বিবাহিত মহিলা দিকে শাঁখা-পলা, সিঁদুর এবংলোহা ধারণ করা উচিত কেন ???
প্রাচীন যুগ থেকে শুরু করে বর্তমান প্রজন্মেও বিবাহিত মহিলারা শাঁখা-পলা ব্যবহার করেন স্বামীর মঙ্গল কামনায়। শাঁখা-পলা এক জন মহিলার বৈবাহিক জীবনের চিহ্ন। হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, শাঁখা-পলা ছাড়া বিয়ে অসম্পূর্ণ থেকে যায়।হিন্দু ধর্মের প্রতিটি বিষয়ের পেছনেই কোন না কোন নিগুঢ় অর্থ বিদ্যমান।
তেমনি শাঁখা-পলা, সিঁদুর আর লোহা আমাদের হিন্দু বিবাহিত নারীরা পরে আসছে অনেক আগে থেকে। তবে বর্তমানে এগুলা না পরা অনেকটা আধুনিকতার স্বরূপ হয়ে দাড়াচ্ছে কারো কারো কাছে। তাই আসুন আজ আমরা দেখে নেই শাঁখা সিঁদুর ও লোহা পরার কারন আর কেন এটা পরা উচিৎ।
শাঁখা-পলা, সিঁদুর ও লোহা ব্যবহারের তিনটি কারণ আধ্যাত্মিক, সামাজিক ও বৈজ্ঞানিক।
আধ্যাত্মিক কারণ : শাঁখার সাদা রং- সত্ত্ব, সিঁদুরের লাল রং -রজঃ এবং লোহার কাল রং- তম গুণের প্রতীক। সংসারী লোকেরা তিনটি গুণের অধীন হয়ে সংসারধর্ম পালন করে।
সামাজিক কারণ : তিনটি জিনিস পরিধান করলে প্রথম দৃষ্টিতেই জানিয়ে দেয় ঐ রমণী একজন পুরুষের অভিভাবকত্বে আছেন। সে কারণেই অন্য পুরুষের লোভাতুর, লোলুপ দৃষ্টি প্রতিহত হয়। স্বামীর মঙ্গল চিহ্ন তো অবশ্যই।
বৈজ্ঞানিক কারণ : রক্তের ৩টি উপাদান শাঁখায় ক্যালসিয়াম, সিঁদুরে মার্কারি বা পারদ এবং লোহায় আয়রণ আছে। রক্তের ৩টি উপাদান। আর্য ঋষিগণ হিন্দু ধর্মের প্রতিটি আচার অনুষ্ঠানেই বৈজ্ঞানিক প্রয়োজনীয়তাকে প্রাধান্য দিয়ে আচার বা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করেছেন।
যুক্তিগত ভাবে পলার বেশ কিছু দ্রব্যগুণ আছে। শরীরে রক্তাল্পতার মতো সমস্যা রুখতে বা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পলার বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। সেই কারণেই পলা পরা হয়। এমনকি এই ক্ষেত্রে পলা ভেজানো জলও বেশ উপকারী। আবার এও বলা হয় যে, পলা ধারণ করলে মহিলাদের রজঃস্রাবজনিত সমস্যার নিরাবণ হয়।
তাই যদি কেউ নিজেকে কর্মকাণ্ডের ও সামাজিকভাবে এবং শাস্ত্রগতভাবে উপযুক্ত মনুষ্য এবং মনুষ্যত্বের রাস্তায় চলার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে যে কোন বিবাহিত মহিলাকে এগুলি অবশ্যই ধারণ করা উচিত । কারণ কর্মকাণ্ড হোক জ্ঞান কাণ্ড হোক ভক্তিযোগ হোক স্বাস্থ্য অনুসারে না চলে নিজের বুদ্ধিতে চললে অবশ্যই তার দুর্গামি পরিণাম নিজেকে এবং সামাজিকভাবে এবং প্রকৃতিগতভাবে এবং পরিবারকেও ভোগ অবশ্যই করতে হয়। তাই মনুষত্ব বিকাশের উদ্দেশ্যে কর্মকাণ্ড বা সামাজিক নিবন্ধন যুক্ত শাস্ত্রীয় যে বিধান তাকে মেনে চলা প্রত্যেকের পরম কর্তব্যের মধ্যে পড়ে ।