অস্পমার(পাপ পুরুষ) কিভাবে ৩০টি বিষয়ের ওপর তার প্রভাব বিস্তার করে:- •স্থূল শরীর:- এই স্থূল শরীরের ওপর ক্ষুদা, তৃষ্ণা, নিদ্রা, আলস্য এই চারটি ভাবে অস্পমার(পাপ পুরুষ) তার প্রভাব বিস্তার করে। উদাহরণ: স্বামী বিবকানন্দ যখন নিরন্তর সাত থেকে আট ঘণ্টা বক্তৃতা দিতেন, সেই আট ঘণ্টার মধ্যে খাবার খাওয়ার ও সময় আসতো কিন্তু তিনি নিরন্তর বক্তৃতা দিতেন, অর্থাৎ ওনার মধ্যে এই চারটি ভাবের উপলব্ধি হতনা। কিন্তু সাধারণ মানুষের যখনই ওই পেটে ক্ষুদা, জলের জন্য তৃষ্ণা, নিদ্রা, আলস্য ভাব জেগে ওঠে তখন সেই সেই ব্যাক্তির আর সৎসঙ্গে মন বসেনা, স্বয়ং গুরু যদি সৎসঙ্গ করেন তাও সেই ব্যাক্তির মন বসেনা বরং সেই পেটের ক্ষুদার জন্য সে কিছু না কিছু খেয়ে ক্ষুদার তৃপ্তি করার পথ খোঁজে। অর্থাৎ কোনো সৎসঙ্গ, কোনো তীর্থস্থান, কোনো মন্দিরে গিয়েও ক্ষুদা, তৃষ্ণা মনে থাকে। সেই মনে করাবার পেছনে সেই সৎসঙ্গের প্রতি, সেই তীর্থস্থানের দেবতার প্রতি বা সৎ আলোচনার প্রতি একাগ্রতাকে ভঙ্গ করে, এইদিক ওইদিক নানান ঝোঁক/প্রবণতা (tendency) উৎপন্ন করাই শারীরিক এই চারটি জিনিসের মধ্য দিয়ে। এটিই অস্পমারের(পাপ পুরুষ) প্রভাব স্থূল শরীরের ওপর। কিন্তু যে একাগ্র, শ্রদ্ধা যুক্ত তার কিন্তু ওই শ্রদ্ধা কালীন বা শ্রবণ কালীন বা তীর্থ দর্শন কালীন এই অনুভব গুলো অস্পমার(পাপ পুরুষ) করাতে পারেনা। যেহেতু অপস্মারের প্রভাব যদি ৫ হয় এবং তাঁর শ্রদ্ধার প্রভাব যদি ৬ হয় তাহলে অপস্মার পারবেনা, আবার অস্পমারের(পাপ পুরুষ) প্রভাব যদি ৬ হয় এবং শ্রদ্ধা যদি ২ হয় তাহলে অস্পমার(পাপ পুরুষ) জিতে যাবে এবং এই ক্ষুদা, তৃষ্ণা, নিদ্রা, আলস্য এর মধ্য দিয়ে স্থূল শরীরের ওপর তার প্রভাব বিস্তার করবেই। •সূক্ষ্ম শরীর:- জীবাত্মার সৃষ্টি হয়েছে পরমাত্মা থেকে, কিন্তু মৃত্যুর পরেও যে 'আমার' ভাব থেকে যায় , যেমন: আমার ছেলে, আমার বউ, আমার স্বামী ইত্যাদি। অর্থাৎ মৃত্যুর পরেও যে প্রেত তার ঘরে বাস করে, সেটা পাপাত্মা অস্পমারের(পাপ পুরুষ) কাজ। সে যদি ঈশ্বরের শরণাগত হতো তাহলে কখনই পুনরায় মৃত্যুর পর ওই পুরানো ফেলে আসা সংসারের পেছনে থাকতো না, অর্থাৎ প্রেত শরীরের আধীন হতনা। অর্থাৎ মহা পাপ শরীর রূপি অস্পমার(পাপ পুরুষ) সেই সূক্ষ্ম প্রেত শরীরেও তার কার্যকলাপ / প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। তাহলে সূক্ষ্ম শরীরেও অস্পমারের(পাপ পুরুষ) প্রভাব, তার মরে যাওয়ার পরেও,,, সে জানে সে মরে গেছে, সে বুঝে যে সে কোনো কিছু স্পর্শ করতে পারছে না, কোনো কিছু সে করতে পারছেনা,, তার পরেও সেই ঘরে বাস করার কারণ কী? সেই রকম যে দৃঢ় একটা মূর্খামি সেটা অস্পমারের(পাপ পুরুষ) সূক্ষ্ম শরীরের ওপর প্রভাব। •চক্ষু:- (উদাহরন) একটা সুন্দর নারী, তাকে মা রূপেও দেখা যায় আবার অন্য রূপেও দেখা যায়, তবে অস্পমার(পাপ পুরুষ) অন্য রূপেই দেখায়। মা একটা শুদ্ধ গুন হওয়ায়, সেই রূপে দেখায় না। এটি চক্ষুর ওপর অস্পমারের(পাপ পুরুষ) প্রভাব। তবে সেই শুদ্ধ গুণটি লাভ করার চেষ্টা নিজেকে