গঙ্গা সাগর স্নানের নিয়ম ও মন্ত্র
গঙ্গাকে সবচেয়ে পবিত্র নদী হিসাবে বিবেচনা করা হয়। গঙ্গা নদীতে স্নান করলে যে কোনও মানুষের সমস্ত পাপ নাশ হয়। গঙ্গার জল কখনও নষ্ট হয় না। গঙ্গা হেমাবতী, জাহ্নবী, মন্দাকিনী, অলকানন্দা, ত্রিপথগা ইত্যাদি নামেও পরিচিত।
গঙ্গা নদীতে স্নান করলে কি হয়?
গঙ্গা নদীতে পবিত্র স্নান করলে আত্মা পবিত্র হয় এবং আপনার সমস্ত পাপ ধুয়ে যায়, যা মোক্ষ বা আধ্যাত্মিক জ্ঞান লাভের দিকে পরিচালিত করে । ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে পবিত্রতার স্বর্গীয় উপাদান নিয়ে নদীটি স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে।
স্বপ্নে গঙ্গা স্নান করলে কি হয়?
স্বপ্নে নিজেকে গঙ্গা নদীতে স্নান করতে দেখা শুভতার প্রতীক বলে মনে করা হয়। স্বপ্ন বিজ্ঞান অনুসারে, জীবনের সমস্ত ঝামেলা দূর করার পাশাপাশি বিবাহিত জীবনের মধুরতা, ভবিষ্যত পরিকল্পনায় সাফল্যতা এবং জীবনে অপ্রত্যাশিত কিছু হওয়ার ইঙ্গিত দেয় এই জাতীয় স্বপ্নগুলি।
গঙ্গা স্নানের জন্য সেরা সময়:----
ভোরবেলা, যখন অমাবস্যা তিথি এখনও কার্যকর থাকে, পবিত্র স্নানের জন্য আদর্শ বলে বিবেচিত হয়। কারণ সকালের আচার-অনুষ্ঠানগুলি সর্বাধিক আধ্যাত্মিক উপকারিতা বহন করে বলে বিশ্বাস করা হয়, কারণ পরিবেশ শান্ত এবং সাত্ত্বিক থাকে।
গঙ্গা স্নান পূজা কিভাবে করতে হয়?
আমাদের "ব্রহ্মমুহুর্তে" (ব্রহ্মার সময়) নদীতে স্নানের জন্য যাওয়া উচিত এটি সূর্যোদয়ের 96 মিনিট আগে । আমাদের 2 টুকরো কাপড় পরিধান করা উচিত (ধতি এবং উপরের কাপড় ঢেকে রাখার জন্য)। নদী স্নানের (মহিলা শাড়ির জন্য) পোশাক হিসাবে শুধুমাত্র এই দুটি কাপড় অনুমোদিত।
গঙ্গা সাগর স্নানের নিয়ম, মন্ত্র এবং গঙ্গা সাগরে স্নান করলে তার ফলাফল কি?????
গঙ্গা সাগর স্নানের নিয়ম, মন্ত্র এবং তার ফলাফল জানতে হলে আগে আমাদের জানতে হবে স্নান কয় প্রকার।
যথা
– মান্ত্র ভৌমং তথাগ্নেয়ং বায়ব্যং দিব্যমেব চ। বারুণং মানসঞ্চৈব সপ্তস্নানং প্রকীর্ত্তিম্।। আপোহিষ্ঠাদিভিৰ্ম্মন্ত্রং মৃদালন্তশ্চ পার্থিবম্। আগ্নেয়ং ভস্মনা স্নানং বায়ব্যং রজসা গবাম্।। ১৫ অদ্ভিঃ সাতপবর্জ্জ্যাভিঃ স্নানং তদ্দিব্যমেব চ। বারুণং চাবগাহশ্চ মানসং বিষ্ণুচিন্তনম্।। ১৬
