প্রকৃত মহামন্ত্র হল - বৈদিক গায়ত্রীমন্ত্র, বৈদিক মহামৃত্যুঞ্জয় মহামন্ত্র এবং বৈদিক ॐ নমঃ শিবায় মহামন্ত্র। তাহলে কি হরিনাম করা যাবে না ? উত্তর — অবশ্যই করা যাবে, হরিনাম পরমপবিত্র। আমরা বলেছি "হরে কৃষ্ণ" এই বিশেষ ষোলো নাম নামক শ্লোকটি অশাস্ত্রীয়, কোনো শাস্ত্র এটির বিধান নেই , কিন্তু হরিনাম বলতে মানুষ শুধু "হরেকৃষ্ণ নামক ষোলো নাম" কে বুঝে বসে আছে, যা আসলেই লোকমুখে প্রচলিত মাত্র। হরিনাম বলতে আসলেই আরো অনেক কিছুই বোঝায়, যেমন আপনি - বাসুদেব, রাম, কেশব, মাধব, গোবিন্দ, রমাপতি, শ্রীহরি, নারায়ণ, বিষ্ণু, বৈকন্ঠপতি, কৃষ্ণ প্রভৃতি বলতে পারেন, এটিই নির্দেশ দিয়েছে শাস্ত্র। তাই "হরে কৃষ্ণ" নয় বরং শাস্ত্র অনুযায়ী হরির নাম গান করুন। মনে রাখবেন, দেবর্ষি নারদ চিরকাল "নারায়ণ নারায়ণ" গেয়ে চলেছেন, "হরে কৃষ্ণ" নয় । শুনুন হে সনাতনীগন কোনো কথা বিশ্বাস করার আগে সেটা পরখ করে বিচার করে নিন। না দেখে অন্ধবিশ্বাস করলে নিশ্চিত ভাবে ঠকবেন। সনাতন ধর্ম মানে শুধু হরে কৃষ্ণ নয়, সনাতন মানে - বেদ,উপনিষদ,পুরাণ,যোগ,ধ্যান,সাধনা, পরমেশ্বর শিব, মা দূর্গা, মা কালী, বিষ্ণু, পরশুরাম, রাম, কৃষ্ণ, ব্রহ্মা, মহামন্ত্র গায়ত্রীমন্ত্র, ॐ নমঃ শিবায় মহামন্ত্র। গনেশ,কার্তিক,ইন্দ্র,অগ্নি, বায়ু,চন্দ্র,সূর্য,বরুন,লক্ষী,সরস্বতী প্রভূতি। সনাতন ধর্ম কোনো কুয়ো নয়। সনাতন ধর্ম মহাসাগর.......... তাই অশাস্ত্রীয় হরে কৃষ্ণ একমাত্র মহানাম মহামন্ত্র বলে নিজেদের সনাতনী বলা বন্ধ করুন। এটা আপনি আপনার ভক্তির কারনে করছেন। কিন্তু চরম বাস্তব তো এটাই, আপনার সেই এত মূল্যবান ভক্তি কে কল্পিত বৈষ্ণবদের মতো একটা বিদেশী পশ্চিমা ব্যবসায়ী সংগঠন ব্যবহার করে তাদের প্রসার করছে। জানি এতসব সত্য কথা জানার পরেও আপনারা অবিশ্বাস করবেন। করুন অবিশ্বাস। কিন্তু তার আগে একবার অন্তত এই কথা গুলো নিজে বিচার করে দেখবেন। আপনি খুঁজে দেখে নিন আমরা অসত্য বলছি কি না। এভাবে নিজের অজান্তেই নিজের সনাতন ধর্ম কে শেষ করে দেবেন না অন্ধবিশ্বাস করে অনুরোধ রইলো আপনাদের কাছে। আমরা এইসব কল্পিত বৈষ্ণবদের মতো ধর্মের নামে ষড়যন্ত্র কারীদের নোংরামি বন্ধ করতে লড়ে যাবো। (বিশেষ দ্রষ্টব্য - আমি কৃষ্ণনিন্দুক নই, শ্রীকৃষ্ণ আমাদের গুরু, তিনি আমাদের প্রাচীন আদি সনাতনী মহাপাশুপত শৈবপরম্পরায় দীক্ষিত ছিলেন, তাই তার নিন্দা করে আমরা নিজেদের পরম্পরার সম্মান নষ্ট করতে পারি না। সুতরাং এই ভ্রমে থাকবেন না)
