দুর্গতি কাকে বলে ? উত্তর:- ব্রহ্ম থেকে দূরে যে গতি শাস্ত্রে তাহাকেই "দুর্গতি" বলে l কোনো জীব যখন তার অনন্ত কামনার দাস হয়ে , সেই কামনা পূরণের জন্যে জন্ম-জন্মান্তর বিভিন্ন দেহে , বিভিন্নরূপে , বিভিন্নসম্পর্কে , বিভিন্নপদ্ধতিতে , বিভিন্নকর্মে , বিভিন্নভাবে , বিভিন্নঅনুভবে , বিভিন্নবিকাশে , বিভিন্নস্থানে অনবরত ঘুরতে -ঘুরতে পরমাত্মাকেই ভুলে শুধু কামনা পূরণের কাজেই দিন-রাত ব্যস্ত থাকে --- তখন সেই জীব পরমাত্মা থেকে বহু দূরে গতি প্রাপ্ত হয় --- শাস্ত্রে তাকেই "দুর্গতি" বলে l অর্থাৎ যে জীব ধর্মের রাস্তায় না চলে , মোক্ষ এর রাস্তায় না চলে ,পরমাত্মা প্রাপ্তির রাস্তায় না চলে শুধু কামনা-বাসনার দাস হয়ে কামনা পূরণের জন্যে জন্ম-জন্মান্তর অনবরত ঘুরতে -ঘুরতে পরমাত্মাকেই ভুলে শুধু কামনা পূরণের কাজেই দিন-রাত ব্যস্ত থাকে --- তখন সেই জীব পরমাত্মা থেকে বহু দূরে গতি প্রাপ্ত হয় --- শাস্ত্রে তাকেই "দুর্গতি" বলে l
কালী বাগীশ্বরী, শব্দব্রহ্মময়ী । তাঁর কন্ঠের পঞ্চাশৎ মুণ্ড বস্তুতঃ পঞ্চাশৎ বর্ণমালার প্রতীক । কামধেনু তন্ত্রে স্বয়ং মা নিজেই এর পরিচয় দিয়ে বলেছেন- “মম কন্ঠে স্থিতং বীজং পঞ্চাশদ্ বর্ণমদ্ভুতম্ ।” কন্ঠের মুণ্ডমালা সংস্কৃত সেই বর্ণমালার প্রতীক । কন্ঠ হোলো আকাশতত্ত্বের ভূমি । আকাশ তত্ত্বের সাথে শব্দ তত্ত্বের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ । আকাশ তত্ত্বের প্রতীক মায়ের শ্রীকন্ঠের ভূষণ তাই শব্দ তত্ত্বের স্মারক বর্ণমালা । জগতের বেদ বেদান্ত – তন্ত্রাদি সকল অধ্যাত্ম জ্ঞানমূলক শাস্ত্র নানা লৌকিক বিদ্যার প্রকাশ ও প্রচারণা- বর্ণমালা বা শব্দের সাহায্যেই হয় । মানবদেহে এই জ্ঞান কেন্দ্র হলো মেধা বা মস্তিস্ক । সুতরাং দেবী কালীর কণ্ঠভূষণ লৌকিক ও অতিলৌকিক নিখিল জ্ঞানরাশি সম্যক্ সমাহার । দেবী স্বয়ং চিৎস্বরূপা সুতরাং তাঁর কণ্ঠভূষণ চিন্ময় উপাদানেই নির্মিত ।
তন্ত্রে বলা হয়েছে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড শব্দ দ্বারাই সৃষ্টি । বর্ণ হল ৫০টি ( আদি বর্ণ নিয়ে ৫১টি)। এগুলিই সংস্কৃত অক্ষরের বর্ণ । দিগম্বরী মায়ের গলায় পঞ্চাশটি নরমুণ্ড হয়ে এই বর্ণই শোভা পাচ্ছে । ধ্বংসের মধ্যে অর্থাৎ শ্মশানে শবরূপ শিবের বুকে মা দাঁড়িয়ে আছেন । মায়ের ধ্বংস রূপের অর্থ প্রলয়কালে সকল বর্ণকে তিনি নিজের মধ্যে গ্রহণ করে নেন । একেই বলে মহাপ্রলয় । শিববিন্দুতে প্যাঁচানো মহাকুণ্ডলী হিসেবে তাঁর থেকেই বর্ণ সমূহের সৃষ্টি হয়েছে । মহাকুণ্ডলী যখন এক প্যাঁচে থাকেন তখন তিনি বিন্দু । যখন তাঁর দুই প্যাঁচ তখন প্রকৃতি + পুরুষ । তিন প্যাচে তিনি নানাবিধ শক্তি ও গুন । যেমন ইচ্ছা, জ্ঞান ও ক্রিয়া ; রজ, সত্ত্ব, তমঃ । তিন ও অর্ধ প্যাঁচে মহাকুণ্ডলী বিকৃতিরূপে দেখা দেন । এখান থেকেই প্রকৃতি ৪৯ টি নানা নামে অবতরণ করেন । তিনি তখন সৃষ্টিমুখী । এই ভাবে মহাকুণ্ডলী থেকে বিন্দু ও প্রকৃতি + পুরুষ অবস্থা নিয়ে প্রকৃতির একান্নটি প্যাঁচ । শক্তিসঙ্গম তন্ত্র মতে মহাকুণ্ডলীর ৪৯ প্যাঁচ শক্তির নানা নাম । যেমন ১) একজটা ২) উগ্রতারা ৩) সিদ্ধকালী ৪) কালসুন্দরী ৫) ভুবনেশ্বরী ৬) চণ্ডিকেশ্বরী ৭) দশমহাবিদ্যা ৮) শ্মশানকালিকা ৯) চণ্ড ভৈরবী ১০) কামতারা ১১) বশিকরণ কালিকা ১২) পঞ্চদশী ১৩) ষোড়শী ১৪) ছিন্নমস্তা ১৫) মহামধুমতী ১৬) মহা পদ্মাবতী ১৭) রমা ১৮) কামসুন্দরী ১৯) দক্ষিণা কালিকা ২০) বিদ্যেশী ২১) গায়ত্রী ( ২৪ প্যাঁচ ) ২২) পঞ্চমী ২৩) ষষ্ঠী ২৪) মহারত্নেশ্বরী ২৫) মহাসঞ্জীবনী ২৬) পরমকলা ২৭) মহানীলসরস্বতী ২৮) বসুধারা ২৯) ত্রৈলোক্যমোহিণী ৩০) ত্রৈলোক্যবিজয়া ৩১) মহাকামতারিণী ৩২) অঘোরা ৩৩) সমিত মোহিণী ৩৪) বগলা ৩৫) অরুন্ধতী ৩৬) অন্নপূর্ণা ৩৭) নকুলী ৩৮) ত্রিকণ্টকী ৩৯) রাজ্যেশ্বরী ৪০) ত্রৈলোক্যকর্ষিণী ৪১) রাজরাজেশ্বরী ৪২) কুক্কুটী ৪৩) সিদ্ধবিদ্যা ৪৪) মৃত্যুহারিণী ৪৫) মহাভগবতী ৪৬) বাসবী ৪৭) ফেটকরী ৪৮) মহাশ্রী মাতৃসুন্দরী ৪৯) শ্রী মাতৃকোৎপত্তিসুন্দরী ।
বেদ ৪ টি- মন্ত্র সংখ্যা- ২০,৪৩৪ ১.ঋগবেদ. মন্ত্রসংখ্যা- ১০,৫৮৯ ২.সামবেদ. মন্ত্রসংখ্যা- ১,৮৯৩ ৩.যজু:বেদ. মন্ত্র সংখ্যা- ১,৯৭৫ ৪.অথর্ববেদ. মন্ত্রসংখ্যা- ৫,৯৭৭ উপবেদ ৪ টি. ১. আয়ুর্বেদ. ২.ধনুর্বেদ. ৩.গন্ধর্ববেদ. ৪.অর্থশাস্ত্র. বেদাঙ্গ -৬ টি. ১. দর্শন ২. জ্যোতিষ ৩. ব্যাকরণ . ৪. নিরুক্ত . ৫. ছন্দ ৬. কল্প বেদের উপাঙ্গ-৪ টি. ১.পুরাণ. ২.মীমাংসা. ৩.ন্যায়. ৪.ধর্মশাস্ত্র বেদের জ্ঞানকাণ্ড- ২ টি. ১.আরণ্যক. ২.উপনিষদ. আরণ্যক - ৪ টি. ১.ঐতেরেয়. ২.কৌষীতকী ৩.শতপথ ব্রহ্মণ. ৪.ছান্দোগ্য. উপনিষদ -১২ টি. ১.বৃহদারণ্যক মন্ত্র- ৪৩৫. ২.ছান্দোগ মন্ত্র- ৬৬৮ ৩.তৈত্তিরীয় মন্ত্র- ৬৮. ৪.ঐতরেয় মন্দ্র- ৩৩ ৫.ঈশোপনিষ মন্ত্র- ১৮ ৬.কেন উপনিষদ- ৩৫ ৭.কঠো উপনিষদ- ১১৯. ৮.প্রশ্ন উপনিষদ- ৬৭ ৯.মুণ্ডকোপনিষদ- ৬৫. ১০.মাণ্ডুক্যউপনিষদ- ১২ ১১.শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ. মন্ত্র. - ১১৩. ১২.কৌষীতকী উপনিষদ মন্ত্র. - ৪৯. ষড়দর্শন -৬ টি. ১.সাংখ্যা দর্শন - মহর্ষি কপিল. ২.যোগ দর্শন- পাতঞ্জলি. ৩.ন্যায় দর্শন - গৌতম. ৪.বৈশেষিক দর্শন-কণাদ. ৫.পূর্ব মীমাংসা - জৈমিনী. ৬.উত্তর মীমাংসা বেদান্ত দর্শন- ব্যাসদেব. মীমাংসা - ২ টি. ১.কর্ম মীমাংসা ২.ব্রহ্ম মীমাংস বা ব্রহ্মসূত্র. স্মৃতি-সংহিতা (সমাজ ব্যবস্থাপক শাস্ত্র) ২০টি ১.মনু সংহিতা ২.অত্রি সংহিতা. ৩.বিষ্ণু সংহিতা. ৪.হরিত সংহিতা. ৫.যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতা. ৬.পরাশর সংহিতা. ৭.ব্যাস সংহিতা. ৮.উশনা সংহিতা. ৯.অঙ্গিরা সংহিতা. ১০.যম সংহিতা. ১১.অপস্তম্ভ সংহিতা ১২.সম্বর্ত সংহিতা. ১৩.কাত্যায়ন সংহিতা. ১৪.বৃহস্পতি সংহিতা. ১৫.শঙ্খ সংহিতা ১৬.লিখিত সংহিতা. ১৭.দক্ষ সংহিতা. ১৮.গৌতম সংহিতা. ১৯.শতাতপ সংহিতা. ২০.বশিষ্ট সংহিতা. পুরাণ - ২ টি. ১.মহাপুরাণ-১৮টি. ২.উপ-পুরাণ-১৮টি. মহাপুরাণ -১৮টি. ১.ব্রহ্ম পুরাণ মন্ত্রসংখা-১০,০০০. ২.শিব পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৪,০০০. ৩.পদ্ম পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-৫৫,০০০. ৪.বিষ্ণু পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৩,০০০. ৫.ভাগবত মহাপুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৮,০০০. ৬.মার্কণ্ডেয় পুনাণ মন্ত্রসংখ্যা-৯,০০০. ৭.অগ্নি পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-৫,৪০০. ৮.ভবিষত পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৪,৫০০. ৯.ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৮ ,০০০. ১০.মৎস পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৪,০০০. ১১.লিঙ্গ পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১১,০০০. ১২.বরাহ পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৪,০০০. ১৩.কুর্ম্ম পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৭,০০০. ১৪.গরুড় পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৯,০০০. ১৫.ব্রহ্মান্ড পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১২,০০০. ১৬.নারদীয় পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৫,০০০ ১৭.স্কন্ধ পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-৮১,১০১. ১৮.বামন পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১০,০০০. ধর্ম গ্রন্থ 1. রামায়ণ. 2. মহাভারত. 3. দেবীভাগবত 4. শ্রীমদ্ভাগবদ 5. শ্রীমদ্ভাগবতগীতা মন্ত্রসংখ্যা-৭০০ শ্রেষ্ঠগ্রন্থ (৫ম বেদ) 6. শ্রীশ্রীচণ্ডী.মন্ত্রসংখ্যা-৭০০
ব্রাহ্মণ
“জন্মনা জায়তে শূদ্রঃ সংস্কারাদ্দ্বিজ উচ্যতে। বেদ পাঠী ভবেদ্বিপ্রঃ ব্রহ্ম জানাতি ব্রাহ্মণঃ”।।
অর্থাৎ, “জন্মমাত্রেই সবাই শূদ্র। সংস্কারে দ্বিজ পদবাচ্য হয়। বেদ পাঠেই বিপ্র হন এবং ব্রহ্মকে জানলেই ব্রাহ্মণ পদবাচ্য”।
चातुर्वर्ण्यं मया सृष्टं गुणकर्मविभागशः।
तस्य कर्तारमपि मां विद्ध्यकर्तारमव्ययम्।।...গীতা-4/13
অর্থাৎ গুন ও কর্ম অনুসারে আমি চারটি বর্ণের সৃষ্টি করিয়াছি , জন্ম অনুসারে নয় ৷
ব্রাহ্মণ শব্দটা এসেছে ব্রহ্ম থেকে,এক অর্থে, যার রয়েছে ব্রহ্মজ্ঞান সেই ব্রাহ্মণ।বর্ণপ্রথা পাকাপোক্ত হয়ে সনাতন ধর্মে চেপে বসার আগে ব্রাহ্মণ হতে পারতেন যে কেউ। কর্মানুসারে সকলে নানা বর্ণত্ব প্রাপ্ত হয়; কেউ হয় ব্রাহ্মণ, কেউ ক্ষত্রিয়, কেউ বৈশ্য এবং কেউ বা শূদ্র। মহাভারতে আরও বলা হয়েছে যে, যিনি সদাচারী ও সর্বভূতে মিত্রভাবাপন্ন, যিনি সন্তোষকারী, সত্যবাদী, জিতেন্দ্রিয় ও শাস্ত্রজ্ঞ-ব্রহ্মজ্ঞ, তিনিই ব্রাহ্মণ; অর্থাৎ গুণ ও কর্মানুসারে ব্রাহ্মণাদি চতুর্বর্ণের সৃষ্টি, জন্মানুসারে নয়।
অর্থাৎ যিনি যোগ্যতা এবং গুণ এবং কর্ম অনুসারে ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করিয়াছেন তিনি প্রকৃত ব্রাহ্মণ ।
সেই গুণ যোগ্যতা সম্পন্ন ব্রাহ্মণ পদবাচ্য ব্যক্তির সঙ্গে কি ব্যবহার করা উচিত বা কি রকম ব্যবহার করলে কি ফল হয় তাহা শাস্ত্রে উক্ত আছে:-------
”যদেবাব্রাহ্মণোক্তোহশ্রদ্দধানো যজাতৈ সা মে যজ্ঞস্যাহশীরসদিতি
তস্মাদ্ যদ্ ব্রাহ্মণোক্তোহশ্রদ্দধানো যজতে শংযুমেব তস্য বার্হস্পত্যং যজ্ঞংস্যাহশীর্গ
চ্ছত্যেতন্মমেত্যব্রীত্ কিং মে প্রজায়াঃ ইতি যোহপশুরাতৈ শতেন
যাতযাদ্যো নিহত্ সহস্রেণ যাতযাদ্যো লোহিতং করবদ্যাবতঃ প্রস্কদ্য
পাংসূন্তসংগৃহ্নাত্তাবতঃ সম্বত্সরান্ পিতৃলোকং ন প্র জানাদিতি তস্মাদ্
ব্রাহ্মণায় নাপ গুরেত ন হি হন্যান্ন লোহিতং কুর্যাদেতাবতা হৈনসা
ভবতি তচ্ছংযোরা বৃণীমহ ইত্যাহ যজ্ঞমেব তত্ স্বর্গা করোতি তত্ শংষে রা বৃণীমহ।।
অনুবাদঃ যে ব্রাহ্মণের তাড়নার উদ্যেগ করে সে শত নিস্ক দন্ডে ক্লেশ পায় ,
যেব্রাহ্মণকে আঘাত করে তাড়না করে, তার সহস্র নিস্কদন্ড,
যে ব্রাহ্মণের শরীরে রক্তপাত করে, সে রক্তবিন্দু পৃথিবীর যত পরমাণু ব্যেপে
থাকবে, তত বছর আঘাতকারী পিতৃলোক থেকে বিচ্যুত হয়ে
যমযাতনা ভোগ করবে । অতএব ব্রাহ্মণের প্রতি অবমাননা
করবে না ,তা হলে উক্তপাপে লিপ্ত হতে হবে ।।
তথ্যসূত্র:- কৃষ্ণযজুর্বেদ ২য়কান্ড ৬ষ্ট প্রপাঠক ১০নং মন্ত্র ।।
প্রত্যক্ষং যদব্রাহ্মণাস্তানেব তেন প্রীণত্যথো কৃষ্ণ_যজুর্বেদ_সংহিতা /১/৭/৩)
অনুবাদ- ব্রাহ্মণ প্রত্যক্ষ দেবতা।তাদের অন্ন দানে তুষ্ট করতে হয়।
ভবিষ্য পুরাণে আছে– ব্রাহ্মণো জগতাং তীর্থং পাবনং পরমং যতঃ।
ভুদেব হর মে পাপং বিষ্ণুরুপিন্নমোহস্তুতে।। ভবিষৎপুরান,মধ্যপর্ব্ব,১০/১৪ পৃষ্ঠা২২৩,
অনুবাদ-- ব্রাহ্মণ সমস্ত জগতের তীর্থ, কেননা এটি পরম পাবন।হে ভুদেব।হে বিষ্ণুরুপি।আমার পাপ হরণ কর।আপনার জন্য আমার প্রণাম জানাচ্ছি।।
ব্যাস বচন– অভিবাদ্যশ্চ পূজ্যশ্চ শিরসানম্য এব চ।
ব্রাহ্মণঃ ক্ষত্রিয়দ্যৈশ্চ শ্রীকামৈঃ সাদরং সদা।। পদ্মপুরাণ, স্বর্গখন্ড ২৫/৪৮
অনুবাদ- শ্রীকাম ক্ষত্রিয়াদি বর্ণত্রয় কর্ত্তক ব্রাহ্মণ সাদরে অভিবাদ্য,পুজা এবং মস্তক দ্বারা প্রণামযোগ্য।
ভগবান ব্রহ্মা বলেছেন– ভুরি প্রত্যক্ষদেবোহপি ব্রাহ্মণো দেবতাশ্রয়ঃ,সর্ব্ববর্নগুরুঃ--।। পদ্মপুরাণ, ক্রিয়াযোগসারঃ২০/১৯৩)
অনুবাদ- ব্রাহ্মণ ভুতলের প্রত্যক্ষ দেবতা সর্ব্ববর্ণের শুরু।
ভগবান ব্রহ্মা বলেছেন– সর্ব্বেহপি ব্রাহ্মণাঃ শ্রেষ্ঠাঃ পূজনীয় সদৈব হি।
অবিদ্যো বা সবিদ্যো বা নাত্র কার্যাবিচারণ।।পদ্মপুরাণ -ক্রিয়াযোগসার ২১/৮
অনুবাদ- সর্ব্ববিৎ ব্রাহ্মণ শ্রেষ্ঠ। ব্রাহ্মণ অবিদ্যই হউন আর সবিদ্যাই হউন।সর্ব্বদাই তাঁহারা পুজনীয় ও শ্রেষ্ঠ এ বিষয়ে তর্ককরা নিষিদ্ধ।
ত্রৈলোক্যস্যৈব হেতুর্হি মর্য্যাদা শাশ্বতী ধ্রুবা
ব্রাহ্মণো নাম ভগবান জন্মপ্রভৃতি পূজ্যতে।।--মহাভারত,শান্তিপর্ব ২৬৩/১২
অনুবাদ- ত্রিভূবনের মঙ্গলের কারণ,নিত্যও সত্য গৌরবস্হান,মাহাত্ম্যশালী ব্রাহ্মণ জন্মবধি পূজিত হইয়া থাকেন।
শ্রী ভগবান বলেছেন - যে মে তনুর্দ্বিজবান দুহতীর্স্মদীয়া ভুতান্যব্বথরণানি চ ভেদবুদ্ব্যা
দ্রক্ষ্যন্ত্যঘক্ষতদৃশো হ্যাহিন্যবস্তান গৃধ্রা রুষা মম কুশন্ত্যধিদণ্ডনেতুঃ।
যে ব্রাহ্মণান ময়ি ধিয়া ক্ষিপতোর্হচ্চয়ন্তস্তুষ্যদ্ধদঃ স্মিতসুধোক্ষিতপদ্মবক্তাঃ।
বাণ্যানুরাগকলয়া ত্নজবদৃগৃন্তঃসন্বোধয়ন্ত্যহমিবা হমুপাকৃতস্তৈঃ।। ভগবত৩/১৬১০-১১
অনুবাদ- ব্রাহ্মণ, দুগ্ধবতী গাভী ও রক্ষণশীল প্রাণী,ইহারা আমার দেহস্বরুপঃ যদি কেহ এই তিনটিকে অন্যথা জ্ঞান করে।তবে আমার অধিকারভুক্ত যমের যেসকল সর্পের ন্যায় ক্রোধী গৃধ্রাকার দূত আছে,তাহারা সেই পাপাজত-চিত্ত ব্যক্তিকে চঞু দ্বারা বিদীর্ণ করে।ব্রাহ্মণেরা কটুকথা বলিলেও যাঁহারা প্রফুল্লিত বাসুদেবজ্ঞানে তাঁহাদিগকে অর্চ্চনা করেন এবং সহাস্যবদনে প্রেমশোভিত বাক্যে তাঁহাদিগকে সম্বোধন করি,সেইরুপ ভাবে যাঁহারা সেই ব্রাহ্মণগণকে সম্বোধন করিয়া তাকেন,আমি তাঁহাদের বশীভূত হই।
শ্রীপৃথু রাজা বলেছেন- যৎসেবয়াশেষগুহাশয়ঃ স্ববাড় বিপ্রপ্রিয়স্তুষ্যতি কামমীশ্বরঃ।
তবেদ তদ্ধমর্পয়ৈবিনীতৈঃ সর্ব্বত্নানা ব্রহ্মকুলং নিষেব্যতাম।।ভগবত৪/২১/৩৯
অনুবাদ- সর্ব্বান্তর্য্যামী স্বপ্রকাশ ব্রাহ্মণ প্রিয় ভগবান যে ব্রাহ্মণ কুলের সেবায় অন্ত্যন্ত পপরিতুষ্ট হন।আপনারার ভগবদ্বর্ম্মপরায়ণ ও বিনীত সর্ব্বান্তঃকারণে সেই ব্রাহ্মণ কুলের সেবা করুন।
শুকদেব বলেছেন- যস্ত্বিহ ব্রহ্মধ্রুক স কালসুত্রসংজ্ঞকে
নরকে অযুতযোজনপরিমন্ডলে তাম্রময়ে।। ভগবত ৫/২৬/১৪
অনুবাদ- যে ব্যক্তি ব্রহ্মঘাতী,যমদূত তাকে কালসুত্র নামক নরকে নিক্ষেপ করে,ঐ নরকের পরিধি দশসহ্রস যোজন ঐ স্হান তাম্রময়।
নারদ মুনি বলেছে- নহ্যগ্নিমুখতোহরং বৈ ভগবান সর্ব্বযজ্ঞভুক
ইত্যেত হবিষারাজন যথা বিপ্রমুখে হুতৈঃ।। ভগবত ৭/১৪১/৭
অনুবাদ- হে রাজন,ব্রাহ্মণ মুখে প্রদত্ত অন্নাদি দ্বারা এই সর্ব্বযজ্ঞাভোগী ভগবান বিষ্ণু যেরুপ পূজিত হোন,অগ্নিমুখে প্রদত্ত হববিঃ দ্বারা সেরুপপ তিনি পূজিত হয় না।
নন্বস্য ব্রাহ্মণা রাজন কৃষ্ণস্য জগদাত্নানঃ।
পুনন্তঃপাদরাজস্য ত্রিলোকীং দৈবতং মহৎ // ভগবত ৭/১৪/৪২
অনুবাদ- মহারাজ।আমার এবং তোমার কথা বাদদ দাও।স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ইষ্টদেব ব্রাহ্মণ। কারণ তোমার চরণরেণুতে তিন লোক পবিত্র হয়।
শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন- যথাহং প্রণমে বিপ্রাননুকালং সমাহিতঃ।
তথা নমত যূয়ঞ যোহন্যথা মে স দন্ডভাক্।।ভগবত ১০/৬৪/৪২
