জয়ন্তী মহাদ্বাদশী
শুক্লপক্ষের দ্বাদশী তিথিতে রোহিণী নক্ষত্র যুক্ত হলে সেই পবিত্র দ্বাদশীকে ‘জয়ন্তী’ বলা হয়। এই প্রসঙ্গে শ্রীব্রহ্মপুরাণে বর্ণিত হয়েছে যে, সমস্ত পাপহরণকারী এই তিথিতে শ্রীহরির পূজাসহকারে ব্রত- উপবাসে সাত জন্মের পাপ দুর হয়ে যায়।
যে মানুষ বেঁচে থাকতেও এই ব্রত পালন করে না, তার জীবন বৃথা। এই তিথিতে শ্রীকৃষ্ণের পূজা বিশেষভাবে করতে হয়।
অবতারসহস্রাণি করোষি মধুসূদন।
ন তে সংখ্যাবতারাণাং কশ্চিজ্জানাতি বৈ ভুবি।।
দেবা ব্রহ্মাদয়ো বাপি স্বরূপং ন বিদুস্তব।
অতস্ত্বাং পূজয়িষ্যামি মাতৃরুৎসঙ্গসংস্থিতম্।।
বাঞ্চিতং কুরু মে দেব দুস্কৃতং চৈব নাশয়।
কুরুষ্ব মে দয়াং দেব সংসারর্তি-ভয়পহ।।
‘হে মধুসূদন! আপনি অসংখ অবতার গ্রহণ করেন। জগতে এমন কেই নেই যে আপনার সেসকল অবতারের গণনা করতে সমর্থ হয়। ব্রহ্মাদি দেবতাদের কাছেও আপনার স্বরূপ অজ্ঞাত।
জননীর কোলে অবস্থানরত আপনাকে আমি পূজা করি। হে দেব! হে ভবভয় মোচনকারী, আমার দুস্কৃতি নাশ অভীষ্ট প্রদান করে আমাকে কৃপা করুন।
এইভাবে ভক্তিসহকারে জয়ন্তী মহাদ্বাদশী পালন করলে একুশ পুরুষ পর্যন্ত উদ্ধার প্রাপ্ত হয়। শ্রীহরির অত্যন্ত প্রীতিকর এই ব্রতের অনুষ্ঠানে সকল মনোবাসনা পূর্ণ ও বিষ্ণুলোকে গতি হয়।
পাপনাশিনী মহাদ্বাদশী
শুক্লপক্ষের দ্বাদশী তিথিতে পুষা-নক্ষত্রের যোগ হলে সেই দ্বাদশীকে ‘পাপনাশিনী’ বলা হয়। ব্রহ্মপুরাণে বলা হয়েছে যে, মহাপুণ্য স্বরূপিণী এই তিথিতে মহারাজ সগর, ককুৎস্থ, ধন্ধুমার ও গাধি শ্রীহরির উপাসনা করে সসাগরা পৃথিবীর রাজা হয়েছিলেন।
এই ব্রত উপবাসে কায়িক, বাচিক, মানসিক, সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি লাভ হয়। পুষা-নক্ষত্রযুক্তা এই দ্বাতশীর উপবাসে এক হাজার একাদশীর ফল লাভ হয়ে থাকে। এই তিথিতে স্নান, দান, জপ, হোম, বেদধ্যয়ন আদি অনন্তগুণ ফল প্রদান করে।
যারা কোন জাগতিক ফল আকাক্ষা করেন না, তারা শ্রীহরির প্রীতিবিধানের জন্য এই ব্রত উপবাস পালন করবেন।