মাতঙ্গী দেবী সূর্য গ্রহের সাথেও সম্পর্কিত, তাই সূর্যের উপাসনা করলে দেবী তুষ্ট হন ।
মাতঙ্গী সাধনা হল দেবী মাতঙ্গীর পূজা ও আরাধনা করার একটি পদ্ধতি, যিনি দশমহাবিদ্যা নামে পরিচিত দশজন দেবীর মধ্যে নবম দেবী। এই সাধনা সাধারণত জ্ঞান, স্পষ্টতা, বাচনভঙ্গি, এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য করা হয়। এটি একটি শক্তিশালী সাধনা যা ভক্তকে ঐশ্বরিক আনন্দ এবং সুরক্ষা প্রদানে সক্ষম।
"মাতঙ্গী" শব্দের অর্থ হল "হাতি সম্পর্কিত" বা "হাতির মতো"। এটি হিন্দু দেবী দুর্গার একটি রূপ, যিনি জ্ঞান, শিল্পকলা, শব্দ এবং অতিপ্রাকৃত শক্তির দেবী হিসাবে পূজিত হন।
আরও বিশদভাবে, "মাতঙ্গী" শব্দটি এসেছে "মাতঙ্গ" শব্দ থেকে, যার অর্থ হাতি। তাই, "মাতঙ্গী" শব্দের অর্থ "হাতির সাথে সম্পর্কিত" বা "হাতির মতো"। হিন্দু ধর্মে, মাতঙ্গীকে দশমহাবিদ্যা (দশজন প্রধান দেবী) এর একজন হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। তিনি দেবী দুর্গার একটি রূপ এবং জ্ঞান, শিল্পকলা, সঙ্গীত, এবং ভাষার দেবী হিসাবে পূজিত হন।
কিছু ক্ষেত্রে, মাতঙ্গীকে "রাজমাতঙ্গী" বা "মন্ত্রিনি দেবী" নামেও উল্লেখ করা হয়, যা তার রাণী বা মন্ত্রীর ভূমিকার ইঙ্গিত করে। তাকে প্রায়শই তোতাপাখি এবং বীণা (একটি বাদ্যযন্ত্র) হাতে চিত্রিত করা হয়, যা তার জ্ঞান এবং শিল্পকলার প্রতি আকর্ষণ নির্দেশ করে।
সংক্ষেপে, "মাতঙ্গী" শব্দের অর্থ হল হাতি সম্পর্কিত বা হাতির মতো, এবং এটি হিন্দু দেবী দুর্গার একটি রূপ যা জ্ঞান, শিল্পকলা, এবং সঙ্গীতের দেবী হিসেবে পূজিত হন.
মা মাতঙ্গী স্তোত্র হল দেবী মাতঙ্গীর উদ্দেশ্যে রচিত একটি স্তোত্র বা মন্ত্র। এটি দেবী মাতঙ্গীর বিভিন্ন রূপের বর্ণনা ও স্তুতি করে পাঠ করা হয়। মাতঙ্গী দেবী, দশমহাবিদ্যার অন্যতম এবং সঙ্গীত, শিক্ষা ও বাগ্মিতার দেবী হিসেবে পূজিত হন।
মাতঙ্গী সাধনার কিছু মূল বিষয়: ****************
দেবী মাতঙ্গী:-দেবী মাতঙ্গী হলেন জ্ঞান, সঙ্গীত, চারুকলা, এবং বাচনভঙ্গির দেবী। তিনি মহাবিদ্যা নামে পরিচিত দশজন দেবীর একজন, এবং তার পূজা সাধারণত আধ্যাত্মিক শক্তি লাভের জন্য করা হয়।
সাধনার উদ্দেশ্য:--মাতঙ্গী সাধনা সাধারণত জ্ঞান, স্পষ্টতা, বাচনভঙ্গি, এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য করা হয়। এটি ভক্তকে জ্ঞান ও প্রজ্ঞা লাভের পাশাপাশি তার জীবনে আনন্দ ও সমৃদ্ধি আনতেও সহায়তা করে।
মন্ত্র ও জপ:---মাতঙ্গী সাধনার জন্য বিভিন্ন মন্ত্র রয়েছে, যার মধ্যে "ওঁ হ্রীম ক্লিং হুম মাতঙ্গ্যৈ ফত” এবং “ওঁ হ্রীম ঐং নমো ভগবতী উচ্ছিষ্ট চণ্ডালী শ্রী মাতঙ্গেশ্বরী সর্বজনবশঙ্করী স্বাহা” উল্লেখযোগ্য। এই মন্ত্রগুলি নির্দিষ্ট সংখ্যক বার জপ করা হয়, যা ভক্তের আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ধ্যান ও পূজা:--মাতঙ্গী দেবীর রূপ ও গুণাবলীর ধ্যান করা এবং তার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন উপাচার নিবেদন করাও সাধনার একটি অংশ।
