ভগবান শ্রীগণেশের চতুর্থীতে শ্রীগণেশের ১০৮ নাম কীর্তন করেন, তাঁর সর্বমনোবাঞ্ছা ভগবানের কৃপায় পূর্ণ হয়।
১. গণদক্ষ- গণ বা সকল মানুষের প্রধান যিনি
২. গণপতি- সকল গণের নেতা
৩. গৌরীসূত- মা গৌরীর পুত্র
৪. লম্বকর্ণ- বড় কর্ণযুক্ত দেবতা যিনি
৫. লম্বোদর- বড় পেট আছে যাঁর
৬. মহাবল- অত্যন্ত শক্তিশালী যিনি
৭. মহা গণপতি- দেবাদিদেব
৮. মহেশ্বর- সমগ্র মহাবিশ্বের প্রভু
৯. মঙ্গলমূর্তি- সকল শুভ কাজের প্রভু
১০. মূষকবাহন- যাঁর বাহন এক মূষক বা ইঁদুর
১১. বালগণপতি- প্রিয়তম সন্তান
১২. ভালচন্দ্র- যাঁর মাথায় চাঁদ আছে
১৩. বুদ্ধিনাথ- জ্ঞানের প্রভু যিনি
১৪. ধূম্রবর্ণ- ধুম্রের মতো রঙ যাঁর
১৫. একক্ষর- একক অক্ষরযুক্ত যিনি
১৬. একদন্ত- এক দন্তযুক্ত যিনি
১৭. গজকর্ণ- গজের মতো কর্ণযুক্ত যিনি
১৮. গজানন- গজের ন্যায় আনন যে দেবতার
১৯. গজবক্র- গজের ন্যায় বক্রযুক্ত কাণ্ড যাঁর
২০. গজবক্ত্র- গজের ন্যায় মুখ আছে যাঁর
২১. দেবদেব- সমস্ত ঈশ্বরের মধ্যে অন্যতম যিনি
২২. দেবান্তক নাশকারী- মন্দ এবং অসুরদের ধ্বংসকারী যিনি
২৩. দেবব্রত - যিনি সকলের তপস্যা গ্রহণ করেন
২৪. দেবেন্দ্রশিক- সমস্ত দেবতাদের রক্ষক যিনি
২৫. ধার্মিক- ধর্মপথে কর্তব্য রেন যে দেবতা
২৬. দুর্জয়- অপরাজিত দেব যিনি
২৭. দ্বৈমাতুর- দুই মায়ের সন্তান যিনি; দেবী পার্বতী ছাড়াও দেবী গঙ্গাকে নানা পুরাণ গণেশের মায়ের স্থান প্রদান করেছে
২৮. একদংষ্ট্র- এক দন্তযুক্ত যিনি
২৯. ঈশানপুত্র- ভগবান শিবের পুত্র যিনি
৩০. গদাধর- গদা অস্ত্র যাঁর
৩১. অমিত- অতুলনীয় প্রভু যিনি
৩২. অনন্তচিদারুপম- অসীম এবং স্বতন্ত্র চেতনা সহ দেবতা
৩৩. অবনীশ- সমগ্র বিশ্বের প্রভু যিনি
৩৪. অবিঘ্ন- বাধা বিঘ্ন অতিক্রমকারী
৩৫. ভীম- বিশালকায় যিনি
৩৬. ভূপতি- পৃথিবীর প্রভু
৩৭. ভুবনপতি- দেবতাদের ঈশ্বর
৩৮. বুদ্ধিপ্রিয়- জ্ঞান দানকারী
৩৯. বুদ্ধিবিধাতা- জ্ঞানের প্রভু
৪০. চতুর্ভুজ- চারটি বাহু যাঁর
৪১. নিধিশ্বরম- সম্পদ এবং তহবিল দাতা
৪২. প্রথমেশ্বর- সর্বপ্রথম দেবতা
৪৩. শুভকর্ণ- বড় কর্ণযুক্ত ঈশ্বর
৪৪. শুভম- সকল শুভ কাজের ঈশ্বর
৪৫. সিদ্ধিদাতা- ইচ্ছা পূর্ণ এবং সুযোগ প্রদান করেন যে প্রভু
৪৬. সিদ্ধিবিনায়ক- সফলতা প্রদান করেন যিনি
৪৭. সুরেশ্বরম- দেবতাদের প্রভু
৪৮. বক্রতুন্ড- একটি বাঁকা শুণ্ড রয়েছে যাঁর
৪৯. অখুরথ- ইঁদুর সারথি যার
৫০. অলম্পতা- অনন্ত দেব
৫১. ক্ষিপ্র- উপাসনার যোগ্য
৫২. মনোময়- হৃদয়জয়ী
৫৩. মৃত্যুঞ্জয়- যিনি মৃত্যুকে পরাজিত করেন
৫৪. মুধকারম- যিনি সুখের মধ্যে থাকেন
৫৫. মুক্তিদায়ী- অনন্ত সুখের দাতা