অর্থাৎ মান্ত্র, ভৌম, আগ্নেয়, ব্যায়ব্য, দিব্য, বারুণ ও মানস এই সপ্তবিধ স্নান। এই প্তবিধ স্নানের মধ্যে থেকে যে কোন প্রকার স্নান করিলেই মানব শুদ্ধিলাভ করিতে পারে কিন্তু বারুণ ও মান্ত্র স্নানই প্রশস্ত।
আপো হি ষ্ঠা ইত্যাদি মন্ত্রপাঠপূর্বক মার্জনকে মান্ত্র স্নান, সর্ব্বাঙ্গে মৃত্তিকালেপন করিলে ভৌম স্নান, হোমাগ্নির বা গোময়ভস্ম অঙ্গে লেপন করলে আগ্নেয় স্নান, গোপদরজঃপ্রবহমান বায়ুতে শরীর শীতল হওয়া পর্য্যন্ত রক্ষা করিলে বায়ব্য স্নান স্পল্পবৃষ্টিতে দেহ আর্দ্র করিলে দিব্য স্নান, জলে আবগাহন করার নাম বারুণ স্নান এবং বিষ্ণুচিন্তনদ্বারা মানস স্নান হইয়া থাকে।
স্নানকালে সঙ্কল্প-
নিত্য, নৈমিত্তিক, কাম্য, পৈত্র এবং দৈবকার্য্য করিবার সময় অবশ্যই সঙ্কল্প করিতে হয়; সঙ্কল্প না করিলে কোন কার্য্যে ফললাভ হয় না।
সাধারণ স্নানকালে সঙ্কল্প বাক্য যথা-
“বিষ্ণুঃ ওম্ (১) তৎসদদ্য অমুকে মাসি অমুকে পক্ষে অমুকতিথৌ অমুকগোত্রঃ শ্রীঅমুকদেবশর্মা শ্রীঅমুকদাসো বা পূর্ব্বাহুকৃত-জ্ঞাতাজ্ঞাতপাপক্ষয়কামঃ অরুণোদয়স্নানমহং করিষ্যে।” (প্রথম অমুকস্নানে মাস, দ্বিতীয়াদি অমুকস্থানে কোন্ পক্ষ, তিথির নাম, স্নানকর্তার গোত্র এবং নাম উল্লেখ করিতে হইবে)।
পৌরাণিক স্নান-
তাহার পর পুষ্করিণী প্রভৃতি অথবা নদীতে স্নান করিবার সময় জলে একহস্ত পরিমিত চতুষ্কোণ মণ্ডল অঙ্কিত করিয়া তাহাতে অঙ্কুশ মুদ্রায় তাহা তীর্থজল মনে করিয়া জলশুদ্ধ করিবেন। (২)
মন্ত্র যথা-“ওঁ গঙ্গে চ যমুনে চৈব গোদাবরী সরস্বতি। নর্ম্মদে সিন্ধুকাবেরী জলেইস্মিন্ সন্নিধিং কুরু ।” অনন্তর কৃতাঞ্জলি হইয়া “ওঁ কুরুক্ষেত্রং গয়া-গঙ্গা- প্রভাস-পুষ্করাণি চ। তীর্থান্যেতানি পুণ্যানি প্রাতঃস্নানকালে ভবত্ত্বিহ ।” এই মন্ত্রে তীর্থ আবাহন পূর্ব্বক স্নান করিবেন।
পৌষমাসে গঙ্গাসাগর সঙ্গমে স্নানের সঙ্কল্পবাক্য –
“বিষ্ণুঃ ওম্ তৎসদদ্য পৌষে মাসি ধনুরাশিস্থে ভাস্করে অমুকে পক্ষে উত্তরায়ণসংক্রান্ত্যাং অমুকতিথৌ অমুকগোত্রঃ শ্রীঅমুকদেবশর্মা দাসো বা সর্ব্বপাপক্ষয়কামঃ অস্মিন্ গঙ্গাসাগরসঙ্গমে স্নানমহং করিষ্যে।”
তৈলস্নানে নিষিদ্ধ দিবস- মঙ্গলবারে, দিবাবসানে, দ্বাদশীতিথিতে, গ্রহণকালে, অয়নকালে ও বিষুবসংক্রান্তিতে তৈলস্নান করিবেন না।
গঙ্গাতীরে উপস্থিত হয়ে হাত জোর করে মন্ত্র পাঠ করিবে। মন্ত্র যথা – ওম্ গঙ্গে দেবি জগন্মাতঃ পাদাভ্যাং সলিলং তব। স্পৃশামীত্যপরাধং মে প্রসন্না ক্ষন্তু ম র্হসি ।। স্বর্গারোহণসোপানং ত্বদীয় মুদকং শুভে। অতঃ স্পৃশামি পাদাভ্যাং গঙ্গে দেবি নমোহস্তু তে।।