তাহলে হরে কৃষ্ণ একমাত্র মহামন্ত্র নয় এটা প্রমাণ হল কিন্তু তাহলে এটা কারা প্রচার করছে ? আর তাদের প্রচার করার উদ্দেশ্যে কি ?? উঃ - যারা প্রচার করছে তারা হল কল্পিত বৈষ্ণব, বিদেশী ব্যবসায়ী এরা। এরা বলতে চাইছে যে এরাই একমাত্র ঠিক আর এতদিন যা বেদ পুরাণ বলেছে সেগুলো সব ভুল। তাদের উদ্দেশ্য হল তাদের ভুলভাল মনগড়া গল্পের বই গুলো বিক্রি করে টাকা কামানো, আর ওই বইয়ের মধ্যে লেখা ভুলভাল তথ্য দ্বারা সাধারণ মানুষের মগজ ধোলাই করা। এর ফলে যারা নতুন ধর্ম শাস্ত্র বই পড়ার কথা ভেবে গীতা কিনতে আসে তখনই "বিদেশী ব্যবসায়ী কল্পিত বৈষ্ণব" রা তাদের লেখা বিকৃত ভুলভাল ব্যাখ্যা করা নকল গীতা তাদের কাছে বেচে দেয়। ব্যাস..... এই বইটা যারা পড়বে প্রথমেই তাদের মগজধোলাই হয়ে যাবে আপনাআপনি। এখানেই এদের ব্যবসার প্রথম প্ল্যান সফল, এবার সহজেই তারা তাদের মনগড়া গল্প বলবে আর অজ্ঞান পাবলিক তাই সনাতন ধর্ম বলে বিশ্বাস করবে। কারন সাধারণ মানুষ তো আর অতো খুজতে যায়না কোথায় কত সূক্ষ্ম ভাবে বিকৃত করেছে কল্পিত বৈষ্ণবরা। তাই তারা ওদের নকল গীতার মধ্যে থাকা সমস্ত ভুলভাল কথা গুলোকে মূল শাস্ত্র কথা ভেবে বিশ্বাস করে। সাধারণ মানুষ তো আর জানে না যে বিদেশি কল্পিত বৈষ্ণবরা তাদের ব্যবসা বাড়ানোর জন্য চৈতন্যদেবের নাম কে সামনে দেখাচ্ছে আর মানুষের মগজ ধোলাই করে চলেছে, যার কারণে বর্তমানে আমাদের সনাতন ধর্মের লোকেরা সনাতন ধর্ম বলতে শুধু কপালে তিলক কাটা গলায় তুলসীর মালা আর হরে কৃষ্ণ শ্লোককেই একমাত্র সনাতন ধর্মের রীতিনীতি ভেবে ভ্রমে পড়ে আছে। তারা বিদেশী ম্লেচ্ছ কল্পিত বৈষ্ণবদের দ্বারা এত পরিমানে মগজ ধোলাই খেয়েছে যে তারা হরে কৃষ্ণ কোথা থেকে এল ? কেন এল ? কারা এনেছে ? তার ইতিহাস এরা জানেই না। আর এরা নিজেরা খুঁজেও দেখে না যে এর আসল ইতিহাস টা কি ? আদৌও কি এসব সত্যি নাকি ভুয়ো ? সেসব নিয়ে কারোর মাথা ব্যাথা নেই। আগের দিনে যেমন মনগড়া দেবতা কল্পনা করে মানুষদের বোকা বানাতো ব্রাহ্মণ্যবাদীরা, ঠিক তেমনি এখন এই বিদেশী কল্পিত বৈষ্ণব রা একই পদ্ধতিতে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধ করতে সাধারণ মানুষকে বোকা বানাচ্ছে। আর এর বিরুদ্ধে সত্য টা তুলে ধরলেই বোকা পাবলিকরাই গালিগালাজ করবে, আসলে এটা স্বাভাবিক। কারন যেটা মানুষ বিশ্বাস করে ফেলে মনে প্রাণে সেটা পরে ভেঙে গেলে যেমন কষ্ট পায় ঠিক তেমনি এই চরম কঠিন সত্য কে সাধারণ মানুষ মেনে নিতে কষ্ট বোধ করে। অবশ্য এমন কিছু মানুষও আছে যারা এইসব ভণ্ডদের সন্দেহ করেছিল কিন্তু তারা কোনো প্রমাণ খুঁজে পাচ্ছিল না, তারা অবশ্যই এই আলোচনার মমার্থ বুঝবে।
