সৎগুরু জ্ঞান
সেটা সাধনসিদ্ধ / কৃপাসিদ্ধ /নিত্যসিদ্ধ - যেই হোক না কেন অথবা ভক্তিমার্গ / জ্ঞানমার্গ / তন্ত্রমার্গ / কর্মমার্গ / সেবামার্গ / যোগমার্গ বা অন্যান্য যে কোন সাধন মার্গ বা পথই হোক না কেন ---> ব্রহ্মজ্ঞান ও ব্রাহ্মীস্থীতি ব্যতিত সম্যক মোক্ষ সম্ভব নয়। ইহায় বেদান্তর মোক্ষ সমন্ধীয় মূল বাক্য এবং সকলের জন্য সমান ভাবে প্রজয্য।।
জীব যখন পূর্ণ চিত্তবৃত্তি নিরোধ বা চিত্তবৃত্তি শুন্য করে জীবাত্মাকে সম্পূর্ণ রূপে পরমাত্মাই লীন করে ত্রিগুনরোহিত হয়ে ও অভয়পদ এবং অচ্যুত ধর্ম স্থিতি কেই
ব্রাহ্মীস্থীতি / নির্বিকল্প -নির্বীজ রুপী সম্যক সমাধী বলে ll
ব্রাহ্মীস্থীতিকেই কোন কোন শাস্ত্রে নির্বিকল্প -নির্বীজ রুপী সম্যক সমাধী বলেছেন।
ইহায় সিদ্ধপুরুষ বা মহাপুরুষ ব্রহ্মজ্ঞানী অবস্থা বলেছে শাস্ত্রে।।
ইহায় মনুষ্য জীবনের পূর্ন লক্ষ্য।
ইহায় আমরা শাস্ত্র অনুসারে স্তর থেকে স্তর আলোচনা করার চেষ্টা করছি।
ব্রহ্মজ্ঞান ও ব্রাহ্মীস্থীতি লাভের তিনটি ক্রম। যথা:- 1. ধর্ম 2. সাধনা 3.সমাধি।
এই তিনটি ক্রম বা স্তর পার করলে তবেই ব্রহ্মজ্ঞান ও ব্রাহ্মীস্থীতি লাভ সম্ভব হয়।
1.ধর্ম= যম + নিয়ম + গুরুসেবা + গুরু আদেশ পালন + মা-বাবা সেবা+অসৎসঙ্গ পূর্ণরূপে ত্যাগ+ সামাজিক-সাংসারিক প্রতিটি দায়িত্ব সৎ পথে থেকে পূর্ন বিবেকের সঙ্গে প্রতিপালন + দেশভক্তি + জীব-মানব কল্যাণ চিন্তা ও কর্ম এবং আচরন।
2.সাধনা = আসন অভ্যাস + মুদ্রাক্রিয়া তপ: + মন্ত্রজপ + নির্জনতা / একাকিত্ব অভ্যাস + প্রানায়াম + প্রত্যাহার + ধারনা ক্রিয়া + ধ্যানস্থিতি । ইহায় মোট সাধন স্তর বলে।
3.সমাধি = জীবাত্মা ও পরমাত্মা এর লীন অবস্থা। এই অবস্থায় ব্রহ্মজ্ঞান ও ব্রাহ্মীস্থীতি লাভ হয়ে মোক্ষ লাভের পথ উন্মোচিত হয়। ইহায় কাম্য।
যদি কেউ ব্রহ্মজ্ঞান ও ব্রাহ্মীস্থীতি বা মোক্ষ লাভে পূর্ন আন্তরিক হয়, তার জন্য শাস্ত্রসম্মত পথের আলোচনা সবার জন্য সমান। কিন্তু শাস্ত্র পথ বাদ দিয়ে নিজের মনমতো পথে কারো আত্মজ্ঞান হয় না -- শ্রীমদ্ ভগবৎ গীতা বাক্য
*************************************************************************************************************
এক সাধারণ শিক্ষকরা আপনাকে সমস্ত জড় বা জাগতিক জীবনের ব্যক্তিগত সুবিধার কথা বলবেন বা শিখবেন ।
কিন্তু একজন সৎগুরু কেবল সত্যই বলবেন "জড় বা জাগতিক জীবনের কোন ব্যক্তিগত সুবিধা নেই"- তবে প্রকৃত জ্ঞান সেটাই যেখানে ব্যক্তিত্বের (অহংকারের) মৃত্যু হয়। যেমন আলো আপনাকে কোনো ব্যক্তিগত সুবিধা দেয় না কিন্তু যা দেবে তা সার্বজনীন কল্যাণ এর জন্যে আলোর বিকাশ , ঠিক সেই রকম ভাবে একজন সৎগুরু কখনোই জড় বা জাগতিক জীবনের ব্যক্তিগত সুবিধার কথা বলবেন বা শিখবেন না কিন্তু যা শেখাবেন তা হলো ব্যক্তিত্বের (অহংকারের) মৃত্যু ।
বেশিরভাগ লোক যারা একজন জ্ঞানবান সৎগুরুর আকাঙ্ক্ষা করে তারা জ্ঞান লাভ করতে চান, আবার তার সঙ্গে তারা তাদের ছোট্ট সসীম জড় বা জাগতিক জীবনের ব্যক্তিত্বের (অহংকারের) অস্তিত্বে মূর্ত করতে।
---এটা কি সৎগুরুর শিক্ষায় সম্ভব ?????
আপনি কি সত্যিই এই জন্য প্রস্তুত? জড় বা জাগতিক জীবনের কোন ব্যক্তিগত সুবিধা ছাড়া নিজ ব্যক্তিত্বের (অহংকারের) মৃত্যু ???? ......খুব কম হয়।
এই কারণেই প্রকৃত সৎগুরুর খুব কমই প্রকৃত সৎশিষ্য হয় যা খুব বিরল।