পিতৃপক্ষে স্বর্গত পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে পার্বন শ্রাদ্ধ ও তর্পন করা হয়। যমালয় থেকে মর্ত্যলোকে এ সময় পিতৃ পুরুষেরা আসেন। তাদেরকে তৃপ্ত করার জন্য তিল, জল, দান করা হয়। এবং তাহাদের যাত্রাপথকে আলোকিত করার জন্য উল্কাদান করা হয়।
এই অমাবস্যায় পিতৃপূজা সেরে পরের পক্ষে
দেবীপূজায় প্রবৃত্ত হতে হয়। তাই দেবীপূজার পক্ষকে বলা হয় দেবীপক্ষ বা মাতৃপক্ষ, মহালয়া হচ্ছে পিতৃপক্ষের শেষ দিন এবং দেবী পক্ষের শুরুর পূর্ব দিন পিতৃপক্ষে আত্নসংযম করে দেবী পক্ষে শক্তি সাধনায় প্রবেশ করতে হয়। দেবী শক্তির আদিশক্তি, তিনি সর্বভূতে বিরাজিত। তিনি মঙ্গল দায়িনী করুনাময়ী। সাধক সাধনা করে দেবীর বর লাভের জন্য, দেবীর মহান আলয়ে প্রবেশ করার সুযোগ করেন বলেই এ দিনটিকে বলা হয় মহালয়া।
মহালয়ার পর প্রতিপদ তিথি থেকে দেবী বন্দনা শুরু হয়। কোন কোন অঞ্চলে দেবীর আরাধনা প্রতিপদ থেকে শুরু হয়।
পিতৃপক্ষে পিতৃপুরুষগণকে স্মরণ করা হয়। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা পালন করা হয়। এই সময় ভগবান বিষ্ণুর কৃপায় পিতৃলোক থেকে পৃথিবীলোক পর্যন্ত এক জ্যোতির্ময় রাস্তা খোলা থাকে। যতজন পিতৃপুরুষের এখনো জন্ম হয় নি, তাঁরা এই রাস্তা ধরে আমাদের একদম সামনে আসতে সমর্থ হয় এবং আমরা শ্রদ্ধা সহকারে নাম ও গোত্র ধরে যাহাই নিবেদন করি তাহাই তাঁরা সবকিছু প্রাপ্ত হন।
প্রত্যেক ব্যাক্তির ( যাদের পিতা -মাতার মৃত্যু হয়েছে) এই পিতৃপক্ষে পিতৃতর্পণাদি করা পরম কর্তব্য। এই কর্তব্য যিনি করেন তাঁর বহু পাপের বিনাশ হয়, বহু পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার প্রয়োজন হয়না এবং কুন্ডলীগত বহু দোষ আপনা থেকেই কেটে যায়।
পিতৃপক্ষের যে কোনো কর্মের লোহার বাসন ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং তার সঙ্গে পশু -পাখিদের খাওয়ানো কর্তব্য। এই পিতৃপক্ষের সময় যেকোনো নেশা জাতীয় খাদ্য , দূষিত খাদ্য এবং অশাস্ত্রীয় কেউ কর্ম বর্জন করা উচিত। তবেই উপরোক্ত সমস্ত সৎফল প্রাপ্ত হওয়ার উপযুক্ততা লাভ হয়।