“ওঁ” হল পরানাদ বা মুখ্যপ্রাণশক্তি
আকাশ এর গুণ হল “শব্দ” রুপি তন্মাত্র ।
বায়ু এর গুণ হল শব্দ &স্পর্শের রুপি তন্মাত্র।
অগ্নি এর গুণ হল রূপ, স্পর্শ ও শব্দের রুপি তন্মাত্র।
বরুণ/জল এর গুণ হল রস, রূপ, স্পর্শ ও শব্দের রুপি তন্মাত্র।
পৃথ্বী এর গুণ হল গন্ধ, রস, রূপ, স্পর্শ ও শব্দের রুপি তন্মাত্র।
গন্ধ , রস(স্বাদ যে কোন প্রকারের রস), রূপ (রূপ/আকার ), স্পর্শ (স্পর্শ) এবং শব্দ (শব্দ)---এইগুলো ভিন্ন ভিন্ন স্পন্দন বা কম্পন ছাড়া আর কিছুই নয়।
“ওঁ” এই সমস্ত ভিন্ন ভিন্ন স্পন্দন বা কম্পন এর উৎস।
তাই এই “ওঁ” কে বলা হয় সুক্ষ্ম প্রাণশক্তি/সূক্ষ্ম প্রাণশক্তি/মুখ্যপ্রাণশক্তি ।
এই “ওঁ” সূক্ষ্ম প্রাণশক্তি/সূক্ষ্ম জীবনী শক্তি অর্থাৎ, “ওঁ” মানবদেহে প্রাণশক্তিরূপে প্রকাশ পাবার পর এই জীবনী শক্তি স্থূল-সূক্ষ্ম-কারণ অবস্থার মধ্য দিয়ে প্রাণ, আপান, ব্যান, সমান এবং উদান (মুখ্য 5প্রাণ) শরীরের বিভিন্ন স্থানে এর কাজ অনুসারে। মারুত মানে প্রাণবায়ু। প্রতিটি মারুত(প্রাণবায়ু) মানবদেহে একটি বিশেষ কাজ করে।
মুখ্য প্রাণ/প্রাণশক্তির সাথে এই সমস্তগুলি আরও 44টি উপপ্রাণ মুখ্য 5 প্রাণের উপপ্রাণ হিসাবে প্রকাশিত হয় এবং শরীরের সূক্ষ এবং ভেতরের অনেক ছোট ছোট এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজকে পূর্ণ করতে সহায়তা করে।
মূল 49টি অক্ষর (বর্ণমালা) এই 49টি মারুত(প্রাণবায়ু) ছাড়া আর কিছুই নয়। “ওঁ” প্রধান 1 টি অক্ষর,মূলাধার এ 4 টি অক্ষর, স্বাধিস্থান এ 6 টি অক্ষর, মণিপুরা এ 10 টি অক্ষর, অনাহত এ 12 টি অক্ষর, বিশুদ্ধ এ 16 টি অক্ষর= 49টি অক্ষর (বর্ণমালা) অথবা মারুত(প্রাণবায়ু)। 49টি প্রাণবায়ু রয়েছে যার উৎস সূক্ষ্ম জীবনী শক্তি। আর সূক্ষ্ম জীবনী শক্তির শক্তি এবং চেতনা উভয়ই রয়েছে এবং এর উৎপত্তিস্থল সহস্রার চক্র। সহস্রারচক্র হল মহাজাগতিক শক্তির মূলকেন্দ্র আধার।
এছাড়াও আজ্ঞা চক্র এরমধ্যে আরো 2টি অক্ষর(“হ” & “ক্ষ”) থাকলেও 49 টি প্রাণবায়ু 49 টি অক্ষরের উপরে পূর্ণরূপে ক্রিয়াশীলতা বিদ্যমান থাকে। তাই আজ্ঞা চক্রের এই দুটি অক্ষর নিয়ে মোট অক্ষর সংখ্যা দাঁড়ায় 51 টি, কিন্তু পাঁচটি চক্র এরমধ্যে 48 টি অক্ষর এবং সর্বস্থানে শক্তিসঞ্চারী ওঙ্কার কে নিয়ে 49 টি অক্ষরের উপরে 49 প্রাণের ক্রিয়াশীলতা পূর্ণরূপে বিদ্যমান থাকে । তাই 49টি অক্ষর (বর্ণমালা) অথবা মারুত(প্রাণবায়ু)। “ওঁ” সূক্ষ্ম প্রাণশক্তি আজ্ঞা চক্র কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করে এবং কপালের ভ্রুগুলির মধ্যবর্তী স্থান কুটস্থ হয়ে সহস্রার চক্রে পৌঁছে।
প্রতিটি চক্রের নিজ নিজ অক্ষর জপ করার মাধ্যমে এই 49টি মারুত(প্রাণবায়ু) গুলির কারণে শক্তিগুলিকে জাগ্রত বা সক্রিয় করানো হয়। প্রতিটি প্রাণের নিজস্ব নিজস্ব বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। এই দায়িত্বগুলি চক্রের মাধ্যমে বিশুদ্ধ, অনাহত, মণিপুর, স্বাধিস্তান এবং মূলাধারে পালিত হয়, এবং এই চক্রগুলি থেকে স্নায়ু কেন্দ্রে এবং স্নায়ুকেন্দ্র থেকে তারপরে বিভিন্ন অঙ্গে।
উদাহরণ:- যখন একটি মোবাইল ব্যাটারি চার্জশেষ হয়ে যায়, তখন আমরা ব্যাটারি আবার চার্জ করি। তখন আবার মোবাইলটি সুস্থভাবে কাজ করা শুরু করে। ঠিক তেমনি ভাবে গুরু প্রদত্ত মন্ত্র রুপি অক্ষরগুলি জপ করলে 49টি মারুত(প্রাণবায়ু) এবং চক্র গুলি সঠিকভাবে কাজ করে।
যে সাধক নিদ্রার উপর বিজয়ী হয়েছে অর্থাৎ সে একমাত্র বুঝতে পারে যে দৃশ্যমান সকল পদার্থই মায়া আর পরব্রহ্মই সব কিছু ।