করতে হবে 'ব্রহ্মচর্য'(42টি অনুশাসনের একটি অনুশাসন) পালন এর মাধ্যমে। •কর্ণ:- (উদাহরণ) কান দিয়ে dj শুনতে, সিনেমার গান শুনতে, ইত্যাদি প্রকার গান বাজনা শুনতে বেশি ভালো লাগে কিন্তু হরিনাম শুনতে কম ভালো লাগে বা ভালো লাগেনা। এই যে হরিনাম শুনতে কম ভালো লাগা এবং dj শুনতে বেশি ভালো লাগা, এটিই হচ্ছে কর্ণের ওপর অস্পমারের(পাপ পুরুষ) প্রভাব। •নাসিকা:- প্রাকৃতিক কোনো ফুলের গন্ধ ভালো লাগায় এবং গরুর মল্ বা গোবরের গন্ধ পাওয়াই দুর্গন্ধ বা ঘৃনা লাগানো বা অনুভব করায়, এটিই নাসিকার ওপর অস্পমারের(পাপ পুরুষ) প্রভাব। •জিহবা:- জিহ্বার কাজ হচ্ছে রস আস্বাদন করা। কিন্তু দ্রব্য বা খাদ্য বিশেষে, কোনো কিছু খেতে ভালো লাগা আবার কোনো কিছু খেতে খারাপ লাগা, অর্থাৎ জিহ্বার মাধ্যমে স্বাদ বিশেষে খারাপ বা ভালো লাগা। এটিই জিহ্বার ওপর অস্পমারের(পাপ পুরুষ) প্রভাব। •ত্বক:- (উদাহরণ) কোনো নারীর স্পর্শ, ফুলের স্পর্শ, কোনো আজে বাজে স্থানের স্পর্শ, কোনো আজে বাজে লোকের স্পর্শ ইত্যাদি ভালো লাগে, কিন্তু কোনো মহাত্মার, কোনো সাধু সঙ্গের স্পর্শ ভালো লাগেনা। এটিই হচ্ছে ত্বকের ওপর অস্পমারের(পাপ পুরুষ) প্রভাব। •বাক (মুখ):- বাক্য সংযম না থাকায়, মানুষ মনে আসা মাত্রই মুখ দিয়ে অপবাক্য, অন্যের প্রতি নিন্দা চর্চা করা, কটু বাক্য বলা ইত্যাদি প্রকারের দুষ্কর্ম করে থাকে। এই যা খুশি ইচ্ছা মাত্রই বলা। এটিই হচ্ছে মুখের ওপর অস্পমারের(পাপ পুরুষ) প্রভাব। •পানি (হাত):- অস্পমার(পাপ পুরুষ) হাতের ওপর তার প্রভাব দিয়ে কখনো কোনো প্রকার সৎ কর্ম করাই না বা ইচ্ছা জাগায় না বরং হাত দিয়ে অসৎ, পাপ রূপি, দুষ্কৃতী রূপি কর্ম করাই। •পাদ (পা):- পা দিয়ে দৌঁড়াতে ভালো লাগে, dj তে নাচতে বেশি ভালো লাগে, কোনো প্রকার মনোরঞ্জক স্থানে ঘুরতে বেশি ভালো লাগে, কিন্তু কোনো তীর্থ স্থানে দর্শন করতে গিয়ে চলতে হলে কম ভালো লাগে, পায়ে চলে মন্দিরে গিয়ে দেবতার দর্শনের জন্য লাইনে দাড়িয়ে থাকতে ভালো লাগেনা। এই ভাবে ভালো লাগা এবং ভালো না লাগার মধ্যে অস্পমার(পাপ পুরুষ) তার প্রভাব বিস্তার করে ' পাদের ' ওপর। •মন:- (উদাহরণ) আমার মন শান্ত অবস্থায় ছিল, হঠাৎ একজন এসে বুঝালো যে একটা গভার্নমেন্ট সার্ভিস যদি জোগাড় করে নিতে পারো তাহলে খাওয়া পরার অভাব তোমার আর হবে না। তখন আমি পরীক্ষার নামে জালিয়াতি / প্রতারণা করে পার্থ চট্টোপাধ্যায় কে বা কোনো দুর্নীতিগ্রস্ত মন্ত্রীকে ঘুষ দিয়ে এলাম। তাহলে আমার মনের মধ্যে কত রকম দুষ্কর্ম করিয়ে দিল লোভ থেকে। লোভ কিসের?,, গভার্নমেন্ট সার্ভিস এর লোভ। ''ভগবান আমাদের রক্ষণাবেক্ষণ করেন না বরং গভার্নমেন্ট সার্ভিস নাকি আমাদের রক্ষণাবেক্ষণ করেন''- এইরকম অজ্ঞতা প্রদান করে। তাহলে পরিস্থিতি এবং স্থান বিশেষে লোভ, স্বার্থপরতা ভোগলালূপিতা এইগুলি পার সেকেন্ড বদলে দেয়, এবং সুযোগসন্ধানী চরিত্রের পরিচয় দেয়। অর্থাৎ সুযোগ সন্ধানী, স্বার্থপরতা, ভোগ ললুপোতা, ভোগ বিলাসিতা এবং সেই ভোগবিলাস এর জন্য জড় জাগতিক স্থায়ী অবস্থা (stability) এগুলো, যে যে উপায় অবলম্বনের মাধ্যমে এই গুলি পূর্ণহবে, সেই সেই দিকে মনকে ধাবিত করে অস্পমার(পাপ পুরুষ)। এটি অস্পমারের(পাপ পুরুষ) প্রভাব মনের উপর। •সংবেদনশীলতা:- সংবেদনশীলতা মানুষের এমন এক অনুভূতি যখন সে নিজেকে দুর্বল অনুভব করে, অসহায় অনুভব করে। ধরা যাক,(উদাহরণ) কোনো এক গভীর রাত্রে জঙ্গলের মধ্য কোনো ব্যাক্তি একা পড়ে গেছে , সে জানেনা ভূত আসবে ,না পিশাচ আসবে, না চোর ডাকাত আসবে,, সেই সময় সেই ব্যক্তি নিজেকে একা, অসহায় অনুভব করে এটা একপ্রকার সংবেদনশীলতা। এছাড়া ধরা যাক কোনো ব্যক্তির এমন এক সময় এলো যখন সবাই তাকে চুরির দোষে চোর বলছে কিন্তু সেই ব্যাক্তি চুরি করেনি অথচ সবাই তাকে চোর বলছে, সেই সময় সেই ব্যাক্তি অসহায় অনুভব করে এবং তার পাশে কেউ নেই, সে একা অনুভব করে। এই অসহায় ভাব যখন পূর্ণ মাত্রায় পৌঁছে যায়, অর্থাৎ সংবেদনশীলতা যখন কোনো ব্যাক্তির মধ্যে পূর্ণ মাত্রায় জাগে, সেই অবস্থায় সেই ব্যাক্তিকে অস্পমার(পাপ পুরুষ) অনুভব করায় সে একা, সে অসহায়। সেই ব্যাক্তির মধ্যে তখন অপস্মার পূর্ণ মাত্রায় মনমরা ভাব বাড়িয়ে ,আত্মহত্যা করার প্রবৃত্তিকে বৃদ্ধি করে এই সংবেদনশীলতার সুযোগ নিয়ে। কিন্তু সে বুঝতেই দেয়না আমাদের সঙ্গে আরেকজন সর্বদা আছে, সর্বদা সাক্ষী স্বরূপ আছে। এটা ভুলিয়ে রাখে এবং আর এটাকে ভুলিয়ে দেওয়াই অস্পমারের(পাপ পুরুষ) প্রধান কাজ। তাহলে অপস্মারের এই কৌশলটাকে হারাতে হলে, আমাদের সর্বদা মনে রাখতে হবে তিনি সর্বদা আমাদের সঙ্গে আছেন, জগতের লোক থাক বা না থাক। এবং যারা প্রকৃত সদগুরুর থেকে দীক্ষা প্রাপ্ত হয়েছে তাদের সর্বদা মনে রাখা উচিত যে, সে যে বীজের দীক্ষা পেয়েছে সেই বীজের ইষ্টদেব এবং স্বয়ং গুরু শক্তি তার সঙ্গে রয়েছে। • স্মৃতি ও মেধা:- স্মৃতি এর ওপর অস্পমারের(পাপ পুরুষ) প্রভাব হলো গুরু বা শাস্ত্র বা সৎসঙ্গের প্রভাবে যে উপদেশগুলো এলো, সেইগুলো স্মৃতিতে ধরে রাখতে না পেরে বরং ভুলে যাওয়া। সেই সৎ উপদেশ ভুলিয়ে দেয়া রূপি কাজ অপস্মার স্মৃতি ও মেধার ওপর তার প্রভাবের মাধ্যমে করে থাকে। কিন্তু যদি সব সময় সতর্ক থেকে নিত্য অনিত্য বিচার করে অনুশাসন পালন করলে এবং এই সৎসঙ্গের আলোচনা উপদেশ স্মরণ মনন করা হয় তাহলে অস্পমার(পাপ পুরুষ) তার প্রভাব বিস্তার করতে পারেনা। একই ভাবে পঞ্চ জ্ঞানেন্দ্রিয় (চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহবা, ত্বক); পঞ্চ তন্মাত্র (রূপ, রস, গন্ধ, শব্দ, স্পর্শ) এবং পঞ্চ কর্মেন্দ্রিয় (বাক, পানি, পাদ, পায়ু, উপস্থ) এবং অন্যান্য সবগুলোকেই নিত্য অনিত্য বিচার এবং দৃঢ় 42 অনুশাসনের পালনের দ্বারা অস্পমারের(পাপ পুরুষ) প্রভাব মুক্ত করা সম্ভব। তাই আলাদা আলাদা ব্যাক্ষা না করলেও চলবে। একটা হলো দিব্য সত্তার প্রতীক এবং আরেকটা হলো রাক্ষসী/আসুরিক সত্তার প্রতীক। আমরা যদি শরীর, পঞ্চ জ্ঞানেন্দ্রিয়, পঞ্চ তন্মাত্র, পঞ্চ কর্মেন্দ্রিয়, মন এবং অন্যান্য সব রকম বিষয়গুলির দৃষ্টিকোণকে ঈশ্বরীয় বা দৈব দৃষ্টিকোণে