গুরু দীক্ষা:--সাধারণত, মাতঙ্গী সাধনা গুরু বা শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে করা উচিত, যিনি মন্ত্র, পূজা পদ্ধতি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি সম্পর্কে সঠিক নির্দেশনা দিতে পারেন।
সতর্কতা:--মাতঙ্গী সাধনা একটি শক্তিশালী সাধনা, তাই এটি সঠিক পদ্ধতিতে করা উচিত এবং গুরু বা শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে করাই বাঞ্ছনীয়।
মাতঙ্গী সাধনা একটি গভীর ও শক্তিশালী প্রক্রিয়া যা ভক্তকে আধ্যাত্মিক উন্নতির পথে চালিত করতে পারে। এই সাধনার মাধ্যমে, ভক্তরা জ্ঞান, আনন্দ, এবং ঐশ্বরিক আশীর্বাদ লাভ করতে পারে।
মাতঙ্গী স্তোত্রের কিছু অংশ নিচে দেওয়া হল:------
"ধ্যায়েৎ রত্নপীঠে শুককলপঠিতং শৃন্বতীং শ্যামলাঙ্গীম্ । মাতঙ্গীং শঙ্খপাত্রং মধুরমধুমদাং চিত্রকোদভাসিভালাম্ ।" - এই মন্ত্রে দেবী মাতঙ্গীর ধ্যান বর্ণিত হয়েছে, যেখানে তিনি রত্নখচিত আসনে উপবিষ্ট, শুকপাখীর কথা শুনছেন, শ্যামবর্ণা এবং হাতে শঙ্খ ও মধু পাত্র ধারণ করে আছেন।
"ওঁ নমো ভগবতি মাতঙ্গী সর্ব্বমঙ্গলকারিণী স্বাহা" - এই মন্ত্রে দেবীকে সর্ব-মঙ্গলকারিণী হিসেবে সম্বোধন করা হয়েছে।
মাতঙ্গী স্তোত্র পাঠের মাধ্যমে দেবী মাতঙ্গীর কৃপা ও আশীর্বাদ লাভ করা যায় বলে বিশ্বাস করা হয়।
মাতঙ্গী স্তোত্র পাঠের কিছু উপকারিতা:---------
বাক্ সিদ্ধি: স্তোত্র পাঠে বাক্ শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং ব্যক্তি স্পষ্ট ও সুন্দরভাবে কথা বলতে সক্ষম হন।
জ্ঞান ও বুদ্ধি: দেবী মাতঙ্গীকে বিদ্যার দেবী হিসেবেও পূজা করা হয়, তাই তার স্তোত্র পাঠে জ্ঞান ও বুদ্ধি বৃদ্ধি পায়।
সৃষ্টিশীলতা: মাতঙ্গী দেবী সঙ্গীতের দেবী, তাই তার স্তোত্র পাঠে সৃজনশীলতা ও শিল্পকলার প্রতি আকর্ষণ বাড়ে।
ঐশ্বর্য ও সমৃদ্ধি: দেবী মাতঙ্গী ঐশ্বর্যের দেবী লক্ষ্মীরও একটি রূপ, তাই তার স্তোত্র পাঠে ঐশ্বর্য ও সমৃদ্ধি লাভ করা যায়।
সুরক্ষা: মাতঙ্গী দেবী তার ভক্তদের অশুভ শক্তি থেকে রক্ষা করেন।
আপনি যদি মাতঙ্গী স্তোত্র বা মন্ত্রের সম্পূর্ণ পাঠ অথবা আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে চান, তাহলে এই বিষয়ে অভিজ্ঞ কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