তাহলে এখন অনেক বৈষ্ণব রা বলতেই যে, "হরে কৃষ্ণ" শ্লোক থাকা কলিরসন্তরণ উপনিষদ নকল কি না তার কেমন করে বুঝলেন? উত্তর:— বেদশাস্ত্রে কোনো মন্ত্রের উপদেশ থাকলে সেই মন্ত্রের ঋষি কে, ছন্দ কি, দেবতা কে, শক্তি বীজ কি এগুলির উল্লেখ থাকে সর্বদা। কলিরসন্তরণ উপনিষদ নামের যে গ্রন্থে "হরে কৃষ্ণ" নামক শ্লোক রয়েছে , সেখানে এই "হরে রাম হরে কৃষ্ণ" শ্লোকের দেবতা কে ? ঋষি কে ? ছন্দ কি ? তা ঐ গ্রন্থএ উল্লেখ নেই। এর থেকে পরিষ্কার করেই নিশ্চিত হওয়া যায় যে ঐ কলিরসন্তরণ উপনিষদ নামের যে পুস্তকে "হরে কৃষ্ণ" - উল্লেখ আছে তা সম্পূর্ণ কাল্পনিক। কোনো বৈষ্ণব পুরাণে এই "হরে কৃষ্ণ হরে রাম" কে শব্দপ্রমাণ সহ সমর্থন কথা হয়নি ।এমনকি বৈষ্ণবপুরাণগুলির কোথাও উল্লেখ পর্যন্ত নেই "হরে কৃষ্ণ" -শ্লোকের, কলির মহামন্ত্র হওয়া তো দূরের কথা। অথচ শিবমহাপুরাণ থেকে শুরু করে সমস্ত শাস্ত্রে যজুর্বেদের ১৬নং অধ্যায়ের ৪১নং মন্ত্র "নমঃ শিবায়" কে কলিযুগের মহামন্ত্র বলা হয়েছে। মহা পাশুপত পরম্পরার গুরুপরম্পরাগত মান্যতা অনুসারেও নমঃ শিবায় মহামন্ত্রকে কলিযুগের একমাত্র মুক্তির পথ বলে মান্য করা হয়। নমঃ শিবায় মহামন্ত্রের ঋষি ছন্দ দেবতা উল্লেখ রয়েছে শাস্ত্রে তথা প্রকৃত কলিরসন্তরণ উপনিষদে। এরই সাথে কৈবল্য উপনিষদেও বলা হয়েছে শতরুদ্রিয় পাঠ করলে পরমগতি লাভ হয়। আর এই শতরুদ্রিয় সূক্তের মধ্যেই নমঃ শিবায় মহামন্ত্র রয়েছে। কিন্তু কলিযুগের প্রভাবে এই সত্য বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে তাই আমরা এই কলিরসন্তরণ উপনিষদ কে তুলে ধরা জন্য উদ্যোগ নেবো।
কলিরসন্তরন উপনিষদ কেন বেদের অংশ নয় ? উঃ - বৈদিক প্রধান উপনিষদ ১০৮টি এই প্রধান উপনিষদ গুলির মধ্যে ১টি হল কলিরসন্তরণ উপনিষদ। সেই প্রধান কলিরসন্তরণ উপনিষদে নমঃ শিবায় মন্ত্র কে কলিযুগের মহামন্ত্র বলা হয়েছে। তাই এই কলিরসন্তরণ আসল । কিন্তু, কলিরসন্তরণ উপনিষদ নামের যে পুস্তকে "হরে কৃষ্ণ" - উল্লেখ আছে তার মধ্যযুগে রচিত হয়েছে, এটি আসল কলিরসন্তরণ উপনিষদ নয়, এটি নকল কলিরসন্তরণ উপনিষদ। তাই এটি অমান্য।
তাহলে এই হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র যদি অশাস্ত্রীয় হয় তবে এর উৎপত্তি কি করে হল??? উত্তর — যারা আসলেই ব্রাহ্মণ নয়, যাদের মধ্যে প্রকৃত ব্রাহ্মণ হবার বৈশিষ্ট্য ছিল না, সেই সব অত্যাচারী ব্যক্তি ব্রাহ্মণ হবার ভেক ধরে মধ্যযুগে সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জাতিভেদ প্রথা দ্বারা সাধারণ মানুষকে ঈশ্বরের উপাসনা থেকে বঞ্চিত করতো, লাঞ্ছিত হতে হতো নির্দোষ নিরহ সাধারণ সনাতন হিন্দুদের। তাছাড়া তখন "মু স লিম" দের প্রভাব ছিল। তাই ব্রাহ্মণ দের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তারা "মু স লিম"দের প্রোরচনায় পড়ে ই স লাম মতবাদ গ্রহণ করে নিতে শুরু করেছিল।