পরিবর্তন(convert) করতে পারি এবং সেই পরিবর্তনের শতাংশ পরিমাণ যদি অস্পমারের(পাপ পুরুষ) প্রভাবের শতাংশ পরিমাণের থেকে বেশি হয়, (উদাহরন:- আমার দৃষ্টিকোণের পরিবর্তনের পরিমাণ ৬ এবং অপস্মারের পরিমাণ ৫ হয়) তাহলে অস্পমারকে(পাপ পুরুষ) সেই সেই বিষয় থেকে হাটানো সম্ভব হবে। এই অস্পমারকে(পাপ পুরুষ) দুর্বল করতে হলে বা যুদ্ধে পরাজয় করতে হলে শাস্ত্র অনুযায়ী 'পূর্ণ আহার শুদ্ধি'(আহার শুদ্ধি, ভাব শুদ্ধি, কর্ম শুদ্ধি, নিয়ম শুদ্ধি, শাস্ত্র সময় অনুযায়ী আহার গ্রহন করা, পরিমিত আহার করা), খুবই প্রয়োজন। পূর্ণ আহার শুদ্ধি নিরন্তর পালন করলে 60% শক্তি প্রাপ্ত হওয়া যায়। সৎসঙ্গ এবং বাকি 41টি অনুশাসন পূর্ণতা পালন করতে পারলে বাকি 40% শক্তি প্রাপ্ত হওয়া যায়। এই আহার শুদ্ধি থেকে 60% + সৎসঙ্গ এবং বাকি 41টি অনুশাসন থেকে 40% = 100% শক্তি প্রাপ্ত হওয়া যায়, যার দ্বারা অস্পমারকে(পাপ পুরুষ) নিস্তেজ / দুর্বল করা যায়। এবং 12 বছর অখণ্ডিত রূপে নিত্য অনিত্য বিচার সহ এই 42টি অনুশাসন দৃঢ় ভাবে পালন করতে পারলে এবং সর্বদা সর্ব কর্মে শাস্ত্র অনুযায়ী চলতে পারলে এই অস্পমার(পাপ পুরুষ) পূর্ণ রূপে নিস্তেজ হয়ে যায় এবং অস্পমার(পাপ পুরুষ) নিস্তেজ হলেই মনুষ্যভাব লাভ হয় এবং তারপর গুরু কৃপায়, গুরু প্রদত্ত সাধনার দ্বারা, সাধনার উত্তম স্তর লাভ করে গুরুপ্রদত্ত ব্রহ্মবিদ্যা লাভ করে সাধনা করতে করতে যখন আত্মজ্ঞান লাভ হয়, তখন এই শরীরে এবং 30টি বিষয়ে থাকা এই নিস্তেজ অস্পমার(পাপ পুরুষ) পূর্ণরূপে বেরিয়ে যায়। অর্থাৎ মনুষ্য ভাব লাভ করলে অস্পমার(পাপ পুরুষ) নিস্তেজ হয়ে যায় ঠিকই কিন্তু আত্মজ্ঞান লাভ না হওয়া অবধি অস্পমার(পাপ পুরুষ) বেরোই না।
•প্রশ্ন.. এই অস্পমার(পাপ পুরুষ) এবং আমাদের মধ্যে যে যুদ্ধ চলছে তার মধ্যে অপস্মারকে কিভাবে হারানো যায়? উঃ- অস্পমার(পাপ পুরুষ) এর কাজ আমাদের নিম্নগামীতা প্রদান করা, এবং সে তার কাজ প্রতি মিলি সেকেন্ড এই ৩০টি বিষয়ের মাধ্যমে করে। মায়া শক্তির প্রতিনিধি / দূত রূপে এই অস্পমার(পাপ পুরুষ) এই ৩০টি বিষয়ের ওপর তার রাজত্ব করে চলেছে। জন্ম জন্ম আমরা এই মন(৩০টি বিষয়ের ১টি বিষয়) অনুযায়ী চলেছি এবং এই জন্মে যখন শ্রী গুরুদেব এর কৃপায় প্রকৃত শাস্ত্র এবং বেদান্তের অনুশাসনের পথ প্রাপ্ত হয়ে, এই পথে চলিবার চেষ্টা করি তখন শুরু হয় অস্পমার(পাপ পুরুষ) এবং আমাদের মধ্যে যুদ্ধ, কিন্তু যেহেতু অস্পমার(পাপ পুরুষ) খুবই শক্তিশালী তাই একে পরাজিত করা সহজতর নয়। অস্পমার(পাপ পুরুষ) কোনোদিনও চাইবেনা আমরা এই পথে চলি, তাই অস্পমার(পাপ পুরুষ) এই ৩০টি বিষয়ের মাধ্যমে সর্বদা প্রতি মিলি সেকেন্ড আমাদের টানতে থাকে এবং আমরা না চাইতেও এই টানে পড়ে সেই নিচের দিকে চলে যায়, অর্থাৎ বেদান্ত অনুশাসন এবং নিত্য অনিত্য বিচার অখন্ডিত রূপে পালন করে উঠতে পারিনা, তার কারণ এই অস্পমার(পাপ পুরুষ) তার পূর্ণ শক্তিতে থেকে তার কার্যকারিতা করে চলে। অস্পমারকে(পাপ পুরুষ) মারা যায়না, তাকে এই শরীর এবং ৩০টি