অনুবাদ- আমি যেরুপ প্রত্যহ সমাহিত মনে সাবধান হইয়া ব্রাহ্মণগণকে নমস্কার করি।তোমরাও সেইরুপ ব্রাহ্মণগণ কে সতত নমস্কার করিবে।যে ব্যক্তি ইহার অন্যথা করিবে,আমি তাহাকে দন্ডদান করিব।সে দন্ডনীয় হইবে।
শুকদেব পরমহংস বলেছেন- তস্য বৈ দেবদেবস্য হরের্যজ্ঞপতেঃ প্রভোঃ
ব্রাহ্মণাঃপ্রভবো বৈবং ন তেভ্যো বিদ্যতে পরম।। ব্রহ্মবৈবর্তপুরান, ব্রহ্মখন্ড ১১/১৪
অনুবাদ- প্রিয় পরীক্ষিত,দেবতাদেরও ও আরাধ্য দেবতা ভক্তভয়হারী যজ্ঞপতি সর্বশক্তিমান ভগবান স্বয়ং ব্রাহ্মণদের নিজ প্রভু ও ইষ্ট মনে করে তাকেন।তাই ব্রাহ্মণগণ এই জগতে সর্বাধিক প্রণম্য বলে স্বীকৃত।
সূর্যদেব বলেছেন– ব্রাহ্মণাবাহিতা দেবাঃশশ্বদ্বিশ্বেষু পূজজিতাঃ
ন চ বিপ্রং পরো দেবো বিপ্ররুপী স্বয়ং হরিঃ
অনুবাদ- দেবতাগণ ব্রাহ্মণকৃর্তক অবাহিত হইয়া বারংবার এই বিশ্ব সংসারে পূজিত হইতেছেন,এবং ব্রাহ্মণ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ দেবতা আর কেহই নাই,কারন স্বয়ং হরিই বিপ্ররুপ ধারন করিয়াছেন।।
সর্ব্বাবর্ণাশ্রমপরো বিপ্রো নাস্তি বিপ্রসমো গুরুঃ
বেদ বেদাঙ্গ সর্ব্বার্থমিত্যাহ কমলোদ্ভবঃ।। ব্রহ্মবৈবতপুরান, ব্রহ্মখন্ড ১১/২০
অনুবাদ- ব্রাহ্মণ অপেক্ষা গুরু কেহই নেই,ইহাই বেদের সার কথা বলিয়া স্বয়ং কমলযোনি ব্রহ্মা স্বীকার করিয়াছেন।।
আনন্দপূর্ব্বক বন্দে বিপ্ররুপং জনার্দ্দন।
তুষ্টা দেবা হরিস্তুষটো যস্য পুষ্পজলেন চ।। ব্রহ্মবৈবতপুরান, ব্রহ্মখন্ড ১৪/১২
অনুবাদ- যে ব্রাহ্মণ প্রদত্ত জলপুষ্পে সমস্ত দেবতা ও ভগবান হরি তুষ্টি লাভ করেন।আমি সেই বিপ্ররুপী জনার্দ্দনকে আনন্দের সহিত প্রণাম করি।।
ধর্ম্মরাজ যম বলেছেন- ক্ষত্রিয়ো বাপি বৈশ্যো বা কল্পকোটিশতেন চ।
তপসা ব্রাহ্মণত্বঞ না প্রাপ্নোতি শ্রুতে শ্রুতম।। ব্রহ্মবৈবতপুরান, প্রকৃতিখন্ড ২৬/৬৯
অনুবাদ- ক্ষত্রিয় বা বৈশ্য,শতকুটিকল্প তপস্যা করিয়াও ব্রাহ্মণত্ব লাভ করিতে পারে না।ইহা বেদে কথিত আছে।।
শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন -অপ্রজ্ঞ বাথ প্রজ্ঞো বা ব্রাহ্মণো বিষ্ণুবিগ্রহ---ব্রহ্মবৈবতপুরান, শ্রীকৃষ্ণ জন্মখন্ড২১/৭০
অনুবাদ- জ্ঞানীই হউন,বা অজ্ঞানী হউন,ব্রাহ্মণ মাত্রেই বিষ্ণুরুপি।।
নমস্কুর্য্যাৎ স্বয়ং বিপ্রান বর্ত্তমানান যথাতথম
যথাসুখং যথোৎসাহং নমস্যান্তে স্বমাতৃবৎ।। শিবপুরান,ধর্ম্মসংহিতা ২০/৮৫
অনুবাদ- ব্রাহ্মণ সদাচারসম্পূর্ণ হউনবা দুরাচারযুক্তই হউন,আপনার মাতাকে যেমন নমস্কার করা উচিত,সেইরুপ তাঁহাদিগকে নমস্কার করিবে।।
ব্যাসদেব বলেছেন- ব্রাহ্মণত্বং হি দুষ্প্রাপং নিসর্গাদব্রাহ্মণো ভবেৎ।
ক্ষত্রিয়ো বাপি বৈশ্য বা নিসর্গাদেব জায়তে।। শিবপুরান,ধর্ম্মসংহিতা ৪১/১
অনুবাদ- ব্রাহ্মণত্ব দুর্লভ।প্রকৃতি অনুসারে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য,শুদ্র হয়।।
ব্রাহ্মণ দর্শবর্ষং তু শতবর্ষং ভূমিপম।
পিতাপুত্রৌ বিজানীয়াদ্রাক্ষণস্তু তয়োঃপিতা।। মনুসংহিতা ২/১৩৫
অনুবাদ- যদি কোনও ব্রাহ্মণ দশবৎসর বয়স্ক হয় এবং ক্ষত্রিয়কে পুত্রের মত দেখিবে,অথাৎ ব্রাহ্মণ কে ক্ষত্রিয় পিতার ন্যায় বলিয়া গ্রহন করিবে।।
বিশেষ দ্রষ্টব্য : যিনি যোগ্যতা এবং গুণ এবং কর্ম অনুসারে ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করিয়াছেন তিনি প্রকৃত ব্রাহ্মণ । এরকম যোগ্য ব্রাহ্মণ ব্যক্তির সঙ্গে কেমন ব্যবহার করা উচিত অথবা কি ব্যবহার করলে কি কর্মফল লাভ হয় শাস্ত্রে বহুবার তাহা বলা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ ওপরের কিছু শ্লোকে সেগুলো দেওয়া হইল। কিন্তু মধ্যযুগে ব্রাহ্মণ্যবাদ কুসংস্কার প্রথা অনুসারে শাস্ত্রের উপরোক্ত শ্লোকের অপব্যাখ্যা কারি এবং জন্মগত ব্রাহ্মণবাদী লোকের জন্য অবশ্যই প্রযোজ্য নয়।
**********************************************************************************************************
একজন ব্রাহ্মণ যদি তিন দিন দুধ বিক্রি করে অথবা মাংস বিক্রি, লাক্ষা ও লবন প্রভৃতি বিক্রি করে তখন সে শুদ্রে পরিনত হয়। ৯২/১০ মনুসংহিতা।
কোনো ব্রাহ্মন, মাৎসাদি বা ভোজ্যদ্রব্য ভিন্ন অন্যপ্রতিসিদ্ধ দ্রব্য সাতদিন বিক্রয় করিলে সে বৈশ্য হয়।৯৩/১০ মনুসংহিতা
মনুসংহিতা থেকে স্কন্ধ পুরান আরও ভয়ানক।
স্কন্ধ পুরানের কাশি খন্ডে বলা হয়েছে
যে ব্রাহ্মণ শুদ্রের অন্ন গ্রহন করে , শূদ্রের সহিত সম্পর্ক রাখে, শূদ্রের সহিত একাসনে উপবেশন করে , শূদ্রের নিকট বিদ্যা শিক্ষা করে সেই নরাধমের জলন্ত পাতকে বাস হয়।
যে সকল ব্রাহ্মণ শূদ্রের নিকট হইতে দান গ্রহণ করিয়া জীবিকা নির্বাহ করে সেই বিপ্রাধমেরা ব্রহ্মতেজ বিহীন হইয়া ঘোর নরকে স্থান প্রাপ্ত হয়।
যে ব্রাহ্মণ হস্তদ্বারা পরিবেশিত মধু, দুগ্ধ, বাতাসা, ঘৃত ,লবন এবং শাক গ্রহন করে সেই ব্রাহ্মণ কে অবশ্যই একদিন উপবাস স্বরূপ প্রায়শ্চিত্ত করে শুদ্ধ হইতে হয়।
কোনো শূদ্র যদি স্নেহ বশত ব্রাহ্মণের পাত্রে লবন অথবা ব্যঞ্জনাদি প্রদান করে তাহা হইলে সেই শূদ্রের কিছু মাত্র সম্পত্তি থাকে না এবং সেই ভোক্তা ব্রাহ্মণের ও পাপানল ভক্ষণ করা হয়।
যদি কেহ কোনো ব্যক্তি কে লোহ পাত্রে অন্ন প্রদান করে তাহা হইলে যে দেয় তাহাকে নরকগামী হইতে হয় । এবং যে ব্যক্তি ভোজন করে তাহার বিষ্ঠা ভক্ষণ হইয়া থাকে।
ভোজন কালে অঙ্গুষ্ঠ ও তর্জনী দ্বারা যদি কেহ লবন ও মৃত্তিকা গ্রহন করে তাহা হইলে সেই ব্যক্তির গো মাংস ভক্ষণতুল্য পাপ হয় ।
ব্রাহ্মণ যদি গো রক্ষক, বানিজ্যজীবি, শিল্পজীবি, নট্টনর্তক, দৌত্যকার্জে নিযুক্ত অথবা কুসীদোপজীবি হয় তাহা হইলে তাহার সহিত শূদ্রবৎ ব্যবহার উচিত।
অর্থাৎ এখানে বোঝা যাচ্ছে ব্রাহ্মণ সমাজ কখনোই শূদ্র কর্ম এবং বৈশ্য কর্ম করতেই পারবে না। শূদ্র কর্ম এবং বৈশ্য কর্ম তিন দিন ও সাত দিন করলে তারা বর্নচূত হবে ।
এছাড়া অত্রী সংহিতা আরও ভয়ঙ্কর
অত্রি সংহিতায় দশ প্রকার ব্রাহ্মণের কথা বলা হয়েছে । বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী অত্রি সংহিতা সকল ব্যক্তিকেই ব্রাহ্মণ বলেছেন।
দেব, মুনি, দ্বিজ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য,শূদ্র, নিষাদ, পশু, ম্লেচ্ছ, চন্ডাল, এই দশ প্রকার ব্রাহ্মণ পৃথিবীতে বিরাজমান।
যে ব্রাহ্মণ সন্ধ্যা, যপ,হোম, যজ্ঞ, দেবপুজা, অতিথি সেবা , নবগুন সম্পন্ন হন তাদের দেব ব্রাহ্মণ বলে।
যে ব্রাহ্মণ নিত্য বেদ বেদান্ত পাঠ করেন, সর্বসঙ্গ ত্যাগী, নিত্য যোগ অভ্যাস করে থাকেন তাদের দ্বিজ ব্রাহ্মণ বলে।
যে ব্রাহ্মণ শাক,পত্র, ফল, মূল, বৃক্ষ, খেয়ে বনে জঙ্গলে জীবন অতিবাহিত করেন এবং পরমব্রহ্মের সাধনা করেন তাহদের মুনি বলা হয়।
যে ব্রাহ্মণ সমর বা ঝগড়া স্থলে অস্ত্র দ্বারা শত্রুকে আহত ও পরাজিত করেন তাদের ক্ষত্রিয় ব্রাহ্মণ বলে।
যে ব্রাহ্মণ লাক্ষা, লবন, দুধ, ঘি, দই, মাংস প্রভৃতি বিক্রয় করে তাদের শূদ্র ব্রাহ্মণ বলে।
যে ব্রাহ্মণ কৃষিকার্য, গো প্রতিপালক, ব্যাবসা, বানিজ্যে লিপ্ত তাদের বৈশ্য ব্রাহ্মণ বলে।
যে ব্রাহ্মণ চোর, ডাকাত, মাছ মাংস ভক্ষণ কারী, কুপরামর্শদাতা, তাদের নিষাদ ব্রাহ্মণ বলে।
যে ব্রাহ্মণ বেদ এবং পরমাত্ম তত্ত্ব কিছুই জানে না শুধু মাত্র যজ্ঞ উপবিতের প্রভাবে গর্ব করে তাদের পশু ব্রাহ্মণ বলে।
যে ব্রাহ্মণ কূপ, পুকুর, সরোবর, সাধারণ ভোগ্য উপবন থেকে জনসাধারণের ব্যবহার বন্ধ করে তাদের ম্লেচ্ছ ব্রাহ্মণ বলে।
যে ব্রাহ্মণ নিত্য কর্তব্য কার্যহীন, মূর্খ, সর্বধর্ম রহিত , মিথ্যাবাদী, অসৎ, তাদের চন্ডাল ব্রাহ্মণ বলে।
ভাব শুদ্ধিতে কি জ্ঞান লাভ সহায়তা হয় ? ভাব শুদ্ধির ফলে অবশ্যই জ্ঞান লাভ হয়। ভাব শুদ্ধির ফলে আমরা আমাদের স্বরুপ সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করতে পারি। ভাবে শুদ্ধির ফলে আমাদের জন্মান্তর যে অভাব তা ধীরে ধীরে দুর হয় তা অবশ্যই জ্ঞানের প্রকাশের ফলেই হয়। ভাবে শুদ্ধির ফলেই আমরা সেই পরমাত্মা ব্রহ্মজ্ঞান কে অবগত হতে পারি।তাই আমার মনে হই ভাবে শুদ্ধির ফলে অবশ্যই জ্ঞান লাভ হয়।
হনুমান বাহুক রচনা করেছিলেন তুলসী দাস জি যখন তাঁর শরীরে তীব্র ব্যথা হয়েছিল। হনুমান বাহুক পাঠ করে তিনি ভগবান হনুমানের আশীর্বাদ পেয়েছিলেন বলে তিনি তার ব্যথা এবং রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। তাই হনুমান বাহুক রোগ ও যন্ত্রণার অলৌকিক প্রতিকার বলে মনে করা হয়। সর্বোপরি, হনুমান বাহুক- এটি আপনাকে ভগবান হনুমানের আশীর্বাদ দেয় এবং আপনি আপনার সমস্ত উত্তেজনা থেকে নিশ্চিত সুরক্ষা পাবেন। অন্য কথায়, আপনি বা আপনার পরিবারের সদস্যরা যদি কোনো রোগ ও জয়েন্টের ব্যথায় ভুগছেন, বা ভালো না থাকেন। হনুমান বাহুক সাহায্য করবে যদি আপনি ভগবান হনুমানের প্রতি সম্পূর্ণ বিশ্বাস এবং ভক্তি করেন। হনুমান চালিসা এবং হনুমান অষ্টক পাঠ করতে ভুলবেন না। सिंधु तरन, सिय–सोच हरन, रबि बाल बरन तनु । भुज बिसाल, मूरति कराल कालहु को काल जनु ॥ गहन–दहन–निरदहन लंक निःसंक, बंक–भुव । जातुधान–बलवान मान–मद–दवन पवनसुव ॥ कह तुलसिदास सेवत सुलभ सेवक हित सन्तत निकट । गुन गनत, नमत, सुमिरत जपत समन सकल–संकट–विकट ॥१ ॥ स्वर्न–सैल–संकास कोटि–रवि तरुन तेज घन । उर विसाल भुज दण्ड चण्ड नख–वज्रतन ॥ पिंग नयन, भृकुटी कराल रसना दसनानन । कपिस केस करकस लंगूर, खल–दल–बल–भानन ॥ कह तुलसिदास बस जासु उर मारुतसुत मूरति विकट । संताप पाप तेहि पुरुष पहि सपनेहुँ नहिं आवत निकट ॥२ ॥ झूलना पञ्चमुख–छःमुख भृगु मुख्य भट असुर सुर, सर्व सरि समर समरत्थ सूरो । बांकुरो बीर बिरुदैत बिरुदावली, बेद बंदी बदत पैजपूरो ॥ जासु गुनगाथ रघुनाथ कह जासुबल, बिपुल जल भरित जग जलधि झूरो । दुवन दल दमन को कौन तुलसीस है, पवन को पूत रजपूत रुरो ॥३ ॥ घनाक्षरी भानुसों पढ़न हनुमान गए भानुमन, अनुमानि सिसु केलि कियो फेर फारसो । पाछिले पगनि गम गगन मगन मन, क्रम को न भ्रम कपि बालक बिहार सो ॥ कौतुक बिलोकि लोकपाल हरिहर विधि, लोचननि चकाचौंधी चित्तनि खबार सो। बल कैंधो बीर रस धीरज कै, साहस कै, तुलसी सरीर धरे सबनि सार सो ॥४॥ भारत में पारथ के रथ केथू कपिराज, गाज्यो सुनि कुरुराज दल हल बल भो । कह्यो द्रोन भीषम समीर सुत महाबीर, बीर–रस–बारि–निधि जाको बल जल भो ॥ बानर सुभाय बाल केलि भूमि भानु लागि, फलँग फलाँग हूतें घाटि नभ तल भो । नाई–नाई–माथ जोरि–जोरि हाथ जोधा जो हैं, हनुमान देखे जगजीवन को फल भो ॥५॥ गो–पद पयोधि करि, होलिका ज्यों लाई लंक, निपट निःसंक पर पुर गल बल भो । द्रोन सो पहार लियो ख्याल ही उखारि कर, कंदुक ज्यों कपि खेल बेल कैसो फल भो ॥ संकट समाज असमंजस भो राम राज, काज जुग पूगनि को करतल पल भो । साहसी समत्थ तुलसी को नाई जा की बाँह, लोक पाल पालन को फिर थिर थल भो ॥६॥ कमठ की पीठि जाके गोडनि की गाड़ैं मानो, नाप के भाजन भरि जल निधि जल भो । जातुधान दावन परावन को दुर्ग भयो, महा मीन बास तिमि तोमनि को थल भो ॥ कुम्भकरन रावन पयोद नाद ईधन को, तुलसी प्रताप जाको प्रबल अनल भो । भीषम कहत मेरे अनुमान हनुमान, सारिखो त्रिकाल न त्रिलोक महाबल भो ॥७॥ दूत राम राय को सपूत पूत पौनको तू, अंजनी को नन्दन प्रताप भूरि भानु सो । सीय–सोच–समन, दुरित दोष दमन, सरन आये अवन लखन प्रिय प्राण सो ॥ दसमुख दुसह दरिद्र दरिबे को भयो, प्रकट तिलोक ओक तुलसी निधान सो । ज्ञान गुनवान बलवान सेवा सावधान, साहेब सुजान उर आनु हनुमान सो ॥८॥ दवन दुवन दल भुवन बिदित बल, बेद जस गावत बिबुध बंदी छोर को । पाप ताप तिमिर तुहिन निघटन पटु, सेवक सरोरुह सुखद भानु भोर को ॥ लोक परलोक तें बिसोक सपने न सोक, तुलसी के हिये है भरोसो एक ओर को । राम को दुलारो दास बामदेव को निवास। नाम कलि कामतरु केसरी किसोर को ॥९॥ महाबल सीम महा भीम महाबान इत, महाबीर बिदित बरायो रघुबीर को । कुलिस कठोर तनु जोर परै रोर रन, करुना कलित मन धारमिक धीर को ॥ दुर्जन को कालसो कराल पाल सज्जन को, सुमिरे हरन हार तुलसी की पीर को । सीय–सुख–दायक दुलारो रघुनायक को, सेवक सहायक है साहसी समीर को ॥१०॥ रचिबे को बिधि जैसे, पालिबे को हरि हर, मीच मारिबे को, ज्याईबे को सुधापान भो । धरिबे को धरनि, तरनि तम दलिबे को, सोखिबे कृसानु पोषिबे को हिम भानु भो ॥ खल दुःख दोषिबे को, जन परितोषिबे को, माँगिबो मलीनता को मोदक दुदान भो । आरत की आरति निवारिबे को तिहुँ पुर, तुलसी को साहेब हठीलो हनुमान भो ॥११॥ सेवक स्योकाई जानि जानकीस मानै कानि, सानुकूल सूलपानि नवै नाथ नाँक को । देवी देव दानव दयावने ह्वै जोरैं हाथ, बापुरे बराक कहा और राजा राँक को ॥ जागत सोवत बैठे बागत बिनोद मोद, ताके जो अनर्थ सो समर्थ एक आँक को । सब दिन रुरो परै पूरो जहाँ तहाँ ताहि, जाके है भरोसो हिये हनुमान हाँक को ॥१२॥ सानुग सगौरि सानुकूल सूलपानि ताहि, लोकपाल सकल लखन राम जानकी । लोक परलोक को बिसोक सो तिलोक ताहि, तुलसी तमाइ कहा काहू बीर आनकी ॥ केसरी किसोर बन्दीछोर के नेवाजे सब, कीरति बिमल कपि करुनानिधान की । बालक ज्यों पालि हैं कृपालु मुनि सिद्धता को, जाके हिये हुलसति हाँक हनुमान की ॥१३॥ करुनानिधान बलबुद्धि के निधान हौ, महिमा निधान गुनज्ञान के निधान हौ । बाम देव रुप भूप राम के सनेही, नाम, लेत देत अर्थ धर्म काम निरबान हौ ॥ आपने प्रभाव सीताराम के सुभाव सील, लोक बेद बिधि के बिदूष हनुमान हौ । मन की बचन की करम की तिहूँ प्रकार, तुलसी तिहारो तुम साहेब सुजान हौ ॥१४॥ मन को अगम तन सुगम किये कपीस, काज महाराज के समाज साज साजे हैं । देवबंदी छोर रनरोर केसरी किसोर, जुग जुग जग तेरे बिरद बिराजे हैं । बीर बरजोर घटि जोर तुलसी की ओर, सुनि सकुचाने साधु खल गन गाजे हैं । बिगरी सँवार अंजनी कुमार कीजे मोहिं, जैसे होत आये हनुमान के निवाजे हैं ॥१५॥ सवैया जान सिरोमनि हो हनुमान सदा जन के मन बास तिहारो । ढ़ारो बिगारो मैं काको कहा केहि कारन खीझत हौं तो तिहारो ॥ साहेब सेवक नाते तो हातो कियो सो तहां तुलसी को न चारो । दोष सुनाये तैं आगेहुँ को होशियार ह्वैं हों मन तो हिय हारो ॥१६॥ तेरे थपै उथपै न महेस, थपै थिर को कपि जे उर घाले । तेरे निबाजे गरीब निबाज बिराजत बैरिन के उर साले ॥ संकट सोच सबै तुलसी लिये नाम फटै मकरी के से जाले । बूढ भये बलि मेरिहिं बार, कि हारि परे बहुतै नत पाले ॥१७॥ सिंधु तरे बड़े बीर दले खल, जारे हैं लंक से बंक मवासे । तैं रनि केहरि केहरि के बिदले अरि कुंजर छैल छवासे ॥ तोसो समत्थ सुसाहेब सेई सहै तुलसी दुख दोष दवा से । बानरबाज ! बढ़े खल खेचर, लीजत क्यों न लपेटि लवासे ॥१८॥ अच्छ विमर्दन कानन भानि दसानन आनन भा न निहारो । बारिदनाद अकंपन कुंभकरन से कुञ्जर केहरि वारो ॥ राम प्रताप हुतासन, कच्छ, विपच्छ, समीर समीर दुलारो पाप ते साप ते ताप तिहूँ तें सदा तुलसी कह सो रखवारो ॥१९॥ घनाक्षरी जानत जहान हनुमान को निवाज्यो जन, मन अनुमानि बलि बोल न बिसारिये । सेवा जोग तुलसी कबहुँ कहा चूक परी, साहेब सुभाव कपि साहिबी संभारिये ॥ अपराधी जानि कीजै सासति सहस भान्ति, मोदक मरै जो ताहि माहुर न मारिये । साहसी समीर के दुलारे रघुबीर जू के, बाँह पीर महाबीर बेगि ही निवारिये ॥२०॥ बालक बिलोकि, बलि बारें तें आपनो कियो, दीनबन्धु दया कीन्हीं निरुपाधि न्यारिये । रावरो भरोसो तुलसी के, रावरोई बल, आस रावरीयै दास रावरो विचारिये ॥ बड़ो बिकराल कलि काको न बिहाल कियो, माथे पगु बलि को निहारि सो निबारिये । केसरी किसोर रनरोर बरजोर बीर, बाँह पीर राहु मातु ज्यौं पछारि मारिये ॥२१॥ उथपे थपनथिर थपे उथपनहार, केसरी कुमार बल आपनो संबारिये । राम के गुलामनि को काम तरु रामदूत, मोसे दीन दूबरे को तकिया तिहारिये ॥ साहेब समर्थ तो सों तुलसी के माथे पर, सोऊ अपराध बिनु बीर, बाँधि मारिये । पोखरी बिसाल बाँहु, बलि, बारिचर पीर, मकरी ज्यों पकरि के बदन बिदारिये ॥२२॥ राम को सनेह, राम साहस लखन सिय, राम की भगति, सोच संकट निवारिये । मुद मरकट रोग बारिनिधि हेरि हारे, जीव जामवंत को भरोसो तेरो भारिये ॥ कूदिये कृपाल तुलसी सुप्रेम पब्बयतें, सुथल सुबेल भालू बैठि कै विचारिये महाबीर बाँकुरे बराकी बाँह पीर क्यों न, लंकिनी ज्यों लात घात ही मरोरि मारिये ॥२३॥ लोक परलोकहुँ तिलोक न विलोकियत, तोसे समरथ चष चारिहूँ निहारिये । कर्म, काल, लोकपाल, अग जग जीवजाल, नाथ हाथ सब निज महिमा बिचारिये ॥ खास दास रावरो, निवास तेरो तासु उर, तुलसी सो, देव दुखी देखिअत भारिये । बात तरुमूल बाँहूसूल कपिकच्छु बेलि, उपजी सकेलि कपि केलि ही उखारिये ॥२४॥ करम कराल कंस भूमिपाल के भरोसे, बकी बक भगिनी काहू तें कहा डरैगी । बड़ी बिकराल बाल घातिनी न जात कहि, बाँहू बल बालक छबीले छोटे छरैगी ॥ आई है बनाई बेष आप ही बिचारि देख, पाप जाय सब को गुनी के पाले परैगी । पूतना पिसाचिनी ज्यौं कपि कान्ह तुलसी की, बाँह पीर महाबीर तेरे मारे मरैगी ॥२५॥ भाल की कि काल की कि रोष की त्रिदोष की है, बेदन बिषम पाप ताप छल छाँह की । करमन कूट की कि जन्त्र मन्त्र बूट की, पराहि जाहि पापिनी मलीन मन माँह की ॥ पैहहि सजाय, नत कहत बजाय तोहि, बाबरी न होहि बानि जानि कपि नाँह की । आन हनुमान की दुहाई बलवान की, सपथ महाबीर की जो रहै पीर बाँह की ॥२६॥ सिंहिका सँहारि बल सुरसा सुधारि छल, लंकिनी पछारि मारि बाटिका उजारी है । लंक परजारि मकरी बिदारि बार बार, जातुधान धारि धूरि धानी करि डारी है ॥ तोरि जमकातरि मंदोदरी कठोरि आनी, रावन की रानी मेघनाद महतारी है । भीर बाँह पीर की निपट राखी महाबीर, कौन के सकोच तुलसी के सोच भारी है ॥२७॥ तेरो बालि केलि बीर सुनि सहमत धीर, भूलत सरीर सुधि सक्र रवि राहु की । तेरी बाँह बसत बिसोक लोक पाल सब, तेरो नाम लेत रहैं आरति न काहु की ॥ साम दाम भेद विधि बेदहू लबेद सिधि, हाथ कपिनाथ ही के चोटी चोर साहु की । आलस अनख परिहास कै सिखावन है, एते दिन रही पीर तुलसी के बाहु की ॥२८॥ टूकनि को घर घर डोलत कँगाल बोलि, बाल ज्यों कृपाल नत पाल पालि पोसो है । कीन्ही है सँभार सार अँजनी कुमार बीर, आपनो बिसारि हैं न मेरेहू भरोसो है ॥ इतनो परेखो सब भान्ति समरथ आजु, कपिराज सांची कहौं को तिलोक तोसो है । सासति सहत दास कीजे पेखि परिहास, चीरी को मरन खेल बालकनि कोसो है ॥२९॥ आपने ही पाप तें त्रिपात तें कि साप तें, बढ़ी है बाँह बेदन कही न सहि जाति है । औषध अनेक जन्त्र मन्त्र टोटकादि किये, बादि भये देवता मनाये अधीकाति है ॥ करतार, भरतार, हरतार, कर्म काल, को है जगजाल जो न मानत इताति है । चेरो तेरो तुलसी तू मेरो कह्यो राम दूत, ढील तेरी बीर मोहि पीर तें पिराति है ॥३०॥ दूत राम राय को, सपूत पूत वाय को, समत्व हाथ पाय को सहाय असहाय को । बाँकी बिरदावली बिदित बेद गाइयत, रावन सो भट भयो मुठिका के धाय को ॥ एते बडे साहेब समर्थ को निवाजो आज, सीदत सुसेवक बचन मन काय को । थोरी बाँह पीर की बड़ी गलानि तुलसी को, कौन पाप कोप, लोप प्रकट प्रभाय को ॥३१॥ देवी देव दनुज मनुज मुनि सिद्ध नाग, छोटे बड़े जीव जेते चेतन अचेत हैं । पूतना पिसाची जातुधानी जातुधान बाग, राम दूत की रजाई माथे मानि लेत हैं ॥ घोर जन्त्र मन्त्र कूट कपट कुरोग जोग, हनुमान आन सुनि छाड़त निकेत हैं । क्रोध कीजे कर्म को प्रबोध कीजे तुलसी को, सोध कीजे तिनको जो दोष दुख देत हैं ॥३२॥ तेरे बल बानर जिताये रन रावन सों, तेरे घाले जातुधान भये घर घर के । तेरे बल राम राज किये सब सुर काज, सकल समाज साज साजे रघुबर के ॥ तेरो गुनगान सुनि गीरबान पुलकत, सजल बिलोचन बिरंचि हरिहर के । तुलसी के माथे पर हाथ फेरो कीस नाथ, देखिये न दास दुखी तोसो कनिगर के ॥३३॥ पालो तेरे टूक को परेहू चूक मूकिये न, कूर कौड़ी दूको हौं आपनी ओर हेरिये । भोरानाथ भोरे ही सरोष होत थोरे दोष, पोषि तोषि थापि आपनो न अव डेरिये ॥ अँबु तू हौं अँबु चूर, अँबु तू हौं डिंभ सो न, बूझिये बिलंब अवलंब मेरे तेरिये । बालक बिकल जानि पाहि प्रेम पहिचानि, तुलसी की बाँह पर लामी लूम फेरिये ॥३४॥ घेरि लियो रोगनि, कुजोगनि, कुलोगनि ज्यौं, बासर जलद घन घटा धुकि धाई है । बरसत बारि पीर जारिये जवासे जस, रोष बिनु दोष धूम मूल मलिनाई है ॥ करुनानिधान हनुमान महा बलवान, हेरि हँसि हाँकि फूंकि फौंजै ते उड़ाई है । खाये हुतो तुलसी कुरोग राढ़ राकसनि, केसरी किसोर राखे बीर बरिआई है ॥३५॥ सवैया राम गुलाम तु ही हनुमान गोसाँई सुसाँई सदा अनुकूलो । पाल्यो हौं बाल ज्यों आखर दू पितु मातु सों मंगल मोद समूलो ॥ बाँह की बेदन बाँह पगार पुकारत आरत आनँद भूलो । श्री रघुबीर निवारिये पीर रहौं दरबार परो लटि लूलो ॥३६॥ घनाक्षरी काल की करालता करम कठिनाई कीधौ, पाप के प्रभाव की सुभाय बाय बावरे । बेदन कुभाँति सो सही न जाति राति दिन, सोई बाँह गही जो गही समीर डाबरे ॥ लायो तरु तुलसी तिहारो सो निहारि बारि, सींचिये मलीन भो तयो है तिहुँ तावरे । भूतनि की आपनी पराये की कृपा निधान, जानियत सबही की रीति राम रावरे ॥३७॥ पाँय पीर पेट पीर बाँह पीर मुंह पीर, जर जर सकल पीर मई है । देव भूत पितर करम खल काल ग्रह, मोहि पर दवरि दमानक सी दई है ॥ हौं तो बिनु मोल के बिकानो बलि बारे हीतें, ओट राम नाम की ललाट लिखि लई है । कुँभज के किंकर बिकल बूढ़े गोखुरनि, हाय राम राय ऐसी हाल कहूँ भई है ॥३८॥ बाहुक सुबाहु नीच लीचर मरीच मिलि, मुँह पीर केतुजा कुरोग जातुधान है । राम नाम जप जाग कियो चहों सानुराग, काल कैसे दूत भूत कहा मेरे मान है ॥ सुमिरे सहाय राम लखन आखर दौऊ, जिनके समूह साके जागत जहान है । तुलसी सँभारि ताडका सँहारि भारि भट, बेधे बरगद से बनाई बानवान है ॥३९॥ बालपने सूधे मन राम सनमुख भयो, राम नाम लेत माँगि खात टूक टाक हौं । परयो लोक रीति में पुनीत प्रीति राम राय, मोह बस बैठो तोरि तरकि तराक हौं ॥ खोटे खोटे आचरन आचरत अपनायो, अंजनी कुमार सोध्यो रामपानि पाक हौं । तुलसी गुसाँई भयो भोंडे दिन भूल गयो, ताको फल पावत निदान परिपाक हौं ॥४०॥ असन बसन हीन बिषम बिषाद लीन, देखि दीन दूबरो करै न हाय हाय को । तुलसी अनाथ सो सनाथ रघुनाथ कियो, दियो फल सील सिंधु आपने सुभाय को ॥ नीच यहि बीच पति पाइ भरु हाईगो, बिहाइ प्रभु भजन बचन मन काय को । ता तें तनु पेषियत घोर बरतोर मिस, फूटि फूटि निकसत लोन राम राय को ॥४१॥ जीओ जग जानकी जीवन को कहाइ जन, मरिबे को बारानसी बारि सुर सरि को । तुलसी के दोहूँ हाथ मोदक हैं ऐसे ठाँऊ, जाके जिये मुये सोच करिहैं न लरि को ॥ मो को झूँटो साँचो लोग राम कौ कहत सब, मेरे मन मान है न हर को न हरि को । भारी पीर दुसह सरीर तें बिहाल होत, सोऊ रघुबीर बिनु सकै दूर करि को ॥४२॥ सीतापति साहेब सहाय हनुमान नित, हित उपदेश को महेस मानो गुरु कै । मानस बचन काय सरन तिहारे पाँय, तुम्हरे भरोसे सुर मैं न जाने सुर कै ॥ ब्याधि भूत जनित उपाधि काहु खल की, समाधि की जै तुलसी को जानि जन फुर कै । कपिनाथ रघुनाथ भोलानाथ भूतनाथ, रोग सिंधु क्यों न डारियत गाय खुर कै ॥४३॥ कहों हनुमान सों सुजान राम राय सों, कृपानिधान संकर सों सावधान सुनिये । हरष विषाद राग रोष गुन दोष मई, बिरची बिरञ्ची सब देखियत दुनिये ॥ माया जीव काल के करम के सुभाय के, करैया राम बेद कहें साँची मन गुनिये । तुम्ह तें कहा न होय हा हा सो बुझैये मोहिं, हौं हूँ रहों मौनही वयो सो जानि लुनिये ॥४४॥ 22 দিনের সম্পুট পথের পদ্ধতি: প্রথম দিনে, সম্পূর্ণ পড়ুন একটি পুনরাবৃত্তি, দ্বিতীয় দিনে দুটি পুনরাবৃত্তি, তৃতীয় দিনে তিনটি পুনরাবৃত্তি, এইভাবে 11 দিনের জন্য প্রতিদিন একটি পুনরাবৃত্তি বৃদ্ধি করুন। তারপর দ্বাদশ দিন থেকে এই ক্রমটি উল্টে দিয়ে 11 দিন আবৃত্তি করুন, অর্থাৎ দ্বাদশ দিনে 11টি, তেরোতম দিনে 10টি, চৌদ্দতম দিনে 6টি, এভাবে প্রতিদিন একটি তেলাওয়াত কমিয়ে অনুদান শেষ করুন। বাইশতম দিনে একটি তেলাওয়াত করা।সাধারণত 22 দিনের আচার দ্বারা কাজটি প্রমাণিত হয়। দ্রষ্টব্য: - আচার পালনকারী ব্যক্তিকে অবশ্যই ব্রহ্মচর্য এবং সদাচরণ পালন করতে হবে অন্তত আচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত। মনোযোগ সহকারে পাঠ করুন, শুদ্ধ করুন, ঘোড়দৌড় করবেন না। ভালবাসার সাথে এটি করুন আচার পদ্ধতি:- প্রথমে ষোড়শোপাচার বা পঞ্চোপচার দিয়ে শ্রী হনুমানজির পূজা করুন। লাল ফুল হিবিস্কাস অফার. লাড্ডু ভোগ লাগায় (খাঁটি ঘি পেলে লাড্ডু হিসেবে নিবেদন কর, নইলে কলা ফল বা পাঁচ ফল ইত্যাদি)। পড়ার সময় খাঁটি ঘি বা তিলের তেলের প্রদীপ জ্বালাতে হবে। গুগলের সমান রোদ দিতে থাকুন। জীবনের প্রথম দিনে লাড্ডু, ফল ও ফুল নিবেদন করতে হবে, প্রতিদিন একই সংখ্যায় নিবেদন করতে হবে, কম বা বেশি নয়। ব্রহ্মচর্য ও সদাচার পালন করতে হবে। ব্রহ্ম পিশাচ পলায়ন পদ্ধতি ভাভা জয়রামদাসজী লিখেছেন যে এগারো দিন ধরে প্রতিদিন শ্রী হনুমান বাহুক স্তোত্রের এগারোটি পাঠ করলে ব্রহ্ম-পিশাচরা পালিয়ে যায়। বিধি-নিরবতা, ফল, ভূমিষায়ন, ব্রহ্মচর্য, নতুন জামাকাপড়, দুটি ধুতি, রেশমের চাদর একটি, গামছা (গামছা, সফি) দুটি, ল্যাংটো, খাদুন, সহজ পশমী, পাঁচপত্র একটি, আচমনি একটি, ভোগের নতুন থালা, লোটা, গ্লাস, বাটি, সমতল উজ্জ্বল ধাতব কলস। অন্যান্য বন্য সম্প্রদায় হনুমানকে উত্সর্গীকৃত। 11 শেষে ব্রাহ্মণের অন্ন। খাবারে অবশ্যই মোদক থাকতে হবে। প্রত্যেক ব্রাহ্মণকে দক্ষিণা ১২৫ টাকা হলেও হবে কিন্তু ১২৫ টাকার কম হবে না। আরো বেশি হতে পারে……….. श्रीमद्-गोस्वामी-तुलसीदास-कृत हनुमान बाहुक (हिन्दी भावार्थ सहित) गुरु वंदना छप्पय: सिंधु-तरन, सिय-सोच-हरन, रबि-बाल-बरन तनु । भुजबिसाल, मूरतिकरालकालहुकोकालजनु ॥ गहन-दहन-निरदहन लंक निःसंक, बंक-भुव । जातुधान-बलवान-मान-मद-दवन पवनसुव ॥ कह तुलसिदास सेवत सुलभ सेवक हित सन्तत निकट । गुन-गनत, नमत, सुमिरत, जपत समन सकल-संकट-विकट ॥ १ ॥ जिनके शरीर का रंग उदयकाल के सूर्य के समान है, जो समुद्र लाँघकर श्रीजानकीजी के शोक को हरने वाले, आजानु-बाहु, डरावनी सूरत वाले और मानो काल के भी काल हैं। लंका-रुपी गम्भीर वन को, जो जलाने योग्य नहीं था, उसे जिन्होंने निःसंक जलाया और जो टेढ़ी भौंहो वाले तथा बलवान् राक्षसों के मान और गर्व का नाश करने वाले हैं, तुलसीदास जी कहते हैं – वे श्रीपवनकुमार सेवा करने पर बड़ी सुगमता से प्राप्त होने वाले, अपने सेवकों की भलाई करने के लिये सदा समीप रहने वाले तथा गुण गाने, प्रणाम करने एवं स्मरण और नाम जपने से सब भयानक संकटों को नाश करने वाले हैं ॥ १ ॥ स्वर्न-सैल-संकास कोटि-रबि-तरुन-तेज-घन । उर बिसाल भुज-दंड चंड नख-बज्र बज्र-तन ॥ पिंग नयन, भृकुटी कराल रसना दसनानन । कपिस केस, करकस लँगूर, खल-दल बल भानन ॥ कह तुलसिदास बस जासु उर मारुतसुत मूरति बिकट । संताप पाप तेहि पुरुष पहिं सपनेहुँ नहिं आवत निकट ॥ २ ॥ वे सुवर्ण-पर्वत (सुमेरु) – के समान शरीरवाले, करोड़ों मध्याह्न के सूर्य के सदृश अनन्त तेजोराशि, विशाल-हृदय, अत्यन्त बलवान् भुजाओं वाले तथा वज्र के तुल्य नख और शरीरवाले हैं, भौंह, जीभ, दाँत और मुख विकराल हैं, बाल भूरे रंग के तथा पूँछ कठोर और दुष्टों के दल के बल का नाश करने वाली है। तुलसीदासजी कहते हैं – श्रीपवनकुमार की डरावनी मूर्ति जिसके हृदय में निवास करती है, उस पुरुष के समीप दुःख और पाप स्वप्न में भी नहीं आते ॥ २ ॥ झूलना : पञ्चमुख-छमुख-भृगु मुख्य भट असुर सुर, सर्व-सरि-समर समरत्थ सूरो । बाँकुरो बीर बिरुदैत बिरुदावली, बेद बंदी बदत पैजपूरो ॥ जासु गुनगाथ रघुनाथ कह, जासुबल, बिपुल-जल-भरित जग-जलधि झूरो । दुवन-दल-दमनको कौन तुलसीस है, पवन को पूत रजपूत रुरो ॥ ३ ॥ शिव, स्वामि-कार्तिक, परशुराम, दैत्य और देवता-वृन्द सबके युद्ध रुपी नदी से पार जाने में योग्य योद्धा हैं । वेदरुपी वन्दीजन कहते हैं – आप पूरी प्रतिज्ञा वाले चतुर योद्धा, बड़े कीर्तिमान् और यशस्वी हैं । जिनके गुणों की कथा को रघुनाथ जी ने श्रीमुख से कहा तथा जिनके अतिशय पराक्रम से अपार जल से भरा हुआ संसार-समुद्र सूख गया । तुलसी के स्वामी सुन्दर राजपूत (पवनकुमार) – के बिना राक्षसों के दल का नाश करने वाला दूसरा कौन है ? (कोई नहीं) ॥ ३ ॥ घनाक्षरी: भानुसों पढ़न हनुमान गये भानु मन-अनुमानि सिसु-केलि कियो फेरफार सो । पाछिले पगनि गम गगन मगन-मन, क्रम को न भ्रम, कपि बालक बिहार सो ॥ कौतुक बिलोकि लोकपाल हरि हर बिधि, लोचननि चकाचौंधी चित्तनि खभार सो। बल कैंधौं बीर-रस धीरज कै, साहस कै, तुलसी सरीर धरे सबनि को सार सो ॥ ४ ॥ सूर्य भगवान् के समीप में हनुमान् जी विद्या पढ़ने के लिये गये, सूर्यदेव ने मन में बालकों का खेल समझकर बहाना किया ( कि मैं स्थिर नहीं रह सकता और बिना आमने-सामने के पढ़ना-पढ़ाना असम्भव है) । हनुमान् जी ने भास्कर की ओर मुख करके पीठ की तरफ पैरों से प्रसन्न-मन आकाश-मार्ग में बालकों के खेल के समान गमन किया और उससे पाठ्यक्रम में किसी प्रकार का भ्रम नहीं हुआ । इस अचरज के खेल को देखकर इन्द्रादि लोकपाल, विष्णु, रुद्र और ब्रह्मा की आँखें चौंधिया गयीं तथा चित्त में खलबली-सी उत्पन्न हो गयी । तुलसीदासजी कहते हैं – सब सोचने लगे कि यह न जाने बल, न जाने वीररस, न जाने धैर्य, न जाने हिम्मत अथवा न जाने इन सबका सार ही शरीर धारण किये हैं ॥ ४ ॥ भारत में पारथ के रथ केथू कपिराज, गाज्यो सुनि कुरुराज दल हल बल भो । कह्यो द्रोन भीषम समीर सुत महाबीर, बीर-रस-बारि-निधि जाको बल जल भो ॥ बानर सुभाय बाल केलि भूमि भानु लागि, फलँग फलाँग हूँतें घाटि नभतल भो । नाई-नाई माथ जोरि-जोरि हाथ जोधा जोहैं, हनुमान देखे जगजीवन को फल भो ॥ ५ ॥ महाभारत में अर्जुन के रथ की पताका पर कपिराज हनुमान् जी ने गर्जन किया, जिसको सुनकर दुर्योधन की सेना में घबराहट उत्पन्न हो गयी । द्रोणाचार्य और भीष्म-पितामह ने कहा कि ये महाबली पवनकुमार है । जिनका बल वीर-रस-रुपी समुद्र का जल हुआ है । इनके स्वाभाविक ही बालकों के खेल के समान धरती से सूर्य तक के कुदान ने आकाश-मण्डल को एक पग से भी कम कर दिया था । सब योद्धागण मस्तक नवा-नवाकर और हाथ जोड़-जोड़कर देखते हैं । इस प्रकार हनुमान् जी का दर्शन पाने से उन्हें संसार में जीने का फल मिल गया ॥ ५ ॥ गो-पद पयोधि करि होलिका ज्यों लाई लंक, निपट निसंक परपुर गलबल भो । द्रोन-सो पहार लियो ख्याल ही उखारि कर, कंदुक-ज्यों कपि खेल बेल कैसो फल भो ॥ संकट समाज असमंजस भो रामराज, काज जुग पूगनि को करतल पल भो । साहसी समत्थ तुलसी को नाह जाकी बाँह, लोकपाल पालन को फिर थिर थल भो ॥ ६ ॥ समुद्र को गोखुर के समान करके निडर होकर लंका-जैसी (सुरक्षित नगरी को) होलिका के सदृश जला डाला, जिससे पराये (शत्रु के) पुर में गड़बड़ी मच गयी । द्रोण-जैसा भारी पर्वत खेल में ही उखाड़ गेंद की तरह उठा लिया, वह कपिराज के लिये बेल-फल के समान क्रीडा की सामग्री बन गया । राम-राज्य में अपार संकट (लक्ष्मण-शक्ति) -से असमंजस उत्पन्न हुआ (उस समय जिसके पराक्रम से) युग समूह में होने वाला काम पलभर में मुट्ठी में आ गया । तुलसी के स्वामी बड़े साहसी और सामर्थ्यवान् हैं, जिनकी भुजाएँ लोकपालों को पालन करने तथा उन्हें फिर से स्थिरता-पूर्वक बसाने का स्थान हुईं ॥ ६ ॥ कमठ की पीठि जाके गोडनि की गाड़ैं मानो, नाप के भाजन भरि जल निधि जल भो । जातुधान-दावन परावन को दुर्ग भयो, महामीन बास तिमि तोमनि को थल भो ॥ कुम्भकरन-रावन पयोद-नाद-ईंधन को, तुलसी प्रताप जाको प्रबल अनल भो । भीषम कहत मेरे अनुमान हनुमान, सारिखो त्रिकाल न त्रिलोक महाबल भो ॥ ७ ॥ कच्छप की पीठ में जिनके पाँव के गड़हे समुद्र का जल भरने के लिये मानो नाप के पात्र (बर्तन) हुए । राक्षसों का नाश करते समय वह (समुद्र) ही उनके भागकर छिपने का गढ़ हुआ तथा वही बहुत-से बड़े-बड़े मत्स्यों के रहने का स्थान हुआ । तुलसीदासजी कहते हैं – रावण, कुम्भकर्ण और मेघनाद रुपी ईंधन को जलाने के निमित्त जिनका प्रताप प्रचण्ड अग्नि हुआ । भीष्मपितामह कहते हैं – मेरी समझ में हनुमान् जी के समान अत्यन्त बलवान् तीनों काल और तीनों लोक में कोई नहीं हुआ ॥ ७ ॥ दूत रामराय को, सपूत पूत पौनको, तू अंजनी को नन्दन प्रताप भूरि भानु सो । सीय-सोच-समन, दुरित दोष दमन, सरन आये अवन, लखन प्रिय प्रान सो ॥ दसमुख दुसह दरिद्र दरिबे को भयो, प्रकट तिलोक ओक तुलसी निधान सो । ज्ञान गुनवान बलवान सेवा सावधान, साहेब सुजान उर आनु हनुमान सो ॥ ८ ॥ आप राजा रामचन्द्रजी के दूत, पवनदेव के सुयोग्य पुत्र, अंजनीदेवी को आनन्द देने वाले, असंख्य सूर्यों के समान तेजस्वी, सीताजी के शोकनाशक, पाप तथा अवगुण के नष्ट करने वाले, शरणागतों की रक्षा करने वाले और लक्ष्मणजी को प्राणों के समान प्रिय हैं । तुलसीदासजी के दुस्सह दरिद्र-रुपी रावण का नाश करने के लिये आप तीनों लोकों में आश्रय रुप प्रकट हुए हैं । अरे लोगो ! तुम ज्ञानी, गुणवान्, बलवान् और सेवा (दूसरों को आराम पहुँचाने) – में सजग हनुमान् जी के समान चतुर स्वामी को अपने हृदय में बसाओ ॥ ८ ॥ दवन-दुवन-दल भुवन-बिदित बल, बेद जस गावत बिबुध बंदीछोर को । पाप-ताप-तिमिर तुहिन-विघटन-पटु, सेवक-सरोरुह सुखद भानु भोर को ॥ लोक-परलोक तें बिसोक सपने न सोक, तुलसी के हिये है भरोसो एक ओर को । राम को दुलारो दास बामदेव को निवास, नाम कलि-कामतरु केसरी-किसोर को ॥ ९ ॥ दानवों की सेना को नष्ट करने में जिनका पराक्रम विश्व-विख्यात है, वेद यश-गान करते हैं कि देवताओं को कारागार से छुड़ाने वाला पवनकुमार के सिवा दूसरा कौन है ? आप पापान्धकार और कष्ट-रुपी पाले को घटाने में प्रवीण तथा सेवक रुपी कमल को प्रसन्न करने के लिये प्रातः-काल के सूर्य के समान हैं । तुलसी के हृदय में एकमात्र हनुमान् जी का भरोसा है, स्वप्न में भी लोक और परलोक की चिन्ता नहीं, शोकरहित हैं, रामचन्द्रजी के दुलारे शिव-स्वरुप (ग्यारह रुद्र में एक) केसरी-नन्दन का नाम कलिकाल में कल्प-वृक्ष के समान है ॥ ९ ॥ महाबल-सीम महाभीम महाबान इत, महाबीर बिदित बरायो रघुबीर को । कुलिस-कठोर तनु जोरपरै रोर रन, करुना-कलित मन धारमिक धीर को ॥ दुर्जन को कालसो कराल पाल सज्जन को, सुमिरे हरनहार तुलसी की पीर को । सीय-सुख-दायक दुलारो रघुनायक को, सेवक सहायक है साहसी समीर को ॥ १० ॥ आप अत्यन्त पराक्रम की हद, अतिशय कराल, बड़े बहादुर और रघुनाथजी द्वारा चुने हुए महाबलवान् विख्यात योद्धा हैं । वज्र के समान कठोर शरीर वाले जिनके जोर पड़ने अर्थात् बल करने से रणस्थल में कोलाहल मच जाता है, सुन्दर करुणा एवं धैर्य के स्थान और मन से धर्माचरण करने वाले हैं । दुष्टों के लिये काल के समान भयावने, सज्जनों को पालने वाले और स्मरण करने से तुलसी के दुःख को हरने वाले हैं । सीताजी को सुख देने वाले, रघुनाथजी के दुलारे और सेवकों की सहायता करने में पवनकुमार बड़े ही साहसी हैं ॥ १० ॥ रचिबे को बिधि जैसे, पालिबे को हरि, हर मीच मारिबे को, ज्याईबे को सुधापान भो । धरिबे को धरनि, तरनि तम दलिबे को, सोखिबे कृसानु, पोषिबे को हिम-भानु भो ॥ खल-दुःख दोषिबे को, जन-परितोषिबे को, माँगिबो मलीनता को मोदक सुदान भो । आरत की आरति निवारिबे को तिहुँ पुर, तुलसी को साहेब हठीलो हनुमान भो ॥ ११ ॥ आप सृष्टि-रचना के लिये ब्रह्मा, पालन करने को विष्णु, मारने को रुद्र और जिलाने के लिये अमृत-पान के समान हुए; धारण करने में धरती, अन्धकार को नसाने में सूर्य, सुखाने में अग्नि, पोषण करने में चन्द्रमा और सूर्य हुए; खलों को दुःख देने और दूषित बनाने वाले, सेवकों को संतुष्ट करने वाले एवं माँगना-रुपी मैलेपन का विनाश करने में मोदक-दाता हुए । तीनों लोकों में दुःखियों के दुःख छुड़ाने के लिये तुलसी के स्वामी श्रीहनुमान् जी दृढ़-प्रतिज्ञ हुए हैं ॥ ११ ॥ सेवक स्योकाई जानि जानकीस मानै कानि, सानुकूल सूलपानि नवै नाथ नाँक को । देवी देव दानव दयावने ह्वै जोरैं हाथ, बापुरे बराक कहा और राजा राँक को ॥ जागत सोवत बैठे बागत बिनोद मोद, ताके जो अनर्थ सो समर्थ एक आँक को । सब दिन रुरो परै पूरो जहाँ-तहाँ ताहि, जाके है भरोसो हिये हनुमान हाँक को ॥ १२ ॥ सेवक हनुमान् जी की सेवा समझकर जानकीनाथ ने संकोच माना अर्थात् अहसान से दब गये, शिवजी पक्ष में रहते और स्वर्ग के स्वामी इन्द्र नवते हैं । देवी-देवता, दानव सब दया के पात्र बनकर हाथ जोड़ते हैं, फिर दूसरे बेचारे दरिद्र-दुःखिया राजा कौन चीज हैं । जागते, सोते, बैठते, डोलते, क्रीड़ा करते और आनन्द में मग्न (पवनकुमार के) सेवक का अनिष्ट चाहेगा ऐसा कौन सिद्धान्त का समर्थ है ? उसका जहाँ-तहाँ सब दिन श्रेष्ठ रीति से पूरा पड़ेगा, जिसके हृदय में अंजनीकुमार की हाँक का भरोसा है ॥ १२ ॥ सानुगसगौरिसानुकूलसूलपानिताहि, लोकपालसकललखनरामजानकी। लोकपरलोकको बिसोक सो तिलोक ताहि, तुलसी तमाइ कहा काहू बीर आनकी ॥ केसरीकिसोरबन्दीछोरके नेवाजे सब, कीरति बिमल कपि करुनानिधान की । बालक-ज्यों पालिहैं कृपालु मुनि सिद्ध ताको, जाके हिये हुलसति हाँक हनुमान की ॥ १३ ॥ जिसके हृदय में हनुमान् जी की हाँक उल्लसित होती है, उसपर अपने सेवकों और पार्वतीजी के सहित शंकर भगवान्, समस्त लोकपाल, श्रीरामचन्द्र, जानकी और लक्ष्मणजी भी प्रसन्न रहते हैं । तुलसीदासजी कहते हैं फिर लोक और परलोक में शोकरहित हुए उस प्राणी को तीनों लोकों में किसी योद्धा के आश्रित होने की क्या लालसा होगी ? दया-निकेत केसरी-नन्दन निर्मल कीर्तिवाले हनुमान् जी के प्रसन्न होने से सम्पूर्ण सिद्ध-मुनि उस मनुष्य पर दयालु होकर बालक के समान पालन करते हैं, उन करुणानिधान कपीश्वर की कीर्ति ऐसी ही निर्मल है ॥ १३ ॥ करुनानिधान, बलबुद्धि के निधान मोद-महिमा निधान, गुन-ज्ञान के निधान हौ । बामदेव-रुप भूप राम के सनेही, नाम लेत-देत अर्थ धर्म काम निरबान हौ ॥ आपने प्रभाव सीताराम के सुभाव सील, लोक-बेद-बिधि के बिदूष हनुमान हौ । मन की बचन की करम की तिहूँ प्रकार, तुलसी तिहारो तुम साहेब सुजान हौ ॥ १४ ॥ तुम दया के स्थान, बुद्धि-बल के धाम, आनन्द महिमा के मन्दिर और गुण-ज्ञान के निकेतन हो; राजा रामचन्द्र के स्नेही, शंकरजी के रुप और नाम लेने से अर्थ, धर्म, काम, मोक्ष के देने वाले हो । हे हनुमान् जी ! आप अपनी शक्ति से श्रीरघुनाथजी के शील-स्वभाव, लोक-रीति और वेद-विधि के पण्डित हो !मन, वचन, कर्म तीनों प्रकार से तुलसी आपका दास है, आप चतुर स्वामी हैं अर्थात् भीतर-बाहर की सब जानते हैं ॥ १४ ॥ मन को अगम, तन सुगम किये कपीस, काज महाराज के समाज साज साजे हैं । देव-बंदी छोर रनरोर केसरी किसोर, जुग जुग जग तेरे बिरद बिराजे हैं । बीर बरजोर, घटि जोर तुलसी की ओर, सुनि सकुचाने साधु खल गन गाजे हैं । बिगरी सँवार अंजनी कुमार कीजे मोहिं, जैसे होत आये हनुमान के निवाजे हैं ॥ १५ ॥ हे कपिराज ! महाराज रामचन्द्रजी के कार्य के लिये सारा साज-समाज सजकर जो काम मन को दुर्गम था, उसको आपने शरीर से करके सुलभ कर दिया । हे केशरीकिशोर ! आप देवताओं को बन्दीखाने से मुक्त करने वाले, संग्राम-भूमि में कोलाहल मचाने वाले हैं, और आपकी नामवरी युग-युग से संसार में विराजती है । हे जबरदस्त योद्धा ! आपका बल तुलसी के लिये क्यों घट गया, जिसको सुनकर साधु सकुचा गये हैं और दुष्टगण प्रसन्न हो रहे हैं, हे अंजनीकुमार ! मेरी बिगड़ी बात उसी तरह सुधारिये जिस प्रकार आपके प्रसन्न होने से होती (सुधरती) आयी है ॥ १५ ॥ सवैया: जान सिरोमनि हौ हनुमान सदा जन के मन बास तिहारो । ढ़ारो बिगारो मैं काको कहा केहि कारन खीझत हौं तो तिहारो ॥ साहेब सेवक नाते तो हातो कियो सो तहाँ तुलसी को न चारो । दोष सुनाये तें आगेहुँ को होशियार ह्वैं हों मन तौ हिय हारो ॥ १६ ॥ हे हनुमान् जी ! आप ज्ञान-शिरोमणी हैं और सेवकों के मन में आपका सदा निवास है । मैं किसी का क्या गिराता वा बिगाड़ता हूँ । हे स्वामी ! आपने मुझे सेवक के नाते से च्युत कर दिया, इसमें तुलसी का कोई वश नहीं है । यद्यपि मन हृदय में हार गया है तो भी मेरा अपराध सुना दीजिये, जिसमें आगे के लिये होशियार हो जाऊँ ॥ १६ ॥ तेरे थपे उथपै न महेस, थपै थिरको कपि जे घर घाले । तेरे निवाजे गरीब निवाज बिराजत बैरिन के उर साले ॥ संकट सोच सबै तुलसी लिये नाम फटै मकरी के से जाले । बूढ़ भये, बलि, मेरिहि बार, कि हारि परे बहुतै नत पाले ॥ १७ ॥ हे वानरराज ! आपके बसाये हुए को शंकर भगवान् भी नहीं उजाड़ सकते और जिस घर को आपने नष्ट कर दिया उसको कौन बसा सकता है ? हे गरीबनिवाज ! आप जिस पर प्रसन्न हुए, वे शत्रुओं के हृदय में पीड़ा रुप होकर विराजते हैं । तुलसीदास जी कहते हैं, आपका नाम लेने से सम्पूर्ण संकट और सोच मकड़ी के जाले के समान फट जाते हैं । बलिहारी ! क्या आप मेरी ही बार बूढ़े हो गये अथवा बहुत-से गरीबों का पालन करते – करते अब थक गये हैं ? (इसी से मेरा संकट दूर करने में ढील कर रहे हैं) ॥ १७ ॥ सिंधु तरे, बड़े बीर दले खल, जारे हैं लंक से बंक मवा से । तैं रनि-केहरि केहरि के बिदले अरि-कुंजर छैल छवा से ॥ तोसों समत्थ सुसाहेब सेई सहै तुलसी दुख दोष दवा से । बानर बाज ! बढ़े खल-खेचर, लीजत क्यों न लपेटि लवा-से ॥ १८ ॥ आपने समुद्र लाँघकर बड़े-बड़े दुष्ट राक्षसों का विनाश करके लंका -जैसे विकट गढ़ को जलाया । हे संग्राम-रुपी वन के सिंह ! राक्षस शत्रु बने-ठने हाथी के बच्चे के समान थे, आपने उनको सिंह की भाँति विनष्ट कर डाला । आपने बराबर समर्थ और अच्छे स्वामी की सेवा करते हुए तुलसी दोष और दुःख की आग को सहन करे (यह आश्चर्य की बात है) । हे वानर-रुपी बाज ! बहुत-से दुष्ट-जन-रुपी पक्षी बढ़ गये हैं, उनको आप बटेर के समान क्यों नहीं लपेट लेते ? ॥ १८ ॥ अच्छ-विमर्दन कानन-भानि दसानन आनन भा न निहारो । बारिदनाद अकंपन कुंभकरन्न-से कुञ्जर केहरि-बारो ॥ राम-प्रताप-हुतासन, कच्छ, बिपच्छ, समीर समीर-दुलारो । पाप-तें साप-तें ताप तिहूँ-तें सदा तुलसी कहँ सो रखवारो ॥ १९ ॥ हे अक्षयकुमार को मारने वाले हनुमान् जी ! आपने अशोक-वाटिका को विध्वंस किया और रावण-जैसे प्रतापी योद्धा के मुख के तेज की ओर देखा तक नहीं अर्थात् उसकी कुछ भी परवाह नहीं की । आप मेघनाद, अकम्पन और कुम्भकर्ण -सरीखे हाथियों के मद को चूर्ण करने में किशोरावस्था के सिंह हैं । विपक्षरुप तिनकों के ढेर के लिये भगवान् राम का प्रताप अग्नि-तुल्य है और पवनकुमार उसके लिये पवन-रुप हैं । वे पवननन्दन ही तुलसीदास को सर्वदा पाप, शाप और संताप – तीनों से बचाने वाले हैं ॥ १९ ॥ घनाक्षरी: जानत जहान हनुमान को निवाज्यौ जन, मन अनुमानि बलि, बोल न बिसारिये । सेवा-जोग तुलसी कबहुँ कहा चूक परी, साहेब सुभाव कपि साहिबी सँभारिये ॥ अपराधी जानि कीजै सासति सहस भाँति, मोदक मरै जो ताहि माहुर न मारिये । साहसी समीर के दुलारे रघुबीर जू के, बाँह पीर महाबीर बेगि ही निवारिये ॥ २० ॥ हे हनुमान् जी ! बलि जाता हूँ, अपनी प्रतिज्ञा को न भुलाइये, जिसको संसार जानता है, मन में विचारिये, आपका कृपा-पात्र जन बाधारहित और सदा प्रसन्न रहता है । हे स्वामी कपिराज ! तुलसी कभी सेवा के योग्य था ? क्या चूक हुई है, अपनी साहिबी को सँभालिये, मुझे अपराधी समझते हों तो सहस्त्रों भाँति की दुर्दशा कीजिये, किन्तु जो लड्डू देने से मरता हो उसको विष से न मारिये । हे महाबली, साहसी, पवन के दुलारे, रघुनाथजी के प्यारे ! भुजाओं की पीड़ा को शीघ्र दूर कीजिये ॥ २० ॥ बालक बिलोकि, बलि बारेतें आपनो कियो, दीनबन्धु दया कीन्हीं निरुपाधि न्यारिये । रावरो भरोसो तुलसी के, रावरोई बल, आस रावरीयै दास रावरो बिचारिये ॥ बड़ो बिकराल कलि, काको न बिहाल कियो, माथे पगु बलि को, निहारि सो निवारिये । केसरी किसोर, रनरोर, बरजोर बीर, बाँहुपीर राहुमातु ज्यौं पछारि मारिये ॥ २१ ॥ हे दीनबन्धु ! बलि जाता हूँ, बालक को देखकर आपने लड़कपन से ही अपनाया और मायारहित अनोखी दया की । सोचिये तो सही, तुलसी आपका दास है, इसको आपका भरोसा, आपका ही बल और आपकी ही आशा है । अत्यन्त भयानक कलिकाल ने किसको बेचैन नहीं किया ? इस बलवान् का पैर मेरे मस्तक पर भी देखकर उसको हटाइये । हे केशरीकिशोर, बरजोर वीर ! आप रण में कोलाहल उत्पन्न करने वाले हैं, राहु की माता सिंहिका के समान बाहु की पीड़ा को पछाड़कर मार डालिये ॥ २१ ॥ उथपे थपनथिर थपे उथपनहार, केसरी कुमार बल आपनो सँभारिये । राम के गुलामनि को कामतरु रामदूत, मोसे दीन दूबरे को तकिया तिहारिये ॥ साहेब समर्थ तोसों तुलसी के माथे पर, सोऊ अपराध बिनु बीर, बाँधि मारिये । पोखरी बिसाल बाँहु, बलि, बारिचर पीर, मकरी ज्यौं पकरि कै बदन बिदारिये ॥ २२ ॥ हे केशरीकुमार ! आप उजड़े हुए (सुग्रीव-विभीषण) – को बसाने वाले और बसे हुए (रावणादि) – को उजाड़ने वाले हैं, अपने उस बल का स्मरण कीजिये । हे रामदूत ! रामचन्द्रजी के सेवकों के लिये आप कल्पवृक्ष हैं और मुझ-सरीखे दीन-दुर्बलों को आपका ही सहारा है । हे वीर ! तुलसी के माथे पर आपके समान समर्थ स्वामी विद्यमान रहते हुए भी वह बाँधकर मारा जाता है । बलि जाता हूँ, मेरी भुजा विशाल पोखरी के समान है और यह पीड़ा उसमें जलचर के सदृश है, सो आप मकरी के समान इस जलचरी को पकड़कर इसका मुख फाड़ डालिये ॥ २२ ॥
বৈশ্যদেব বলি শাস্ত্রীয়। সকলেই দিতে পারেন।বৈশ্যদেব বলি হল ভোজনের পূর্বে ভগবানের উদ্দেশ্যে সেই ভোজনকে নিবেদন করা। নিত্য অনুষ্ঠেয় পঞ্চযজ্ঞের মধ্যে এটি পড়ে। বৈশ্যদেব বলি হল - ভোজনের পূর্বে দেবতা, নাগ, যক্ষ, অতিথি প্রভৃতির উদ্দেশ্যে নিত্য নিবেদনীয় অন্ন। একটি পূজার গ্রন্থে পড়েছিলাম, স্ত্রী-শূদ্রের পক্ষে বৈশ্যদেববলি দানকালে একটি ওঙ্কাররহিত মন্ত্র আছে। তবে মন্ত্ররহিতভাবেও "আব্রহ্মস্তম্বপর্যন্তং জগত: তৃপত্যু" এভাবেও প্রথম দিবাভাগীয় মুখ্য অন্নগ্রহণের পূর্বে যক্ষাদির উদ্দেশ্যে অন্ন প্রভৃতি নিবেদন করা যায়। অন্ন মানে খাদ্য। ওদন মানে ভাত। তাই অন্ন মানে যে ভাতই আপনাকে অর্পণ করতে হবে এমন নয়। আপনি যা খাবেন, রুটি, ডালিয়া প্রভৃতিও ভক্তিভাবে অর্পণ করা যায়।
সনাতন ধর্মে ১৬টি সংস্কার হচ্ছে : ১. গর্ভাধান : বিবাহের পর স্বামী- স্ত্রী সন্তান জন্মদানের জন্য সকলের আশীর্বাদ পান। এই সংস্কার দ্বারা তারা স্বাস্থ্যবান, মহৎ এবং উদারহৃদয়ের সন্তান প্রার্থনা করেন। ২. পুংসবন : গর্ভদানের ৩ মাস পর এই সংস্কার পালন করতে হয়।গর্ভাবস্থায় সন্তানের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হয়। ৩. সীমন্তোন্নয়ন : এটাগর্ভধারণের ষষ্ঠ বা অষ্টম মাসের শেষে করা হয় সন্তানের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য। ৪. জাতকর্ম : জন্মগ্রহণের দিনসন্তানকে জাতকর্মের মাধ্যমে পৃথিবীতে স্বাগতম জানান হয়। ৫. নামকরণ : জন্মের এগার মাসেএই সংস্কার পালন করা হয় এবং সন্তানকে একটি নাম দেওয়া হয়।৬. নিষ্ক্রমণ : জন্মের চতুর্থ মাসে এই সংস্কার পালন করা হয়। শিশু সন্তানকে বাইরের পরিবেশে উন্মুক্ত করা হয়। যাতে সূর্যের আলো তাকে স্বাস্থ্যবান করে তোলে। দীর্ঘায়ুর জন্য প্রার্থনা করা হয়। এই সময় থেকে সন্তান প্রকৃতির কোলে প্রাকৃতিকভাবে বড় হতে থাকে। ৭. অন্নপ্রাসন : সন্তানের যখন দাঁত উঠতে থাকে সাধারণত ছয় থেকে আট মাস বয়সে এই সংস্কার পালন করা হয়। তখন থেকেইতাকে শক্ত খাবার দেওয়া হয়। ৮. চূড়াকরণ : প্রথম থেকে তৃতীয় বছর বয়সের মধ্যে এই সংস্কার পালন করা হয়। প্রথম বারের মতো মাথার সব চুল ফেলে দেওয়া হয়।সুস্বাস্থ্য এবং সুস্থ মানসিক বিকাশের জন্য প্রার্থনা করা হয়।৯. কর্ণভেদ : তিন বছর বয়সে কান ফোরানো হয় এবং শারীরিক সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করা হয়।১০. উপনয়ন : ৫ থেকে ৮ বছর বয়সে উপনয়নের মাধ্যমে একটি শিশু গুরু/ শিক্ষকের সান্নিধ্যে আসে। গুরুর নিকট জ্ঞান, কর্ম, ভক্তিসহ বিভিন্ন নিয়মানুবর্তিতা অর্থাৎ শাস্ত্রে জীবন যাপনের যে পদ্ধতি উল্লেখ আছে তার অনুশীলন করে। ব্রহ্মচর্য জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং সব রকম খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার অভ্যাস ছাত্র জীবনেই করতে হয়।নিয়মিত পড়ালেখা এই সংস্কারের পরেই শুরু হয়।১১. বেদারম্ভ : উপনয়ন এর পরেই এই সংস্কার পালন করা হয়। এই সময় বেদ এবং বিভিন্ন শাস্ত্র অনুসারে আধ্যাত্মিক জ্ঞানঅর্জন শুরু হয়। জ্ঞানের সকল শাখায় তাকে বিচরণ করতে হয় এবং এর মাধ্যমে সে জাগতিকবিষয়ের সঙ্গে আধাত্মিক বিষয় সম্পর্কে জানতে পারে। ১২. সমাবর্তন : ২১ থেকে ২৫ বছর বয়সের মধ্যে যখন শিক্ষা গ্রহণশেষ হয়, তখন এটি পালন করা হয়। গুরু ছাত্রকে যোগ্যতা অনুযায়ী উপাধি প্রদান করেন। এরপর একজন ছাত্র আত্মনির্ভর এবং স্বাধীন জীবন যাপন করে।১৩. বিবাহ : ব্রহ্মচর্য শেষে একজন পরবর্তী গৃহস্থ জীবনে পদার্পণ করে। একজন পুরুষ আর একজন মহিলা যারা এতদিন স্বাধীন জীবন যাপন করেছে এখন একসঙ্গে জীবনভর চলার সপথ গ্রহণ করে। বিয়ের পর সন্তান হয় এবং পরিবারের ধারা চলতে থাকে। ১৪. বানপ্রস্থ : ৫০ বছর বয়সে গৃহস্থ আশ্রম শেষে বানপ্রস্থ আশ্রম শুরু হয়। নিজের সুবিধার জন্য তিনি যে সব কাজ করতেন তার সবকিছু পরিত্যাগ করেন। পরিবারের সব দায়িত্ব সন্তানের হাতে তুলে দিয়ে পূজর্চনা, ধ্যান এবং মানবসেবায় নিয়োজিত হন। ১৫. সন্ন্যাস : যদিও ৭৫ বছর বয়সে সন্ন্যাস গ্রহণ করার কথা বলা আছে তারপরেও আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং আধ্যাত্মিকতা দ্বারা যিনি জাগতিক সবকিছু থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারেন তিনিই সন্ন্যাস গ্রহণ করবেন। এ সময় তিনি ধনসম্পদ, সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন এবং সকল ইচ্ছা আকাক্সক্ষা পরিত্যাগ করবেন । গৈরিক রঙের ঢিলেঢালা পোশাক এই কঠোর জীবনের প্রতীক। তার কোনো নির্দিষ্ট পরিবার সমাজ অথবা গৃহ নেই। ১৬. অন্ত্যেষ্টী : মৃত্যুর পর শবদাহ করা হয়। কিন্তু আত্মা অমর। যখন দেহ অগ্নিতে দাহ করা হয় তখন শরীর যে পাঁচটি উপাদান দিয়ে তৈরি, যেমন মাটি, জল, আগুন, বাতাস এবং আকাশ প্রকৃতিতেমিশে যায়। মৃতের আত্মার শান্তিতে প্রার্থনা করা হয়। শবদাহ হচ্ছে মৃতদেহ সৎকারের সবচেয়ে ভালো উপায়।
বর্তমানে হিন্দু ধর্মে এমন বহু প্রথার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়, যা শাস্ত্র সম্মত নয়। কলিযুগে ইচ্ছামতো তীর্থ, যজ্ঞ, পুজো, উৎসব ইত্যাদির প্রচলন দেখা যাচ্ছে। ষোল সংস্কারের বৈদিক রীতি ত্যাগ করে অন্যান্য রীতিনীতিতে কর্ম করতে শুরু করেছেন অনেক মানুষই। এমনকি ঈশ্বর, দেবী-দেবতার পরিবর্তে কোন সাধারণ বা রাজনৈতিক ব্যাক্তি, অভিনয় বা অভিনেতার অভিনেত্রী ব্যক্তি, পূর্বপুরুষ, ভূত-প্রেত -পিশাচ,উপদেবতা অথবা তথাকথিত কথাবাচক বা বেশভূষণধারী সাধু ইত্যাদির পুজোয় লিপ্ত হয়েছেন বহু ব্যক্তি। এমন পথভ্রষ্ট ব্যক্তি সম্পর্কেও প্রাচীন সনাতন শাস্ত্রে গীতাতেও উল্লেখ আছে যে:--- যঃ শাস্ত্রবিধিমুত্সৃজ্য বর্তনে কামকারতঃ। ন স সিদ্ধিমবাপ্নোতি ন সুখং ন পরাং গতিম্।। অর্থাৎ, যে পুরুষ শাস্ত্রের বিধিত্যাগ করে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী আচরণ করে, তঁরা না তো সিদ্ধি লাভ করে, না পরমগতি এবং না সুখ লাভ করতে পারে। ভূতান্প্রেত গণান্শ্চাদি যজন্তি তামসা জনা। তমেব শরণং গচ্ছ সর্ব ভাবেন ভারতঃ।। অর্থাৎ, তামসিক ব্যক্তিরা ভূত, প্রেতের উপাসনা করেন। হে ভারত, তুমি নানান ভাবে ঈশ্বরের শরণে যাও। …যাঁরা সাংসারিক ইচ্ছার অধীন তাঁরা ঈশ্বর অতিরিক্ত নিজের জন্য মিথ্যে উপাস্য নির্মিত করেছেন । যান্তি দেবব্রতা দেবান্পিতৃন্যান্তি পিতৃব্রতাঃ। ভূতানি যান্তি ভূতেজ্যা যান্তি মধ্যাজিনোপি মাম্।। অর্থাৎ, যাঁরা দেবতাদের পুজো করেন তাঁরা দেবতা লাভ করবেন, পূর্বপুরুষকে পুজো করলে, সেই ব্যক্তি পূর্বপুরুষের কাছে পৌঁছবে, ভূতকে পুজো করলে ভূতের কাছে যাবেন, পরমেশ্বর এর পুজো করলে, ভক্তগণ পরমেশ্বর এর কাছেই আসেন। তাই পরমেশ্বর এর ভক্তদের পুনর্জন্ম হয় না। তস্মাচ্ছাস্ত্রং প্রমাণং তে কার্যাকার্য়ব্যবস্থিতৌ। জ্ঞাত্বা শাস্ত্রবিধানোক্তং কর্ম কর্তুমিহার্হসি।। অর্থাৎ, এতে তোমার জন্য কর্তব্য ও অকর্তব্যের ব্যবস্থায় শাস্ত্রই প্রমাণ। এটা জেনে তুমি শাস্ত্র বিধি দ্বারা নিযুক্ত কর্ম করারই যোগ্য। গীতায় কৃষ্ণকে অর্জুনকে সৎগুণ, রজ গুণ ও তমো গুণ সম্পর্কে জানিয়ে ছিলেন। সৎগুণ সম্পন্ন ব্যক্তির চিন্তাভাবনা সাত্বিক। ঈশ্বরের স্মরণে ও চরণে থাকা সাত্বিক কর্ম। এঁরা সাত্বিক ভোজন গ্রহণ করে থাকেন। তাই যে ব্যক্তিরা সৎগুণ পালন করেন, তাঁদের আয়ু দীর্ঘ হয়। কৃষ্ণ এ-ও জানিয়ে ছিলেন যে কলিযুগের অধিকাংশ লোকেরা তমোগুণের অধিকারী হবেন। এঁরা না-তো ঈশ্বরে বিশ্বা করেন, না ধর্ম অনুযায়ী কোনও কাজ করে থাকেন। অজ্ঞানতাবশত এই যুগের মানুষ তমোগুণের আশ্রয়ে থাকতে শুরু করেন। তাই এঁরা ঈশ্বরের নিন্দা করেন। এ ছাড়াও তাঁরা তামসিক ভোজন করেন, যে কারণে তাঁদের আয়ু ক্রমশ কমতে থাকে। শাস্ত্র বিরুদ্ধ কাজ করেন যে ব্যক্তি তাঁরা কম বয়সেই বুড়ো হয়ে যান। কোন কোন কর্মকে শাস্ত্র বিরুদ্ধ মনে করা হচ্ছে, যা করলে ব্যক্তি তাড়াতাড়ি বুড়ো হয়ে যাবে? তা জানানো হল এখানে। 1. শাস্ত্র মতে যে ব্যক্তি দিনের বেলায় অথবা সন্ধ্যার সময়ে ভোজন করে বা ঘুমায়, তাঁদের আয়ু কমে আসে। এমন ব্যক্তি শীঘ্র বৃদ্ধ হয়ে পড়েন। শাস্ত্রে সন্ধ্যাবেলা ঘুমানো বা খাবার খাওয়া নিষিদ্ধ। জৈন ধর্মে সূর্যাস্তের পর ভোজন করা বর্জিত। তাই শাস্ত্রের পরামর্শ মেনে দীর্ঘায়ু লাভ ও যৌবন ধরের রাখার জন্য সন্ধ্য়াবেলা ঘুমাবেন না বা খাবার খাবেন না। 2. কোনও দরিদ্র, কৃপণ ও নির্ধন ব্যক্তির নামে উপহাস করলে, এই অভ্যাস এখনই ত্যাগ করুন। শাস্ত্রে দরিদ্র, নির্ধন ও দিব্যাঙ্গদের পরিহাস করা বারণ। এমন করলে ব্যক্তির পূর্বজন্মের পুণ্য ফল কমতে শুরু করে। এ ছাড়াও ব্যক্তির আয়ু কম হয়। পাশাপাশি সুখের অভাব দেখা দেয়। 3. শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে যে, কারও প্রতি বিদ্বষী মনোভব পোষণ করতে নেই। আবার পরনিন্দা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারও প্রতি কঠোর বা অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করা শাস্ত্র বিরুদ্ধ। কারণ এর ফলে ব্যক্তি মানসিক কষ্ট পায়। আবার যাঁরা এমন কাজ করছেন, তাঁরা দুঃখ-কষ্টে জীবন কাটান। যে কারণে আয়ু কমে আসে। 4. শাস্ত্র মতে যে ব্যক্তি ঈশ্বর মানেন না এবং পরমেশ্বরের নিন্দা করেন, শাস্ত্রের অবহেলা করেন, তাঁরা পাপকর্মের অংশীদার হন। যা তাঁদের শীঘ্র বৃদ্ধ করে দিতে পারে। 5. শুভতিথি বা দেবতিথিতে ব্রহ্মচর্য পালনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ব্যক্তি দীর্ঘায়ু লাভ করে। তাঁদের জীবনে সুখ, সমৃদ্ধি, অর্থ ও বৈভবের আগমন হয়। তবে যাঁরা শাস্ত্র বিরুদ্ধ কাজ করেন, তাঁদের আয়ু কমে আসে, শীঘ্র বুড়ো হয়ে যান তাঁরা। শাস্ত্র অনুযায়ী কিছু কাজ রাতের বেলা করা একেবারে নিয়ম বিরুদ্ধ বা নিষিদ্ধ। এই সব কাজ যদি রাতের বেলা করা হয়, তা হলে জীবনে বিপদ আসতে সময় লাগে না। প্রাচীন শাস্ত্র মতে, দিন ও রাতের জন্য আলাদা আলাদা কাজের কথা বলা হয়েছে। এমনকি কোন সময়ে কোন কাজ করতে হবে তাও নির্দিষ্ট ভাবে বলা হয়েছে এই সকল শাস্ত্রে।শাস্ত্র অনুসারে বিশেষ কিছু কাজ রাতের বেলা এড়িয়ে চলাই ভাল। যদি রাতে এই সব কাজ করা হয়, তা হলে অমঙ্গল সাধন হতে পারে। জেনে নেওয়া যাক, কোন কাজগুলো রাতের বেলা করা মোটেই উচিত নয়। রাতের বেলা সে রকম স্থানে যাওয়া উচিত নয়, যেখানে একাধিক রাস্তার মিলনস্থল। এই রকম রাস্তায় রাতের বেলা অনেক অশুভ শক্তি ঘোরাফেরা করে, যা সাধারণ মানুষের ওপর খারাপ প্রভাব বিস্তার করতে পারে। অকারণে রাতের বেলা শ্মশান ভ্রমণ করা একেবারেই অনুচিত। কারণ রাতের বেলা এই সব স্থানে অশুভ আত্মা ঘুরে বেড়ায়। যার ফলে সাধারণ মানুষের শরীর স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। রাতের বেলা মহিলাদের চুল খুলে ঘুমোতে নেই। বলা হয়, রাতের বেলা খোলা চুলের প্রতি অশুভ শক্তি আকর্ষিত হয় বেশি। তাই রাতে চুল অবশ্যই বেঁধে ঘুমোতে হয়। রাতের বেলা ঘুমোতে যাওয়ার সময় পারফিউম জাতীয় কিছু ব্যবহার করতে নেই। অনেকেই আছেন, যাঁরা রাতে পারফিউম ব্যবহার করে থাকেন। শাস্ত্র অনুসারে রাতের বেলা যে কোনও সুগন্ধী অশুভ শক্তিকে আকর্ষণ করে। রাতে ঘর একেবারে অন্ধকার করে ঘুমোতে নেই। খুব ছোট্ট হলেও একটা আলো জ্বেলে রাতে ঘুমোতে হয়।শাস্ত্র বিরুদ্ধ কাজ করলে কী হবে পরিণতি?
বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কখন কী করতে হবে, তার সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে প্রাচীন সনাতন শাস্ত্রে। কিন্তু শাস্ত্রের কথা বর্তমান কালে অনেকেই মানেন না। শাস্ত্রের নির্দেশ না মানলে সেই ব্যক্তির ভবিষ্যতে কী পরিণতি হতে পারে সেই বিষয়ে শাস্ত্রে কী বলা আছে দেখা যাক …..!!!!???
