয় মহাশিবরাত্রির সময় স্নান না করে কিছু খাবেন না। ব্রত যদি নাও রাখেন তাও স্নান করে খাবার গ্রহণ করবেন না। মহাশিবরাত্রির দিন কালো রঙের পোশাক এইদিন কালো রঙের পোশাক পরাকে অশুভ বলে মনে করা হয়। এর পাশাপাশি শিবলিঙ্গে অর্পণ করা প্রসাদও খাবেন না, কারণ এতে দুভাগ্য আসতে পারে। এর পাশাপাশি শিবলিঙ্গে অর্পণ করা প্রসাদও খাবেন না, কারণ এতে দুভাগ্য আসতে পারে। এরকম করলে অর্থের ঘাটতি হতে পারে। এই জিনিসগুলি খাবেন না শিবরাত্রির উৎসবে চাল, ডাল বা গমের তৈরি কোনও খাবার সেবন করবেন না। ব্রতের সময় আপনি দুধ বা ফল খেতে পারেন। সূর্যাস্তের পর কিছুই খাওয়া চলবে না। এইদিন সকালে তাড়াতাড়ি উঠে স্নান করে দেহ ও মনকে শুদ্ধ করে নিন। এই কাজের মাধ্যমেই দিনের শুরুটা করুন। রাতে ঘুমোবেন না শিবরাত্রির সময় খুব বেশিক্ষণ সকালে শুয়ে থাকবেন না এবং রাতের সময় না ঘুমিয়ে কাটানোই এই ব্রতের নিয়ম। রাত জাগার সময় ভগবান শিবের ভজন শুনতে পারেন এবং আরতি করতে পারেন। ব্রতের পরের দিন সকালে স্নান করে প্রসাদ গ্রহণ করে শিবজিকে তিলক লাগিয়ে তবেই এই ব্রত খোলা যেতে পারে। শিবলিঙ্গে কুমকুম দেবেন না শিবলিঙ্গে কখনও কুমকুমের তিলক লাগাবেন না। মহাশিবরাত্রির সময় ভোলেনাথকে প্রসন্ন করার জন্য চন্দনের টিকা লাগানো যেতে পারে। মাতা পার্বতী ও গণেশ মূর্তিতে কুমকুমের টিকা লাগানো যেতে পারে। ভাঙা অক্ষত ব্যবহার করবেন না ভগবান শিবের পুজোয় কখনও ভুলেও ভাঙা চাল অর্পণ করবেন না। অক্ষতের অর্থ হল অটুট চাল, এটি পূর্ণতার প্রতীক। অক্ষতের অর্থ হল অটুট চাল, এটি পূর্ণতার প্রতীক। তাই শিবজিকে অক্ষত অর্পণ করার সময় এটা দেখে নেবেন যে যেন সেটা কোনওভাবেই ভাঙা না হয়। শিবরাত্রির ব্রত সকালে শুরু হয় এবং পরের দিন সকাল পর্যন্ত থাকে। ব্রতের সময় ফল ও দুধের সেবন করা উচিত, তবে সূর্যাস্তের পর কিছুই খাওয়ার নিয়ম নেই। কেতকী ফুল দেবেন না ভঘবান শিবকে ভুলেও কেতকী ও চাঁপা ফুল অর্পণ করবেন না। বিশ্বাস করা হয় যে এই ফুলগুলিকে ভগবান শিব শাপ দিয়েছিলেন। কেতকী ফুল সাদা হওয়া সত্ত্বেও তা ভগবান শিবের পুজোয় ব্যবহার হয় না। ছেঁড়া বেলপাতা শিবরাত্রিতে তিন পাতা সম্পন্ন বেলপাতা অর্পণ করতে হবে। ছেঁড়া-ফাটা বেলপাতা ব্যবহার করা চলবে না শিবের এই বিশেষ পুজোয়।
<--- অর্ঘ্য ---> চন্দন, জল, পুষ্প, আতপ চাল, কুশ, তিল, দূর্বা, সরিসা, যব। <--- পঞ্চামৃত বা মধুপর্ক ---> দধি, দুধ, ঘৃত, মধু, দেশী চিনি, একসঙ্গে মিশ্রিত করে মধুপর্ক তৈরি করা হয়। ----- মধুপর্ক শোধন মন্ত্র :----- ওঁ মধু বাতা ঋতায়তে মধু ক্ষরন্তি সিন্ধবঃ। মাধ্বীর্নঃ সন্তোষধীঃ।। ওঁ মধু নক্ত সু তো ষ সো। মধু মৎ পার্থিবং রজঃ। মধু দ্যৌ রস্তু নঃ পিতা। ওঁ মধুমান্নো বনস্পতি স্মধুমান অন্তু সূর্যঃ মাধ্বীগা ভবন্তু নঃ।। ওঁ মধু ওঁ মধু ওঁ মধু _______ ________ ----- অগ্নি জ্বালাবার মন্ত্র :----- ওঁ অগ্নিমিলে পুরোহিতং যজ্ঞস্য দেব মৃত্বিজম্। হোতারং রত্নধাতম্।। ----- দীপ জ্বালাবার মন্ত্র :----- ওঁ সুপ্রকাশো মহাদীপ সর্বতস্তি মীরাপহঃ সবাহ্য অভ্যন্তর জ্যোতি দীপ হয়ং প্রতি গৃহ্যতাম। ইতি দীপ।। -----ধূপ জ্বালাবার মন্ত্র :----- ওঁ বনস্পতি রসো দিব্যো গন্ধাতোঃ সুমনোহরঃ আঘ্ৰেয়ঃ সর্বদেবানং ধূপো হয়ং প্রতি গৃহ্যতাম। ইতি ধূপ।। _______ ________ <--- গোপীচন্দন শুদ্ধি এবং মৃত্তিকা শুদ্ধি ---> ওঁ অশ্বক্রান্তে রথক্রান্তে বিষ্ণক্রান্তে বসুন্ধরে। মৃত্তিকা হরমে পাপং যন্ময়া দুস্কৃতং কৃতম।। নমোঃ মাধবো মাধবো বাচি মাধবো মাধবো হৃদি। স্মরন্তি সাধবঃ সর্ব সর্বকার্যেষু মাধবঃ নমঃ শ্রী মাধবঃ॥ ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু _______ ________ <--- আচমন ---> প্রথমে মুখে জলের তিনবার ছিটা দিয়ে ও মুখে হাত দিয়ে মুছে আচমন করিবে। তারপর তর্জনী, মধ্যমা ও বৃদ্ধাঙ্গুলি মিলিত করে মুখ স্পর্শ করিবে। বৃদ্ধাঙ্গুলি ও তর্জনী দ্বারা নাসিকা স্পর্শ করিবে। বৃদ্ধাঙ্গুলি ও অনামিকা দ্বারা চক্ষুদ্বয় ও পরে কর্ণদ্বয় স্পর্শ করিবে। বৃদ্ধাঙ্গুলি ও কনিষ্ঠা দ্বারা নাভিদেশ স্পর্শ করিবে। হস্তদল দ্বারা হৃদয় স্পর্শ করিবে। সমস্ত অঙ্গুলীর দ্বারা মস্তক স্পর্শ করিবে। অঙ্গুলীর অগ্রভাগ দ্বারা বাহুদ্বয় স্পর্শ করিবে। এবং শুচি হইবে । -----[উপরোক্ত সমস্ত কাজটি বিষ্ণুস্মরণ করিতে করিতে করতে হবে]----- ----- বিষ্ণুস্মরণ মন্ত্র :----- ওঁ বিষ্ণুঃ ওঁ বিষ্ণুঃ ওঁ বিষ্ণুঃ ওঁ তদবিষ্ণু পরমং পদম্ সদা পশ্যন্তি সুরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম্ ।। • পরে হাত জোড় করে :----- ওঁ শঙ্খ চক্র ধরং বিষ্ণু দ্বিভূজং পীত বাসসম্। নমঃ অপবিত্র পবিত্রো বা সর্বাবস্থাং গতোহপি বা । যঃ স্মরেৎ পুণ্ডরীকাক্ষং স বাহ্য অভ্যন্তরঃ শুচিঃ নমঃ সর্বমঙ্গল মঙ্গল্যং বরেণ্যং বরদং শুভম্ । নারায়ণং নমস্কৃত্য সর্বকর্মাণী কারয়ে ।। নমোঃ মাধবো মাধবো বাচি মাধবো মাধবো হৃদি। স্মরন্তি সাধবঃ সর্ব সর্বকার্যেষু মাধবঃ নমঃ শ্রী মাধবঃ॥ _______ ________ " বং এতেভ্য গন্ধাদিভ্য নমঃ " ( এই মন্ত্রে ৩ বার ফুল ও চন্দনে জলের ছিটা দাও ) <----- স্বস্তি বাচন -----> ওঁ স্বস্তি ন ইন্দ্রো বৃদ্ধশ্রবাঃ স্বস্তি নঃ পূষা বিশ্ববেদাঃ । স্বস্তি নস্তার্ক্ষ্যো অরিষ্টনেমিঃ স্বস্তি নো বৃহস্পতিদধাতু। ওঁ গণানাং ত্বা গণপতি হঁং হবামহে ওঁ প্রিয়াণাং ত্বা প্রিয়পতি হঁং হবামহে ওঁ নিধিনাং ত্বা নিধিপতি হঁং হবামহে। বসো মম॥ ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি <----- সুক্ত মন্ত্র -----> ওঁ দেবো বো দ্রবিণোদাঃ পূর্ণাং বিবষ্ট্বাসিচম্। উদ্বা সিঞ্চধ্বমুপ বা পৃণধ্বমাদিদ্বো দেব ওহতে॥ ওঁ অয়মারম্ভ শুভায় ভবতু। <----- আসন শুদ্ধি -----> আসনের নিচে ভূমিতে ত্রিকোণ মন্ডল আঁকিয়া পরে একটি ফুল নিয়ে বলিবে :--- মন্ত্র:--- ওঁ হ্রীং আধার শক্তয়ে কমলাসনায় নমঃ পরে আসনে একটি গন্ধ পুষ্প দিয়া বলিবে :--- মন্ত্র:--- 'ওঁ আসন মন্ত্রস্য মেরু পৃষ্ঠ ঋষিঃ সুতলং ছন্দঃ কূৰ্ম্মো দেবতা আসনোপবেশনে বিনিয়োগঃ।' 