বিষয় থেকে বের করা যায়, তাও সেটা সম্ভব হয়ে ওঠে আত্মজ্ঞান লাভের পর। আমাদের এই আত্মজ্ঞান লাভের পথে চলতে হলে এবং অস্পমারকে(পাপ পুরুষ) পরাজিত করতে হলে, 42টি অনুশাসন নিত্য অনিত্য বিচার অখণ্ডিত রূপে সর্বদা পালন করে চলতে হবে। তাহলে প্রথমে আমাদের জানতে হবে এই অস্পমারকে(পাপ পুরুষ) কিভাবে শক্তিহীন করা যায়, কারণ এই অস্পমার(পাপ পুরুষ) তার পূর্ণ শক্তিতে থাকলে তার সঙ্গে যুদ্ধ করা সম্ভব হবেনা। অস্পমারকে(পাপ পুরুষ) শক্তিহীন/দুর্বল করিতে হইলে প্রথম আমাদের অখণ্ডিত ভাবে 'তপস্যা' পালন করতে হবে অর্থাৎ পূর্ণ আহার শুদ্ধি করতে হবে এবং একই সঙ্গে সৎসঙ্গ করতে হবে। এই অস্পমারকে(পাপ পুরুষ) দূর্বল করতে আহার শুদ্ধি ৬০% সাহায্য / কাজ করে এবং সৎসঙ্গ এবং অন্যান্য 41টি অনুশাসন ৪০% সাহায্য / কাজ করে। অর্থাৎ সর্বপ্রথম আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আহার শুদ্ধি পূর্ণ রূপে পালন করতে হবে, কারণ অস্পমার(পাপ পুরুষ) সর্বপ্রকার রাজসিক, তামসিক, অশুদ্ধ আহার থেকে শক্তি প্রাপ্ত হয়ে থাকে। আহার শুদ্ধি এর মধ্যে ৩টি ভাগ রয়েছে:- • আহার শুদ্ধি:- আত্মজ্ঞান লাভের পথে যে সব দ্রব্য শাস্ত্রে নিষিদ্ধ করা হয়েছে সেইসব দ্রব্য ভোজন করলে আহার শুদ্ধি কোনোদিনও হবেনা, বরং অস্পমারকে(পাপ পুরুষ) আরও শক্তি প্রদান করা হবে, এবং তার পরিবর্তে সে শক্তিশালী হয়ে সে আরও নিম্নগামীতা প্রদান করবে। নিষিদ্ধ খাবারের মধ্যে অনেক কিছুই আছে, তার মধ্যে বিশেষ কিছু দ্রব্য এখানে উল্লেখ করা হলো, যেমন:- মুরগির মাংস, রসুন, মুসুরি ডাল, খেসারি ডাল, হিং, আইসক্রিম ইত্যাদি। অর্থাৎ, সেইসব নিষিদ্ধ দ্রব্য ভোজন না করে, শাস্ত্র মতে শুদ্ধ আহার করাই প্রাথমিক রূপে আহারের শুদ্ধি। • ভাব শুদ্ধি:- আহার শুদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেই আহারের মধ্যে থাকা ভাবের শুদ্ধি হওয়া খুবই প্রয়োজন। কোনো প্রকার ভোজন রান্না করার সময়, যে ব্যাক্তি রান্না করে এবং যে ব্যাক্তি পরিবেশন করে তাদের ভাব সেই ভোজন / অন্নের মধ্যে থেকে যায়। সেই ভাব যদি খারাপ/অহংকার যুক্ত/বিরক্তি পূর্ণ হয় তাহলে, সেই অন্ন যে গ্রহণ করবে তার মধ্যে সেই সেই ভাব প্রবাহিত হয়ে যায়। অর্থাৎ যদি কোনো শান্ত সিষ্ট ব্যাক্তি যদি সেই অহংকার / বিরক্তি ভাব যুক্ত খাবার গ্রহণ করে তাহলে সেই শান্ত সিষ্ট ব্যাক্তির মধ্যেও সেই অহংকার ভাব চলে আসবে। তারফলে, সেটি যদি সাত্ত্বিক অন্ন হই কিন্তু সেই অন্নের মধ্যে থাকা ভাব যদি খারাপ হয় হয় তাহলে সেই আহার শুদ্ধ নয়। তাই অন্নের মধ্যে ভাব শুদ্ধি না হলে , পূর্ণ আহার শুদ্ধি হয়না। • কর্ম শুদ্ধি:- যেকোনো প্রকার পাপ কর্ম করে উপার্জিত অর্থ বা অসৎ উপায়ে এবং অসৎ পথে চলে উপার্জিত অর্থের দ্বারা কেনা যেকোনো দ্রব্য / অন্ন সম্পূর্ণরূপে অশুদ্ধ বা পাপ অন্ন। তাই যে ব্যাক্তি অসৎ এবং অসৎ ভাবে অর্থ উপার্জন করে তার বাড়িতে কোনো প্রকার দ্রব্য, অন্ন কোনো কিছু গ্রহণ করা উচিত নয়, সেই অন্ন গ্রহণ করিলে বুদ্ধি ভ্রষ্ট হয়। এছাড়া যারা