পৃথিবীতে আমারও কোনও প্রয়ােজন ছিল না
আমার কথা:.....
আমার গুরুদেব যদি না আসতেন পৃথিবীতে আমারও কোনও প্রয়ােজন ছিল না পৃথিবীতে থাকার।
গুরু কী—?????
আমার জীবনে সবকিছুই তিনি। তাঁর পায়ে যখন আশ্রয় পেলাম, তখন বুঝিনি যে কার পা ধরেছি। এখন পরিষ্কার, অনেকটাই পরিস্কার যে বড় জিনিসের পা ধরেছিলাম, বড় মানুষের কাছ থেকে শিক্ষা পেয়েছিলাম।
গুরুদেব কী শিখিয়েছিলেন?
আমাদের অনেক দায়িত্ব আছে, কাজ আছে, সমাজের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা আছে।
আজ যদি গুরুদেব এখানে থাকতেন, আমি কাঁদতে কাঁদতে তার পা দুটো জড়িয়ে ধরে এই কথাই বলতাম, ‘গুরুদেব, তুমি বলেছিলে তুমি পারবে’, আমি পেরেছি। আমি পেরেছি।
মানুষকে বােঝাতে পারছি - যে ব্রহ্ম সত্য জগৎ মিথ্যা।'
এই জন্য কোনওকিছুর পরিবর্তন হয়নি। কোনও কিছু ত্যাগের পরিবর্তন হয়নি, কোনওকিছু ত্যাগ করতে হয়নি আমাকে এবং আপনাদেরও কোনও কিছুত্যাগ করতে হবে না।
ত্যাগ করতে যেটা হবে- আপনাদের অজ্ঞানতা, ভ্রম, আসক্তি,প্রবৃত্তি ,কামনা-বাসনা , সন্দেহ , অবিশ্বাস । সেটাই শুধু ত্যাগ হবে।
জ্ঞান কখনও ত্যাগ হয় না।
তাই গুরুদেব থাকলে তাঁর পায়ে ধরে বলতাম- তুমি কী করেছ? জানতাম না।
তুমি বলেছিলে, তুমি পারবে, কিন্তু এতটা পারব, আমি জানতাম না।'
এটা একমাত্র গুরুর পক্ষেই সম্ভব। গুরুকে ভালবাসলেই এটা সম্ভব।
মানুষের মধ্যে যে দেবতা আছেন, সেই দেবতাকে যে জাগিয়ে তােলা যায়, তাঁকে অনেক উঁচুতে উঠিয়ে নিয়ে আনা যায়।
আমার গুরুদেব আমাকে সেটা শিখিয়ে গিয়েছে।
প্রত্যেকের মধ্যে সেই দেবতা বাস করছেন, তাঁকে বাইরে খুঁজতে যেতে হবে না।
তােমার অন্তরমহলেই তুমি তাঁকে খুজে পাবে।
আর সাম্য? আমার ভেতরে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হলে আমি অসাম্য কোথাও দেখব না। আমি সব জায়গায় সাম্যই দেখব।
আমার গুরুদেব বেদান্ত বােঝাচ্ছিলেন। তখন আমারই মতাে একজন গৃহী ছিল সেখানে দাঁড়িয়ে।
তিনি আমার গুরুদেবকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘আপনি যে বেদান্ত বলছেন আমরা কি এটা বুঝব?’
আমি সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিয়েছিলাম, ‘গুরুদেব যখন বলছেন তখন নিশ্চয়ই আমি বুঝব। উনি আমাকে বােঝাবার জন্যই তাে বােঝাচ্ছেন। না বােঝানাের জন্য নয়। আমি বুঝেছি।
এটা গৌরবের সাথে বলা দরকার যে এটা বুঝেছি। আমি গুরু কৃপায় জানতে পেরেছি যে যে ঈশ্বর আছেন।