উক্ত মন্ত্র পাঠ করিয়া গঙ্গাকে প্রণাম করতঃ জলে অবতরণ করিয়া অবগাহন স্নান করিবেন। তাহার পর জল হইতে উঠিয়া সামান্য গঙ্গা মৃত্তিকা লইয়া নিজ গাত্রে উহা লেপন করিবেন।
অবগাহন-স্নান-পদ্ধতি
নাভিসম জলে স্রোতের দিকে মুখ করিয়া, আর স্রোতহীনজলে সূর্যোর দিকে মুখ করিয়া, হস্তদ্বারা চক্ষুকর্ণাদি আচ্ছাদন করতঃ ডুব দিয়া নিম্নলিখিত মন্ত্রাদি পাঠপূর্ব্বক পুনরায় ডুব দিবে।
অন্যের উৎসর্গ করা জলাশয়ে স্নান করিতে-হইলে নিম্নোক্ত মন্ত্র পাঠ করিয়া তিন বা পাঁচ তাল মাটি তুলিয়া তীরে নিক্ষেপ করিবে।
মন্ত্র যথা- ওঁ উত্তিষ্ঠোত্তিষ্ঠ পঙ্ক ত্বং ত্যজ পুণ্যং পরস্য চ। পাপানি বিলয়ং যাও শান্তিং দেহি সদা মম।।
স্নান-মন্ত্র- আচমন করিয়া হাতজোড় করিয়া পাঠ করিবে,- ওঁ কুরুক্ষেত্রং গয়া গঙ্গা প্রভাস পুষ্করাণি চ।তীর্থান্যেতানি পুণ্যানি স্নানকালে ভবত্ত্বিহ।।
অনন্তর নিম্নলিখিত মন্ত্রে সঙ্কল্প করিবে,-
বিষ্ণুরোম্ তৎসদস্য অমুকে মাসি অমুকে পক্ষে অমুকতিথৌ অমুকগোত্রঃ শ্রীঅমুকদেবশর্ম্মা (স্ত্রীলোক হইলে গোত্রা ও দেবী, শূদ্র হইলে দাসঃ ও দাসী) শ্রীবিষ্ণু- প্রীতিকামঃ অস্মিন্ জলে স্নানমহং করিয্যে।
“ওঁ গঙ্গে চ যমুনে”-ইত্যাদি মন্ত্রে সেই জলে অঙ্গুশমুদ্রাদ্বারা তীর্থ আবাহন করিয়া কৃতাঞ্জলি হইয়া পাঠ করিবে,-
ওঁ বিষ্ণুপাদপ্রসূতাসি বৈষ্ণবী বিষ্ণুপূজিতা। পাহি নন্ত্বেনসস্তস্মাদাজন্ম- মরণান্তিকাৎ। তিস্রঃ কোট্যোহৰ্দ্ধকোটী চ তীর্থানাং বায়ুরব্রহীৎ। দিবি ভুব্যন্তরীক্ষে চ তানি তে সন্তু জাহ্নবী। নন্দিনীত্যেব তে নাম দেবেষ নলিনীতে চ। বৃন্দা পৃথ্বী চ সুভগা বিশ্বকায়া শিবামৃতা।
বিদ্যাধরী সুপ্রসন্না তথা লোকপ্রসাধিনী। ক্ষেমা চ জাহ্নবী চৈব শান্তা শান্তিপ্রদায়িনী। এতানি পূণানামানি স্নানকালে চ যঃ পঠেৎ। ভবেৎ সন্নিহিতা তত্র গঙ্গা এপথগামিনী।। ওম্ ভাগীরথি ভোগবতি জাহ্নবি ত্রিদশেশ্বরি। তুয়ি স্নানং করোমাদ্য পাপং মে হর জাহ্নবী।।
“অনন্তর “ও নারায়ণায় নমঃ” এই মন্ত্রে তিনবার অঞ্জলি জল মস্তকে দিয়া নিম্নোক্ত মন্ত্রে মৃত্তিকা উদ্ধৃত করিয়া সর্ব্বাঙ্গে লেপন করিবেন।
মন্ত্র যথা- ওম্ অশ্বক্রান্তে রথক্রান্তে বিষ্ণুক্রান্তে বসুন্ধরে। মৃত্তিকে হর মে পাপং যন্ময়া দুষ্কৃতং কৃতম্। উদ্ধতাসি বরাহেণ কৃষ্ণেণ শতবাহুনা। আরুহ্য মম গাত্রাণি সর্বং পাপং প্রমোচয়।।