মদ্যপায়ী এবং যারা সুদ ব্যাবসা (সুদ ব্যাবসা একটি অসৎ কর্ম) করে তাদের গৃহে / বাড়িতে কোনপ্রকার দ্রব্য, অন্ন কোনো কিছু গ্রহণ করা উচিত নয়, গ্রহন করিলে একই ভাবে বুদ্ধি ভ্রষ্ট হয় এবং আহার শুদ্ধি পালন করা যায়না। এছাড়াও যদি কেউ সৎ পথে চলে, সৎ উপায়ে উপার্জন করে, কিন্তু কর্মে ফাঁকি দেই অর্থাৎ পূর্ণ পরিশ্রম না করে কাজে ফাঁকি দিয়ে অর্থ উপার্জন করে, তবে সেটি সৎ পথে হলেও, সেই উপার্জিত অর্থের দ্বারা ক্রয় করা অন্ন, অসৎ অন্নই হবে। তাই সর্বদা শাস্ত্র অনুযায়ী সৎ পথে থেকে যোগ্যতা অনুযায়ী পূর্ণ পরিশ্রমের দ্বারা অর্থ উপার্জন করা উচিত। এবং সেই অর্থের দ্বারা ক্রয় করা অন্ন হচ্ছে সৎ অন্ন। এবং সেই সৎ অন্ন গ্রহন করিলে তবে সেটি, আহার শুদ্ধির মধ্যে কর্মের শুদ্ধি হবে। এই তিন প্রকার শুদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃত শাস্ত্র সম্মত আহার করার সময় জ্ঞান থাকা এবং নিয়ম শুদ্ধি জ্ঞান থাকা খুবই আবশ্যক। মন অনুযায়ী সময়ে আহার গ্রহণ করা উচিৎ নয়। এবং নিজ নিজ শরীর বিশেষে পরিমিত আহার গ্রহন করতে হয়, প্রয়োজনের থেকে বেশি, স্বাদের কারণে বা যেকোনো কারণে বেশি আহার গ্রহন করলে তাকে শাস্ত্র অনুযায়ী আহার শুদ্ধি পালন বলা যাবেনা। •••তিন বেলা খাবার খাওয়ার শাস্ত্র সম্মত সময়••• সকালে জল খাবার এর সময়:- 8:00 a.m.থেকে 9:00 a.m. অবধি। তারপর, দুপুরের খাবার খাওয়ার সময়:- 12:00 p.m. থেকে 2:00 p.m. অবধি। তারপর, রাত্রের খাবার খাওয়ার সময়:- 8:00 p.m. থেকে 9:00 p.m. অবধি দুপুরে 2:00 p.m. এর পর এবং রাত্রে 9:00 p.m. এর পর আহার গ্রহন করা পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ, কারণ তারপর ভোজন/আহার করিলে সেই আহারে প্রেতদের দৃষ্টি পড়ে এবং সেই আহার পূর্ণ অশুদ্ধ হয়ে যায়। এবং সেই আহার গ্রহন করিলে সমস্ত সৎ বুদ্ধির নাস হয়ে যায় এবং কোনো প্রকার শাস্ত্র জ্ঞান, শাস্ত্রীয় উপদেশ গ্রহন করা যায়না, সেটি যদি স্বয়ং গুরু বা ভগবান উপদেশ দেন তাও এই অশুদ্ধ আহারের প্রভাবে স্মৃতিতে থাকে না বা থাকতে দেয়না। এছাড়া একইসঙ্গে শ্রাদ্ধ বাড়িতে এবং অশৌচ বাড়িতে এবং বিয়ে বাড়িতে কোনোকিছু খাওয়া/গ্রহন করা উচিৎ নয়। শ্রাদ্ধ বাড়িতে সব কিছুর ওপর প্রেতের দৃষ্টি থাকে। তাই সেই শ্রাদ্ধ বাড়িতে কিছু খেলে সৎ বুদ্ধি নষ্ট হয়ে যায় এবং সতগুরুর কৃপায় বীজ ও গায়েত্রী দীক্ষা পাবার পর শ্রাদ্ধ অন্ন খেলে এতদিনের যে জপ করা রয়েছে, তা নিমিষের মধ্যে শূন্য হয়ে যায়। তাই শ্রাদ্ধ বাড়িতে এবং অশৌচ বাড়িতে কোনো কিছু খাওয়া পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। এবং বিয়ে বাড়িতে খাবার খেলে সেই ব্যাক্তি কম থেকে কম ১ সপ্তাহ কোনো অনুশাসন এবং নিত্য অনিত্য বিচার করতে পারেনা। মূলতঃ এই পূর্ণ 'আহার শুদ্ধি'(তপস্যা) সম্পূর্ণ রূপে পালন করলে, একই সঙ্গে সৎসঙ্গ করলে এই অপস্মার ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকে। আহার শুদ্ধি এবং সৎসঙ্গের ফলে ধীরে ধীরে অনান্য 41টি অনুশাসন পালন করতে এবং নিত্য অনিত্য বিচার করতে সমর্থ হওয়া যায়।
