দিব্যচক্ষু
মানুষের দুটি চোখ যাকে চর্মচক্ষু বলে যে চোখ দিয়ে আমরা পৃথিবীর এই সমস্ত রূপ দেখতে পাই স্থূল জগতের সমস্ত দেখতে পারি একে চর্মচক্ষু বলে
এছাড়াও শাস্ত্র অনুসারে আরো পাঁচ রকম অলৌকিক চক্ষুর কথা জানা যায় তারমধ্যে …….
1.অনাহত চক্র যখন কোন সাধক ভেদ করে ঈশ্বরের উপর সমর্পিত ভাবনা নিয়ে বিশুদ্ধচক্রে ওঠে তখন তার প্রথম দিব্যচক্ষু খুলে তার নাম হলো মানস চক্ষু
মানস চক্ষু সাহায্যে বাতাস মন্ডলের সুক্ষ কনা ,প্রেত শরীর ,,সূক্ষ্ম শরীর ,বাতাস মন্ডলএ ঘোরাফেরা করে সেই রকম কোন দেবতা অপদেবতা যোগী তাদের--এই চোখের দ্বারা দেখা সম্ভব.
2. বিশুদ্ধ চক্র ভেদ করে যখন কোন যোগী মস্তক গ্রন্থিতে উপস্থিত হয় তখন মস্তক গ্রন্থি থেকে কুটস্থ রুপী তৃতীয় নয়নকে বা দিব্যচক্ষুকে দেখতে সমর্থ হয় এছাড়াও বহির্জগতে দৃষ্টি দিলে সে বহির্জগতে অনেক দূর দূরান্ত পর্যন্ত এই চোখেই দেখতে সমর্থ হয় একে কেউ কেউ আকাশ চক্ষু বা বিজ্ঞান চক্ষু বলে থাকে
3. কুটস্থই হল দিব্যচক্ষু যেটি দেখতে হুবহু আমাদের এই চর্মচক্ষু মতন কিছুটা কিন্তু এটা এক চক্ষু এবং কপালে ভ্রুর মাঝখানে থেকে কপাল পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এটা লম্বালম্বি অবস্থিত
তার সাধন স্থানে গিয়ে সেই দেখার শক্তি লাভ করে কিন্তু সেটা নয়ন চোখের মতন দেখতে নয় একমাত্র এই তৃতীয় চোখটাই নয়ন বার চোখের মতন দেখতে সেইজন্য এটাকেই মূল তৃতীয় নয়ন দিব্যচক্ষু বলে অন্যান্য চক্ষুগুলো দেখবার ক্ষমতা দেয় কিন্তু তাদের আকার নয়ন বা চোখের মতন নয় সেই জন্য সে গুলোকে নয়ন বলা হয়না কিন্তু সেই স্থানে গেলে অনেক কিছু দেখতে সমর্থ হয় বলে সেগুলোকেও চক্ষু বলা হয়েছে মূলত আমাদের এই চর্মচক্ষু মতনই দেখতে মুলটি চক্ষুই আছে সেইজন্য এটাকেই তৃতীয় নয়ন বলা হয়
কুটস্থ এর যে দিব্যচক্ষু যা একদম নয়ন বা চোখের মতন দেখতে এবং আমাদের আত্ম তত্ত্ব কে বা আমাদের আত্ম স্বরূপকে দেখতে সমর্থ যার ফলে আমাদের জন্মান্তর জন্ম-মৃত্যু চক্রকে কাটিয়ে মুক্তি লাভ করাতে সমর্থ করে সেইজন্য এই দিব্যচক্ষু এই শাস্ত্রে খুব গুরুত্ব দিয়ে তৃতীয় চক্ষুর কথাই বলা হয়েছে
4.চক্র ভেদ করে গুরুচক্র থেকে সহস্রারচক্র পর্যন্ত যে দিব্য জ্ঞান দিব্যদৃষ্টি প্রদান করে সেই চক্ষুর নাম পরা চক্ষু - শাস্ত্র অনুসারে চতুর্থ দিব্যচক্ষু
5. পরে নির্বীজ সমাধি লাভ হলে কোন যোগীর মহান ত্রিকালজ্ঞ সর্বজ্ঞ সর্বজ্ঞাতা সর্বগ্রাহী সর্বগ্রহীতা এবং সর্বঅন্তর্যামী ,সর্বভাষাবিদ, সর্ব ভাবজ্ঞাতা, সর্ব কর্মজ্ঞাতা,এর কর্মগতি, সৃষ্টি স্থিতি পালন মৃত্যুঞ্জয় দাতা শক্তি প্রদান করে তাকে তুরীয় চক্ষু বলা হয়-- এই অবস্থায় কোন যোগী সাধনার দ্বারা প্রস্তুত তাকেই ষড়ৈশ্বর্য সম্পন্ন ভগবান বলা হয় যেমন ভগবান বুদ্ধ ,ভগবান রামকৃষ্ণ ,ভগবান লোকনাথ ব্রহ্মচারী ,..ইত্যাদি
এই স্থিতি লাভ হয় এবং ইহাকেই সর্বশেষ এবং চরম এবং পরম চক্ষু-- ইহাই পঞ্চম চক্ষু তুরীয় চক্ষু