শাস্ত্রে কিছু কিছু কাজকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও এই কাজগুলি করলে কমবয়সে বার্ধক্য, অল্পায়ুর শিকার হতে পারেন ব্যক্তি। কোন কোন কাজ করবেন না জানুন:------
এই বিষয়শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত মোট 11টি
অদ্বৈতবোধদীপিকা
অপরোক্ষানুভূতি
অবধূত গীতা
দৃগ্-দৃশ্য-বিবেক
পঞ্চদশী
পঞ্চীকরণ
বিবেকচূড়ামণি
ব্রহ্মসূত্র
ভজগোবিন্দম
যোগবশিষ্ঠ
শিবানন্দলহরী
খাবার বাছাই করা একটি ব্যাক্তিগত, পরম্পরাগত ও নির্দিষ্ট মতবাদের বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল। কাজেই এমন অনেক হিন্দু আছেন যারা তাদের বংশানুক্রমিক পরম্পরা ও বিশ্বাসের জন্য কিছু জিনিস খাওয়া ত্যাগ করেছে। যেমন – ভারতের অনেক বৈষ্ণব সম্প্রদায় ভুক্ত হিন্দু (উত্তর ভারত) আছেন যাদের বাড়িতে মাছ তোলা নিষিদ্ধ। আবার অনেকের হিন্দু বাড়িতে (উত্তর-পশ্চিম ভারত) মাছ মাংশ দুটোই তোলা নিষিদ্ধ। কাজেই হিন্দুদের মধ্যে পরম্পরাগত, ব্যাক্তিগত ও বিশ্বাসী মতবাদগত ফ্যাকটর গুলির উপর অনেক অংশে নির্ভর করে নিষিদ্ধ খাবার গুলি বাছাই এর ক্ষেত্রে। তাই কারো ব্যাক্তিগত বা পরম্পরাগত পছন্দ তে হস্তক্ষেপ করার জন্য এই নিবন্ধটি লিখা হয়নি! বরং উক্ত নিবন্ধটি সেইসব সনাতন ধর্মালম্বীদের জন্য লিখা হয়েছে যারা সনাতন বৈদিক শাস্ত্রকে অবলম্বন করে চলেন এবং জানতে ইচ্ছা রাখেন কোন কোন খাবার গুলো শাস্ত্রের সাপেক্ষে সিদ্ধ বা নিষিদ্ধ। এখানে হিন্দু শাস্ত্র বলতে বেদ, পুরাণ ও তন্ত্রের মূল গ্রন্থ গুলি থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই বৈধ-অবৈধ খাবারের সূচীটি বানানো হয়েছে। প্রাণীজ:----------- দুধ 1. উট ও ভেড়ার দুধ পান করা নিষিদ্ধ। —--তথ্যসূত্র – আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ১.৫.১৭.২২-২৩, বৌধায়ন ধর্মসূত্র ১.৫.১২.১১-১২, যাজ্ঞবল্ক স্মৃতি ৭.১৭০ 2.এক খুর বিশিষ্ট প্রাণীর (যেমন – ঘোড়া) দুধ পান করা নিষিদ্ধ। —-- তথ্যসূত্র – আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ১.৫.১৭.২৩, যাজ্ঞবল্ক স্মৃতি ৭.১৭০ 3.গরু, মোষ, ছাগলের বাচ্চা জন্মানোর পর থেকে ১০দিন যাবৎ তাদের দুধ পান নিষিদ্ধ।—----তথ্যসূত্র – আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ১.৫.১৭.২৪, বসিষ্ট ধর্মসূত্র ১৪.৩৫, বৌধায়ন ধর্মসূত্র ১.৫.১২.৯, যাজ্ঞবল্ক স্মৃতি ৭.১৭০ 3. নিচুস্তরের পশু (যেমন – কুকুর, বেড়াল) ও মাংসাশী পশুর (যেমন – বাঘ, সিংহ, শৃগাল) দুধ পান নিষিদ্ধ।—--তথ্যসূত্র – লৌগাক্ষিগৃহ্ম সূত্রাণি ২.১৮৪ ডিম মাছ-মাংস 1. সাপ, কুমীর, ঘড়িয়াল, শুশুক, সর্প আকৃতির মাছ, ব্যাঙ, অনিয়তকার মস্তক বিশিষ্ট মাছ (যেমন – ইল, কুঁচে মাছ, হাঙর, তিমি ইত্যাদি) ও জলজ শামুক, ঝিনুক, গুগলি ইত্যাদি খাওয়া নিষিদ্ধ।—--------তথ্যসূত্র – বশিষ্ট ধর্মসূত্র ১৪.৪১, গৌতম ধর্মসূত্র ১৭.৩৬, আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ১.৫.১৭.৩৮-৩৯ 2. মোরগ/মুরগি খাওয়া নিষিদ্ধ।…….তথ্যসূত্র – মার্কণ্ডেয় পুরাণ ৭.৬.৪ 3. যে সমস্ত পাখী শুধু তাদের পা দিয়ে মাটিতে আঁচড়ে আঁচড়ে খাবারের সন্ধান করে এবং যেসব পাখীরা লিপ্তপদী (যেমন – হাঁস) তাদের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ।—-তথ্যসূত্র – বশিষ্ট ধর্মসূত্র ১৪.৪৮, গৌতম ধর্মসূত্র ১৭.৩৪-৩৫, বিষ্ণু স্মৃতি LI.২৮-৩১, বৌধায়ন ধর্মসূত্র ১.৫.১২.৭ 4. রাজহাঁস, সারস, পানকৌড়ি, বক, কাক, পায়রা, টিয়া, ঘুঘু, তিতির, বাজ, চিল, শকূন, বাদুড়, ময়ূর, স্টার্লিং, দোয়েল, চড়ুই, কাঠঠোঁকরা, মাছরাঙা এবং নিশাচর পাখীর মাংশ খাওয়া নিষিদ্ধ।—----তথ্যসূত্র – বশিষ্ট ধর্মসূত্র ১৪.৪৮, গৌতম ধর্মসূত্র ১৭.৩৪-৩৫, বিষ্ণু স্মৃতি LI.২৮-৩১, বৌধায়ন ধর্মসূত্র ১.৫.১২.৭, যাজ্ঞবল্ক স্মৃতি ৭.১৭২-১৭৪ 5 মাংসাশী পাখির মাংশ আহার নিষিদ্ধ।—-তথ্যসূত্র – আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ১.৫.১৭.৩৪, যাজ্ঞবল্ক স্মৃতি ৭.১৭২ 6. যেকোনো বিস্বাদ ও খাদ্য অনুপযোগী মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ।—-তথ্যসূত্র – মনু স্মৃতি ৫.১১-১৭, বশিষ্ট ধর্মসূত্র ১৪.৪৪ 7. যে সমস্ত পশুর দুধের দাঁত ভাঙেনি তাকে জবাই করা নিষিদ্ধ অর্থ্যাৎ অপ্রাপ্তবয়স্ক পশুর মাংস আহার নিষিদ্ধ।—-তথ্যসূত্র – বশিষ্ট ধর্মসূত্র ১৪.৪৫, গৌতম ধর্মসূত্র ১৭.৩০-৩১ 8. যে সমস্ত পশুর একটি মাত্র চোয়ালে দাঁত আছে (যেমন-ঘোড়া) তাদের মাংস আহার নিষিদ্ধ।—-তথ্যসূত্র – বশিষ্ট ধর্মসূত্র ১৪.৪০, মনু স্মৃতি ৫.১৪, বিষ্ণু স্মৃতি LI.৩০ 9. যে সমস্ত প্রাণীর পা বহু অংশে বাঁকা। যেমন শজারু, কাঁটাচয়া, শশক, খরগোশ, কচ্ছপ, গোধা, গোধিকা ইত্যাদির মাংশ খাওয়া সিদ্ধ।—-তথ্যসূত্র – বশিষ্ট ধর্মসূত্র ১৪.৩৯, গৌতম ধর্মসূত্র ১৭.২৭, বৌধায়ন ধর্মসূত্র ১.৫.১২.৫, মার্কণ্ডেয় পুরাণ ৭.৬.৪ 10. গণ্ডার ও বন্য শূকরের মাংশ খাওয়া সিদ্ধ।—---তথ্যসূত্র – বশিষ্ট ধর্মসূত্র ১৪.৪৭, বৌধায়ন ধর্মসূত্র ১.৫.১২.৫ 11 নরমাংস বা নরাকার যন্তুর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ।—--তথ্যসূত্র – মহানির্ব্বাণ তন্ত্র ৮.১০৮ 12. গৃহপালিত ছাগল এবং ভেড়ার মাংস খাওয়া বৈধ।—তথ্যসূত্র – বৌধায়ন ধর্মসূত্র ১.৫.১২.১-৪ 13. গ্রাম্য শূকরের মাংস নিষিদ্ধ।—---তথ্যসূত্র – মার্কণ্ডেয় পুরাণ ৭.৬.৪, আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ১.৫.১৭.২৯ 14. যেকোনো মৃত প্রাণীর মাংস আহার করা নিষিদ্ধ। —----তথ্যসূত্র – আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ১.৫.১৬.১৬ 15. বহু উপকারী গোজাতির মাংস আহার সর্বদা নিষিদ্ধ।—---তথ্যসূত্র – মহানির্ব্বাণ তন্ত্র ৮.১০৮, বিষ্ণু পুরাণ ৩.৩.১৫, ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণ ১.৯.৯, বশিষ্ট ধর্মসূত্র ১৪.৪৩-৪৫ 16. গৌর, ঘায়ল, সরাভ, ষাঁড় প্রভৃতি গো সম্প্রদায় ভুক্ত জীবের মাংস নিষিদ্ধ।—--তথ্যসূত্র – বশিষ্ট ধর্মসূত্র ১৪.৪৩, আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ১.৫.১৭.২৯ 17. মাংসাশী প্রাণীর মাংস নিষিদ্ধ।—-তথ্যসূত্র – মহানির্ব্বাণ তন্ত্র ৮.১০৮, গৌতম ধর্মসূত্র ১৭.৩৪ ★ মূলত মাংসাশী প্রাণী বলতে যেমন – বাঘ, সিংহ, শৃগাল, বন্য কুকুর ইত্যাদি। 18. একখুর বিশিষ্ট প্রাণীর (যেমন – উটের) মাংস নিষিদ্ধ।—---তথ্যসূত্র – আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ১.৫.১৭.২৯ 19. কৃষ্ণসার, হরিণ, সাধারণ হরিণ, বন্য শূকরের মাংস খাওয়া বৈধ।—-তথ্যসূত্র – বৌধায়ন ধর্মসূত্র ১.৫.১২.৬ 20. স্বাদু ও লবণাক্ত জলের মাছ আহার হিসাবে গ্রহণ করা বৈধ।—-তথ্যসূত্র – বৌধায়ন ধর্মসূত্র ১.৫.১২.৮ 21. কুকুর, বিড়াল, বানর, মহিষ প্রভৃতি বন্য প্রাণীর মাংস আহার নিষিদ্ধ।—--- অন্যান্য 3. ব্যাঙের ছাতা, শালগম নিষিদ্ধ।—তথ্যসূত্র – আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ১.৫.১৭.২৮, যাজ্ঞবল্ক স্মৃতি ৭.১৭১, বশিষ্ট ধর্মসূত্র ১৪.৩৩ 4. যেকোনো আহারে উপযোগী বীজ, ফল, মূল, সব্জি খাওয়া বৈধ।—তথ্যসূত্র – নারদ পুরাণ ১১.১২-২২ 7. টকে যাওয়া (ব্যাতিক্রম – দই) বা পচে যাওয়া বা কোনো খাবারে উভয়ে মিশ্রিত খাবার খাওয়া নিষিদ্ধ।—-তথ্যসূত্র – আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ১.৫.১৭.২০, বৌধায়ন ধর্মসূত্র ১.৫.১২.১৫, যাজ্ঞবল্ক স্মৃতি ৭.১৬৭ উক্ত নিষিদ্ধতার বাইরের খাদ্য বস্তু বা আহার সামগ্রী সমূহ বৈধ, কারণ সেইসব আহার সামগ্রীর উপরে নিষিদ্ধতা আরোপ হয়নি সনাতনশাস্ত্র সমূহে। “যজ্ঞের জন্য ও অবশ্যপালনীয় জীবনধারণের জন্য প্রশস্ত পশুপাখি বধ্য। প্রাচীনকালে অগস্ত মুনি এরুপ আচরণ করেছিলেন।” (মনুসংহিতা, ৫/২২) “সকল স্থাবর (উদ্ভিদ) ও জঙ্গম (প্রাণী) ব্রহ্মা প্রাণীর প্রাণধারণের জন্য সৃষ্টি করেছিলেন। সুতরাং প্রাণী সকল প্রয়োজনে ভোজ্য।” (মনুসংহিতা, ৫/২৮) “প্রতিদিন ভক্ষ্য প্রাণী সকল ভক্ষণ করে ভোক্তা দোষভাগী হয় না। বিধাতাই ভক্ষ্য প্রাণী ও ভক্ষকগণকে সৃষ্টি করেছেন।” (মনুসংহিতা, ৫/৩০) “ব্রহ্মা নিজেই যজ্ঞের জন্য পশুগণকে সৃষ্টি করেছেন। যজ্ঞ সকলের উন্নতির কারণ, সুতরাং যজ্ঞে পশুবধ বধ নয়।” (মনুসংহিতা, ৫/৩৯) “ক্রীত বা নিজে পশু পালন করে তার মাংস বা অপর কর্তৃক প্রদত্ত মাংস দেবগণ ও পিতৃগণকে অর্চনা করে ভক্ষণ করলে দোষভাগী হয় না।” (মনুসংহিতা, ৫/৩২) বনবাসে ভরদ্বাজ মূনি রাম সীতা লক্ষণের ভোজনের জন্যে পশুর মাংস ও ফলমূলের ব্যবস্থা করেছিলেন। (বাল্মীকি রামায়ণ, ২/৫৪)। নিষাদরাজের অতিথি হয়ে মৎস্য এবং নানান রকমের শূষ্ক ও আর্দ্র মাংস ভোজন করেছিলেন। (বাল্মীকি রামায়ণ, ২/৮৪)। মহাভারতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পরে কৃষ্ণ, যুধিষ্ঠিরকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে রাজা “রন্তিদেবের” মাহাত্ম্য সম্বন্ধে উদাহারণ দিতে গিয়ে বললেন যে এই রাজা দ্বারা যজ্ঞে নিহত অসংখ্য পশুর চামড়া থেকে নির্গত রসে চর্মম্বতী নামক নদী (আধুনিক চম্বল) সৃষ্টি হয়েছিল এবং তিনি অতিথি সৎকার ও সেবা করতেন কুড়ি হাজার একশত পশু কেটে তাদের মাংস পরিবেশন করে। (বেদব্যাসী মহাভারত, ১২/২৯)। এই প্রসঙ্গে কৃষ্ণ রাজা রন্তিদেবের পুণ্যতাকে যুধিষ্ঠিরের উর্ধ্বে স্থান দেন। এছাড়া অর্জুনসহ পঞ্চপাণ্ডবরা মাংস খেতেন। কৃষ্ণ খান্ডব বন দাহনের সময় ঝলসে যাওয়া হরিনের মাংস খেয়েছিলেন। গীতায় কোথাও মাংস ভক্ষণ নিষিদ্ধের কথা বলা হয়নি। "যে আহার আয়ু, সত্ত্ব, বল, আরোগ্য, সুখ ও প্রীতি বর্ধনকারী এবং রসযুক্ত, স্নিগ্ধ, স্থায়ী ও মনোরম, সেগুলো সাত্ত্বিক আহার হিসেবে সর্বদা বিবেচ্য হয়ে থাকে" (গীতা, ১৭/৮) "যে আহার অতি তিক্ত, অতি অম্ল, অতি লবনাক্ত, অতি উষ্ণ, অতি তীক্ষ্ণ, অতি শুষ্ক, অতি প্রদাহকর এবং দুঃখ, শোক ও রোগপ্রদ সেগুলো রাজসিক আহার হিসেবে বিবেচ্য" (গীতা, ১৭/৯) "যে আহার অনেক পূর্বে রাঁধিত, যা নীরস, দুর্গন্ধযুক্ত, বাসী, পচা, যা র ঘ্রান গ্রহনে নাসিকা সরে আসে এবং অপরের উচ্ছিষ্ট দ্রব্য ও অমেধ্য দ্রব্য, সেই সমস্ত তামসিক হিসেবে বিবেচ্য" (গীতা, ১৭/১০) কিন্ত বস্তত দুধ ও আমিষ হিসেবে কথিত আছে! যদিও বা দুধের মধ্যে প্রোটিনের মাত্রা অন্যসব আমিষ আহারের চাইতে অনেক কম, প্রায় ৩% এর মত। যার দরুন তাকে সাধারণত নিরামিষভোজী রা নিরামিষ ভাবে। কিন্ত শাস্ত্রে এই আমিষ, নিরামিষ নয়! সাত্ত্বিক আহার হিসেবেই ঘোষিত করেছে।শাস্ত্র সাপেক্ষে নিষিদ্ধ খাবারের সূচী
1. হাঁস, মুরগি, ময়ুরের ডিম খাওয়া সিদ্ধ। —--তথ্যসূত্র – মানব গৃহসূত্র ১.৪.২-৪, ভেল সংহিতা – চিকিতসাস্থানম – ২৬৭, চরক সংহিতা ২৭.৬৩-৬৪
তথ্যসূত্র – লৌগাক্ষিগৃহ্ম সূত্রাণি ২.১৯৩, বশিষ্ট ধর্মসূত্র ১৪.৩৩, মানব গৃহসূত্র ১.৪.২-৪
1. মাদক দ্রব্য মিশ্রিত পানীয় নিষিদ্ধ।—তথ্যসূত্র – আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ১.৫.১৭.২১
2. সুরা ও সুরা প্রস্তুতের জন্য ব্যাবহৃত দ্রব্য সমূহ নিষিদ্ধ।—তথ্যসূত্র – আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ১.৫.১৭.২৫
5. সুস্বাদু আহারে উপযোগী রস (যেমন – খেঁজুরের রস, তালের রস, আখের রস, ডাবের জল, ফলের রস ইত্যাদি), দুগ্ধজাত পদার্থ (যেমন – দুধ, ঘি, মাখন, দই) মধু ইত্যাদি বৈধ।—-তথ্যসূত্র – নারদ পুরাণ ১৮.১২-১৩
6. রসুন,পলাণ্ডু,মসুর ডাল, হিং, খেসারি ডাল,কুল বা বদ্রি ফল খাওয়ার উপর নিষিদ্ধ বিধান আছে ।—-তথ্যসূত্র –আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ১.৫.১৭.২৬, মনু স্মৃতি ৫.৫, যাজ্ঞবল্ক স্মৃতি ১.১৭৬, বশিষ্ট ধর্মসূত্র ১৪.৩৩ অনুসারে রসুন খেলে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে।
9. যে খাবারে কোনো পশু মুখ দিয়েছে তা খাওয়া নিষিদ্ধ। —--তথ্যসূত্র – গৌতম ধর্মসূত্র ১৭.১০, যাজ্ঞবল্ক স্মৃতি ৭.১৬৭
10. যে সব খাবারে পোকা জন্মছে তা খাওয়া নিষিদ্ধ।—--- তথ্যসূত্র – আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ১.৫.১৬.২৬, যাজ্ঞবল্ক স্মৃতি ৭.১৬৭
আসলে শাস্ত্রে নিরামিষ আমিষ নিয়ে নয়। সাত্ত্বিক, রাজসিক ও তামসিক আহারের কথাই বলা আছে। আর নিরামিষ ভোজী রা সাধারণত সাত্ত্বিক আহারকেই কেন্দ্রস্থল হিসেবে নিজেকে নিরামিষ ভোজী দাবী করেন।
বিবাহিত মহিলা দিকে শাঁখা-পলা, সিঁদুর এবংলোহা ধারণ করা উচিত কেন ??? প্রাচীন যুগ থেকে শুরু করে বর্তমান প্রজন্মেও বিবাহিত মহিলারা শাঁখা-পলা ব্যবহার করেন স্বামীর মঙ্গল কামনায়। শাঁখা-পলা এক জন মহিলার বৈবাহিক জীবনের চিহ্ন। হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, শাঁখা-পলা ছাড়া বিয়ে অসম্পূর্ণ থেকে যায়।হিন্দু ধর্মের প্রতিটি বিষয়ের পেছনেই কোন না কোন নিগুঢ় অর্থ বিদ্যমান। তেমনি শাঁখা-পলা, সিঁদুর আর লোহা আমাদের হিন্দু বিবাহিত নারীরা পরে আসছে অনেক আগে থেকে। তবে বর্তমানে এগুলা না পরা অনেকটা আধুনিকতার স্বরূপ হয়ে দাড়াচ্ছে কারো কারো কাছে। তাই আসুন আজ আমরা দেখে নেই শাঁখা সিঁদুর ও লোহা পরার কারন আর কেন এটা পরা উচিৎ। শাঁখা-পলা, সিঁদুর ও লোহা ব্যবহারের তিনটি কারণ আধ্যাত্মিক, সামাজিক ও বৈজ্ঞানিক। আধ্যাত্মিক কারণ : শাঁখার সাদা রং- সত্ত্ব, সিঁদুরের লাল রং -রজঃ এবং লোহার কাল রং- তম গুণের প্রতীক। সংসারী লোকেরা তিনটি গুণের অধীন হয়ে সংসারধর্ম পালন করে। সামাজিক কারণ : তিনটি জিনিস পরিধান করলে প্রথম দৃষ্টিতেই জানিয়ে দেয় ঐ রমণী একজন পুরুষের অভিভাবকত্বে আছেন। সে কারণেই অন্য পুরুষের লোভাতুর, লোলুপ দৃষ্টি প্রতিহত হয়। স্বামীর মঙ্গল চিহ্ন তো অবশ্যই। বৈজ্ঞানিক কারণ : রক্তের ৩টি উপাদান শাঁখায় ক্যালসিয়াম, সিঁদুরে মার্কারি বা পারদ এবং লোহায় আয়রণ আছে। রক্তের ৩টি উপাদান। আর্য ঋষিগণ হিন্দু ধর্মের প্রতিটি আচার অনুষ্ঠানেই বৈজ্ঞানিক প্রয়োজনীয়তাকে প্রাধান্য দিয়ে আচার বা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করেছেন। যুক্তিগত ভাবে পলার বেশ কিছু দ্রব্যগুণ আছে। শরীরে রক্তাল্পতার মতো সমস্যা রুখতে বা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পলার বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। সেই কারণেই পলা পরা হয়। এমনকি এই ক্ষেত্রে পলা ভেজানো জলও বেশ উপকারী। আবার এও বলা হয় যে, পলা ধারণ করলে মহিলাদের রজঃস্রাবজনিত সমস্যার নিরাবণ হয়। তাই যদি কেউ নিজেকে কর্মকাণ্ডের ও সামাজিকভাবে এবং শাস্ত্রগতভাবে উপযুক্ত মনুষ্য এবং মনুষ্যত্বের রাস্তায় চলার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে যে কোন বিবাহিত মহিলাকে এগুলি অবশ্যই ধারণ করা উচিত । কারণ কর্মকাণ্ড হোক জ্ঞান কাণ্ড হোক ভক্তিযোগ হোক স্বাস্থ্য অনুসারে না চলে নিজের বুদ্ধিতে চললে অবশ্যই তার দুর্গামি পরিণাম নিজেকে এবং সামাজিকভাবে এবং প্রকৃতিগতভাবে এবং পরিবারকেও ভোগ অবশ্যই করতে হয়। তাই মনুষত্ব বিকাশের উদ্দেশ্যে কর্মকাণ্ড বা সামাজিক নিবন্ধন যুক্ত শাস্ত্রীয় যে বিধান তাকে মেনে চলা প্রত্যেকের পরম কর্তব্যের মধ্যে পড়ে ।