এটি রুখতে চৈতন্যদেব এগিয়ে এসেছিলেন, যিনি সমস্ত জাতিভেদ কে দূরে সরিয়ে সমস্ত সাধারণ সনাতনীদের কে সনাতন ধর্মতে টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করেছিলেন। মানুষ কে ভগবানের পথে চালিত করবার জন্য তৎকালীন সময়ে তিনি এমন একটি কৌশল অবলম্বন করেন যা তৎকালীন সময়ে মানুষের ধার্মান্তকরণকে রোধ করতে পারে। যাতে সনাতনধর্মীরা ধর্ম ত্যাগ না করেন এবং সংঘবদ্ধ হন। তিনি যেভাবে মানুষ কে মাতোয়ারা করতেন তার মূল কারন হল নাম সংকীর্তন। এই নামসংকীর্তনের শব্দ গুলি হল - “হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে” এই নামসংকীর্তনের "হরেকৃষ্ণ" শ্লোক টি চৈতন্যদেব কোথা থেকে পেয়েছিলেন ? উত্তর — প্রাচীন কাল হতেই ১০৮টি উপনিষদ কে মান্য করা হয়ে আসছে, সেই ১০৮টি উপনিষদের মধ্যে একটি উপনিষদের নাম ছিল কলিরসন্তরণ উপনিষদ। যার অর্থ "কলিযুগেও সাঁতার কাটা" । প্রকৃতপক্ষে "আসল কলিরসন্তরণ উপনিষদ" - এ যজুর্বেদের রুদ্রসূক্ত "শতরুদ্রিয়" ও তার মধ্যে থাকা "নমঃ শিবায়" মহামন্ত্রকে কলিযুগের একমাত্র মুক্তির পথ বলে ঘোষণা করা আছে। কিন্তু , চৈতন্যদেব এই কলিরসন্তরণ উপনিষদের নামে আরো একটি কলিরসন্তরন উপনিষদ রচনা করান। যা সম্প্রদায়গত অবৈদিক গ্রন্থ, নাম মাত্র উপনিষদ এটি। এককথায় বলা যায় "নকল কলিরসন্তরন উপনিষদ" এটি। এই নকল কলিরসন্তরণ উপনিষদেই লেখা হয়েছে "হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে" চৈতন্যদেব এই "নকল কলিরসন্তরন উপনিষদ"-এর শ্লোকটিকে নিয়ে উল্টে দেন, প্রথমদিকে "হরে কৃষ্ণ" কে নিয়ে আসেন ও শেষে "হরে রাম" করে দেন। তখনকার দিনে ব্রাহ্মণ্যবাদের অত্যাচারে সাধারন মানুষ বেদ পড়তে পারতেন না, সাধারন মানুষের অধিকার দেয়া হত না, বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ করার বা শোনারও অধিকার ছিল না। তাই চৈতন্যদেব মধ্যযুগে রচিত নতুন কিছু শ্লোকের দ্বারা তৈরি নকল কলিরসন্তরন উপনিষদ কে ব্যবহার করেন। এই উপনিষদ বেদের কোনো অংশ নয়। তথাকথিত ব্রাহ্মণবেশধারী অত্যাচারী ব্যক্তিরা দেখলেন যে সাধারণ মানুষ কাল্পনিক "হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ" নাম করছে তাই এটাকে তারা তেমন গুরুত্বই দিলেন না। এর ফল স্বরূপ মানুষ ভগবানের নাম শোনার জন্য এই দলে সামিল হতে থাকে।কারন সেই সময়ে সঠিক বেদজ্ঞানের সাথে ভগবানের ভক্তি করার উপায় ছিল না ব্রাহ্মণ্যবাদীদের জন্য। তাই তারা চৈতন্যদেবের প্রচার করা হরে কৃষ্ণ মন্ত্র কেই ঈশ্বরের নাম ভেবে ভক্তির সহিত তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে থাকেন ও পরবর্তী কালে চৈতন্যদেবের প্রতি ভক্তিতে তাকে শ্রীকৃষ্ণের অবতার বলে প্রচার করতে থাকে। এই ভাবেই তিনি মহাপ্রভুতে পরিনত হয়ে কৃষ্ণ অবতার বলে পরিচিত হতে থাকেন সমাজে। এইভাবেই হরে কৃষ্ণ মন্ত্র হয়ে ওঠে লোকবিশ্বাস মতে, মহানাম। চৈতন্য দেব যদি এটা