গুরু হলেন অন্তর্যামী
গুরু হলেন অন্তর্যামী, তিনি শিষ্যের মনের ইচ্ছা উপলব্ধি করতে পারেন। তিনি শিষ্যকে তার কুকর্ম এবং সুকর্ম সম্বন্ধে অবগত করাতে পারেন। ভগবান হলেন ‘একমেবাদ্বিতীয়। মহাপুরুষ হলেন তার সামান্য একটা অংশ মাত্র। তাই গুরুকে একমাত্র ভগবান জ্ঞানী শ্রদ্ধা করা শাস্ত্রসম্মত বিধান। তাই গুরুর নির্দেশ অনুযায়ী কর্ম করলে প্রকৃত গুরুসেবা হবে। সৎগুরুর নিকট কেবল দীক্ষা নিলেই কর্তব্য শেষ হ’ল না। সংসারী লােকদের সংসারের মধ্যে থেকেই ঈশ্বরচিন্তা করা কর্তব্য। এর জন্যে গুরুসঙ্গ করা এবং নিয়মিত জপ তপ করা
একান্ত কর্তব্য।
ঈশ্বররের সান্নিধ্য লাভই হল মানব জীবনের প্রধান লক্ষ্য। সেরূপ গুরুপ্রদত্ত জপ দ্বারা সে কঠোর এবং কঠিন সাধনা করে, পরিশেষে তার সুখানুভূতি লাভ হবেই। “চক্রবৎ পরিবর্তন্তে দুখানি চ সুখানি চ”। সুখ-দুঃখ হল চক্রের মত পরিবর্তনশীল।
দুঃখের অনুভূতি লাভ না হলে সুখের স্বাদ টের পাওয়া যায় না।
মন—নম’—মন উল্টালে হয় নম। অর্থাৎ মন শব্দটি জড়জগৎ বা বহির্জগতের জন্য প্রযোজ্য
এই মন যখন অন্তর্মুখ হয় তখন আপনা-আপনিই নতে পরিণত হয়ে যায়
এ জগতে বিভিন্ন ধরনের মানুষ দেখতে পাওয়া যায়। কারও সরল মন, কারও গরল মন, কারও কপট মন। আবার কারও নিষ্ঠুর মন পরিলক্ষিত হয়।
এরূপ মনের মানুষদের মধ্যে যখন নমনীয়তা আসবে, শুদ্ধাভক্তি জাগরিত হবে তখনই তাদের মানসিকতা উৎকর্ষতায় পর্যবসিত হবে।এই উৎকৃষ্ট মননের মাধ্যমে শ্রদ্ধার সঙ্গে শুদ্ধাভক্তি সহযােগে অধ্যাত্ম সাধনায় নিজেকে নিয়ােজিত করতে পারবে। এবং অবশ্যই চরম সফলতা লাভ করে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে সমর্থ হবে।
যার মনে পুরাে বৈরাগ্য ভাবের উদয় হয়েছে। তিনিই প্রকৃত সন্ন্যাসী।সন্ন্যাস ধর্মে দীক্ষা না নিলেও তিনি সন্ন্যাসী।
যে আনন্দের কোন কার্যকারণ থাকে না সেই আনন্দই সার্থক, তাকেই বলে পরমানন্দ।
এ বাদে অন্যসব আনন্দ হল বিষয়ানন্দ। পরমানন্দ হল নিত্য আনন্দে প্রতিষ্ঠিত এক উপলব্ধি। সাধন, ভজন, মননের দ্বারা গােবিন্দের কৃপায় পরমানন্দ লাভ করা সম্ভব। গুরু নির্দেশিত পথে সাধন ভজন দ্বারা ক্রমশ এমন এক অবস্থায় উর্ত্তীন হওয়া যায় যখন ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে নিজের ইচ্ছা স্বাভাবিকভাবেই মিলে যায়। আর তখনই লাভ হয় পরমানন্দ। এই পরমানন্দ প্রাপ্ত করতে গেলে মায়া মমতাকে অতিক্রম করতে হবে।