অনন্তর প্রথমে অঙ্গুলি দ্বারা চক্ষুদ্বয়, কর্ণদ্বয়, নাসিকাদ্বয় এবং মুখমণ্ডল আচ্ছাদন করতঃ পূর্ব্বদিকে মুখ করিয়া তিনবার ডুব দিবেন। এবং নিম্নলিখিতমন্ত্র পাঠ করিবেন।
গঙ্গা স্নানে বিশেষ মন্ত্র যথা-
ওঁ ত্বং দেব সরিতাং নাম ত্বং দেবি সরিতাং বরে। উভয়োঃ সঙ্গমে স্নাত্বা মুঞ্চামি দুরিতানি বৈ। ওঁ বিষ্ণুপাদার্য্যসস্তূতে গঙ্গে ত্রিপথগামিনি। ধৰ্ম্মদ্রবীতি বিখ্যাতে পাপং মে হর জাহ্নবি ॥ শ্রদ্ধয়া ভক্তিসম্পন্নে শ্রীমাতর্দেবি জাহ্নবি। অমৃতেনাম্বুনা দেবি ভাগীরথি পুনীহি মাম্ ॥
অনুবাদ।- হে বিষ্ণুপাদার্য্যসত্ত্বতে! ত্রিপথগামিনি! গঙ্গে! আপনি ধৰ্ম্মদ্রবী নামে বিখ্যাতা। হে জাহ্নবি! আমার পাপ হরণ করুন। হে মাতঃ! দেবি! জাহ্নবি! আমি (আপনাতে) শ্রদ্ধাভক্তি-সম্পন্ন, হে ভাগীরথি! অমৃতসলিল অর্পণ করিয়া তদ্দ্বারা আমাকে পবিত্র করুন।
স্নানান্তে পাঠ্য মন্ত্র– ওঁ গঙ্গা গঙ্গেতি যো ক্রয়াদ যোজনানাং শতৈরপি। মুচ্যতে সর্ব্বপাপেভ্যো বিষ্ণুলোকং স গচ্ছতি ॥ পাপোহহং পাপকৰ্ম্মাহং পাপাত্মা পাপসম্ভবঃ। ত্রাহি মাং পুণ্ডরীকাক্ষ সর্ব্বপাপহরো হরিঃ ॥
তারপর গঙ্গার প্রণাম মন্ত্র পাঠ করিবেন। এবং শেষে গঙ্গা স্তোত্রম পাঠ করিবেন।
গঙ্গা মন্ত্রোচ্চারণ ফল
গঙ্গামন্ত্রং সমুচ্চার্য্য ক্ষেত্রে নদ্যান্ত পার্ব্বতি! স্নাপয়েদ যন্ত্র পাপাত্মা সৰ্ব্বপাপৈঃ প্রমুচ্যতে।।
অনুবাদ।- হে পার্ব্বতি! যে পাপাত্মা গঙ্গাক্ষেত্রে ও গঙ্গানদীতে গঙ্গামন্ত্র সমুচ্চারণ পূর্ব্বক স্নান করে, সে সর্ব্ববিধ পাপ হইতে মুক্তিলাভ করে।
প্রয়াগরাজ কুম্ভ স্নানের সঙ্কল্প মন্ত্র:-
"ॐ বিষ্ণুঃ বিষ্ণুঃ বিষ্ণুঃ অদ্য ব্রহ্মণোহি দ্বিতীয়পরার্ধে শ্রী শ্বেত-বরাহ কল্পে, বৈবস্বত মন্বন্তরে, অষ্টবিংশতিতমে কলিযুগে, কলির প্রথম চরণে, ভূর্লোকে জম্বুদ্বীপে ভারত খন্ডে, আর্যাবর্তেক দেশান্তর্গতে উত্তরপ্রদেশং প্রয়াগ নগরীর ত্রিবেণী-সঙ্গম-তে (অথবা আপনার স্থানের নাম নিন)
ষষ্ঠী সংবৎসরণম্.... মাসে,.... কাল (শীত, বসন্ত ঋতু),...... মাসে,.... দিনে,.... তিথৌ, (সকাল/বিকেল/সন্ধ্যা) কালে,.... গোত্র,..... আনন্দনাথ (অথবা, নিজ নাম/.....দেবশর্মণঃ), শ্রী ভগবান প্রিত্যর্থে তপঃ, ত্রিবেণী সঙ্গম স্নান অহং করিষ্যে।"