নিপীড়িত মানুষের জন্য এমন হরে কৃষ্ণ নামক ষোলো নাম বত্রিশ অক্ষর প্রচার করে থাকে তাহলে আপনারা আপত্তি কেন করছেন??? উত্তর: — এটা তৎকালীন সময়ে মানুষের জন্য করা হয়েছিল, ঠিক কথা। কিন্তু বর্তমানে এই অশাস্ত্রীয় "হরে কৃষ্ণ" কে বিশ্বাস করতে গিয়ে আসল শাস্ত্রের মহামন্ত্র কে অপমান করে চলেছে এই সব ভেকধারী বৈষ্ণবেরা। তারা দিনরাত শিব দুর্গার নিন্দা করছে, সব জায়গায় সব অনুষ্ঠানে "হরে কৃষ্ণ" গাওয়ার জন্য বাধ্যতামূলক নিয়ম তৈরি করছে, তার ফলে শাস্ত্রের নিদেশ লঙ্ঘন হচ্ছে। কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে হরে কৃষ্ণ শ্লোক কে বিশ্বাস করেন তবে সেখানে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু মনে রাখতে হবে, যারা শাস্ত্রকে না মেনে নিজের ইচ্ছেমতো অশাস্ত্রীয় পথে চলতে থাকেন তাদের কোন গতি হয় না , এটাই ভগবদ্গীতার ১৬তম অধ্যায়ের ২৩নং শ্লোকে বলা হয়েছে। তাই শাস্ত্র অনুযায়ী চলতে হবে সনাতনীদের। নিজের আবেগ অনুযায়ী নয়, অশাস্ত্রীয় পথে নয়। কারণ, হরে কৃষ্ণ নামক শ্লোক যে কলিরসন্তরণ উপনিষদ নামক গ্রন্থে আছে তা বেদের অন্তর্ভুক্ত নয়, এটি নকল কলিরসন্তরণ উপনিষদ।
হরে কৃষ্ণ কি কোনো মহামন্ত্র?
উত্তর — একদমই না..........
তবে এই হরে কৃষ্ণ মন্ত্র যে গৌড়ীয় বৈষ্ণব রা খুব ধুমধাম করে কলিযুগের মহামন্ত্র বলে প্রচার করছে, সেটা কেন ??
উত্তর — এটা আসলে মানুষ কে শর্টকার্টে গোলকধামে পৌঁছে দেওয়ার নামে একটা ব্যবসায়িক কুমতলব। যারা প্রচার করছে তারা তাদের অসাধু ব্যবসা চালাতে এই সব সব মনগড়া গল্প লোকের ঘরে ঘরে প্রচার করে করে মগজ ধোলাই করে মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত করেছে।
মানুষ কে বলা হচ্ছে যে আপনি সব ত্যাগ করে শুধু এই হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করুন তাহলে গোলক ধামে প্রমোশন পাবেন শর্টকার্টে। মানুষ এমনিতেই ভীষণ পরিমাণে অলস তথা কুড়ে তারপরে আরো শর্টকাটে ভগবান কে লাভ করা যাবে এটা ভেবেই অশাস্ত্রীয়(অবৈদিক) হরে
কৃষ্ণ মন্ত্র সারাদিন জপ করে চলেছে গলায় একটা ঝুলি ঝুলিয়ে ।
শাস্ত্রে বলা হয়েছে জপ করবার স্থান যেন শান্ত পরিবেশের হয়, সেই স্থানে শান্ত হয়ে বসে চুপ করে মনে মনে মন্ত্র উচ্চারণ করে হাতে কর গুনে বা মালাতে জপ করতে হবে , কিন্তু এই অপপ্রচারকারীরা বিগত চারশো বছর ধরে রাস্তাঘাটে লাফিয়ে লাফিয়ে নাচনকোদন করতে, লোকের সাথে কথা বলতে বলতে, ৩২টা দাঁত বের করে হাসাহাসি করতে করতে লোকদেখানো "হরেকৃষ্ণ" জপ করছে। আজকাল তো এরা এত অলস হয়ে গেছে যে, টিভি সিরিয়াল দেখতে দেখতে "হরেকৃষ্ণ" জপ করে।
সুতরাং এসব অশাস্ত্রীয় কারবার , নামধারী ভক্তরাই এই অশাস্ত্রীয় "হরে কৃষ্ণ" জপছে।