'ওঁ পৃথ্বি ত্বয়া ধৃতা লোকাঃ দেবি ত্বং বিষ্ণুনা ধৃতা। ত্বঞ্চ ধারয় মাং নিত্যং পবিত্রং কুরু চাসনম ॥' পরে হাত জোড়ে বামদিকে ঝুঁকে বলিবে :--- মন্ত্র:--- ওঁ গুরুভ্যো নমঃ ওঁ পরম গুরুভ্যো নমঃ ওঁ পরাপর গুরুভ্যো নমঃ ওঁ সশক্তি গুরুভ্যো নমঃ ওঁ পরমেষ্টি গুরুভ্যো নমঃ _______ ________ দক্ষিণ দিকে ঝুঁকে বল:--- ওঁ গনেশায় নমঃ মাথার ওপরে :--- ও ব্রহ্মণে নমঃ নিচের দিকে :--- ওঁ অনন্তায় নমঃ বুকের কাছে:--- ও নারায়ণায় নমঃ ওঁ সত্য নারায়ণায় নমঃ <----- কর শুদ্ধি -----> একটি রক্ত বর্ণ পুষ্প গ্রহণ করিয়া ওঁ মন্ত্রে কর দ্বারা পেষণ করিয়া "হে সৌ" মন্ত্রে ঐ পুষ্প ঈশান কোণে ফেলিবে । <----- করন্যাস -----> আং অঙ্গুষ্ঠাভ্যাং নমঃ [ উভয়হস্তের তর্জ্জনী অঙ্গুলী দ্বারা উভয় হস্তের অঙ্গুষ্ঠ স্পর্শ করিবে] ঈং তর্জ্জনীভ্যাং স্বাহা [ অঙ্গুষ্ঠদ্বারা উভয় হস্তের তর্জ্জনী স্পর্শ করিবে] উং মধ্যমাভ্যাং বষট্ [ অঙ্গুষ্ঠদ্বারা উভয় হস্তের মধ্যমা স্পর্শ করিবে] ঐং অনামিকাভ্যাং হূং [ অঙ্গুষ্ঠদ্বারা উভয় হস্তের অনামিকা স্পর্শ করিবে] ঔং কনিষ্ঠাভ্যাং বৌষট্ [ অঙ্গুষ্ঠদ্বারা উভয় হস্তের কনিষ্ঠা স্পর্শ করিবে] অঃ করতল পৃষ্ঠাভ্যা মন্ত্রায় ফট্ [ তর্জ্জনী ও মধ্যমা অঙ্গুলির দ্বারা বাম হস্তের তলদেশে করতল ধ্বনি করিবে] <----- অঙ্গন্যাস -----> আং হৃদয়ায় নমঃ। ঈং শিরসে স্বাহা। উং শিখায়ৈ বষট্। ঐং কবচায় হূং। ঔং নেত্রাভ্যাং বৌষট্। অঃ করতল পৃষ্ঠাভ্যা মন্ত্রায় ফট্। [ তর্জ্জনী ও মধ্যমা দ্বারা বাম হস্তের তলদেশে বেষ্টন করিয়া করতল ধ্বনি করিবে। ] _______ ________ <----- পুষ্প শুদ্ধি -----> পুষ্প পাত্রে হাত রেখে বল:--- মন্ত্র :--- ওঁ পুষ্পে পুষ্পে মহাপুষ্পে সুপুষ্পে পুষ্প সম্ভবে। পুষ্প চয়াবকীর্ণে চ হূং ফট্ স্বাহা॥ <----- ভূমি শুদ্ধি -----> গন্ধ পুষ্প ভূমিতে ফেলিতে ফেলিতে বলিবে:- মন্ত্র :--- ওঁ আঁধার শক্তয়ে নমঃ ওঁ কূর্ম্মায় নমঃ ওঁ অনন্তায় নমঃ ওঁ পৃথিবৌ নমঃ এবার ' ফট ' বলিয়া পাত্র ধুবে । পরে ত্রিকোণ মন্ডল আঁকিয়া তাম্র পাত্রটি রাখিবে । পাত্রটি রাখার পর ওঁ মন্ত্র বলিয়া পাত্রে জল দিবে । এবং ফুল দিয়ে মন্ত্র বলিতে বলিতে পূজা করিবে। মন্ত্র :--- ওঁ মং বহির্মন্ডলায় দশ কলাত্মনে নমঃ অং সূর্য মন্ডলায় দ্বাদশ কলাত্মনে নমঃ উং সোম মন্ডলায় ষোড়শ কলাত্মনে নমঃ ---(উপরোক্ত পদ্ধতির দ্বারা কোষাকুশী শুদ্ধ করিতে হবে)--- <----- জল শুদ্ধি -----> একটি ত্রিকোণ মণ্ডল আঁকিয়া তার উপর একটি চতুষ্কোণ আকিয়া কোষায় জল ভরিয়া ও চন্দনযুক্ত ফুল ও বিল্ব পত্র দিয়া অঙ্কুশ মুদ্রার দ্বারা জল স্পর্শ করিয়া বল :- মন্ত্র :--- ওঁ গঙ্গে চ যমুনে চৈব গোদাবরি সরস্বতি। নর্মদে সিন্ধু কাবেরি জলে হস্মিন্ সন্নিধিং কুরু ।। _______ ________ ' ওঁ ' মন্ত্রে জলে গন্ধ পুষ্প দিয়া 'বং' মন্ত্রে ধেনুমুদ্রা দেখাইয়া মৎস মুদ্রা দ্বারা ঢাকিয়া নিজের " বীজ মন্ত্র " দশবার জপ করিবে। জল শুদ্ধির পর ঐ জল বিল্বপত্র দ্বারা পূজোর উপাচারে ও নিজের মাথায় ছিটাইবে । <----- ভূতাপসারণ -----> এই মন্ত্র বলার সময় শ্বেত সরিষা অথবা আতপ চাল মাথার চারিদিকে ছড়াইবে। মন্ত্র :--- ওঁ অপসর্পন্তু তে ভূতাঃ যে ভূতাঃ ভূমি সংস্থিতাঃ । যে ভূতা বিঘ্ন কর্তারস্তে নশ্যন্তু শিবজ্ঞয়া ।। এবার মস্তকের উপর তিনবার "ফট" মন্ত্রে করতালি দিয়া ভূত অপসারণ ও "তুড়ি" দিয়া দশদিক বন্ধন করিবে। <----- ভূত শুদ্ধি -----> নিজের চারিদিকে জলধারা দিয়া 'বং' মন্ত্র উচ্চারন করিয়া হাত জোড় হাত করে বল :----- মন্ত্র :--- ওঁ মূল শৃঙ্গাটাচ্ছিরঃ সুষুম্না পথেন জীব শিবং পরম শিব পদে যোজয়ামি স্বাহা। ওঁ যং লিঙ্গ শরীরং শোষয় শোষয় স্বাহা। ওঁ রং সংকোচং শরীরং দহ দহ স্বাহা। ওঁ পরম শিব সুষুম্না পথেন মূল শৃঙ্গাট মূল্ল সোল্লস জ্বল জ্বল প্রজ্বল প্রজ্বল হংস সোহহং স্বাহা। <----- প্রাণায়াম -----> ডান হাতের অঙ্গুষ্ট দ্বারা ডান নাক বন্ধ করে 'ওঁ নমঃ শিবায়' বা 'ওঁ' মন্ত্রে 'চার' বার জপ করিতে করিতে বা নাকে শ্বাস নিবে। তারপর ১৬ বার জব করতে করতে শ্বাস রুদ্ধ রাখবে। পরে ৮ বার জপ করতে করতে শ্বাস ত্যাগ করবে। এইরকম তিনবার করতে হবে। _______ ________ <----- সুর্যার্ঘ্য -----> কুশীর মধ্যে দূর্বা চন্দন পুষ্প জল বেলপাতা দু হাতে ধরে বলবে:--- মন্ত্র :--- ওঁ বিবস্বতে ব্রাহ্মণ ভাস্বতে বিষ্ণু তেজসে জগৎ সবিত্রে শুচয়ে সবিত্রে কর্মদায়িতে। ইদ্দমর্ঘং ওঁ নমো ভগবতে শ্রী সূর্যায় নমঃ।। ওঁ এহি সূর্য্য সহস্রাংশে তেজোরাসে জগৎপতে। অনুকম্পায় মাং ভক্তং গৃহাণার্ঘং দিবাকর ॥ জল তাম্র পাত্রে ফেলে দিয়ে হাত জোড় করে বল :--- ওঁ জবা কুসুম সঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম । ধ্বান্তারিং সর্ব পাপঘ্নং প্রণতোহস্মি দিবাকরম্।। <----- দ্বারদেবতা পূজা -----> পুষ্প নিয়ে - " এতে গন্ধে পুষ্পে ওঁ দ্বারদেবতাভ্যোঃ নমঃ " বলিয়া পুষ্প দ্বারে ফেলিবে। --- এতে গন্ধ পুষ্পে ওঁ ব্রাহ্মণে নমঃ এতে গন্ধ পুষ্পে ওঁ বাস্তু পুরুষায় নমঃ <----- পঞ্চ দেবতার পূজা -----> এতে গন্ধ পুষ্পে ওঁ গনেশায় নমঃ। ( তাম্র পাত্রে পুষ্প দাও ) এতে গন্ধ পুষ্পে ওঁ সূর্যায় নমঃ। ( তাম্র পাত্রে পুষ্প দাও ) এতে গন্ধ পুষ্পে ওঁ বিষ্ণুবে নমঃ। ( তাম্র পাত্রে পুষ্প দাও ) এতে গন্ধ পুষ্পে ওঁ শিবায় নমঃ। ( তাম্র পাত্রে পুষ্প দাও ) এতে গন্ধ পুষ্পে ওঁ দূর্গায় নমঃ। ( তাম্র পাত্রে পুষ্প দাও ) এতে গন্ধ পুষ্পে ওঁ শ্রী গুরুবে নমঃ। ( তাম্র পাত্রে পুষ্প দাও ) এতে গন্ধ পুষ্পে ওঁ ওঁ আদিত্যাদি নবগ্রভ্যো নমঃ ( তাম্র পাত্রে পুষ্প দাও ) এতে গন্ধ পুষ্পে ওঁ ইন্দ্রাদি দশদিকপালেভ্যো নমঃ ( তাম্র পাত্রে পুষ্প দাও ) এতে গন্ধ পুষ্পে ওঁ সর্বদেব দেবীভ্যোঃ নমঃ ( তাম্র পাত্রে পুষ্প দাও ) এতে গন্ধ পুষ্পে ওঁ পিতৃ লোকভৈঃ নমঃ ( তাম্র পাত্রে পুষ্প দাও ) এতে গন্ধ পুষ্পে ওঁ সর্ব ঋষি লোকভৈঃ নমঃ ( তাম্র পাত্রে পুষ্প দাও ) _______ ________ (প্রতি প্রহরে মৃত্তিকা দ্বারা নুতন নুতন মূর্তি তৈরি করে মূর্তিন্যাস করতে হবে -) <----- মূর্তিন্যাস -----> অঙ্গুষ্ঠ যোগে তর্জনী দ্বয়ে - নং তৎপুরুষায় নমঃ। কমন অঙ্গুষ্ঠ যোগে মধ্যমা দ্বয়ে - মং অখোরায় নমঃ। দ্বিতীয় অঙ্গুষ্ঠ যোগে কনিষ্ঠা দ্বয়ে - শিং সদ্যজাতায় নমঃ। চতুর্থ অঙ্গুষ্ঠ যোগে অনামিকা দ্বয়ে - বাং বামদেবতায় নমঃ। তৃতীয় তর্জনী যোগে