বিশেষ তপস্যা দ্বারা যে মুহূর্তে অস্পমার(পাপ পুরুষ) আমাদের স্থূল এবং সূক্ষ্ম শরীর এবং ৩০টি বিষয় থেকে বেরিয়ে যায়, তখন সে দেখতে কেমন হয়? উঃ- যে মুহূর্তে অস্পমার(পাপ পুরুষ) বেরিয়ে যায়, সেই মুহূর্তে একটা পূর্ন কালো ধোয়া বা কালো পুরুষ বা কালো নারী বা আমাদের নিজ নিজ স্থূল শরীরের মতো দেখতে একটা পূর্ণ কালো রঙের ধোঁয়া বেরিয়ে যায়। তখন দেহী সেই পাপ পুরুষ / কালো ধোয়া রূপি অস্পমারকে(পাপ পুরুষ) দেখতে পায়। আর সেই মুহূর্ত থেকে অর্থাৎ যে মুহূর্তে সেই পাপ পুরুষ দেহীর দেহ থেকে বেরিয়ে যাই, সেই মুহূর্ত থেকে তার দেহ পূর্ণ শুদ্ধতা প্রাপ্ত হয়। আত্মজ্ঞান না হলে অস্পমার(পাপ পুরুষ) জীবের দেহ থেকে বেরোয় না। কিন্তু আত্মজ্ঞানের পর আর শরীরে প্রবেশ করতে পারে না। বীর সাধক না হলে তাকে পরাজয় করা যায় না। যতদিন না অস্পমারকে(পাপ পুরুষ) আমরা যুদ্ধে পরাজিত না করছি, ততদিন পর্যন্ত মনুষ্যত্বের বিকাশ হয়না। অর্থাৎ, অস্পমারকে(পাপ পুরুষ) পরাজিত করতে না পারলে মনুষ্যত্ব ভাব লাভ করা যায়না।
সৃষ্টির সময় থেকে সৃষ্টির অন্ত পর্যন্ত যে মায়া শক্তির দ্বারা জড় জগতের জন্ম মৃত্যু চক্রকে নিম্নগামীতা প্রদান করে, সেই আসুরিক শক্তির নাম অস্পমার(পাপ পুরুষ) । অস্পমার(পাপ পুরুষ) এমন একটি পাশবিক বা আসুরিক শক্তি যে সর্ব জীবকে সর্বদা নিম্নগামীতা প্রদান করে। কোনো কারনেই মনুষ্যত্বের বিকাশ করতে দেয় না। পূর্বক্ত জড় জগতের ওই ৩০টি বিষয়ের উপর কর্তৃত্ব বা আধিপত্য বা রাজত্ব করে এই অস্পমার(পাপ পুরুষ)। • শরীর:- ১. স্থূল শরীর ২. সূক্ষ্ম শরীর ______ • পঞ্চ জ্ঞানেন্দ্রিয়:- ৩. চক্ষু ৪. কর্ণ ৫. নাসিকা ৬. জিহবা 7. ত্বক ______ • পঞ্চ তন্মাত্র:- ৮. রূপ ৯. রস ১০. শব্দ ১১. গন্ধ ১২. স্পর্শ _______ • পঞ্চ কর্মেন্দ্রিয়:- ১৩. বাক (মুখ) ১৪. পানি (হাত) ১৫. পাদ(পা) ১৬. পায়ু (মলদ্বার) ১৭. উপস্থ (মূত্রদ্বার) _______ ১৮. মন (কর্ম উৎপন্নকারী জননী) ১৯. সত্ত্বগুণ ২০. রজোগুণ ২১. তমোগুণ ২২. আসক্তি ২৩. সংবেদনশীলতা ২৪. স্মৃতি ও মেধা _____ • ষড়রিপু:- ২৫. কাম ২৬. ক্রোধ ২৭. লোভ ২৮. মোহ ২৯. মদ ৩০. মাৎসর্য প্রতিটি জীবকে অজ্ঞান, অন্ধকার, ভ্রম - এর মধ্যে ঘুরিয়ে রাখে মায়া শক্তির প্রভাবে। এবং প্রত্যেক জীবকে জ্ঞান, বিকাশ, ধর্ম, বিবেক-এর রাস্তাই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং নিম্নগামীতার দিকে টেনে রাখে। এবং কোনো কারণে জীবকে ধর্মে প্রতিষ্ঠিত হতে দেয়না। প্রতি মিলি সেকেন্ডে এর কার্যকারিতা প্রত্যেক জীবের উপর বিদ্যমান থাকে। এই অস্পমারকে(পাপ পুরুষ) কখনোই মারা বা পূর্নরূপে সমাপ্ত করা কখনো সম্ভব নয়। সৃষ্টি, যতদিন আছে, ততদিন এই অস্পমার(পাপ পুরুষ) থাকবে। অস্পমারকে(পাপ পুরুষ) মারা যায় না বা পূর্ণরূপে সমাপ্ত করা সম্ভব নয়, কিন্তু তার প্রভাব থেকে, তার থেকে নিজেকে মুক্ত করা অবশ্যই সম্ভব। ভগবান যেমন সমস্ত জীবের মধ্যে দিব্যতা নিয়ে বাস