৫৬. নাদপ্রতিষ্ঠা- যিনি নাদব্রহ্ম প্রতিষ্ঠা করেন
৫৭. নমস্তেতু- সকল অনিষ্টের বিজয়ী
৫৮. নন্দন- ভগবান শিবের পুত্র
৫৯. সিদ্ধন্ত- সাফল্য ও অর্জনের গুরু
৬০. পীতাম্বর - যিনি হলুদ কাপড় পরেন
৬১. গণাধিক্ষণ- সকল সংস্থার প্রভু
৬২. গুণিন- সমস্ত গুণাবলী সম্পর্কে জ্ঞাত
৬৩. হরিদ্রা- সোনার রঙ যাঁর
৬৪. হেরম্ব- মায়ের প্রিয় পুত্র
৬৫. কপিল- হলুদ এবং বাদামী রঙ যাঁর
৬৬. কবীশ- কবিদের প্রভু
৬৭. কীর্তি- খ্যাতির প্রভু
৬৮. কৃপাকর- যিনি দয়ালু
৬৯. কৃষ্ণপিঙ্গল- হলুদ-বাদামী চোখ যাঁর
৭০. ক্ষেমঙ্করী- যিনি ক্ষমা করেন
৭১. বরদবিনায়ক- সফলতার প্রভু
৭২. বীরগণপতি- বীর প্রভু
৭৩. বিদ্যাবিধি- জ্ঞানের ঈশ্বর
৭৪. বিঘ্নহর- বাধা দূর করেন যিনি
৭৫. বিঘ্নহর্তা- বিঘ্ন দূর করেন যিনি
৭৬. বিঘ্নবিনাশন- বিঘ্ন বিনাশ করেন যিনি
৭৭. বিঘ্নরাজ- সকল বাধার প্রভু
৭৮. বিঘ্নরাজেন্দ্র- সকল বাধার অধিকারী
৭৯. বিঘ্নবিনাশয়- বাধা ধ্বংসকারী
৮০. বিঘ্নেশ্বর- প্রতিবন্ধকতার প্রভু
৮১. শ্বেত- যিনি শ্বেত রঙের রূপে বিশুদ্ধ
৮২. সিদ্ধিপ্রিয়- যিনি ইচ্ছা পূরণ করেন
৮৩. স্কন্দপূর্বজ - ভগবান কার্তিকের ভাই
৮৪. সুমুখ- শুভ মুখ যাঁর
৮৫. স্বরূপ- সৌন্দর্যের প্রেমিক
৮৬. তরুঁ- যাঁর বয়স অচঞ্চল
৮৭. উদ্দণ্ড- চঞ্চল
৮৮. উমাপুত্র- পার্বতীর পুত্র
৮৯. বরগণপতি- সুযোগের প্রভু
৯০. বরপ্রদ- ইচ্ছা এবং সুযোগ দানের প্রভু
৯১. প্রমোদ- আনন্দ
৯২. পুরুষ- বিস্ময়কর ব্যক্তিত্ব
৯৩. রক্ত- লাল শরীর যাঁর এমন প্রভু
৯৪. রুদ্রপ্রিয়- ভগবান শিবের প্রিয়
৯৫. সর্বদেবতমান- সমস্ত স্বর্গীয় দেবতার নৈবেদ্য গ্রহণকারী
৯৬. সর্বসিদ্ধান্ত- দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তা প্রদানকারী
৯৭. সর্বাত্মন- মহাবিশ্বের রক্ষক
৯৮. ওঙ্কার- ওম আকৃতিযুক্ত
৯৯. শশীবর্ণম- যাঁর রঙ চন্দ্রের ন্যায় সুন্দর
১০০. শুভগুণকানন- যিনি সকল গুণের কর্তা
১০১. যোগাধীপ- ধ্যানের প্রভু
১০২. যশস্বিন- সব চেয়ে প্রিয় এবং জনপ্রিয় ঈশ্বর
১০৩. যশস্কর- খ্যাতি ও ভাগ্যের প্রভু
১০৪. যজ্ঞকায়- যিনি সমস্ত ত্যাগ স্বীকার করেন
১০৫. বিশ্বরাজ- সংসারের স্বামী
১০৬. বিকট- অত্যন্ত বিশাল
১০৭. বিনায়ক- সকলের প্রভু
১০৮. বিশ্বমুখ- মহাবিশ্বের গুরু
সারা বছর জুড়েই শুক্লপক্ষের এবং কৃষ্ণপক্ষের চতুর্থী তিথিতে উদযাপিত হয় সিদ্ধিদাতা গজাননকে প্রসন্ন করার জন্য সঙ্কষ্টী চতুর্থী এবং অন্য চতুর্থী ব্রত। গণেশের একেকটি নাম অনুসারে সেই সব চতুর্থী ব্রত পরিচিত হয়ে থাকে। এদের মধ্যে ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথির মাহাত্ম্য সর্বাধিক; বলা হয় যে যিনি এই চতুর্থীতে শ্রীগণেশের ১০৮ নাম কীর্তন করেন, তাঁর সর্বমনোবাঞ্ছা ভগবানের কৃপায় পূর্ণ হয়।