অঙ্গুষ্ঠ দ্বয়ে - য়ং ঈশানায় নমঃ। প্রথম <----- পূজার সংকল্প -----> কোষাকুশীতে হরতকি ফুল চন্দন দুর্গা ধান যব আতপ চাল নিয়ে উত্তর অথবা পূর্ব দিক কোণে ধারণ করে বলতে হবে। ওঁ বিষ্ণুরোম্ তৎ সদ্ অদ্য ফাল্গুন মাসি কুম্ভ রাশিস্থ ভাষ্করে কৃষ্ণপক্ষে শিব চতুর্দ্দশ্যাং তিথৌ __ গোত্র __ নাম শিবলোক প্রাপ্তি কামঃ যথা শক্ত্যু পচারনাং শিব পূজা তদ্ ব্রতকথা পাঠ জাগরনোপবাস কর্ম্মাহং করিষ্যে। <----- শিবের ধ্যান -----> ওঁ ধ্যায়েন্নিত্যং মহেশং রজতগিরিনিভং চারুচন্দ্রাবতংসম। রত্নাকল্পোজ্জ্বলাঙ্গং পরশুমৃগবরা ভীতি হস্তং প্রসন্নম্। পদ্মাসীনং সমস্তাং স্তুত মমরগণৈ ব্যাঘ্রকৃত্তিং বসানম। বিশ্বাদ্যং বিশ্ববীজং নিখিলভয়হরং পঞ্চবক্রম ত্রিনেত্রম্।। _______ ________ ------ [[[ প্রথম প্রহর ]]] ------ <----- শিব পূজা -----> ১. এতদ পাদ্যং ওঁ নমঃ ঈশানায় নমঃ। (তাম্র পাত্রে জল দাও) ২. ওঁ শিবরাত্রি ব্রতং দেব পূজা জপ পরায়ণঃ । করোমি বিধিবদ্দত্তং গৃহাণার্ঘ্যং মহেশ্বরঃ।। (তাম্র পাত্রে অর্ঘ দিবে) ৩. ইদম্ আচমনীয়ং জলং ওঁ নমঃ ঈশানায় নমঃ।। (তাম্র পাত্রে জল দাও) ৪. এস মধুপর্ক ওঁ নমঃ ঈশানায় নমঃ।। (তাম্র পাত্রে মধুপর্ক দাও) ৫. দুগ্ধ দ্বারা স্নান করাইতে করাইতে বল ----> মন্ত্র :--- ইদং স্নানীয়ং দুগ্ধং ওঁ ঈশানায় নমঃ। ইদং স্নানীয়ং জলং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।
ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।।
ওঁ সর্বায় ক্ষিতি মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ ভবায় জল মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ রুদ্রায় অগ্নি মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ উগ্রায় বায়ু মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ ভীমায় আকাশ মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ পশুপতয়ে যজমান মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ মহাদেবায় সোম মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ ইশানায় সূর্য মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায় ।। • এস গন্ধ ওঁ নমঃ ওঁ ঈশানায় নমঃ। (তাম্র পাত্রে জলের ছিটা দাও) • এতদ পুষ্পং ওঁ নমঃ ওঁ ঈশানায় নমঃ। (তাম্র পাত্রে পুষ্প দাও) • এস ধূপ ওঁ নমঃ ওঁ ঈশানায় নমঃ। (ধূপ আরতির মতো দেখাও) • এস দীপ ওঁ নমঃ ওঁ ঈশানায় নমঃ। (দীপ আরতির মতো দেখাও) • এস বস্ত্র ওঁ নমঃ ওঁ ঈশানায় নমঃ। (বস্ত্র আরতির মতো দেখা) • এস জলশঙ্খ ওঁ নমঃ ওঁ ঈশানায় নমঃ। (জলশঙ্খ আরতির মতো দেখাও) • এস চামর ওঁ নমঃ ওঁ ঈশানায় নমঃ। (চামর আরতির মতো দেখাও) <----- পুষ্পাঞ্জলি -----> 'এস সচন্দন বিল্বপত্র পুষ্পাঞ্জলি ওঁ নমঃ ঈশানায় নমঃ। (৩ বার) <----- ভোগ নিবেদন -----> ওঁ বং এতস্মৈ সোপকরণান্নায় নমঃ (ভোগ থালার উপর জলের ছিটা দাও) এতে গন্ধ পুষ্পে ওঁ এতস্মৈ সোপকরণান্নায় নমঃ (ভোগ থালার উপর পুষ্প দাও) ওঁ অমৃতোপস্তরণমসি স্বাহা (তাম্র পাত্রে জল দাও) ইদম্ আচমনীয়ং জলং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ (তাম্র পাত্রে জল দাও) ইদম্ পানার্থ জলং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ (গ্লাসে জল দাও) এতে গন্ধ পুষ্পে এষ সোপকরণ ফলং মিষ্টি নৈবেদ্য ওঁ সরস্বত্যৈঃ নমঃ (ফল মিষ্টি তে পুষ্প দাও) এস সোপকরণ ফলং মিষ্টি নৈবিদ্যং পঞ্চ প্রাণে স্বাহা ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ । ( বাম হাতটিকে গ্লাসের মতো করে অন্য হাতে কুশীতে জল নিয়ে নৈবিদ্যের থালার উপর দিতে হবে । তারপর ১০ বার জপ কর )---> '' ইদম পুনরাচমনীয়ং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ । (তাম্র পাত্রে জল দাও) <----- প্রণাম -----> ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্ৰয় হেতবে। নিবেদয়ামি চাত্মানং ত্বং গতিঃ পরমেশ্বর॥ অবিঘ্নেন ব্রতং দেব ত্বৎ প্রসাদাত সমর্পিতং। ক্ষমস্ব জগতাং নাথ ত্রৈলক্যাধিপতে হর॥ যন্ময়াদ্য কৃতং পূণ্যাং তদ্রুদ্রস্য নিবেদিতং। ত্বৎপ্রসাদ্যন্ময়া দেব ব্রতমদ্য সমাপিতং॥ প্রসন্নো ভব মে শ্ৰীমন্ মদ্ভক্তিঃ প্রতিপাদ্যতাং । তদালোকেন মাত্রেণ পবিত্রোহষ্মি নঃ সংশয়ঃ৷৷ _______ ________ ------ [[[ দ্বিতীয় প্রহর ]]] ------ <----- শিব পূজা -----> ১. এতদ পাদ্যং ওঁ নমঃ অঘোরায় নমঃ ৷৷ (তাম্র পাত্রে জল দাও) ২. ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় সর্ব্বপাপহরায় চ ৷ শিবরাত্রৌ দদমর্ঘ্যং প্রসীদ উমায় সহ ৷৷ (তাম্র পাত্রে অর্ঘ দিবে) ৩. ইদম্ আচমনীয়ং জলং ওঁ নমঃ অঘোরায় নমঃ ৷৷ (তাম্র পাত্রে জল দাও) ৪. এস মধুপর্ক ওঁ নমঃ অঘোরায় নমঃ ৷৷ (তাম্র পাত্রে মধুপর্ক দাও) ৫. দধি দ্বারা স্নান করাইতে করাইতে বল ----> মন্ত্র :--- ইদং স্নানীয়ং দধিং ওঁ নমঃ অঘোরায় নমঃ।। ইদং স্নানীয়ং জলং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।
ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।।
ওঁ সর্বায় ক্ষিতি মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ ভবায় জল মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ রুদ্রায় অগ্নি মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ উগ্রায় বায়ু মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ ভীমায় আকাশ মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ পশুপতয়ে যজমান মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ মহাদেবায় সোম মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ ইশানায় সূর্য মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায় ।। • এস গন্ধ ওঁ নমঃ অঘোরায় নমঃ। (তাম্র পাত্রে জলের ছিটা দাও) • এতদ পুষ্পং ওঁ নমঃ অঘোরায় নমঃ। (তাম্র পাত্রে পুষ্প দাও) • এস ধূপ ওঁ নমঃ অঘোরায় নমঃ। (ধূপ আরতির মতো দেখাও) • এস দীপ ওঁ নমঃ অঘোরায় নমঃ। (দীপ আরতির মতো দেখাও) • এস বস্ত্র ওঁ নমঃ অঘোরায় নমঃ। (বস্ত্র আরতির মতো দেখা) • এস জলশঙ্খ ওঁ নমঃ অঘোরায় নমঃ। (জলশঙ্খ আরতির মতো দেখাও) • এস চামর ওঁ নমঃ অঘোরায় নমঃ। (চামর আরতির মতো দেখাও) <----- পুষ্পাঞ্জলি -----> 'এস সচন্দন বিল্বপত্র পুষ্পাঞ্জলি ওঁ নমঃ অঘোরায় নমঃ। (৩ বার) <----- ভোগ নিবেদন -----> ওঁ বং এতস্মৈ সোপকরণান্নায় নমঃ (ভোগ থালার উপর জলের ছিটা দাও) এতে গন্ধ পুষ্পে ওঁ এতস্মৈ সোপকরণান্নায় নমঃ (ভোগ থালার উপর পুষ্প দাও) ওঁ অমৃতোপস্তরণমসি স্বাহা (তাম্র পাত্রে জল দাও) ইদম্ আচমনীয়ং জলং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ (তাম্র পাত্রে জল দাও) ইদম্ পানার্থ জলং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ (গ্লাসে জল দাও) এতে গন্ধ পুষ্পে এষ সোপকরণ ফলং মিষ্টি নৈবেদ্য ওঁ সরস্বত্যৈঃ নমঃ (ফল মিষ্টি তে পুষ্প দাও) এস সোপকরণ ফলং মিষ্টি নৈবিদ্যং পঞ্চ প্রাণে স্বাহা ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ । ( বাম হাতটিকে গ্লাসের মতো করে অন্য হাতে কুশীতে জল নিয়ে নৈবিদ্যের থালার উপর দিতে হবে । তারপর ১০ বার জপ কর )---> '' ইদম পুনরাচমনীয়ং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ । (তাম্র পাত্রে জল দাও) <----- প্রণাম -----> ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্ৰয় হেতবে। নিবেদয়ামি চাত্মানং ত্বং গতিঃ পরমেশ্বর॥ অবিঘ্নেন ব্রতং দেব ত্বৎ প্রসাদাত সমর্পিতং। ক্ষমস্ব জগতাং নাথ ত্রৈলক্যাধিপতে হর॥ যন্ময়াদ্য কৃতং পূণ্যাং তদ্রুদ্রস্য নিবেদিতং। ত্বৎপ্রসাদ্যন্ময়া দেব ব্রতমদ্য সমাপিতং॥ প্রসন্নো ভব মে শ্ৰীমন্ মদ্ভক্তিঃ প্রতিপাদ্যতাং । তদালোকেন মাত্রেণ পবিত্রোহষ্মি নঃ সংশয়ঃ৷৷ _______ ________ ------ [[[ তৃতীয় প্রহর ]]] ------ <----- শিব পূজা -----> ১. এতদ পাদ্যং ওঁ নমঃ বাম দেবায় নমঃ ৷৷ (তাম্র পাত্রে জল দাও) ২. ওঁ দুঃখ দারিদ্র্য শোকেন্ দগ্ধোহহং পার্বতী প্রিয়। শিবরাত্রৌ দদাম্যর্ঘ্যং উমাকান্ত গৃহাণ মে।। (তাম্র পাত্রে অর্ঘ দিবে) ৩. ইদম্ আচমনীয়ং জলং ওঁ নমঃ বাম দেবায় নমঃ ৷৷ (তাম্র পাত্রে জল দাও) ৪. এস মধুপর্ক ওঁ নমঃ বাম দেবায় নমঃ ৷৷ (তাম্র পাত্রে মধুপর্ক দাও) ৫. ঘৃত দ্বারা স্নান করাইতে করাইতে বল ----> মন্ত্র :--- ইদং স্নানীয়ং ঘৃতং ওঁ নমঃ বাম দেবায় নমঃ।। ইদং স্নানীয়ং জলং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।
ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।।
ওঁ সর্বায় ক্ষিতি মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ ভবায় জল মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ রুদ্রায় অগ্নি মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ উগ্রায় বায়ু মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ ভীমায় আকাশ মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ পশুপতয়ে যজমান মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ মহাদেবায় সোম মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ ইশানায় সূর্য মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায় ।। • এস গন্ধ ওঁ নমঃ বাম দেবায় নমঃ। (তাম্র পাত্রে জলের ছিটা দাও) • এতদ পুষ্পং ওঁ নমঃ বাম দেবায় নমঃ। (তাম্র পাত্রে পুষ্প দাও) • এস ধূপ ওঁ নমঃ বাম দেবায় নমঃ। (ধূপ আরতির মতো দেখাও) • এস দীপ ওঁ নমঃ বাম দেবায় নমঃ। (দীপ আরতির মতো দেখাও) • এস বস্ত্র ওঁ নমঃ বাম দেবায় নমঃ। (বস্ত্র আরতির মতো দেখা) • এস জলশঙ্খ ওঁ নমঃ বাম দেবায় নমঃ। (জলশঙ্খ আরতির মতো দেখাও) • এস চামর ওঁ নমঃ বাম দেবায় নমঃ। (চামর আরতির মতো দেখাও) <----- পুষ্পাঞ্জলি -----> 'এস সচন্দন বিল্বপত্র পুষ্পাঞ্জলি ওঁ নমঃ বাম দেবায় নমঃ। (৩ বার) <----- ভোগ নিবেদন -----> ওঁ বং এতস্মৈ সোপকরণান্নায় নমঃ (ভোগ থালার উপর জলের ছিটা দাও) এতে গন্ধ পুষ্পে ওঁ এতস্মৈ সোপকরণান্নায় নমঃ (ভোগ থালার উপর পুষ্প দাও) ওঁ অমৃতোপস্তরণমসি স্বাহা (তাম্র পাত্রে জল দাও) ইদম্ আচমনীয়ং জলং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ (তাম্র পাত্রে জল দাও) ইদম্ পানার্থ জলং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ (গ্লাসে জল দাও) এতে গন্ধ পুষ্পে এষ সোপকরণ ফলং মিষ্টি নৈবেদ্য ওঁ সরস্বত্যৈঃ নমঃ (ফল মিষ্টি তে পুষ্প দাও) এস সোপকরণ ফলং মিষ্টি নৈবিদ্যং পঞ্চ প্রাণে স্বাহা ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ । ( বাম হাতটিকে গ্লাসের মতো করে অন্য হাতে কুশীতে জল নিয়ে নৈবিদ্যের থালার উপর দিতে হবে । তারপর ১০ বার জপ কর )---> '' ইদম পুনরাচমনীয়ং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ । (তাম্র পাত্রে জল দাও) <----- প্রণাম -----> ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্ৰয় হেতবে। নিবেদয়ামি চাত্মানং ত্বং গতিঃ পরমেশ্বর॥ অবিঘ্নেন ব্রতং দেব ত্বৎ প্রসাদাত সমর্পিতং। ক্ষমস্ব জগতাং নাথ ত্রৈলক্যাধিপতে হর॥ যন্ময়াদ্য কৃতং পূণ্যাং তদ্রুদ্রস্য নিবেদিতং। ত্বৎপ্রসাদ্যন্ময়া দেব ব্রতমদ্য সমাপিতং॥ প্রসন্নো ভব মে শ্ৰীমন্ মদ্ভক্তিঃ প্রতিপাদ্যতাং । তদালোকেন মাত্রেণ পবিত্রোহষ্মি নঃ সংশয়ঃ৷৷ _______ ______ ------ [[[ চতুর্থ প্রহর ]]] ------ <----- শিব পূজা -----> ১. এতদ পাদ্যং ওঁ নমঃ সদ্য জাতায় নমঃ ৷৷ (তাম্র পাত্রে জল দাও) ২. ওঁ ময়া কৃতান্যনেকানি পাপানি হর শঙ্করঃ । শিবরাত্রৌ দদাম্যর্ঘ্যং উমাকান্ত গৃহাণ মে।। (তাম্র পাত্রে অর্ঘ দিবে) ৩. ইদম্ আচমনীয়ং জলং ওঁ নমঃ সদ্য জাতায় নমঃ ৷৷ (তাম্র পাত্রে জল দাও) ৪. এস মধুপর্ক ওঁ নমঃ সদ্য জাতায় নমঃ ৷৷ (তাম্র পাত্রে মধুপর্ক দাও) ৫. মধু দ্বারা স্নান করাইতে করাইতে বল ----> মন্ত্র :--- ইদং স্নানীয়ং মধু ওঁ নমঃ সদ্য জাতায় নমঃ।। ইদং স্নানীয়ং জলং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।
ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।।
ওঁ সর্বায় ক্ষিতি মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ ভবায় জল মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ রুদ্রায় অগ্নি মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ উগ্রায় বায়ু মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ ভীমায় আকাশ মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ পশুপতয়ে যজমান মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ মহাদেবায় সোম মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ ইশানায় সূর্য মূর্তয়ে নমঃ ।।
ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায় ।। • এস গন্ধ ওঁ নমঃ সদ্য জাতায় নমঃ। (তাম্র পাত্রে জলের ছিটা দাও) • এতদ পুষ্পং ওঁ নমঃ সদ্য জাতায় নমঃ। (তাম্র পাত্রে পুষ্প দাও) • এস ধূপ ওঁ নমঃ সদ্য জাতায় নমঃ। (ধূপ আরতির মতো দেখাও) • এস দীপ ওঁ নমঃ সদ্য জাতায় নমঃ। (দীপ আরতির মতো দেখাও) • এস বস্ত্র ওঁ নমঃ সদ্য জাতায় নমঃ। (বস্ত্র আরতির মতো দেখা) • এস জলশঙ্খ ওঁ নমঃ সদ্য জাতায় নমঃ। (জলশঙ্খ আরতির মতো দেখাও) • এস চামর ওঁ নমঃ সদ্য জাতায় নমঃ। (চামর আরতির মতো দেখাও) <----- পুষ্পাঞ্জলি -----> এস সচন্দন বিল্বপত্র পুষ্পাঞ্জলি ওঁ নমঃ সদ্য জাতায় নমঃ। (৩ বার) <----- ভোগ নিবেদন -----> ওঁ বং এতস্মৈ সোপকরণান্নায় নমঃ (ভোগ থালার উপর জলের ছিটা দাও) এতে গন্ধ পুষ্পে ওঁ এতস্মৈ সোপকরণান্নায় নমঃ (ভোগ থালার উপর পুষ্প দাও) ওঁ অমৃতোপস্তরণমসি স্বাহা (তাম্র পাত্রে জল দাও) ইদম্ আচমনীয়ং জলং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ (তাম্র পাত্রে জল দাও) ইদম্ পানার্থ জলং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ (গ্লাসে জল দাও) এতে গন্ধ পুষ্পে এষ সোপকরণ ফলং মিষ্টি নৈবেদ্য ওঁ সরস্বত্যৈঃ নমঃ (ফল মিষ্টি তে পুষ্প দাও) এস সোপকরণ ফলং মিষ্টি নৈবিদ্যং পঞ্চ প্রাণে স্বাহা ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ । ( বাম হাতটিকে গ্লাসের মতো করে অন্য হাতে কুশীতে জল নিয়ে নৈবিদ্যের থালার উপর দিতে হবে । তারপর ১০ বার জপ কর )---> '' ইদম পুনরাচমনীয়ং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ । (তাম্র পাত্রে জল দাও) <----- প্রণাম -----> ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্ৰয় হেতবে। নিবেদয়ামি চাত্মানং ত্বং গতিঃ পরমেশ্বর॥ অবিঘ্নেন ব্রতং দেব ত্বৎ প্রসাদাত সমর্পিতং। ক্ষমস্ব জগতাং নাথ ত্রৈলক্যাধিপতে হর॥ যন্ময়াদ্য কৃতং পূণ্যাং তদ্রুদ্রস্য নিবেদিতং। ত্বৎপ্রসাদ্যন্ময়া দেব ব্রতমদ্য সমাপিতং॥ প্রসন্নো ভব মে শ্ৰীমন্ মদ্ভক্তিঃ প্রতিপাদ্যতাং । তদালোকেন মাত্রেণ পবিত্রোহষ্মি নঃ সংশয়ঃ৷৷ _______ _______ <----- শিবের ধ্যান -----> ওঁ ধ্যায়েন্নিত্যং মহেশং রজত গিরিনিভ্যং চারু চন্দ্রাবতং সম রত্নাকল্পোজ্জ্বলাঙ্গং পরশু মৃগবরা ভীতিহস্তং প্রসন্নম্ পদ্মাসীনং সমন্তাং স্তুতমমরগণৈ র্ব্যাঘ্রকৃত্তিং বসানম । বিশ্বদ্যং বিশ্ববীজং নিখিল ভয় হরং পঞ্চবক্তং ত্রিনেত্রম্ ।। ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ _______ ________ <----- শিব প্রণাম মন্ত্র -----> ওঁ নমস্তুভ্যং বিরুপাক্ষ । নমস্তে দিব্য চাক্ষুষে । নমঃ পিনাক হস্তায় বজ্র হস্তায় বৈ নমঃ। নমঃ ত্রিশুল হস্তায় দন্ড পাশাসি পানয়ে। নমস্তৈলোক্য নাথায় ভূতানাং পতয়ে নমঃ। নমো শিবায় শান্তায় কারন ত্রয় হেতবে। নিবেদয়ামি চাত্মানং ত্বং গতি পরমেশ্বর।। নমস্যে ত্বাং মহাদেব লোকানাং গুরুমীশ্বরম পুংসাম পূর্ণকামানাং কাম পুরামরাঙ্খিপম ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় সর্ব্বপাপ হরায় চ । নমঃ শিবায় নমঃ। ওঁ শরনাগত দীনার্ত পবিত্রানায় পরায়নে সর্ব্বস্মার্তে হরে দেবী নারায়ণী নমস্তুতে। হরে দেবী নমঃ শিবায় নমঃ ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ _______ ________ -----[ শিবাষ্টক স্তোত্রম ]----- প্রভু মীশ মণীশ মহেশ গুণং গুণ হীন মহীশ গরলাভরণম্। রণ নির্জিত দুর্জয় দৈত্যপুরং প্রণমামি শিবং শিবকল্পতরুম।। গিরিরাজ সুতান্বিত বামতনুং তনু নিন্দিত রাজিত কোটিবিধুম্ বিধি বিষ্ণু শিরোধৃত পাদযুগং প্রণমামি শিবং শিবকল্পতরুম্।। শশলাঞ্ছিত রঞ্জিত সম্মুকুটং কটি লম্বিত সুন্দর কৃত্তিপটং। সুরশৈবালিনী কৃত পূত জটং প্রণমামি শিবং শিব কল্পতরুম।। নয়নত্রয় ভূষিত চারুমুখং মুখপদ্ম বিনিন্দিত কোটি বিধুম্। বিধুখন্ড বিখন্ডিত ভল তটং প্রণমামি শিবং শিব কল্পতরুম৷৷ বৃষ রাজ নিকেতন মাদি গুরুং গরলাসন মাজি বিষান ধরম। প্রমথাধিপ সেবক রঞ্জন কং প্রণমামি শিবং শিব কল্পতরুম৷৷ মকরধ্বজ মও মাতঙ্গ হরং করিচম্মগ নাগ বিবোধকরম্। বরমার্গণ শূল বিষান ধরং প্রণমামি শিবং শিব কল্পতরুম৷৷ জগদুদ্ভব পালন নাশকরং ত্রিদিবেশ শিরোমণি ঘৃষ্টপদম্। প্ৰিয়মানব সাধু জনৈক গতিং প্রণমামি শিবং শিব কল্পতরুম৷৷ অনাথং সুদীনং বিভো বিশ্বনাথ পুনর্জন্ম দুঃখাত পরিত্রাহি শম্ভো। ভজতোহখিল দুঃখ সমূহহরং প্রণমামি শিবং শিব কল্পতরুম৷৷ ইতি শিবাষ্টকং স্তোত্রম সম্পূর্ণম্ ।। _______ ________ -----[ শিবরাত্রি ব্রতকথা ]----- কৈলাস ভূধরে দেব বৃষভাবন। গৌরীসহ বসিয়া করেন আলাপন।। ফল পুষ্পে সুশোভিত পর্বত কৈলাস। যক্ষ রক্ষঃ গন্ধর্বগণের নিত্য বাস।। রবির কিরণ পড়ি শিখরে তাহার। মলিন করিয়া দেয় বরন সোনার।। আনন্দে পার্ব্বতি সতী জিজ্ঞাসেন শিবে। কহ দেব! কোন ধর্ম শ্রেষ্ঠ হয় ভবে।। কিবা ব্রত অনুষ্ঠানে কোন্ তপস্যায়। ধর্ম অর্থ কাম মোক্ষ চতুর্বর্গ হয়।। এরূপ কি পূণ্য কর্ম আছে সুবিদিত। জাহা দ্বারা লাভ হয় সকল বাঞ্ছিত।। মর্ত্তবাসী তোমাকে তুষিতে ধরা তলে। অনায়াসে পারে বল কি কর্ম্ম করিলে।। শুনিয়া পার্ব্বতি বাক্য কহেন শঙ্কর। শুন দেবী! কোন কর্ম্ম মম প্রীতিকর।। ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দ্দশী। শিবরাত্রি নামে খ্যাত অন্ধকার নিশি।। প্রাণী হিংসা পরায়ণ ব্যাধ একজন। ভীষণ, আকৃতি তার ক্রুর আচরণ।। কৃষ্ণবর্ণ দেহ তার পিঙ্গল নয়ন। জাল বাগুরা হস্তে করয়ে ভ্রমণ।। বনে বনে ভ্রমী করে প্রাণী বধ কত। নগরে নগরে মাংস বেচে অবিরত।। একদিন মাংস ভার করিয়া বহন। গৃহ ফিরিতেছে ব্যাধ আনন্দিত মন।। বহুদূর বন পথ ব্যাধ পরিশ্রান্ত। বৃক্ষ মূলে শয়ন করিল হয়ে ক্লান্ত।। ক্রমে ক্রমে সূর্যদেব অস্তা চলে যান। হেন কালে নিদ্রিত ব্যাধের হল জ্ঞান।। চতুর্দিক অন্ধকার দেখিয়া তখন। চিন্তিত হইয়া ব্যাধ করিল মনন।। আজ গৃহে যাইব না এই রাত্রি কাল। বৃক্ষতে করিব বাস হউক সকাল।। লতা দৃঢ় রজ্জু নির্মাণ করিয়া। মাংস ভার বৃক্ষে বাঁধি দিল তাহা দিয়া।। হিংস্র জন্তু ভয়ে ব্যাধ বৃক্ষের উপর। উঠিয়া বসিল করি সাহসে নির্ভর।। ক্ষুধার্ত হইয়াছিল ব্যাধ অতিশয়। অন্ধকার রাত্রি তাহে হিংস্র জন্তু ভয়।। শীতেতে কাঁপিতে ছিল শরীর তাহার। সর্বাঙ্গে পড়িতে ছিল নিশার তুষার।। দৈবক্রমে শিবলিঙ্গ সেই বৃক্ষ মূলে। স্থাপন করিয়াছিল কেহ কোন কালে।। সেই দিন শিবরাত্রি দৈবের ঘটনা। উপবাসী ব্যাধ তার অন্নের ভাবনা।। তাহার শরীর হতে হিম বিন্দু যত। বৃক্ষ মূলে শিবলিঙ্গে পড়ে অবিরত।। সেই বৃক্ষ বিল্ববৃক্ষ নামে সুবিখ্যাত। যাহার পত্রেতে শম্ভু হল সদা প্রীত।। ব্যাধ অঙ্গ সঞ্চালনে পক্ক বিল্ব দল। শিবের মস্তকে পড়িতে ছিল অবিরল।। ব্যাধের সে আচরণে দেব আশুতোষ। মনে মনে অনুভব করেন সন্তোষ।। এইভাবে সমস্ত রজনী কেটে গেল। ক্রমে ক্রমে উষার আলোক দেখা দিল।। বৃক্ষ হতে নামি ব্যাধ নিজ গৃহে গেল। রাত্রির ঘটনা সব প্রকাশ করিল।। মৃগমাংস বিতরিল পাড়ার ব্রাহ্মণে। অবশেষে ভোজন করিল হৃষ্ট মনে।। এই ভাবে তাহার পারন সিদ্ধ হল। শিবরাত্রি ব্রত ফল সম্পূর্ণ পাইল।। আয়ূ শেষ হল তার বহুকাল পরে। যমের কিঙ্কর এল লইবার তরে।। যমদূত রজ্জু দ্বারা বাঁধিতে উদ্যত। হেন কালে পৌঁছে দূত শিবের নিযুক্ত।। শিবদূত বলে যমদূত যাও দূরে। ব্যাধেকে লইয়া আমি যাব শিবপুরে।। যমদূত বলে এই ব্যাধ পাপী অতি। না যায় গণনা এর কুকর্ম সংহতি।। যমপুরে ইহাকে লইয়া যাব আমি। যমের আদেশে বৃথা কেন এলে তুমি।। এই রূপে উভয়ের বিবাদ হইল। শিবদূত যমদূতে প্রহার করিল।। পরাজিত হয়ে যমদূত যায় ঘরে। এই বার্তা প্রকাশিল যমের গোচরে।। উপস্থিত হয়ে যম শিবদূতে কন। বিবাদের হেতু কিবা করহ বর্নন।। শিবদূত বলে এই ব্যাধ পাপাচারী। শিবরাত্রি প্রভাবে যাইবে শিবপুরী।। আজীবন কেহ যদি পাপ কর্ম করে। শিবরাত্রি ব্রত করি অবশেষে তরে।। মহাদেব তুষ্ট এই ব্যাধের উপর। নাহি ভয় করি আমি শিবের কিঙ্কর।। যমরাজ প্রণাম করিয়া শিবদূতে। গমন করেন নিজ বাসে হৃষ্টচিতে।। ব্রত উপবাস করি সেদিন যে জন। ভক্তিভাবে করিবে আমার আরাধন।। সদাতুষ্ট হই আমি তাহাদের প্রতি। ব্রতের বিধান দেবী! শুনহ সম্প্রতি।। পূর্বদিনে ব্রহ্মচর্য্য করিয়া পালন। নিরামিষ হবিষ্যান্ন করিবে ভোজন।। রাত্রিতে তৃণের শর্য্যা নির্মাণ করিবে। তাহাতে শয়ন করি আমাকে স্মরিবে।। প্রাতঃকালে সত্ত্বর করিয়া গাত্রোত্থান। নদী কিম্বা সরোবর জলে করি স্নান।। বিল্ববৃক্ষে মূলে গিয়া প্রণাম করিবে। অবশ্যক পত্র সংগ্রহ করিবে।। একমাত্র বিল্বদলে তুষ্ট আমি হই। মনি মুক্তা স্বর্ণ রত্ন প্রবাল না চাই।। রাত্রিতে হইয়া শুচি যে পূজে আমারে। সদা অভিমত ফল দিব আমি তারে।। পার্থিব শংঙ্কর মূর্তি করিয়া নির্মাণ। প্রথম প্রহরে দুগ্ধে করাইবে স্নান।। দ্বিতীয় প্রহরে দধি তৃতীয়তে ঘৃত। চতুর্থ প্রহরে মধু স্নানেতে বিহিত।। পূজা শেষে যথা বিধি নৃত্য গীত করি। তুষিবে আমারে নর শুনহ শংঙ্করী।। পরদিন প্রাতঃকালে হয়ে শুচি ব্রত। করাইবে ব্রাহ্মণ ভোজন নিয়মিত।। এই শিবরাত্রি ব্রত যে জন করিবে। অনায়াসে সেই জন আমাকে তুষিবে।। কঠোর তপস্যা আর দান যজ্ঞ যত। কোন কর্ম নহে তুল্য শিবরাত্রি মত।। এই ব্রত আচরণে লভিয়া বাঞ্ছিত। অধীশ্বর হয় সর্ব্ব ধনের নিশ্চিত।। ব্রতের মাহাত্ম্য এবে হরহ শ্রবন। পুণ্য লাভ হয় শুনে সেই বিবরণ।। পৃথিবীতে বারানসী সর্ব্ব তীর্থ সার। যেখানে গমনে খন্ডে কলুষ অপার।। ব্যাধকে দেখিয়া মহাদেব তুষ্ট অতি। নির্দিষ্ট হইল তার কৈলাস বসতি।। শুনিয়া পার্ব্বতি দেবী ব্রত বিবরণ। আত্মীয়বর্গের কাছে করেন বর্ণন।। তাহাদের মুখে ব্রত হইল বর্ণিত। এই রূপে শিবরাত্রি হল প্রচারিত।। যেই জন ভক্তিভরে শিবরাত্রি করে। সংসার সাগর হতে অনায়াসে তরে।। আরাধ্য দেবতা নাহি মহাদেব মত। অশ্বমেধ সম নহে আর যজ্ঞ যত।। গঙ্গার সমান তীর্থ নাহি পৃথিবীতে। শিবরাত্রি সম ব্রত না আছে জগতে।। শিবরাত্রি ব্রত কথা শুনে যেই জন। অথবা যে জন করে শ্রদ্ধায় পঠন।। মহাদেব সদা তুষ্ট হন তার প্রতি। শিবপদে করি আমি অসংখ্য প্রণতি।। শিবরাত্রি ব্রত কথা সমাপ্ত হইল। ভক্তিভরে সবে এবে শিব শিব বল।। _______ ________ <----- [[ শিবের অষ্টোত্তর শতনাম ]] -----> কৈলাস শিখরে বসি দেব ত্রিলোচন । গৌরী সহ করে নানা কথোপকথন ।। মৃদুমন্দ বাতাস বহে সেথা ধীরি ধীরি । ফুলের সৌগন্ধ কিবা আহা মরি মরি ।। সুন্দর জোছনারাশি মধুর যামিনী । চন্দ্রের কিরণ ছটা বিকাশে অবণী ৷৷ মহানন্দে হৈমবতী কহে পঞ্চাননে । কহ প্রভু কৃপা করে দাসীরে এক্ষণে ৷৷ বড় সাধ হয় মনে দেব প্রাণপতি । তোমার নামের সংখ্যা শুনি বিশ্বপতি ।। আশুতোষ পরিতোষ হয়ে মোর প্রতি । সে সাধ পুরাও মম ওহে পশুপতি ।। শুনিয়া দেবীর বাণী কহে মহেশ্বর । কি ইচ্ছা হয়েছে বল আমার গোচর ।। শুনিয়া হরের কথা কহেন পার্ব্বতী । শুনিবারে সাধমম হয়েছে বিভুতি ।। তোমার নামের সংখ্যা কহ ত্রিলোচন । তব মুখামৃত বাণী শুনি অনুক্ষণ ।। এতেক শুনিয়া কহে ভোলা মহেশ্বর । শুন দেবী মোর নাম কহি অতঃপর ।। সেইসব নাম আমি করিব কীর্ত্তন । শ্রবন পাঠেতে মুক্ত হবে জীবগন ।। নাহি সংখ্যা মম নাম না যায় বর্ণন । সংক্ষেপেতে বলি যাহা করহ শ্রবণ ।। যেই নাম ধ্যানে জীব পায় দিব্য গতি । সেইসব নাম তবে কহি শুন সতী ।। মম মুর্ত্তি ধরা তলে কেহ না দেখিবে । পাষাণে নির্ম্মিত লিঙ্গ দর্শন পাবে ।। ভিন্ন ভিন্ন স্থানে মোর ভিন্ন ভিন্ন নামে । সকলের বরণীয় হয় ধরাধামে ।। অনাদির আদি নাম রাখিল বিধাতা । ১ মহাবিষ্ণু নাম রাখে দেবের দেবতা ।। ২ জগদগুরু নাম রাখিল মুরারি । ৩ দেবগণ মোর নাম রাখে ত্রিপুরারি ।। ৪ মহাদেব বলি নাম রাখে শচীদেবী। ৫ গঙ্গাধর বলি নাম রাখিল জাহ্নবী ॥ ৬ ভাগীরথী নাম রাখি দেব শূলপানি । ৭ ভোলানাথ বলি নাম রাখিল শিবানী ।। ৮ জলেশ্বর নাম মোর রাখিল বরুণ । ৯ রাজ রাজেশ্বর নাম রাখে রুদ্রগণ ।। ১০ নন্দী রাখিল নাম দেবকৃপাসিন্ধু । ১১ ভৃঙ্গী মোর নাম রাখে দেব দীনবন্ধু ।। ১২ তিনটি নয়ন বলি নাম ত্রিলোচন । ১৩ পঞ্চমুখ বলি মোর নাম পঞ্চানন ॥১৪ রজত বরণ বলি নাম গিরিবর । ১৫ নীলকণ্ঠ নাম মোর রাখে পরাশর ।। ১৬ যক্ষরাজ নাম রাখে জগতের পতি ।১৭ বৃষভবাহন বলি নাম রাখে পশুপতি ।।১৮ সূর্য্য দেব নাম রাখে দেব বিশ্বেশ্বর।১৯ চন্দ্রলোকে রাখে নাম শশাঙ্কশেখর ।।