করেন, ঠিক একইভাবে অস্পমার(পাপ পুরুষ) সব জীবের অন্তরের বহিরাবরণে এবং ওই ৩০টি বিষয়ের উপর নিত্য বাস করে। ভগবান দিব্যতার প্রতীক এবং অস্পমার(পাপ পুরুষ) অসুরতার প্রতীক। ভগবান সর্ব জীবের ভেতরে থেকে দুটি ভূমিকা পালন করেন:- • প্রতিটি জীবের অন্তরে থেকে দ্রষ্টার কাজ করেন এবং • কর্মফলদাতার কাজ করেন। কিন্তু অস্পমার(পাপ পুরুষ) প্রতিটি মিলি সেকেন্ড তার আসুরিক শক্তি ও নিম্নগামীতা পালন করে এই ৩০টি বিষয়ের উপর দক্ষতা প্রদান করতে থাকে। এটি অস্পমারের(পাপ পুরুষ) ভূমিকা এবং এই ভূমিকা অস্পমার(পাপ পুরুষ) সর্ব জীবের মধ্যে সর্বদা পালন করে চলে। অর্থাৎ অস্পমার(পাপ পুরুষ) প্রতি মুহূর্তে তার কার্যকারিতা এই ৩০ টি বিষয়ের মাধ্যমে করে, জীবকে সর্বদা সর্ব দিক থেকে পশুত্বের বা অসুরত্বের দিকে নিয়ে যায় এবং প্রকৃত সত্যকে জানতে দেয়না। যতদিন না আমাদের স্থূল এবং সূক্ষ শরীর এবং ৩০টি বিষয় অস্পমার(পাপ পুরুষ) পরিত্যাগ না করছে, ততক্ষণ কোনো ব্যক্তি পাপমুক্ত নয়। ততক্ষন দেহশুদ্ধি হয় না এবং সেই জীবকে শুদ্ধ জীব বলা যায় না। অর্থাৎ প্রকৃত দেহশুদ্ধি, এই স্থূল শরীরের ওপর সাবান জল দিয়ে স্নান করলেই হয়না, যতক্ষণ না প্রকৃত অন্তরের শুদ্ধি হচ্ছে, অর্থাৎ যতদিন না এই অস্পমার(পাপ পুরুষ) স্থূল শরীর, সূক্ষ্ম শরীর এবং ৩০টি বিষয় থেকে পূর্ণ রূপে বেরিয়ে না যাচ্ছে ততক্ষণ অবধি প্রকৃত রূপে শুদ্ধ হওয়া যায়না।
আপ্সমার(পাপ পুরুষ) আমাদের ঘুমের মধ্যেও কিভাবে কার্যকারী হয় নিচে তার বিবরণ দেওয়ার চেষ্টা করলাম ঘুমের দৈত্য –আপ্সমার(পাপ পুরুষ)?? কি জিনিস তুমি কি জানো?? এইটি ঘুম পঙ্গুত্ব নামে পরিচিত অনেক সময় এমন হয় যে ঘুমোতে ঘুমাতে আমরা খুব গবির ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে যায় আর ঠিক তখনই মনে হয় আমাদের শরীর টা খুব ভারী হয়ে গেছে হাত পা নোরবার ক্ষমতা ও থাকে না জোরে চিৎকার করলেও কেউ শুনতে পাইনা তখন আমরা অনুভব করতে পারি যে আমাদের শরীরের ওপরে কেউ আছে ঠিক কিছু ক্ষণ পর শরীর হালকা হয়ে যায় আর আমরা মনে করি স্বপ্ন দেখছিলাম কিন্তু এমন টা নয় এটা একটা ঘুমের দৈত্য এটা নারী পুরুষ দুই আছে । খেয়াল করে দেখবেন যখন আমাদের সাথে এটা হয় তখন শরীর খুব ক্লান্ত হয়ে যায় ঘুম থেকে উঠে কিছু ভালো লাগে না খুব অস্বস্তি ভোগ হয় আসলে তখন আপনার শরীরে ওই দৈত্য দৃষ্টি করে কখনো আপনার রক্ত পান করে বা কখনো আপনি স্বপ্ন দেখেন যে আপনার পছন্দের মানুষের সাথে আপনি সহবাস করছেন তখন সেটা আপনার সাথে সত্যি হয় কিন্তু সেখানে থাকে এক দৈত্য বিশেষ করে মেয়েদের বেশি খেয়াল রাখা উচিৎ শোবার আগে চুল বাঁদার, খোলা চুলে ওদের বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করে আর কি কারণে আপনার মৃত্যু অবধি হতে পারে কিন্তু ভয় পাবার কোনো কারণ নেই যখন এটা আপনার সাথে হবে তখন চিৎকার করবেন না তাতে কোনো লাভ হবে না কারণ কেউ শুনতে পাবে না বরং যত ক্ষণ না আপনার শরীর হালকা হচ্ছে তত ক্ষণ নড়াচড়া করবেন এবং গুরু মন্ত্র নিরন্তর জপ করবেন