শিব ও পার্বতী পুত্র শ্রীগণেশের স্থান সর্ব্ব দেবদেবীর মধ্যে অন্যতম। তিনি বিঘ্নহর্তা, সুখকর্তা, সিদ্ধিদাতা। সব দেব দেবীর পূজায় সর্বপ্রথম করা হয় গণেশ বন্দনা। শ্রীগণেশ পুরাণে বর্ণিত আছে ভগবান গণেশের দ্বাদশ নাম স্তোত্র ।স্তোত্র পাঠ যেকোন দিনই শুভ তবে সংকষ্ট চতুর্থী (কৃষ্ণপক্ষের চতুর্থী তিথি) এবং বিনায়ক চতুর্থীতে (শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথি) গণেশ পূজা ও আরাধনার বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে।
গনেশের মূল 12টি নাম:- সুমুখ, একদন্ত, কপিল, গজকর্ণ, লম্বোদর, বিকট, বিঘ্ননাশক, বিনায়ক, ধূম্রকেতু, গণাধ্যক্ষ, ভালচন্দ্র তথা গজানন।
শ্রীগণেশ দ্বাদশনামস্তোত্রম্ সুমুখশ্চৈকদন্তশ্চ কপিলো গজকর্ণকঃ।
লম্বোদরশ্চ বিকটো বিঘ্ননাশো গণাধিপঃ।।
ধূম্রকেতুর্গণাধ্যক্ষো ভালচন্দ্রো গজাননঃ।
দ্বাদশৈতানি নামানি যঃ পঠেৎ শৃণুয়াদপি।।
বিদ্যারম্ভে বিবাহে চ প্রবেশে নির্গমে তথা।
সংগ্রামে সঙ্কটে চৈব বিঘ্নস্তস্য ন জায়তে।।
ইতি শ্রীগণেশপুরাণে শ্রীগণেশ দ্বাদশনামস্তোত্রং সমাপ্তম্ ।
ভগবান শ্রীগণেশের এই বারোটি নামের অর্থ –
সুমুখ – সুন্দর মুখ যাহার
একদন্ত – এক দাঁত যাহার
কপিল – বাদামী রঙের
গজকর্ণক – গজ বা হাতীর মতো কান
লম্বোদর – লম্বা উদর বা পেট যাহার
বিকট – যিনি বিশাল দেখতে
বিঘ্ননাশ – যিনি বাধা – বিপত্তি দূর করেন
গণাধিপ – গনদের অধিপ বা রাজা
ধূম্রকেতু – ধূম্রবর্ণের বা ধোঁয়াটে রঙের
গনাধক্ষ্য – গনদের অধ্যক্ষ বা নেতা
ভালচন্দ্র – যিনি ভালে বা কপালে চন্দ্র ধারণ করেন
ফলশ্রুতি
দ্বাদশৈতানি নামানি যঃ পঠেৎ শৃণুয়াদপি।।
বিদ্যারম্ভে বিবাহে চ প্রবেশে নির্গমে তথা।
সংগ্রামে সঙ্কটে চৈব বিঘ্নস্তস্য ন জায়তে।।
ইতি শ্রীগণেশপুরাণে শ্রীগণেশ দ্বাদশনামস্তোত্রং সমাপ্তম্ ।
ভগবান শ্রীগণেশের এই দ্বাদশ নাম স্তোত্র যিনি বিদ্যা আরম্ভে, বিবাহে,কোথাও প্রবেশকালে, প্রস্থানে, যুদ্ধে বা বিপদ সময়ে পাঠ করেন তিনি কোন বিঘ্নের সন্মুখীন হন না ।
শ্রীগণেশ পুরাণে বর্ণিত গণেশ দ্বাদশ নাম স্তোত্র সমাপ্ত ।