২০ মঙ্গল রাখিল নাম সর্বসিদ্ধিদাতা । ২১ বুধগণ নাম রাখে সর্বজীবত্ৰাতা ॥ ২২ বৃহষ্পতি নাম রাখে পতিতপাবণ । ২৩ শুক্রাচার্য্য নাম রাখে ভক্ত প্রাণধন ।।২৪ শনৈশ্বর নাম রাখে দয়ার আধার।২৫ রাহুকেতু নাম রাখে সর্ব্ববিঘ্ন হর ।।২৬ মৃত্যুঞ্জয় নাম মম মৃত্যু জয় করি ।২৭ ব্রহ্মলোকে নাম মোর রাখে জটাধারী ॥২৮ কাশীতীর্থ ধামে নাম মোর বিশ্বনাথ । ২৯ বদরিকাননে নাম হয় কেদারনাথ ।।৩০ শমন রাখিল নাম সত্য সনাতন । ৩১ ইন্দ্রদেব নাম রাখে বিপদতারণ ।।৩২ পবন রাখিল নাম মহা তেজোময় ।৩৩ ভৃগু মুনি নাম রাখে বাসনা বিজয় ।।৩৪ ঈশান আমার নাম রাখে জ্যোতিগণ । ৩৫ ভক্তগণ নাম রাখে বিঘ্ন বিনাশন ।।৩৬ মহেশ বলিয়া নাম রাখে দশানন ।৩৭ বিরূপাক্ষ বলি নাম রাখে বিভীষণ ।।৩৮ শম্ভুনাথ বলি নাম রাখেন ব্যাসদেব ।৩৯ বাঞ্ছাপূর্ণকারী নাম রাখে শুকদেব ।।৪০ জয়াবতী নাম রাখে দেব বিশ্বপতি।৪১ বিজয়া রাখিল নাম অনাথের গতি।।৪২ তালবেতাল নাম রাখে সর্ব্ব বিঘ্নহর । ৪৩ মার্কন্ড রাখিল নাম মহা যোগেশ্বর ।। ৪৪ শ্রীকৃষ্ণ রাখিল নাম ভুবন ঈশ্বর ।৪৫ ধ্রুবলোকে নাম রাখে ব্রহ্ম পরাৎপর ।।৪৬ প্রহ্লাদ রাখিল নাম নিখিল তারণ । ৪৭ চিতাভষ্ম মাখি গায় বিভুতিভূষণ ।।৪৮ সদাশিব নাম রাখে যমুনা পুণ্যবতী । ৪৯ আশুতোষ নাম রাখে দেব সেনাপতি ।।৫০ বাণেশ্বর নাম রাখে সনৎকুমার ।৫১ রাঢ়দেশবাসী নাম রাখে তারকেশ্বর ।।৫২ ব্যাধিবিনাশন হেতু নাম বৈদ্যনাথ । ৫৩ দীনের শরণ নাম রাখিল নারদ ।।৫৪ বীরভদ্র নাম মোর রাখে হলধর ।৫৫ গন্ধর্বেরা নাম রাখে গন্ধর্ব ঈশ্বর ।।৫৬ অঙ্গিরা রাখিল নাম পাপতাপহারী ।৫৭ দর্পচূর্ণকারী নাম রাখিল কাবেরী ।।৫৮ ব্যাঘ্রচর্ম্ম পরিধান নাম বাঘাম্বর ।৫৯ বিষ্ণুলোকে রাখে নাম দেব দিগম্বর ।।৬০ কৃত্তিবাস নাম রাখে কত্যায়নী ।৬১ ভূতনাথ নাম রাখে ঋষ্যশৃঙ্গ মুণি ।।৬২ সদানন্দ নাম রাখে দেব জনার্দ্দন ।৬৩ আনন্দময় নাম রাখে শ্রীমধুসূদন ।।৬৪ রতিপতি নাম রাখে মদন দহন ।৬৫ দক্ষরাজ নাম রাখে যজ্ঞ বিনাশন ।।৬৬ জগদগ্নি নাম মোর রাখিল গঙ্গেশ ।৬৭ বশিষ্ঠ আমার নাম রাখে গুড়াকেশ ।।৬৮ পৌলস্ত্য রাখিল নাম ভবভয়হারী।৬৯ গৌতম রাখিল নাম জন মনোহারী ।।৭০ ভৈরবেতে নাম রাখে শ্মশান ঈশ্বর।৭১ বটুক ভৈরব নাম রাখে ঘন্টেশ্বর ।।৭২ মর্ত্যলোকে নাম রাখে সর্ব্বপাপহর।৭৩ জরৎকারু মোর নাম রাখে যোগেশ্বর ।।৭৪ কুরুক্ষেত্র রণস্থলে পামবরদ্বারী ।৭৫ ঋষীগণ নাম রাখে মুণি মনোহারী ।।৭৬ ফণিভূষণ নাম মোর রাখিল বাসুকী ।৭৭ ত্রিপুরে বধিয়া নাম হইল ধানুকী ।।৭৮ উদ্দালক নাম রাখে বিশ্বরূপ মোর ।৭৯ অগস্ত্য আমার নাম রাখিল শংঙ্কর ।।৮০ দক্ষিণ দেশেতে নাম হয় বালেশ্বর । ৮১ সেতু বন্ধে হয় নাম মোর রামেশ্বর ।।৮২ হস্তিনা নগরে নাম দেব যোগেশ্বর ।৮৩ ভরত রাখিল নাম উমা মহেশ্বর ।।৮৪ জলধর নাম রাখে করুণা সাগর ।৮৫ মম ভক্তগণ বলে সংসারের সার ।।৮৬ ভদ্রেশ্বর নাম মোর রাখে বামদেব ।৮৭ চাঁদ সদাগর নাম রাখে হয়গ্রীব ।।৮৮ জৈমিনি রাখিল নাম মোর ত্র্যম্বকেশ ।৮৯ ধন্বন্তরি মোর নাম রাখিল উমেশ ।।৯০ দিকপাল গণে নাম রাখিল গিরীশ ।৯১ দশদিক পতি নাম রাখে ব্যোমকেশ ।।৯২ দীননাথ নাম মোর কশ্যপ রাখিল ।৯৩ বৈকুণ্ঠের পতি নাম নকুল রাখিল ।।৯৪ কালীঘাটে সিদ্ধপাটে নকুল ঈশ্বর ।৯৫ পুরীতীর্থ ধামে নাম ভুবন ঈশ্বর ।।৯৬ গোকুলেতে নাম মোর হয় শৈলেশ্বর ।৯৭ মহাযোগী নাম মোর রাখে বিশ্বম্ভর ।।৯৮ কৃপানিধি নাম রাখে রাধাবিনোদিনী ।৯৯ ওঁ কার আমার নাম রাখে সান্দীপনি ।।১০০ ভক্তের জীবন নাম রাখেন শ্রীরাম ।১০১ শ্বেত ভুধর নাম রাখেন ঘনশ্যাম ।।১০২ বাঞ্ছাকল্পতরু নাম রাখে বসুগণ ।১০৩ মহালক্ষী রাখে নাম অশিব নাশন ।।১০৪ অল্পেতে সন্তোষ বলি নাম যে সন্তোষ । ১০৫ গঙ্গাজল বিল্বদলে হই পরিতোষ ।।১০৬ ভাঙ্গড়ভোলা নাম বলি ডাকে ভক্তগণ । ১০৭ বুড়াশিব বলি খ্যাত এই তিন ভুবন ।।১০৮ হর হর ব্যোম বলি যে ডাকে আমারে। পরিতুষ্ট হয় সদা তাহার উপরে।। অসংখ্য আমার নাম না হয় বর্ণন। অষ্টোত্তর শতনাম করিনু কীর্ত্তন।। মনেতে যে ভক্তি করি করয়ে পঠন। রোগ শোক নাহি হয় তাহার ভবন।। নির্ব্ব্যাধি হইয়া সে দীর্ঘজীবী হয়। শিব বরে সেই জন মুক্তি পদ পায়।। নামের মাহাত্ম্য আমি করিনু বর্ণন। মম নাম মম ধ্যান করো সর্বজন।। ইহকালে সুখে রবে মরত ভুবনে। অন্তঃকালে হবে গতি কৈলাস ভবনে।। [ শিবের অষ্টোত্তর শতনাম সমাপ্ত ] _______ _________ <----- মধুসুক্ত -----> ওঁ মধু বাতা ঋতায়তে মধু ক্ষরন্তি সিন্ধবঃ। মাধ্বীর্নঃ সন্তোষধীঃ। ওঁ মধুনক্ত সুতোষসো। মধু মৎ পার্থিবং রজঃ মধু দৌ রস্তু নঃ পিতা। ওঁ মধু মান্নো বনস্পতি স্মধুমান অন্তু সূর্যঃ। মাধ্বীগাব ভবন্তু নঃ ওঁ মধু ওঁ মধু ওঁ মধু ।। <----- শান্তি মন্ত্র পাঠ -----> একটি পাত্রে সামান্য জল নিয়ে তাহাতে চন্দন পুষ্প বেলপাতা দিয়ে জলের ছিটা দিতে দিতে পাঠ কর। ওঁ স্বস্তি নঃ ইন্দ্রো বৃদ্ধশ্রবাঃ। স্বস্তি নঃ পূষা বিশ্ববেদাঃ। স্বস্তি নঃ স্তার্ক্ষ্যো অরিষ্টনেমী। স্বস্তি নঃ বৃহস্পতি দধাতু।। দৌঃ শান্তিঃ হি অন্তরীক্ষ শান্তি হিঃ পৃথিবী শান্তি হি অপ শান্তি হি ঔষধয় শান্তি হি বনস্পতয় শান্তি হিঃ বিশ্বদেবা শান্তি হিঃ শান্তিরেব শান্তি হিঃ ওঁ শান্তি রস্তু শিবাঞ্চাস্তু বিনশ্যত্য শুভঞ্চ যৎ যতঃ। এবা গতং পাপং তত্রৈব প্রতি গচ্ছতু। ওঁ শান্তি ওঁ শান্তি ওঁ শান্তি <----- বিসর্জন -----> নমঃ মহাদেব ক্ষমস্ব বলিয়া কিঞ্চিৎ জল দিয়া উত্তর শিয়রে শোয়াইয়া দিবেন, সংহার মুদ্রায় একটি পুষ্প নিয়ে আঘ্রাণ করিতে করিতে ঐ দেবতা নিজের হৃদয়ে প্রবেশ করিলেন ভাবিয়া পুষ্পটি ফেলিয়া দিয়া হাত ধুইয়া ঈশান কোণে ত্রিকোণ মন্ডল করিয়া নির্ম্মাল্য লইয়া নমঃ চন্ডেশ্বরায় নমঃ মন্ত্রে মন্ডলের মধ্যে দিবেন।। <----- দক্ষিণাবাক্য -----> এতস্মৈ কাঞ্চন মূল্যায় নমঃ (৩ বার) এতৎ অধিপতয়ে শ্রী বিষ্ণুবে নমঃ। এতৎ সম্প্রদানায় ব্রাহ্মণায় নমঃ। (হাত জোড় করে বলিবে) <----- সাঙ্গতার্থ সংকল্প -----> কোষাকুশীতে হরতকি ফুল চন্দন দুর্গা ধান যব আতপ চাল নিয়ে উত্তর অথবা পূর্ব দিক কোণে ধারণ করে বলতে হবে—- ওঁ বিষ্ণুরো তৎ সৎ ফাল্গুন মাসি কুম্ভ রাশিস্থ ভাস্করে কৃষ্ণ পক্ষে চতুর্দ্দশ্যাং তিথৌ __ গোত্র __ নাম কৃতৈ তৎ শ্রী শিব দেবতয়া প্রীতি কাম শিব পূজা তদ ব্রতকথা পাঠ জাগরনোপবাস কর্ম্মন্ সাঙ্গতার্থং যদ্ বৈগুন্যং জাতং তোদ্দোষ প্রশমনায় বিষ্ণু স্মরণ মনন করিষ্যে। ওঁ তদবিষ্ণু পরমং পদম্ সদা পশ্যন্তি সুরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম। ওঁ বিষ্ণুঃ ওঁ বিষ্ণুঃ ওঁ বিষ্ণুঃ।। • ওঁ অজ্ঞানাদ যদি বা মোহাৎ প্রচ্যবেতাধ্বরেষু যৎ স্মরনা দেব তদ বিষ্ণু সম্পূর্ণং স্যাদিতি শ্রুতি । • ওঁ যদ সাঙ্গং কৃতং কর্ম জানতা বাপ্য জানতা সাঙ্গং ভবতু তৎ সৰ্ব্বং হরে নামানু কীৰ্তনাৎ। ______ ________ ডান হাতের তালুতে জল নিয়ে --- ওঁ শ্রী হরি ওঁ শ্রী হরি ওঁ শ্রী হরি ওঁ প্রিয়তাং পুন্ডরীকাক্ষং সর্ব্বযজ্ঞেশ্বরো হরি তস্মিন তুষ্টে জগৎ তুষ্টং প্রীনিতে প্রীনিতং জগৎ এতৎ কর্ম শ্রী কৃষ্ণায়াপিত মস্তু। ( জল মাটিতে ফেলে দাও ) <----- প্রণাম -----> ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্রয় হেতবে। নিবেদয়ামি চাত্মানং ত্বং গতি পরমেশ্বর॥ ( ঘণ্টা ধ্বনি. শঙ্খ ধ্বনি. উলু ধ্বনি. দিবে ) <----- পারন মন্ত্র -----> এই মন্ত্র বলিয়া পারন জল পান করিবে ----> ওঁ সংসার ক্লেশ দগ্ধস্য ব্রতেনানেন শঙ্কর। প্রসীদ সুমুখো নাথ জ্ঞান দৃষ্টি প্রদোভব।। পরদিন সকালে পারন করার পর ব্রাহ্মণ ভোজন করাইয়া নিজে ভোজন করিবে। _______ ________ --- {ফর্দমালা} --- সিদ্ধি, তিল হরিতকী, পঞ্চ শস্য, আসনাঙ্গুরীয়, ঘী, মধু, ধূপ, ধুনা, তুলা, কর্পূর, প্রদীপ, পিলসুজ, দুধ, দই, চিনি, ফুল, বেলপাতা, ধুতরা, আকন্দ, নৈবেদ্য (কমপক্ষে পাঁচ রকমের ফল এবং মিষ্টি), গঙ্গা জল, কুশ, আতপ চাল, চন্দন ।
শিবরাত্রি ব্রতের সময় বা কাল- ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে সারা রাত জেগে চার প্রহর ধরে শিবরাত্রি ব্রত পালন করার নিয়ম। পুরুষ ও স্ত্রী লোক সকলেই ব্রত করতে পারে।
শিবরাত্রি ব্রতের দ্রব্য ও বিধান- গঙ্গা মাটি, বেলপাতা, ফুল, দুধ, দই, ঘি, মধু আর কলা। শিবরাত্রির আগের দিনে নিরামিষ খেয়ে থাকতে হয়। রাত্রিরে বিছানায় না শুয়ে, কম্বল কিংবা খরের বিছানায় সংযমী হয়ে শোয়ার নিয়ম।
শিবরাত্রির দিন সকালে স্নান করে বেল পাতা তুলে রাখতে হবে। এরপর সমস্ত দিন উপোস করে থেকে গঙ্গা মাটি দিয়ে চারটি শিবলিঙ্গ তৈরি করে রাত্রিরে চার প্রহর চারবার শিব পুজো করতে হয়।
যেমন- প্রথম প্রহরে দুধ দিয়ে শিবলিঙ্গ কে স্নান করিয়ে শিব পুজো করার নিয়ম।
দ্বিতীয় প্রহরে দই দিয়ে শিবলিঙ্গ কে স্নান করিয়ে দ্বিতীয় প্রহরে ঘি দিয়ে শিবলিঙ্গ
কে স্নান করিয়ে আর চতুর্থ প্রহরে শিব লিঙ্গে মধু দিয়ে স্নান করে পুজো করাতে হবে। এইভাবে প্রত্যেক প্রহরেই শিব পুজো করতে হবে। এই সঙ্গে সমস্ত রাত্রি জেগে কাটাতে হয় এবং পরদিন প্রভাত হলে
প্রথম কথা শুনে শিবকে প্রণাম করে ব্রাহ্মণ কে পরিতোষ সহকারে জলযোগ এবং ভজন করিয়ে দক্ষিণা দেওয়ার কর্তব্য।
শিবরাত্রি ব্রত কথা- পুরাকালের কথা-একদিন কৈলাস পর্বতে হরো পার্বতী বসে বিশ্রাম করছিল, এমন সময় দেবী পার্বতী বললেন,”প্রভু! ধর্ম ,অর্থ, কাম ও মোক্ষ লাভের জন্য কি কাজ বা ব্রত পালন করলে আপনাকে সন্তুষ্ট করা যায়?”
সেই প্রশ্ন শুনে মহাদেব তখন বললেন,”শোনো দেবী পার্বতী, ফাগুন মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্দশী তিথি অন্ধকার রাত্রিকে ‘শিবরাত্রি ‘ বলে। সেইদিন যে উপোস করে থাকে, আমি যথার্থই তার উপর প্রসন্ন হয়।
শিবরাত্রি ব্রত আমার খুব প্রীতিকর, এই ব্রতের গুণেই গণেশ সপ্তদ্বীপ এর অধীশ্বর হয়েছে। এখন এই তিথির মাহাত্ম্য বলছি শোনো। পুণ্যতীর্থ কাশিনগরের এক ব্যাধ বাস করত। বদ করাই ছিল তার কাজ।
একদিন সে তীর-ধনুক নিয়ে স্বীকার করতে বেরুলো। একটা বনে গিয়ে সে অনেক রকমের পশুপাখি স্বীকার করল। সে যখন শিকার জড়ো করে বাড়িতে ফিরছিল তখন সে দেখল তার মাংসগুলো খুব ভারী হয়ে গেছে সেগুলো তার
একার পক্ষে বয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তখন সে সে গুলোকে নিয়ে বোনের একটা গাছের তলায় রেখে একটু বিশ্রাম করতে লাগলো। খুব ক্লান্ত হয়ে থাকার দরুন কিছুক্ষণের মধ্যেই সে গভীরভাবে ঘুমিয়ে পড়ল।
সূর্য ডুবে যাওয়ার অনেকক্ষণ পর তার ঘুম ভাঙলো, তখন সে দেখল যে, এখন সেখানে বসে থাকতে সাপ কিংবা বাঘ ভাল্লুকের হাতে তার প্রাণ যেতে পারে। এই অন্ধকারে পথ চিনে কুটিরের ফেরাও এখন সম্ভব নয়।
তখন সে হাতরে হাতরে সেই গাছটার ওপরে মাংসের বোঝাটা নিয়ে উঠে পড়ল এবং মাংসের বোঝাটা গাছের লতাপাতা দিয়ে একটা ডালে বেঁধে রেখে কোনরকমে গাছে বসেই রাত কাটাবে ঠিক করল।
একে সে খিদের জ্বালায় অস্থির তার ওপর শিশির পড়তে থাকায় শীতে তার কাঁপুনি ধরল, কাজেই সে জেগে বসে রইল সারা রাত। সেটা ছিল বেল গাছ আর ঘটনাচক্রের আমার একটা লিঙ্গ মূর্তি ও ছিল সেই গাছের তলায়।
সেদিন ছিল শিবরাত্রি তিথি আরও ব্যাধ ও সারাদিন উপোসী ছিল। তার নড়াচড়াতে গাছের কয়েকটা পাতা শিশিরে ভিজে তার গা বেয়ে এসে পড়ল সেই শিব লিঙ্গের মাথায়।
যদিও শিবরাত্রি ব্রতের নিয়ম পালন করার জন্য তার পক্ষে স্নান করা আর পূজার নৈবেদ্য দেওয়া মোটেই সম্ভব ছিল না, কিন্তু আমি পেলুম কেবল বেলপাতা।
তবুও চতুর্দশী তিথি মাহাত্ম্যের গুনে সে পেল মহাফল, অথচ সে এব্যাপারে কিছুই জানত না। সকাল হতেই সে ফিরে গেল তার কুটিরে।
বেশ কিছুকাল পরে তার মৃত্যু হল, কখন যমদূত আর আমার দূতেরা ও তার কাছে গিয়ে হাজির হলো। তাকে আমার কাছে আনা হবে না বেঁধে যমরাজের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে এই
নিয়ে যমদূত দের সঙ্গে আমার দূত দের খুব ঝগড়া বাঁধলো। শেষে শিব দূতেরা যমদূত দের পরাস্ত করে ব্যাধকে আমার কাছে নিয়ে এলো। জম এই ব্যাপার সব জানতে পেরে আমার কাছে আসছিল,
পথে নন্দী কে দেখে ব্যাধের সারা জীবন ধরে কুকর্মের কথা বলল।
নন্দী ও যমকে ব্যাধের শিবরাত্রির ঘটনার কথা সমস্ত বলে আরও বলল যে,
সে শুধু কুকর্ম করেছিল তাতে কোন সন্দেহ নেই-সে মহা পাপী ও ছিল, কিন্তু শিবরাত্রি ব্রতের ফলে সে শিবলোক লাভ করেছে। যম সব শুনে সন্তুষ্ট হয়ে নিজের পুরীতে ফিরে গেল।
দেখলে পার্বতী, এই ব্রথের শক্তি কতটা?”সেই থেকে পৃথিবীতে এই ব্রতের মাহাত্ম্য চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল।
শিবরাত্রি ব্রতের ফল- শিবরাত্রি ব্রত পালন করলে মানুষের ধর্ম, অর্থ ,কাম ও মোক্ষএই চার রকম ফল লাভ হয়ে থাকে।।