দ্বিজ শব্দের অর্থ "দুইবার জন্ম" । (পুরুষলিঙ্গ দের জন্য “দ্বিজ” এবং স্ত্রীলিঙ্গদের জন্য “দ্বিজা” শব্দের ব্যবহার করা হয় )
ঋগ্বেদের 1/60 -এ দ্বিজন্মন্ (द्विजन्मन्) -এর মতো শব্দের উপস্থিত রয়েছে ।
দ্বিজ শব্দের প্রথম উল্লেখ মনুস্মৃতিতে 166 বার। যাজ্ঞবল্ক্য স্মৃতিতে শব্দটি 40 বার উল্লেখ করে। আর হিন্দু মহাকাব্য, রামায়ণ ও মহাভারত যথাক্রমে দ্বিজ শব্দটি 214 এবং 1535 বার উল্লেখ করেছে।
1. প্রথম জন্ম হলো → মায়ের গর্ভ থেকে শারীরিক ভাবে জন্মগ্রহণ করাকে প্রথম জন্ম বলা হয় ।
অন্ডজ / ডিম্বজ প্রাণীদের প্রথমে মায়ের পেট থেকে ডিম আকারে জন্ম হয়, পরে ডিম থেকে শারীরিকভাবে জন্ম হয় সেক্ষেত্রে এই ধরনের প্রাণী দিকেও শব্দার্থ গতভাবে দুবার জন্ম হেতু দ্বিজ বলা হলেও, যেহেতু বৈদিক জ্ঞান লাভ (মনুষ্য শরীর ব্যতীত বৈদিক জ্ঞান লাভ হয় না - 84 লক্ষ যোনির মধ্যে একমাত্র মনুষ্য শরীরেই বৈদিক জ্ঞান লাভ করা সম্ভব) না করতে পারার অবস্থার জন্য শাস্ত্রীয় “দ্বিজ” শব্দটি এইসকল পশুপাখির ক্ষেত্রে শব্দার্থ গতভাবে প্রযোজ্য হলেও শাস্ত্রীয় ভাবে প্রযোজ্য নয়। তাই শাস্ত্রীয় ভাবে “দ্বিজ” শব্দটি একমাত্র মনুষ্য শরীরধারীদের জন্যই প্রযোজ্য ।
আর
2. দ্বিতীয় জন্ম হলো →মানব মায়ের গর্ভ থেকে নূতন মানব শারীরিক জন্ম (অর্থাৎ প্রথম জন্ম ) হবার পর উপনয়নদীক্ষা (সূর্য গায়েত্রী) অথবা ইষ্টবীজমন্ত্র এর সঙ্গে ইষ্টগায়ত্রীমন্ত্র দীক্ষা সংস্কার আচারের মাধ্যমে যে দীক্ষা মানুষের অন্তঃকরণের সূক্ষ্ম-কারণ শরীরে আধ্যাত্মিকভাবে জন্ম হয় তাকে মনুষ্য শরীরে জীবিত অবস্থায় দ্বিতীয় জন্ম বলা হয় । দীক্ষা সংস্কার আচারের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক জন্ম ।
A) বৈদিক ব্যবস্থায় একমাত্র ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্য এই তিন বর্ণের মনুষ্যদের জন্য উপনয়ন (সূর্য গায়েত্রী) দীক্ষার মাধ্যমে দ্বিতীয়- আধ্যাত্মিক জন্ম হয় বলে তাদের উপনয়ন হওয়া মাত্রই তাদেরকে দ্বিজ বলা হয় ।
B) আর বৈদিক ব্যবস্থায় একমাত্র ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় , বৈশ্য ও শূদ্র এবং সর্ব বর্ণের মানুষের জন্য ইষ্টবীজমন্ত্র এর সঙ্গে ইষ্টগায়ত্রীমন্ত্র দীক্ষা সংস্কার আচারের মাধ্যমে যে দীক্ষা মানুষের অন্তঃকরণের সূক্ষ্ম-কারণ শরীরে আধ্যাত্মিকভাবে জন্ম জন্ম হয় বলে তাদের ইষ্টবীজমন্ত্র এর সঙ্গে ইষ্টগায়ত্রীমন্ত্র দীক্ষা হওয়া মাত্রই তাদেরকে দ্বিজ বলা হয় ।