এর পরে, আপনার সংকল্পের জন্য আপনার হাতে জল ঢেলে, প্রথমে আপনার (নিজ) গুরু (সম্ভব হলে পঞ্চগুরু) এবং, ইষ্টদেবতার নামে তিনটি (অথবা, সাতটি) ডুব দিন এবং, আপনার শরীর ও মনের জন্য সম্পূর্ণ রূপে স্নান করুন বা ডুব দিন।
স্নানের পরে ত্রিবেণীর তীরে বসে শ্রীগুরুর নিকট হইতে প্রাপ্ত বীজমন্ত্র এবং, মাতা গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতী ও ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির ও ব্রহ্মার মন্ত্র এবং, স্তোত্র পাঠ করুন।
শ্রীগুরুকে সম্মুখে রেখে অথবা, শ্রীগুরু-স্মরণ করতে হবে, তা না করলে কোনোরূপ পুণ্য লাভ হবেই না।
গঙ্গা প্রণাম মন্ত্র:--
আমরা সকলেই জানি চারটি যুগের কথা। সত্য যুগ, ত্রেতা যুগ, দ্বাপর যুগ ও কলি যুগ।
মহাভারতে বলা হয়েছে, সত্য যুগে সব সকল স্থানই তীর্থ স্থান। আর ত্রেতা যুগে পুষ্কর এর শ্রেষ্ঠত্ব, দ্বাপর যুগে শ্রেষ্ঠ তীর্থ হল কুরুক্ষেত্র এবং আজকের এই কলি যুগের শ্রেষ্ঠ তীর্থ হল গঙ্গা। গঙ্গাই এই কলি যুগের পরমতীর্থ।
সর্বং কৃতযুগে পুণ্যং, ত্রেতায় পুষ্করং স্মৃতম
দ্বাপরে তু কুরুক্ষেত্র গঙ্গা কলিযুগে স্মৃতা।
স্নান করে উঠে সেই গঙ্গাকে প্রতিদিন প্রণাম করা আমাদের কর্ত্যব্য।
গঙ্গা প্রণাম মন্ত্র –
ওঁ সদ্যপাতক-সংহন্ত্রী সদ্যদু্ঃখ বিনাশিনী।
সুখদে মোক্ষদে গঙ্গে গঙ্গৈব পরমাং গতিং।।
স্নান করার পরে অথবা সূর্য নমস্কারের (যোগ বা ধ্যান এর সময়) সময় ভগবান শ্রী সূর্য নারায়ণ কে প্রণাম করতে হয়। যেকোনো পূজা বা শ্রাদ্ধকালে ভগবান শ্রী সূর্য নারায়ণ কে অর্ঘ্য প্রদান করে প্রণাম মন্ত্র পাঠ করতে হয়।
সূর্য্যের প্রণাম মন্ত্র –
ওঁ জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্।
ধান্তারিং সর্ব্বপাপঘ্নং প্রণতোহস্মি দিবাকরম্।।
বিষ্ণুর প্রণাম মন্ত্র ও বিষ্ণুর প্রার্থনা মন্ত্র
আসুন আজকে আমরা জানব ভগবান শ্রী বিষ্ণু বা নারায়ণের প্রণাম মন্ত্র ও প্রার্থনা মন্ত্র।
ভগবান শ্রী বিষ্ণুর প্রণাম মন্ত্র –
ওঁ নমো ব্রহ্মণ্যদেবায় গোব্রাহ্মণ হিতায় চ।
জগদ্ধিতায় শ্রী কৃষ্ণায় গোবিন্দায় নমো নমঃ।।
ভগবান শ্রী বিষ্ণুর প্রার্থনা মন্ত্র –
ওঁ পাপহং পাপকর্মাহং পাপাত্মা পাপসম্ভব।
ত্রাহিমাং পুন্ডরিকাক্ষ সর্ব্বপাপ হরি।।
নমঃ কমলনেত্রায় হরয়ে পরমাত্মনে।
অশেষ ক্লেশনাশায় লক্ষ্মীকান্ত নমোহস্তুতে।।
হরে মুরারে মধুকৈটভারে গোপাল গোবিন্দ মুকুন্দ শৌরে।
যজ্ঞেশ নারায়ণ কৃষ্ণ বিষ্ণো।
নিরাশ্রয় মাং জগদিশ রক্ষ।।