শ্রীগনেশ কে বা তিনি কার অবতার ছিলেন? “গণেশ্চ স্বয়ং কৃষ্ণকলোদ্ভব” কিভাবে শ্রীকৃষ্ণ গনেশ অবতার হলেন ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে, গোলকের অধীশ্বর কৃষ্ণের মনোহররূপ দেখে মুগ্ধ হয়ে পার্বতী অনুরূপ একটি পুত্রকামনা করেন।তাই পার্বতী শ্রীকৃষ্ণের সন্তুষ্টি বিধানের জন্য যজ্ঞ করেন তখন পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ মাতা পার্বতীকে তার ইচ্ছাপূরণের বর দেন। শিবপুরান মতে—মাতা পার্বতী দেহে হলুদ মাখার পর সেই হলুদ পার্বতী দেহের উপরিভাগ থেকে বের করে এক স্থানে রাখেন এবং সেই সমস্ত হলুদ দিয়ে একটি ছোট্ট শিশু রুপী পুতুল তৈরি করেন এবং পালঙ্কে সেই পুতুলকে রেখে তিনিও পাশে শয়ন করে মনে মনে পুত্র কামনা করতে করতে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন এবং পরে মাতা পার্বতীর নিদ্রা ভাঙ্গার পর তিনি দেখেন যে তার নির্মিত পুতুলে শ্রীকৃষ্ণের বর প্রভাবে প্রান সঞ্চারের ফলে ( শ্রীকৃষ্ণ শিশুর বেশে পালঙ্কে আবির্ভূত হন) —- পালঙ্কে ‘শতচন্দ্রসমপ্রভম্’ এক শিশুকে শয্যায় দেখতে পেয়ে আনন্দিত হন - এইভাবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বর প্রভাবে ভগবান স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ অংশাবতারের মাধ্যমে মাতা পার্বতীর সন্তান গণেশ রূপে আবির্ভূত হন।। এরপর দেবতা ও ঋষিগণ কুমারকে দেখতে শিবের ভবনে আসেন এবং আশির্বাদ করেন। তাদের মধ্যে- লক্ষীদেবী আশীবাদ করেন- "তব এই পুত্র কৃষ্ণ তুল্য হবে-,ধার্ম্মিক শ্রেষ্ঠ পুত্র হবে " পার্বতী মিষ্টবচনে নিজের পুত্র গণেশকে বর দেন যে, তার এই পুত্র শিবের মত যোগী হবেন। অন্যান্য দেবতাদের মত আসেন শনি দেবও । শনি নিজের কুদৃষ্টির কথা পার্বতীকে জানান। পার্বতী তবু তাঁকে পীড়াপীড়ি করলে তিনি কুমারকে দেখতে সম্মত হন। কিন্তু শনি সভয়ে বাঁ-চোখের কোণ দিয়ে কুমারকে দৃষ্টি প্রদান করার পর- পরবর্তীতে ভগবান শিবের সঙ্গে যুদ্ধে গণেশের মস্তক ছিন্ন হয়ে গোলকে কৃষ্ণের দেহে গিয়ে মেশে। পার্বতী শোকে কাতর হয়ে পড়েন। তখন বিষ্ণু গরুড়ে আরোহণ করে পুষ্পভদ্রা নদীর তীরে এসে উত্তরদিকে মাথা করে শুয়ে থাকা এক হাতিকে দেখেন। তার মস্তক ছিন্ন করলে হস্তিনী ও তার শাবকেরা কাঁদতে কাঁদতে বিষ্ণুর স্তব করতে থাকেন।তখন বিষ্ণু ঐ মুণ্ডটি থেকে দুটি মুণ্ড তৈরি করে একটি হাতির স্কন্ধে ও অপরটি গণেশের স্কন্ধে স্থাপন করে উভয়কেই জীবিত করেন। শিবের এবং সমস্ত দেবতা এবং ভগবান বিষ্ণুর অনুগ্রহে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অংশবতার গণেশ সকল দেবতার অগ্রে পূজিত হবার অধিকার প্রাপ্ত হন। পার্বতী ও শিবের বরে গণেশ গণাধিপতি, বিঘ্নেশ্বর ও সর্বসিদ্ধিদাতা হন। কেন গার্হস্থ শ্রীকৃষ্ণ ভক্তগন গনেশ পুজা করে উত্তর--গার্হস্থ্য শ্রীকৃষ্ণ ভক্তগন শ্রীগনেশের পূজার মধ্য দিয়ে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণেরই পুজা করে তাঁকে সন্তুষ্ট করতে চান।