✼ দম্ভ ✼ দর্প ✼ অহমিকা ✼ অপরিচ্ছন্ন কর্ম ✼ মিথ্যাবাদিতা ✼ অতৃপ্ত কাম ✼ ক্রোধ ✼ কটুতা ✼ অজ্ঞানতা ✼ মিথ্যা অহংকার ✼ মিথ্যা প্রতিপত্তি ✼ ক্রুদ্ধ হওয়া ✼ মায়াগ্রস্থ ✼ আত্ম প্রসন্ন ✼ নির্লজ্জ ✼ সম্পদের দ্বারা প্রতারণা করা ✼ জীবনের লক্ষ্য সম্বন্ধে অজ্ঞানতা ✼ অভদ্র আচরণ ✼ জগৎকে মিথ্যা ও অবাস্তব মনে করা ✼ জগৎ ভগবান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয় ✼ যৌন বাসনা দ্বারা জগতের সৃষ্টি হয়েছে ✼ অস্থায়ী বস্তুর দ্বারা আকৃষ্ট ✼ অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন ✼ দুশ্চিন্তার কারণে হতবৃদ্ধি ✼ শারীরিক এবং মানসিক শক্তির মধ্যে আনন্দ উপভােগ ✼ অনুপকারী, অনৈতিক এবং ভয়ংকর কর্মের দ্বারা পৃথিবী ধ্বংসে লিপ্ত ✼ যজ্ঞের নিয়ম-কানুন অনুসরণ করে না ✼ পরমেশ্বর ভগবানর প্রতি হিংসা ভাবাপন্ন ✼ প্রকৃত ধর্মের (সনাতন ধর্ম) নিন্দা করা
✼ ভয়শূন্যতা ✼ দান ✼ আত্ম-সংযম ✼ তপস্যা ✼ দৃঢ়তা ✼ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও ভদ্রতা ✼ শিষ্টাচার ✼ সরলতা ✼ অহিংসা ✼ সত্যবাদিতা ✼ বৈরাগ্য ✼ শাস্ত্র ✼ উৎসাহ ✼ ক্ষমাপরায়ণতা ✼ দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ✼ সত্ত্বার পবিত্রতা ✼ আধ্যাত্মিক জ্ঞানের অনুশীলন ✼ যজ্ঞ সম্পাদন ✼ বৈদিক শাস্ত্র অধ্যয়ন ✼ ক্রোধ শূন্যতা ✼ অন্যের দোষ দর্শন না করা ✼ সমস্ত জীবে দয়া ✼ লােভহীনতা ✼ মাৎসর্য শূন্যতা ✼ অভিমান শূন্যতা।
নিয়তি অর্থাৎ আমাদেরই পূর্বজঃ কর্মের কর্মফলকে আমরা ভাগ্য বা নিয়তি রূপে এই জন্মে পাই। যোগশাস্ত্রে একে *প্রারব্ধ* বলেছে, সাধারণ মানুষ *কপাল* বলে থাকে এবং এবং জ্যোতিষ শাস্ত্রে ভাগ্য ও নিয়তি বলে। যেহেতু নিয়তির লিখনকে স্থূল চক্ষুর দ্বারা দেখা সম্ভব না তাই তাকে চলতি কথায় অদৃষ্ট বলা হয়ে থাকে। বিভিন্ন শাস্ত্রে ভাষা আলাদা কিন্তু মূল জিনিস একই। প্রারদ্ধ বা নিয়তির লিখন থাকে আমাদের *কুটস্থে*, যা স্থূল শরীরের মধ্যে থাকা সুক্ষ শরীর, তার মধ্যে থাকা কারণ শরীরে আজ্ঞা চক্রের কুটস্থ মধ্যে অবস্থিত। কর্ম এই কুটস্থে সঞ্চিত হয়। প্রত্যেক জন্মে মানুষ যে যে কর্ম করে সেগুলি কুটস্থে সঞ্চিত হয়। এবং সেই সঞ্চিতের স্ফুটের মধ্যে যে যে স্ফুট গুলি দীর্ঘতম হয়, সেইগুলি পরবর্তী জন্মে প্রারব্ধ বা নিয়তি রূপে আসে। ভাগ্য / অদৃষ্ট কে স্থূল চক্ষুর দ্বারা দেখতে পাওয়া যায় না কিন্তু দিব্য চক্ষুর দ্বারা অবশ্যই দেখতে পাওয়া যায়। নিয়তিকে গণনা অবশ্যই করা যায়, কিন্তু ত্রিলোকের কোনো শক্তি নিয়তিকে খন্ডন করেন না। নিয়তিকে যদি কোন ভাবে খন্ডন করা হয় তাহলে তার প্রতিক্রিয়ায় প্রকৃতি সেই খন্ডিত নিয়তির ভোগকে ছয় গুন মাত্রায় বৃদ্ধি করে পরবর্তী জীবনে ভোগায়। সাধারণ মানুষ 2টি কর্মের ফল ভোগে, যথা:- ১. প্রারব্ধ বা নিয়তি (পূর্বজঃ কর্মের কর্মফল) ২. আরদ্ধ (কামনা বাসনা করে অতিরিক্ত যে কর্মফল হয়) ভবিতব্যের উপর চিন্তা না করে যারা নিশ্চিন্তে সমর্পণ ভাবনা নিয়ে থাকে তাদের আরদ্ধ কর্ম উৎপন্ন হয় না। এবং আরদ্ধ জনিত যে কল্পনায় সুখ ও দুঃখ সেইগুলো সেই ব্যাক্তি প্রাপ্ত হয়না। প্রশ্ন: তাহলে সেই ব্যাক্তি কতটা বা কতগুলো সুখ র দুঃখ প্রাপ্ত হয়? উঃ- সেই ব্যাক্তির নিয়তিতে যতটা বা যতগুলো সুখ আর দুঃখ লেখা আছে ততটাই প্রাপ্ত হয়। সাধারন মানুষ মূলত •প্রারব্ধ + আরদ্ধ• এই দুই ভোগে যেমন:- ধরা যাক নিয়তিতে / ভাগ্যে আছে 30 আর কামনা বাসনা করে আরদ্ধ হয়েছে 3000 তাহলে সে 3030 পরিমাণ সুখ ও দুঃখ ভুগতে থাকবে। অদৃষ্ট / নিয়তি / ভাগ্য / কপাল/ প্রারব্ধ:--- ১) স্থান ২) কাল ৩) পাত্র ৪) ক্রম ৫) ঘটনা উদাহরণ:- ধরা যাক কাউকে বলা হল যে কাল সকাল 1০টার সময় দুর্গাপুরে একটি 5০0 ফুট উচ্চতা থেকে 50 কেজি ওজনের একটা পাথর আপনার মাথায় পড়তে চলেছে। এখানে দুর্গাপুর হলো "স্থান"; কাল সকাল ১০টা হল "সময় বা কাল"; আপনি অর্থাৎ যার সাথে ঘটনাটি ঘটবে, হলেন "পাত্র"; এবং ওই পাঁচ কেজি ওজনের পাথরটা হল "ক্রম", অর্থাৎ যার সাহায্যে ঘটনাটি ঘটবে এবং পাথরটা আপনার মাথায় পড়বে এটা হল "ঘটনা"। নিয়তিকে কেউ পরিবর্তন করতে সমর্থ্য নয় এই অনুসারে নিয়তির এই পাঁচটি অর্থাৎ স্থান- কাল -পাত্র -ক্রম এবং ঘটনা এগুলির পরিবর্তন সম্ভব না, কিন্তু এবার শাস্ত্রজ্ঞান এবং শাস্ত্রবিধির মাধ্যমের সাহায্যে নিয়তির ঘটনার পূর্ব জ্ঞান হতো সেই ব্যক্তিকে সকাল ন'টায় একটা মোটা স্টিলের হেলমেট পরিয়ে দেওয়া হল- তারপর সকাল দশটায় নিয়তির অনুসারে ওই ঘটনা ঘটলো। যেহেতু নিয়তির পরিবর্তন সম্ভব নয় সেহেতু মূল ঘটনা ঘটবে কিন্তু সেই ব্যক্তিকে আগের থেকে মোটা স্টিলের হেলমেট পরিয়ে দেওয়ার জন্য তার কুপ্রভাব অবশ্যই এই প্রতিক্রিয়াকে 50%-60% কমানো সম্ভব, অর্থাৎ পাথর আপনার মাথায় অবশ্যই পড়বে কিন্তু ওই 'সুরক্ষা' থাকার দরুণ আপনার আঘাত কম লাগবে। যেখানে আপনার মৃত্যু হতে পারতো বা আপনি কোমায় চলে যেতে পারতেন, সুরক্ষা থাকার জন্য সেখানে আপনার অল্প মাত্রায় চোট লাগবে। এই ভাবেই প্রকৃত শাস্ত্র জ্ঞান এবং শাস্ত্র প্রদেশের দ্বারা নিয়তিকে খন্ডন করা না গেলেও নিয়তির দ্বারা গঠিত ঘটনার কুপ্রভাবকে অবশ্যই কমানো যায়। এই পাঁচটার সংযোগ ঘটলে, নিয়তি ঘটে। এই নিয়তি কে কেউ পরিবর্তন করতে সমর্থনা ইহা অনিবার্য, পৃথিবীতে এমন কোন পদ্ধতি নেই যে পদ্ধতির দ্বারা নিয়তির অল্পতম ফের বদল করা সম্ভব তাই নিয়তি অনিবার্য। শাস্ত্রজ্ঞান এবং শাস্ত্রবিধির মাধ্যম দ্বারা নিয়তির কুপ্রভাবকে কম করা অবশ্যই যেতে পারে। তার জন্য শাস্ত্রজ্ঞ ব্যক্তির পরামর্শ এবং উপদেশ মেনে চলা অত্যন্ত আবশ্যক। কিন্তু যে ব্যক্তি নিজের শাস্ত্র জ্ঞান নেই এবং কোন শাস্ত্রজ্ঞ ব্যক্তির উপদেশ বা পরামর্শ গ্রহণ করেনি- এই ধরনের ব্যক্তির নিয়তি এবং তার কুপ্রভাব পূর্ণমাত্রায় ভোগ করে । কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বুদ্ধিমান মনুষ্য—- নিজে শাস্ত্র জ্ঞান লাভ করে অথবা কোন শাস্ত্র ব্যক্তির উপদেশ এবং পরামর্শে চলে নিজের নিয়তি কে পরিবর্তন করতে না পারলেও নিয়তির কুপ্রভাব এর মাত্র 30%-40% ই ভোগ করে, বাকি নিয়তিকে পরিবর্তন না করতে পারলেও নিয়তির 60%-70% কুপ্রভাব থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারে । ইহাই শাস্ত্রজ্ঞান বা শাস্ত্রব্যক্তির পরামর্শ ও উপদেশে চলার সুফল। অনেকে নিজের অহংকারবশত এবং বুদ্ধিহীনতা বসত বলে থাকেন যে নিয়তিতে যা আছে তাই হবে তাই কোন শাস্ত্রজ্ঞ ব্যক্তির পরামর্শ দরকার নেই। এরকম ব্যক্তিরাই নিয়তির পূর্ণ ফল এবং তার কুপ্রভাব এর পূর্ণ ফল অবশ্যই ভোগ করে । কিন্তু সেইখানেই শাস্ত্রজ্ঞ ব্যক্তির উপদেশ এবং পরামর্শে চলে নিয়তিকে পরিবর্তন করতে না পারলেও নিয়তির কুপ্রভাব এর বেশিরভাগ অংশ থেকেই সুরক্ষিত রাখতে পারে। ইহাই শাস্ত্র জ্ঞানের মহিমা। আর যিনি নিজের অহংকার এবং নিজের দুরবুদ্ধি বসত নিজেকে শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিমান এবং শাস্ত্র জ্ঞানের থেকেও অধিক জ্ঞান সম্পন্ন মনে করেন তারাই পূর্ণমাত্রায় সম্পূর্ণ কুপ্রভাব সম্পূর্ণ মাত্রই ভোগ করেন এবং সেরকম অহংকারী ব্যক্তিকে শাস্ত্রজ্ঞদের নিজের থেকে যেচে কোন উপদেশ দেওয়া অবশ্যই বারণ করা আছে। তাই শাস্ত্রজ্ঞানহীন ব্যক্তির চরিত্র এবং শাস্ত্র জ্ঞান বা উপদেশ বা পরামর্শে চলা ব্যক্তির চরিত্রের ভিন্নতা অবশ্যই হয়ে থাকে। নিয়তিকে বিচার করার ত্রিবিধ উপায় আছে :- 1. যেকোনো দিব্যচক্ষু সম্পন্ন মহাপুরুষ, ব্যক্তির কপালের দিকে তাকিয়ে তা বলে দিতে পারেন। 2. যে ব্যক্তির কর্মের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিচার জ্ঞান আছে। 3. জ্যোতিষের সাহায্যে। (যেহেতু প্রতিটি ক্রিয়ার একটি বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে, তাই যে ব্যাক্তি কর্ম বিচার করতে জানেন তিনি অবশ্যই বলতে পারবেন যে কোন কর্ম কতটা সুদূর প্রসারী এবং তার ফলস্বরূপ কি হতে পারে।) এই ত্রিবিধ উপায়ে নিয়তিকে খন্ডন না করা গেলেও তার প্রতিক্রিয়াকে অবশ্যই কমানো যায় শাস্ত্রজ্ঞান এবং শাস্ত্রবিধির মাধ্যমে দ্বারা। গুরু কৃপায় অকাল মৃত্যুও রোধ করা সম্ভব। কাল মৃত্যু:- অর্থাৎ প্রত্যেক ব্যক্তির নিজ নিজ আয়ুষ্কাল সম্পূর্ণ হলে যে মৃত্যু হয় তাকেই কাল মৃত্যু বলা হয়। অকাল মৃত্যু:- অকাল মৃত্যু হল স্বাভাবিক বয়সের অথবা পূর্ণ আয়ুষ্কালের আগেই মৃত্যু। যারা সদগুরুর শিষ্য হন এবং নিজ জীবনে ধর্মের পথকে অনুসরণ করে চলেন তারা তাদের গুরুদেবের সংরক্ষণ শক্তির দ্বারা সুরক্ষিত থাকেন। তাদের ক্ষেত্রে নিয়তির প্রতিক্রিয়াকে 60%-80% কমানো যায়। জাতস্য হি ধ্রুবমৃত্যু মৃত্যুধ্রুব জন্ম মৃতস্য চ
তস্মাদ অপরিহার্যে ন ত্বং শচিতুমরহসি।
যজ্ঞে পশুহত্যা একসময় বহুলপ্রচলিত ছিল। ‘ (শান্তি/২৬৯) প্রাচীনকালের গোহত্যার স্মৃতি যেমন মহাভারতে রয়েছে, তেমনি পরবর্তীকালের পশুহত্যা ও গোহত্যায় নিষেধাজ্ঞা সম্বন্ধেও মহাভারত হতে জানা যায় – ” শাস্ত্রানুসারে ছাগ পশুরেই অজ বলিয়া নির্দেশ করা যায় । মহর্ষি গণ কহিলেন, বেদে নির্দিষ্ট আছে , বীজ দ্বারাই যজ্ঞানুষ্ঠান করিবে। বীজের নামই অজ। অতএব যজ্ঞে ছাগপশু ছেদন করা কদাপি কর্তব্য নহে। যে ধর্মে পশুচ্ছেদন করিতে হয় , তাহা সাধুলোকের ধর্ম বলিয়া কখনোই স্বীকার করা যায় না। বিশেষত ইহা সর্বশ্রেষ্ঠ সত্যযুগ । এই যুগে পশু হিংসা করা কিরূপে কর্তব্য বলিয়া পরিগণিত হইতে পারে।” (শান্তি/ ৩৩৮) “যে ব্যক্তি গোমাংস ভক্ষণ এবং যে ব্যক্তি ঘাতককে গোবধে অনুমতি প্রদান করে তাহাদের সকলকেই সেই নিহত ধেনুর লোম পরিমিত বৎসর নরকে নিমগ্ন থাকিতে হয়।” (অনুশাসন/৭৪) “ছাগ, গো ও ময়ূরের মাংস , শুষ্ক মাংস এবং পর্য্যুষিতান্ন ভোজন করা নিতান্ত গর্হিত।“ ( অনুশাসন/১০৪) “যে ব্যক্তি অতিথির সমাদর না করে তাহারে স্ত্রীহত্যা, গোহত্যা, ব্রহ্মহত্যা, গুরুপত্নীহরণ ও কৃতঘ্নতাজনিত পাপে লিপ্ত হইতে হয়।” ( অনুশাসন/ ১২৬) “যাহারা ব্রাহ্মণঘাতি, গোঘ্ন, পরদারনিরত, বেদে শ্রদ্ধাশূণ্য ও জায়া জীবি সেইসমস্ত পাপাচার নিরত পামরদিগের সহিত কথোপকথন করাও অনুচিত।“ (অনুশাসন/১৩০) মহাভারতের সময়কালে গোমাংসভোজনকে ভালো চোখে দেখা হত না। মদ্রক (কর্ণ/৪১) ও বাহিকদের (কর্ণ/৪৫) গোমাংস ভক্ষণের কথা মহাভারত হতে জানা যায়। তবে এর ফলে তাদের নিন্দার সম্মুখীন হতে হয়েছে। প্রাচীন ভারতের কৃষিজীবি সমাজে প্রাণী হিসাবে গরু সর্বদাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একে পবিত্র বলে বিবেচনা করা হত। মহাভারতে গরু পূজা করার কথা বলা আছে- ” গাভী সমুদায় জীবগণের প্রসূতিস্বরূপ এবং নানা প্রকার সুখের নিদান । মঙ্গলাভিলাষী ব্যক্তিদিগের নিত্য গো প্রদক্ষিণ করা অবশ্য কর্তব্য। গো শরীরে পদাঘাত এবং গোকূলের মধ্যস্থল দিয়ে গমন করা কদাপি কর্তব্য নহে। গাভী সকল সমুদায় মঙ্গলের আয়তন স্বরূপ । অতএব ভক্তি পূর্বক উহাদিগের পূজা করা অবশ্য কর্তব্য।” (অনুশাসন/ ৬৯) এমনকি গোবর এবং গোমূত্রর কথাও মহাভারত হতে পাওয়া যায়। (অনুশাসন/৭১; অনুশাসন/৭৩) গরুর গোবর ও গোমূত্রে মানুষের স্নান করার কারণ হিসাবে কথা বলা হয়েছে। অনুশাসন পর্বের ৮২ তম অধ্যায়ে বলা হয়েছে- ‘গোবরে লক্ষ্মী বাস করেন’। মহাভারত ভারতের দীর্ঘকালের ইতিহাসকে ধরে রেখেছে। এর ফলেই এতে গোহত্যার সমাপ্তি, গোপূজা এবং গোবর-গোমূত্রের পবিত্রতার কথাও এতে পাওয়া যায়। ঐতিহ্যগতভাবে গবাদিপশু ভারতবর্ষে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় গৃহাস্থলি সরঞ্জাম হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে এবং কিছু হিন্দু গরুকে পবিত্র হিসেবে এবং গো হত্যাকারীকে পাপী হিসেবে বিবেচনা করে আসছে। গোপূজা
গোবর ও গোমূত্র
সিদুঁর শব্দের অর্থ হচ্ছে সৌভাগ্য,--স্ত্রী যদি সৌভাগ্য বিধি চাই,, সেই স্ত্রীর কপালে সিদুঁর লাগানো উচিত স্ত্রীর সৌভাগ্য কে? স্ত্রীর সৌভাগ্য= স্বামী । স্ত্রীর একমাত্র সৌভাগ্য হচ্ছে স্বামী — স্ত্রী সৌভাগ্য বর্ধনের জন্য,, সৌভাগ্য বৃদ্ধির জন্য,, স্ত্রী নিজের কপালে সিদুঁর লাগানো উচিত সিন্দুর কোনো খেলার জিনিস নয় —এটা কোনো পরম্পরা নয় , এটা হল সৌভাগ্যের বিষয় —- স্ত্রী যদি সৌভাগ্যের বৃদ্ধি চাই তাহলে কপালে সিদুঁর লাগানো উচিত । যে স্ত্রী স্বামী থাকলেও সিঁদুর দেয় না,,, সেই স্ত্রীর মুখও দর্শন করতে নাই যে স্ত্রীর বিবাহের পরে সিদুঁর দিতে লজ্জা লাগে সেই স্ত্রীর মুখ দর্শন করা মানে নরকের কুন্ডু দর্শন করা । স্বামী খারাপ হোক বা দুষ্ট হোক বা প্রতিবন্ধী হোক বা গরীব হোক বা ভিখারি হোক তোমার স্বামী সৌভাগ্যের জন্য তোমার কপালে সিঁদুর দিয়ে সাজিয়ে রাখো —বিবাহের পরে অনেক কিছু হারিয়ে যায় কিন্তু তোমার স্বামীর সৌভাগ্য থাকলে ,সেই সিদুঁর কপালে থেকে যায়!! সিঁদুর (বা সিন্দুর) একপ্রকার রঞ্জক পদার্থ যার রাসায়নিক নাম লেড অক্সাইড। এটি সাধারণত মেয়েদের সিঁথিতে একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত অবধি প্রসারিত টীকা বা কপালে টিপের আকারে ব্যবহৃত হয়। হিন্দুধর্মে সিঁদুর বিবাহিতা নারীর প্রতীক।
4. গুরুদেবকে ভগবানের মত পূজা করা হয় কেন? গুরুদেব কি ভগবান?
উত্তরঃ গুরুদেব হচ্ছেন ভগবানের প্রতিনিধি এবং ভগবানের প্রিয়জন,তাই ভগবানের মতো পূজা করা হয়।
5. ভগবানের সঙ্গে এবং শিষ্যদের সম্পর্ক হিসাবে গুরুদেব নিজেকে কিভাবে দেখেন?
উত্তরঃ ভগবানের সঙ্গে শিষ্যের সম্পর্ক হিসাবে গুরুদেব নিজেকে নিত্য সংযোজনকারী হিসাবে দেখেন।
6. গুরু পরম্পরায় সদ্গুরুরা নিজের মন মতন উপদেশ দেন না কিভাবে উপদেশ দেন? শাস্ত্রে স্বয়ং ঈশ্বর যা বলেছেন, আজকের গুরু পরম্পরায় সদ্গুরুরা সেই একই কথা উপদেশ দেন?
উত্তরঃ হ্যাঁ। গুরু পরম্পরায় সদ্গুরুরা শাস্ত্রে (বেদা-বেদাঙ্গ-বেদান্ত-গীতা ও ভাগবত সিদ্ধান্ত) স্বয়ং ঈশ্বর যা বলেছেন তা আজকের গুরু পরম্পরায় সদ্গুরুরা সেই একই কথা উপদেশ দেন।
7. একজন শিষ্যের যোগ্যতা ও দায়িত্ব কি কি?
