শ্রাদ্ধঅন্ন ভোজন
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন......
“বেদোক্তঃ পরম ধর্মঃ—--- সম্প্রীতি ভোজ্যানি আপদা ভোজ্যানি বা পুনৈঃ।। “
অনুবাদ:- "বৈদিক শাস্ত্র ধর্মঃ অনুশাসন অনুসারে —-যে খাওয়াচ্ছে আর যে খাচ্ছে—-- এই দুজনেরই যদি মন ধার্মিক ভাবাপন্ন ভাবে প্রসন্ন থাকে, তাহলেই ভোজন করা উচিত, নচেৎ ভোজন করা উচিত নয়।”
কিন্তু যিনি খাওয়াচ্ছেন আর যিনি খাচ্ছেন, তাদের মনে যদি ব্যথা বেদনা থাকে, সেই পরিস্থিতিতে কক্ষনো ভোজন গ্রহণ করা উচিত নয়।"
মহাভারতে, অনুশাসন পর্বে লেখা আছে, মৃত্যুভোজ / শ্রাদ্ধঅন্ন ভোজ কর্মচঞ্চলতা কমিয়ে কায়-মনো-বুদ্ধি-জ্ঞান-ধর্ম-বাক্যে বা এককথায় সর্বদিক দিয়ে প্রৌঢ়ত্ব প্রদান করে / শুভশক্তি নষ্ট করে এবং কায়-মনো-বুদ্ধি-জ্ঞান-ধর্ম-বাক্যে বা এককথায় সর্বদিক দিয়ে অশুভশক্তি বৃদ্ধি করে।
যে পরিবার মৃত্যু নামক বিপদের সম্মুখীন, সেই প্রবল বিপত্তির সময় সেই পরিবারের পাশে দাঁড়ান, শারীরিক ও মানসিক ভাবে তাদের সবরকম সাহায্য করুন কিন্তু 11/13/15/30 দিনে শ্রাদ্ধদিবসে শ্রাদ্ধবাড়ির শ্রাদ্ধভোজ পরিত্যাগ করুন। কারোর মৃত্যু হলে তার সন্তান সন্ততিরা অসৌজ পালন করার পর আত্মার শান্তি কামনা করার জন্য শ্রাদ্ধ শান্তি করে। তারপর আত্মীয় স্বজনদের নিমন্ত্রন করে খাওয়ায়। কিন্তু হিন্দু পুরাণ মতে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের খাবার খাওয়া পাপ এবং একে প্রেত-ভোজন বলে। । কায়-মনো-বাক্যে অথবা সর্বদিক দিয়ে বহিষ্কার করুন বৈদিক শাস্ত্র বিরুদ্ধ এই কুরীতির।
মৃত্যুভোজ / শ্রাদ্ধঅন্ন ভোজ এর কুফল:-----
1.কায়-মনো-বুদ্ধি-জ্ঞান-ধর্ম-বাক্যে বা এককথায় সর্বদিক দিয়ে প্রৌঢ়ত্ব প্রদান করে / শুভশক্তি নষ্ট করে ।
2. কায়-মনো-বুদ্ধি-জ্ঞান-ধর্ম-বাক্যে বা এককথায় সর্বদিক দিয়ে অশুভশক্তি বৃদ্ধি করে।
3. ধর্ম-অধর্ম, ন্যায়-অন্যায়, সত্য-অসত্য, বিবেক-অবিবেক, জ্ঞান-অজ্ঞান, কর্তব্য-অকর্তব্য,
কর্ম-অকর্ম ইত্যাদি সমস্ত বিচারবুদ্ধি বিলোপ করে । শারীরিক বহুপ্রকার রোগব্যাধির হয় ।
4. বহু বছরের সাধনা-জপ-তপ-ব্রত-পূজা রুপি যে পুণ্য বা ধর্মরুপি কর্মফল সম্পূর্ণরূপে বিনাশ করে ।
5. শাস্ত্র, গুরু , ঈশ্বরের প্রতি অন্তরের স্থিত শ্রদ্ধাকে ধীরে ধীরে বিষক্রিয়ার মতন বহুবিধ উপায় কমিয়ে দেয় ।
6. তীর্থ দর্শন এর যে পূর্ণ বা ধর্ম তারও ফল কে সম্পূর্ণরূপে বিনাশ করে ।
7 .শ্রাদ্ধ অন্ন যে কোন উপায় মানুষের পেটে প্রবেশ করলে সর্বদা সাধনার রাস্তায় বিঘ্ন-বাধা উৎপত্তি করে থাকে ।
8. বাস্তবিক জীবনের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না ।এই শ্রাদ্ধঅন্ন খেলে মানুষ মতিভ্রম হয়ে অনেক পাপ কাজও করে ।
9. গুরু প্রদত্ত উপদেশ / শাস্ত্র থেকে উপার্জিত জ্ঞান স্মৃতি থেকে ধীরে ধীরে সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত করে ।
10. মানুষের মনুষ্যত্ব চরিত্রকে কখনো স্থির চরিত্র হতে দেয় না সর্বদায় চরিত্রহীনের পথে নিয়ে যায় ।
11. এই শ্রাদ্ধঅন্ন মনের ভক্তি ভাবকে নষ্ট করে দেয়। দীক্ষা নিলে শ্রাদ্ধ বাড়িতে খাওয়া সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
