স্নান করার নিয়ম ও মন্ত্র
প্রত্যেকেরই প্রতিদিন স্নান করা কর্তব্য। আমরা আগেরদিন জেনেছিলাম তেলমাখার নিয়ম ও বিধি। আজকে আমরা জানব নিত্যস্নান বিষয়ে। স্নান সাত প্রকার – (১) মান্ত্র, (২) ভৌম, (৩) আগ্নেয়, (৪) বায়ব্য, (৫) দিব্য, (৬) বারুণী ও (৭) মানস।
গ্রন্থি যুক্ত বস্ত্র পরিধান করে ও নগ্ন অবস্থায় স্নান করবেন না। রাত্রিকালে গ্রহণ অথবা অন্য কোন যোগ থাকিলে স্নান করা কর্তব্য। একবস্ত্রে স্নান এবং পরিধেয় বস্ত্র দ্বারা গাত্র মার্জন নিষিদ্ধ।
প্রাতঃস্নান – প্রাতঃস্নানে তেল মাখা নিষিদ্ধ। সুর্যদয়ের আগে অর্থাৎ ভোরবেলা সম্ভব স্থলে জলাশয় অথবা নদী প্রভৃতিতে ডুবদিয়ে স্নান করা কর্তব্য। নিত্যনৈমিত্তিক, কাম্য, পৈত্র এবং দৈব কাজ করবার অবশ্যই সঙ্কল্প করিতে হয়, সঙ্কল্প না করলে কোনো কাজে ফললাভ হয় না।
সঙ্কল্পবাক্য – “ওঁ বিষ্ণুঃ ওম্ তদসদদ্য (ব্রাহ্মণ ভিন্ন অন্যরা ও নারী গণ – শ্রীবিষ্ণুঃ নমঃ ওদ্য) অমুকে মাসি (বর্তমান মাসের নাম) অমুকে পক্ষে ( বর্তমান পক্ষের নাম, শুক্লা পক্ষ/ কৃষ্ণ পক্ষ) অমুকে তিথৌ অমুক গোত্রঃ (নারীগণ – তিথা, গোত্রাঃ বলিবেন) শ্রীঅমুকদেবশর্মা বা দেবী (ব্রাহ্মণ ভিন্ন অন্যরা ও নারী গণ – শ্রীঅমুকদাসো বা দাসী বলিবেন ) পূর্বাহ্নকৃত জ্ঞতাজ্ঞাতপাপপাপক্ষয়কামঃ অরুণদয়স্নানমহং করিষ্যে।”
তারপর জলাশয় প্রভৃতি অথবা নদীতে স্নান করার সময় জলে একহাত পরিমিত চতুস্কোন মন্ডল এঁকে তা তীর্থজল মনেকরে অঙ্কুশ মুদ্রায় জলশুদ্ধি করিবেন।
মন্ত্র – “ওঁ গঙ্গে চ যমুনেচৈব গোদাবরী সরস্বতী। নর্মদা সিন্ধু কাবেরী জলেহস্মিন্ সন্নিধিন্ কুরু।।” তারপর হাত জোড় করে বলিবেন ” ওঁ কুরুক্ষেত্র গয়াগঙ্গা প্রভাস-পুস্করাণি চ। তীর্থান্যেতানি পুণ্যানি প্রাতঃস্নানকালে ভবন্তিহ।।”
তারপর প্রথমে আঙ্গুল দিয়ে চোখ, কান, নাক এবং মুখমন্ডল আচ্ছাদন করে পূর্বদিকে মুখ করে তিনবার জলে ডুব দেবেন এবং তারপর মন্ত্র পাঠ করবেন –
“ওঁ গঙ্গা গঙ্গেতি যোগ ব্রুয়াদ্ যোজনানং শতৈরপি। মুচ্যতে সর্বপাপেভ্য বিষ্ণু লোকং সগচ্ছতি।। পাপহং পাপকর্মাহং পাপাত্মা পাপ সম্ভবতঃ। ত্রাহিমাং পুন্ডরিকাক্ষ সর্বপাপ হরহরিঃ।।”
তারপর গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে প্রনাম করিবেন –
“ওঁ সদ্য পাতক সংহন্তি সদ্য দুঃখ বিনাশিনী। সুখদা মোক্ষদা গঙ্গা গঙ্গৈব পরমাং গতি।।”