কারন তাঁরা জানেন,বিঘ্নহারী গজানন শ্রী গনেশ স্বয়ং পরমব্রহ্ম শ্রীকৃষ্ণ এর অংশাবতার। এই নিয়ে শাস্ত্রে বলছে- হে নারদ! দেবী দূর্গা ও ভূপতি মহাদেব,উভয়ে দাম্পত্য ধর্ম্ম প্রবৃত্ত হইলে বিশ্ব বিঘ্ন বিনাশন গনেশ ও কার্তিকের উৎপত্তি হয়। তান্মধ্যে গনেশ সাক্ষাৎ কৃষ্ণ এবং কার্তিক নারায়নের অংশোৎপন্ন।। (ব্রহ্মবৈবর্তপুরান,প্রকৃতিখন্ড,অধ্যায় ১, শ্লোক ১৪৮) সিদ্ধিদাতা গনেশকে সর্বাগ্র পূজা না করলে কি হয়?? উত্তর::- কার্তিকেয়কে সেনাপতির পদে নিয়োগ করতে গিয়ে ইন্দ্রের হাত স্তম্ভিত হয়ে যায়। তিনি শিবকে এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, গণেশকে আগে পূজা না করার জন্যই এমন হয়েছে। গণেশকে বিঘ্ননাশকারী, শিল্প ও বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক এবং বুদ্ধি ও জ্ঞানের দেবতা রূপে পূজা করা হয়। বিভিন্ন শুভকার্য, উৎসব ও অনুষ্ঠানের শুরুতেও তার পূজা প্রচলিত আছে। অক্ষর ও জ্ঞানের দেবতা রূপে লেখার শুরুতেও গণেশকে আবাহন করা হয়। গনেশের মূল 12টি নাম:- সুমুখ, একদন্ত, কপিল, গজকর্ণ, লম্বোদর, বিকট, বিঘ্ননাশক, বিনায়ক, ধূম্রকেতু, গণাধ্যক্ষ, ভালচন্দ্র তথা গজানন। শ্রীগনেশের তুষ্টির ফলে সকল বাধা বিপত্তি দূর হয়, পরিবারে শান্তি ফিরে আসে, রোগ-শোক দূর হয়,অর্থ লাভ হয় এবং সর্ব কাজে সিদ্ধি আসে।তাই ভক্তগন ভক্তিভরে এই দিন শ্রীকৃষ্ণরূপ গনেশের পুজা করেন। শাস্ত্র বলে বুধবার হল শ্রীগনেশের দিন। এদিন ফুল-মোদক দিয়ে দেবের পুজো করলে নানা উপকার পাওয়া যায়। গণেশ প্রণামঃ- একদন্তং মহাকায়ং লম্বোদর গজাননম। বিঘ্নবিনাশকং দেবং হেরম্বং পনমাম্যহম।। অর্থাৎ, যিনি একদন্ত, মহাকায়, লম্বোদর, গজানন এবং বিঘ্ননাশকারী সেই হেরম্বদেবকে আমি প্রণাম করি। গণেশ বীজমন্ত্রঃ – “ওঁ গাং গণেশায় নমঃ” গণেশগায়ত্রী:- “ ওঁ একাদান্তিয়াভিদমাহে, বাক্রাতুন্ডা ধিমাহি, তানো দান্তিপ্রাচোদায়াৎ ওঁ " গণেশ ধ্যানঃ- ওঁ খর্বং স্থূলতনুং গজেন্দ্রবদনং লম্বোদরং সুন্দরং | প্রস্যন্দম্মদগন্ধলুব্ধ মধুপব্যালোলগণ্ডস্থলম্ || দন্তাঘাত বিদারিতারিরুধিরৈঃ সিন্দুরশোভাকরং | বন্দেশৈল সুতাসুতং গণপতিং সিদ্ধিপ্রদং কামদম্ || অর্থাৎ, যিনি খর্বাকৃতি, স্থূল শরীর, লম্বোদর, গজেন্দ্রবদন অথচ সুন্দর, বদন হইতে নিঃসৃত মদগন্ধে প্রলুব্ধ ভ্রমর সমূহের দ্বারা যাঁহার গণ্ডস্থল ব্যাকুলিত, যিনি দন্তাঘাতে শত্রুর দেহ বিদারিত করে তাঁর দন্ত দ্বারা নিজ দেহে সিন্দূরের শোভা ধারণ করিয়াছেন; সেই পার্বতীপুত্র সিদ্ধিদাতা গণপতিকে বন্দনা করি।