উত্তরঃ শিষ্যের যোগ্যতা ও দায়িত্ব হচ্ছে গুরুদেবের শ্রীপাদপদ্মে আত্মসমর্পণ করে তাঁর আদেশ ও উপদেশ অনুসারে ধর্মঅনুশাসন(শাস্ত্রে স্বয়ং ঈশ্বর যা বলেছেন) প্রতিপালন করা অতি আবশ্যক
যিনি সত্যকে জানিয়া - সত্যের ধ্যান ,জ্ঞান এবং সত্য লাভের আচরণ এবং যিনি নিজের জীবনকে সত্য মার্গে শাস্ত্রসম্মতভাবে পরিচালনা করিয়াছেন তাহাকেই শাস্ত্রে সৎ ব্যাক্তি বলিয়াছেন। এইরকম শাস্ত্রলক্ষন সম্পন্ন সৎ ব্যাক্তির নিকট হইতে শাস্ত্র কথা বা ঈশ্বরতত্ত্ব কথা শ্রবণ করাকে উপদেশ বা শাস্ত্রীয় পরামর্শকে সৎ সঙ্গ বলে। শাস্ত্রীয় সৎ ব্যাক্তির স্বাত্তিক আলোচনা বা উপদেশ সূর্যের জ্যোতির মতন অজ্ঞান অন্ধকারকে নাশ করে ইহা স্বাত্তিক আনন্দবর্ধক , বিচারবর্ধক , জ্ঞানবর্ধক , বুদ্ধি ও বিবেকবর্ধক। সৎ ব্যাক্তি যদি উপদেশ নাও দেয় তবুও তাঁর সঙ্গে সঙ্গলাভের দ্বারা বহু সৎ কর্মের শিক্ষা লাভ হয়। অথবা যে কোনো বিষয়ের কার্যস্থলে বা কাজ করতে করতে সৎ ব্যাক্তির সাথে যে কথা বার্তা হয় সেগুলির মধ্যে প্রচ্ছন্নভাবে উপদেশ থাকে। অর্থাৎ, সৎ ব্যাক্তি বা প্রকৃত সাধু সঙ্গ কার্যবশে হোক বা মৌনবশেই হোক আর উপদেশ বশেই আত্মউন্নতির পথে সর্বদা জ্ঞান উৎপন্ন হয়। মনই মনুষ্যগুণের বন্ধন এবং মোক্ষ এর কারণ। কামনা ও আসক্তি যুক্ত মনই বন্ধনের কারক হয়। আর নিষ্কাম ও নিরাশক্তি মোক্ষের কারক হয়। সৎ ব্যাক্তির বা প্রকৃত সাধুব্যাক্তির উপদেশ বা সঙ্গ নিরাশক্তি ও নিষ্কাম হবার প্রেরণা দেয়। তাই সৎ সঙ্গ ব্যাতিত মুক্তি লাভের কোনো উপায় নেই। তাই আত্মউন্নতিতে আগ্রহবান ব্যাক্তি সযত্নে সর্বদা সৎসঙ্গ লাভের চেষ্টা করিবে।জীবনে যখনই সময় হইবে সৎ সঙ্গ বা সাধুসঙ্গ করা উচিত নিজের আত্মউন্নতির জন্য।
মানুষের হৃদয়ের পাঁচটি পর্যায় মানুষের হৃদয়ের পাঁচটি স্তর রয়েছে: অন্ধকার, চালিত, স্থির, নিবেদিত এবং শুদ্ধ। হৃদয়ের এই বিভিন্ন অবস্থা দ্বারা মানুষ শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, এবং তার বিবর্তনীয় অবস্থা নির্ধারিত হয়। অন্ধকার হৃদয় মানুষের অন্তরের অন্ধকার অবস্থায় মানুষ ভুল ধারনা করে; তিনি মনে করেন যে সৃষ্টির এই স্থূল বস্তুগত অংশটিই একমাত্র প্রকৃত পদার্থ এবং এর বাইরে আর কিছুই নেই। চালিত হৃদয় মানুষ যখন একটু আলোকিত হয় তখন সে তার জাগ্রত অবস্থায় জড়ো হওয়া বস্তুগত সৃষ্টির সাথে সম্পর্কিত তার অভিজ্ঞতার তুলনা করে, স্বপ্নে তার অভিজ্ঞতার সাথে, এবং পরেরটিকে নিছক ধারণা বলে বুঝে, আগেরটির সারগর্ভ অস্তিত্ব সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করতে শুরু করে। তার হৃদয় তখন মহাবিশ্বের প্রকৃত প্রকৃতি জানতে চালিত হয় এবং তার সন্দেহ দূর করার জন্য সংগ্রাম করে, সত্য কী তা নির্ধারণ করার জন্য প্রমাণের সন্ধান করে। স্থির হৃদয় যদি একজন মানুষ বাপ্তিস্মকৃত অবস্থায় চলতে থাকে, পবিত্র স্রোতে নিমজ্জিত থাকে, তবে সে ধীরে ধীরে একটি মনোরম অবস্থায় আসে যেখানে তার হৃদয় বাহ্যিক জগতের ধারণাকে সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করে এবং অভ্যন্তরীণ জগতের প্রতি স্থির হয়। নিবেদিত হৃদয় এই নিবেদিত রাজ্যে মানুষ, ভুর্লোকা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে, আধ্যাত্মিক বৈশিষ্ট্যের জগত, স্বরলোকে আসে, চৌম্বকীয় আধ্যাত্মিক জগত, তখন সে চিত্ত, হৃদয়, সৃষ্টির আধ্যাত্মিক চৌম্বকীয় তৃতীয় অংশ বুঝতে সক্ষম হয়। শুদ্ধ হৃদয় মানুষ ক্রমাগত তার নিজেকে আরও উপরে তুলে নেয় আধ্যাত্মিকলোকে- তারপর সমস্ত অজ্ঞতা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়, তার হৃদয় একটি শুদ্ধ অবস্থায় আসে, সমস্ত বাহ্যিক ধারণা থেকে শূন্য। তারপর মানুষ আধ্যাত্মিক আলো, ব্রহ্ম( মহাবিশ্বের আসল ), যা সৃষ্টির শেষ এবং চিরন্তন আধ্যাত্মিক অংশ বুঝতে সক্ষম হয়। এই পর্যায়ে মানুষকে ব্রাহ্মণ শ্রেণীর বলা হয়।
যে যোগ সাধনা শুধু ঈশ্বর প্রাপ্তি , ব্রহ্মজ্ঞান প্রাপ্তি , ব্রহ্মস্থিতি লাভ ,মোক্ষ প্রাপ্তি , পরাভক্তি প্রাপ্তি, আত্মজ্ঞান লাভ , পরমাত্ম জ্ঞান লাভ , নিঃস্বার্থ লোক কল্যাণ , নিঃস্বার্থ মানব কল্যাণ , নিঃস্বার্থ জীব কল্যাণ , নিষ্কাম ভাব শুদ্ধি , এবং মনুষত্বের পূর্ণ বিকাশ এর জন্যে করা হয় - সেই যোগ সাধনাকেই একমাত্র নিষ্কাম যোগ সাধনা বলে l উপরুক্ত ওই ক-একটি কারণ ছাড়া যদি অন্য কোনো কামনা-বাসনা নিয়ে যোগ সাধনা করে তাকে নিষ্কাম যোগ সাধনা বলে না l যদি কেও কোনো কামনা-বাসনা নিয়ে যোগ সাধনা করে - তাকে শাস্ত্রে প্রকৃত যোগী না বলে ধর্মের গ্লানি স্বরূপ ব্যাক্তি বলেছে
কেও যদি ঈশ্বর বা ভগবান বা পরব্রহ্ম বা পুরুষোত্তম বা পরমাত্মা এর কাছে যে কোনো শুদ্ধ ভাব নিয়ে , কোনো কামনা তো দূরের কথা -নিজের জন্যে মোক্ষ পর্যন্ত কামনা না করে , তিনি কি চান বা তিনি কি করলে খুশি হন বা কিভাবে তার সেবা করলে তার বিনোদন হয় -তা জেনে যতই কষ্ট হোক তা পরিপূর্ণ রূপে করাকেই নিষ্কাম ভক্তি বলে l এই নিষ্কাম ভক্তির পুন্ পুন্ অভ্যাসে সাধক পরা ভক্তি লাভ করে l
শুধু ঈশ্বর প্রাপ্তি , ব্রহ্মজ্ঞান প্রাপ্তি , ব্রহ্মস্থিতি লাভ ,মোক্ষ প্রাপ্তি , পরাভক্তি প্রাপ্তি, আত্মজ্ঞান লাভ , পরমাত্ম জ্ঞান লাভ , নিঃস্বার্থ লোক কল্যাণ , নিঃস্বার্থ মানব কল্যাণ , নিঃস্বার্থ জীব কল্যাণ , নিঃস্বার্থ পরোপকার , নিঃস্বার্থ দেশ ভক্তি , নিঃস্বার্থ গুরু-মা-বাবা সেবা , নিঃস্বার্থ সমাজ সেবা , মনুষত্বের বিকাশ ইত্যাদির চিন্তাগুলির মধ্যে কোনো প্রকারের চিন্তা যার মধ্যে কায়-মন-বাককেই আপনা-আপনি অন্তর থেকে সহজাত ভাবে হয় , তাকেই একমাত্র নিষ্কাম ভাবনা বলে l
গুরু= তপস্যাকালীন পবিত্র ব্রাহ্মণের অন্ন গ্রহণ করিয়া তপস্যা করাই কর্ত্তব্য ৷
শিষ্য= তপস্যাকালীন অন্নবিচার না করিলে তপস্যার ক্ষতি হয় ?
গুরু= হাঁ ৷ ব্রাহ্মণের অন্ন অমৃত,ক্ষত্রিয়ের অন্ন ক্ষীর,বৈশ্যের অন্নই অন্ন,শূদ্রান্ন রুধির(রক্ত) বলিয়া কথিত হয় ৷ যাহারা শূদ্রের অন্নরসে শরীর পোষণ করে,দ্বিজোত্তম হইলেও দেহাবসানে তপস্যা ও জ্ঞানহীন হইয়া তাহারা কাক ও গধ্র হয় ৷ মানবগণের পাপ অন্ন আশ্রয় করিয়া থাকে ; অতএব যে যাহার অন্ন ভোজন করে,সে তার পাপই ভক্ষণ করিয়া থাকে ৷
বিশেষতঃ যতিধর্ম্মানুসারে যাঁহারা তপস্যা করেন,তাঁহারা লোভের বশবর্ত্তী হইলে নিশ্চিতই নরকে গমন করিয়া থাকেন ৷
শিষ্য= এই অন্নদোষ হইতে রক্ষার কোন উপায় নাই ?
শিষ্য= শূদ্র এমন কি অপরাধ করিয়াছেন যে তাঁহাদের অন্ন রুধির সদৃশ ?
গুরু= অপরাধ না থাকিলে শূদ্র কর্ম হয় না ৷ ব্যাপার আর কিছু নহে ৷ মানুষ যতক্ষণ গুণাতীত হইতে না পারিবে,ততক্ষণ শান্তিলাভ করিতে পারিবে না ৷ শূদ্র তমোগুণপ্রধান,তাঁহাদের অন্ন তমোগুণকেই বর্দ্ধিত করিয়া দেয়,তজ্জন্য গুণাতিক্রমণ হয় না ৷
কর্ম্মবশে মানব - নিজের বর্ণ নির্ণয় করিয়া থাকে ৷ আগেই আলোচনা করা হয়েছে যে কেউ জন্মগতভাবে কোন বর্ণ ( ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়-বৈশ্য-শূদ্র) হয় না কর্ম গুণ এবং যোগ্যতা দ্বারা তার বর্ণ নিয়ম অর্থাৎ ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়-বৈশ্য-শূদ্র বর্ণ বলে ধরা হয় ৷
****************************************************************************************************************************************
শ্রীমদ্ভাগবতে (১১/২৯/৬) বলা হয়েছে-
নৈবোপযন্ত্যপচিতিং কবয়স্তবেশ
ব্রহ্মায়ুষাপি কৃতমৃদ্ধমুদঃ স্মরন্তঃ।
যোহন্তর্বহিস্তনুভৃতামশুভং বিধুন্ব-
ন্নাচার্যচৈত্ত্যবপুষা স্বগতিং ব্যনক্তি।।
অর্থাৎ “হে ঈশ্বর, তুমি বাইরে আচার্যরূপে এবং অন্তরে অন্তর্যামীরূপে দেহধারী জীবের অশুভ অর্থাৎ ভক্তিপ্রতিকূল বিষয়-বাসনা নাশ করে তার গতি প্রদান করো। অতএব তোমাতে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ভক্তিরূপ পরমানন্দে নিমগ্ন হয়ে ব্রহ্মজ্ঞানসম্পন্ন কবিগণ কল্পান্তকাল তোমার সেবায় নিযুক্ত থেকেও তোমার উপকারের কথা স্মরণ করে কিছুতেই ঋণমুক্ত হতে পারেন না।
রথে চ বামনং দৃষ্ট্বা পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে” রথে জগন্নাথকে দর্শন করলে তার ‘পুনর্জন্ম হয় না।
যো যো যাং যাং তনুং ভক্তঃ শ্রদ্ধয়ার্চিতুমিচ্ছতি৷
তস্য তস্যাচলাং শ্রদ্ধাং তামেব বিদধাম্যহম্৷৷৭/২১ অর্থ: পরমাত্মারুপে আমি সকলের হৃদয়ে বিরাজ করি। যখন কেউ দেবতাদের পূজা করতে ইচ্ছা করে আমি তাদের শ্রদ্ধানুসারে সেই সেই দেবতাদের প্রতি ভক্তি বিধান করি।
**********************************
তাই আগে ধর্ম শিক্ষা ও উপদেশ গ্রহন করে দৃঢ় ভাবে ধর্ম আচরন করে তবেই নিজেকে সাধন-সমাধী-মোক্ষ এর উপযুক্ত তৈরী করা সম্ভব হয়।
সর্বদাই অসৎসঙ্গ ত্যাগ করতে হবে। স্ত্রীর প্রতি আসক্ত এবং শ্রীভগবানের প্রতি ভক্তিহীন ব্যক্তিরাই অসাধু। এই অসৎসঙ্গ ত্যাগই অনুশাসন এবং আচার।
বিবেক+ বিচার+ বৈরাগ্য+ ত্যাগ = আত্মশক্তি( আত্মবল / তেজ)
1. ধর্ম অর্থ কাম মোক্ষ এই চারটি যদি কোন মনুষ্য নিজের জীবনে লাভ করতে সমর্থ হয় তাকে পূর্ণ বা সফল মনুষ্য জীবন বলে
2. সত্ত্বগুণ ও বিশুদ্ধ চিত্তের অধিকারী হলেই যে কোন ব্যক্তি তত্ত্বজ্ঞান ও ভগবৎ কৃপা লাভ করতে পারেন। চিত্তশুদ্ধি না ঘটলে কেউই ভগবৎ-তত্ত্বজ্ঞান লাভ করতে পারেন না!
3. বিদ্যা সনাতন । এ গণিতশাস্ত্রের মত একেবারে অভ্রান্ত; যোগবিয়োগের সহজপ্রণালীর মত সনাতন বিদ্যা বিধিও কখনও নষ্ট হতে পারে না । একজন প্রকৃতশযোগী - যাঁর মধ্যে শ্রদ্ধাভাক্তি ও শুদ্ধজ্ঞানের সমন্বয় ঘটেছে - তাহলে তিনি এর বিদ্যা বিধিও সবই পুনরায় করে ফেলতে পারবেন ।''
4. শুধু কোন বই বা পুস্তক পড়ে আত্মবিদ্যা বা ব্রহ্মবিদ্যা সম্বন্ধে কিঞ্চিত মাত্র জ্ঞান হয় না কারণ এটি সম্পূর্ণ গুরুমুখী বিদ্যা !
5. শাস্ত্র বলে যে যে অবস্থায় যোগীর মন হৃদয়ে নিবদ্ধ থাকে এবং যোগী বহির্জগতের প্রতি উদাসীন থাকে তাকে “যোগঅবস্থা” বলে। এই সময়ে যোগী বাইরের জগত এরদিকে তাকায়, কিন্তু সে সম্পূর্ণ অন্তর্মুখী থাকে । যোগীর বাহ্যিক দৃষ্টি তখন কিছু উপর দিকে চোখের তারা স্থির থাকে এবং চোখের পলক পড়ে না বা অনেক কম পড়ে । এই “যোগঅবস্থা” একটি ঈশ্বরের আশীর্বাদ. এই অবস্থায় যোগী বাহ্যজগত সম্বন্ধে প্রায় সর্বজ্ঞ এবং অন্তর্জগত ব্রহ্ম-ভাবনায় পরিপূর্ণ।
6. মায়া আকাশাদি সমস্ত জগৎ ব্যাপিয়া রাক্ষসীর ন্যায় গ্রাস করিয়া রহিয়াছে। ইহার ভেদ হইলেই সত্য দৃষ্টিগোচর হইয়া থাকে। ইহাকে ভেদ করিতে সমর্থ হইলে সেই ব্যক্তির জগৎ মিথ্যা দর্শন হইবেই।
7. জড়জগতের যে কোন বস্তু বা বিষয়ের উপর আকাঙ্ক্ষা আত্ম-উপলব্ধির পথে একটি বড় বাধা। মনের নিয়ন্ত্রণ মানে আসলেই ইচ্ছা ত্যাগ করা।
8. শুধু শারীরিক রূপ- সৌন্দর্য বা শারীরিক বল নয়, ডিগ্রী নয়, ধন নয়, পদ নয়, পদাধিকার নয়, সামাজিক সম্মানবোধ-পদ নয়,বাড়ি-গাড়ি-জমি জায়গা- সম্পত্তি নয়, কে কত দেশ-বিদেশ ঘুরেছে সেটা নয়, কে দেশে থাকে -কে বিদেশে থাকে সেটা নয়, মানুষের মূল কর্ম-চরিত্রই হল মনুষ্যত্বের পরিচয়
9. এই মোট 84 লক্ষ জীবনযাত্রা করার পর দুর্লভ মনুষ্য জীবন প্রাপ্ত হয়। এই মনুষ্য জন্মে 10 লক্ষ বৎসর প্রাকৃতিক বিবর্তনের পর কোনো মনুষ্য কদাপি ধর্ম পথে যাত্রা শুরু করে এবং পরম মুক্তি প্রাপ্ত হয়। 10 লক্ষ মনুষ্য শরীরে প্রাকৃতিক বিবর্তনের পর তবেই কেউ বেদান্ত আলোচনা বা ধর্ম পথে চলিতে সমর্থ হয়। যারা প্রকৃত কোনো সাধকের কাছে শ্রদ্ধাপূর্বক বেদান্ত শোনে এবং বাস্তবিক জীবনে সেই ধর্ম, আচার পালন করতে সমর্থ হয়, তাতে নিশ্চিত তারা উপরোক্ত বিবর্তন অবশ্যই পার করে এসেছেন।
10. "মাতা-পিতা হতে শরীর এর জন্ম হয়,কিন্তু প্রকৃত জন্ম বা প্রকৃত জীবন শুরু হয় যখন কেউ গোবিন্দের কৃপায় যথাযথ সদগুরু গ্রহণ করেন এবং তাঁর সেবায় নিযুক্ত হন। তখন স্বগৃহে,ভগবদ্ধামে ফিরে যাওয়ার পথ খুলে যাবার সব বিদ্যা গুরুর নিকট থেকে প্রাপ্তি হয় আর তখনই পূর্ণ আনন্দ, পূর্ণ জ্ঞান এর প্রাপ্তি হয়। "
11. তৃষ্ণা মিটাতে যেমন জলের প্রয়োজন তেমনি মুক্তিলাভের জন্যে বেদান্ত জ্ঞান এর প্রয়োজন। বেদান্ত জ্ঞানহীন ব্যক্তি কখনোই কোনোভাবেই মুক্তির পথ প্রাপ্ত হয় না , তাই মুক্তির জন্যে বেদান্ত জ্ঞান শিক্ষা অতি আবশ্যক।
12. প্রেম উন্নতি দেয়, উচিৎ অনুচিতের জ্ঞান দেয়। প্রেম আর মোহের মাঝে পার্থক্য থাকে। বাস্তবে যা প্রেম, তা কোন মোহ নয়। প্রেমের জন্ম দিব্যজ্ঞান করুণা থেকে হয়, আর মোহের জন্ম কামনা-আসক্তি এবং অহংকার থেকে। প্রেম মুক্তি দেয়, মোহ আবদ্ধ করে। প্রেম ধর্ম, আর মোহ অধর্ম।
13. বীরপুরুষরাই বা বীরনারীরাই যোগদিক্ষা লাভের যোগ্য।’ আর যাহারা সর্বাপেক্ষা বীর, শুধু তাহারাই মুক্তিলাভের যোগ্য।
14. ঐশ্বরিক অনুসন্ধানে সাফল্যের জন্য, জীবনের অন্যান্য দিকগুলির মতো, ঈশ্বরের আইন (বৈদিক অনুশাসন )অনুসরণ করা আবশ্যক। একটি অতি সাধারণ স্কুলে উপলব্ধ জাগতিক জ্ঞান বুঝতে, আপনাকে একজন শিক্ষকের কাছ থেকে শিখতে হবে যিনি এটি জানেন। তাই আধ্যাত্মিক সত্য বোঝার জন্য একজন আধ্যাত্মিক শিক্ষক বা গুরু থাকা প্রয়োজন, যিনি ঈশ্বরের আইন (বৈদিক অনুশাসন )এবং ঈশ্বরকে জানেন।
15. ক্ষণস্থায়ী জিনিস নিয়ে কাল্পনিক ও ভবিষৎ চিন্তা করে সময় নষ্ট করবেন না। কে তার অতীত কর্মের প্রভাব অস্বীকার ও এড়াতে পারে? আপনার একমাত্র কর্তব্য হল অতীত এবং ভবিষ্যতের সমস্ত কাল্পনিক চিন্তা বাদ দিয়ে বৈদিক অনুশাসনের উপর মনোযোগ দিয়ে আপনার বর্তমান কর্তব্যের কাজ গুলি কর্তব্যজ্ঞানে করা।
16. আমাদের জড়জগতের সমস্ত কোলাহল পেরিয়ে আপনার হৃদয়ের অভ্যন্তরীণ অভয়ারণ্যের মধ্যে নীরবতা হলো একটা আনন্দময় আর্শিবাদ রাজ্য। নীরবতা এমন একটি অদৃশ্য আর্শিবাদশক্তি যা জীবনের হৃদয়ের অভ্যন্তরীণ প্রত্যক্ষ্য আনন্দের ঝর্ণা স্বরূপ । সাধকের প্রথম অবস্থায় সর্বদা- এই জড়জগতের যতই ভয়ঙ্কর বা মোহকর বা বিভ্রান্তিকর বহিরাগত শব্দ হোক না কেন- তারমধ্যে থেকে নির্জনে নীরবতা অভ্যাস তুলনামূলক কঠিন হয় ঠিকই কিন্তু তারমধ্যেও আত্মজ্ঞানে ইচ্ছুক সাধক এর বিশ্বের তাড়াহুড়োর কোলাহল মধ্যে নির্জনতার নীরবতাতে অবস্থান এর অভ্যাস এর অতিপ্রয়োজন আছে ।
17. এই পৃথিবী ক্ষণস্থায়ী; সর্বব্যাপী স্বাধীনতার ডানায় উড়তে আমাদের পার্থিব দাসত্ব থেকে মুক্ত হতে হবে। আমরা আমাদের দিনগুলি পার্থিব প্রলাপে কাটিয়েছি, ঈশ্বর, একমাত্র বাস্তবতা, যিনি প্রকৃতির বহু ছদ্মবেশে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন, তার প্রতি আমরা বিস্মৃত। তাঁর অসামান্যতা উপলব্ধি করুন এবং তাঁর মহিমা জানুন ! সময় এত দ্রুত চলে যাচ্ছে। এখন আপনার যাত্রা শুরু করুন; এবং আপনি ঐশ্বরিক আবাসে উড়ে যাওয়ার সাথে সাথে অন্যদের নিয়ে যান।
18. যে ব্যক্তি ঈশ্বর নির্ধারিত গুরুর দেওয়া জ্ঞান এবং উপদেশ এর মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না বা গ্রহণ করে না বা শিক্ষা গ্রহণে অবহেলা করে বা শিক্ষা গ্রহণের নামে অভিনয় করে বা গুরুকে সন্দেহ / রাগ / অভিমান করে সে এই জীবনে কোনো কারণেই আত্মজ্ঞান বা ঈশ্বরকে প্রাপ্ত হতে পারবে না। তার অন্য জন্মে এমন আরও একটি সুযোগ পাওয়ার আগে তাকে বেশ কয়েকটি জন্ম অন্তত বহু বাধা-বিঘ্ন-দুঃখ নিয়ে কাটাতে হবে ।তাই ইহ জীবনে 1 সেকেন্ডও সময় নষ্ট না করে দৃঢ় ভাবে বৈদিক অনুশাসন ও গুরুর দেওয়া জ্ঞান এবং উপদেশকে পূর্ণ আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করা উচিত যাতে এই জন্মেই -এই দেহেই আত্মজ্ঞান বা ঈশ্বর প্রাপ্তি ঘটে।
19. যেমন মানব শরীরে বাল্য থেকে যৌবন এলে শরীরের রূপ ও গঠন বদলে যায়-কাহাকেও চেষ্টা করিয়ে বদলাতে হয় না !তেমনি বেদান্ত অনুশাসনে যখন মানুষ এর অন্তঃকরণের সাথে পূর্ণরূপে চলে তখন আপনা আপনি মানুষের চিন্তাধারা,অন্তরদৃষ্টিকোণ, বিচারক্ষমতা, কথাবলার ও সবরকম ব্যবহারের এবং মানবিক চরিত্রের ধরন বদলে যায়-- কাহাকেও চেষ্টা করিয়ে বদলাতে হয় না !......ইহাই সত্য। যার বদলায় নি তাকে বোঝা যায় যে সে বেদান্ত অনুসাননে বা শাস্ত্রঅনুসারে বা গুরুবাক্য অনুসারে চলে না--শুধু চলার অভিনয় করে মাত্র।
20.পরমেশ্বর ভগবান কেবল তার ভক্তের ভাবটুকুই গ্রহণ করে থাকেন, তাই ভগবানকে বলা হয় "ভাবগ্রাহী জনার্দনঃ" যার প্রীতিভাব বেশি ভগবান কেবল তার কায়-মন-বাক্য-কর্মের দ্বারা ভক্তিতেই প্রীত হন।