জ্ঞান ও কলাবিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী এই দেবী সরস্বতীকে যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন ধর্মশাস্ত্র ষোড়শী বিদ্যাদেবী রুপে কল্পনা করে আরাধনা করেছেন। এই বিদ্যা দেবীগণ সকলেই ললীত মূদ্রাসনে অধিষ্ঠিতা এবং সকলেরই দক্ষিণ হস্ত বক্ষোপরি বরমুদ্রায় স্হাপিত। সরস্বতীর ষোড়শ নামে পরিচিতা। তাঁর ষোড়শগুলি হল- 1. রোহিণী- এই দেবী চর্তুভুজা এর অপর নাম "অজিতবলা"। 2. প্রজ্ঞপ্তী- সরস্বতীর দ্বিতীয় নাম। এই দেবীর বাহন হংস। দেবী ষড়ভুজা। দেবীর হাতে আছে অসি, কুঠার, চন্দ্রহাস ও দর্পণ। "দুহিতারী" নামেও দেবী পরিচিতা। 3. বজ্রশৃঙ্খলা-এই চর্তুভুজা দেবীর বাহন হংস। দেবী হস্তে পরিখ ও বৈষ্নবাস্ত্র ধারন করেছেন। 4. ভদ্রকালী: এই ভদ্রকালী রূপে মাতা সরস্বতী স্বয়ং মেধারূপিণী, ধীবুদ্ধিরূপা । 5. চক্রেশ্বরী- দেবী সরস্বতীর এই ষোড়শভুজার বাহন হল গরুড়। 6. পুরুষদত্তা ভারতী- এই দেবী হস্তিবাহিনী এবং দেবী চর্তুভুজা। দেবীর দেহ শ্রী অপূর্ব লাবন্য মন্ডিত, সুদঢ় ও বলিষ্ঠ। দেবীর দক্ষিণ হস্তে চক্র এবং বাম হস্তে শতঘ্নী। 7. কালী- বৃষ এই দেবীর বাহন। দেবীর অপর নাম শান্তা। ইনি কিন্তু দশমহাবিদ্যার কালী নন। 8. মহাকালী- এই দেবীর দক্ষিণ হস্তে যষ্টি এবং বাম হস্তে শতঘ্নী। এই দেবী চতুর্ভুজা। এর অপর নাম "অজিতা" ও "সুরতারকা"। 9. গৌরী- ইনি বৃষপরি অধিষ্ঠিতা, চতুর্ভুজা, দক্ষিন হস্তে মঙ্গল ঘট ও বাম হস্তে যষ্টি। "মানসী" ও "অশোকা" দেবীর অন্য নাম। 10. গান্ধারী- চতুর্ভুজা এই দেবীর কোন বাহন নেই। "চন্ডা" নামে তিনি পরিচিতা। 11. সরবাস্ত্রমহাজ্বালা- এটি দেবী সরস্বতীর একাদশ তম নাম। দেবী অষ্টভুজা। দক্ষিন হস্তে অসি, ত্রিশূল, ভল্ল ও বৈষ্নবাস্ত্র। বাম হস্তে ব্রম্ভশীর অস্ত্র, তীর ও পাশ। দেবীর মস্তকে শোভা পায় মন্দিরাকৃতি সুউচ্চ মুকুট। দেবীর অন্য দুই নাম হলো " জ্বলামালিনী" ও "ভৃকুট্টী"। 12. মানবী- সর্প এই দেবীর বাহন। চতুর্ভুজা এই দেবীর দুই হস্তে দর্পন, এক হস্তে যষ্টি, অপর হস্তে বরমুদ্রায় স্হাপিত। "অশোকা" নামেও দেবীর আরাধনা হয়। 13. বৈরাট্যা- চতুর্ভুজা এই দেবীরও মানবীর ন্যায় বাহন হল সর্প্। "বৈরোটী" নামেও সম্ভবতঃ দেবীর পূজা হয়। 14. আচ্ছুপ্তা- মহাদেবী সরস্বতীর চর্তুদশ নাম আচ্ছুপ্তা। 15. মানসী- সিংহ এই দেবীর বাহন। চতুর্ভূজা দেবীর দক্ষিন হস্তে ভল্ল ও কুঠার, এবং বাম হস্তে দর্পন ও বিজয়ধনু। দেবীর আর এক নাম কর্ন্দপা।. 16. মহামানবী- সরস্বতীর ষোড়শ নাম মহামানবী। ময়ূর এই দেবীর বাহন রুপে সুপরিচিত। চতুর্ভুজা দেবীর দক্ষিণ হস্তে ভল্ল এবং বাম হস্তে চক্র মহামানবী- সরস্বতীর ষোড়শ নাম মহামানবী। ময়ূর এই দেবীর বাহন রুপে সুপরিচিত। চতুর্ভুজা দেবীর দক্ষিণ হস্তে ভল্ল এবং বাম হস্তে চক্র। দেবীর অপর নাম 'নিরবাসী"। দেবী সরস্বতী অতি প্রাচীনা বৈদিক দেবী। যাস্কের নিরুক্ত বইতে সরস্বতী শব্দের দুটি মানে করা হয়েছে- একটি নদীরূপা, অন্যটি দেবীরূপা। আচার্য সায়নও বলেছেন-"দ্বিবিধা হি সরস্বতী, বিগ্রহবৎ দেবতা- নদীরূপা" ঋগ্বেদের বহুস্থানে দেবী সরস্বতী বিষয়ে অসংখ্য মন্ত্র সন্নিবিষ্ট আছে। কোথাও তিনি কলকলনাদিনী নদীরূপা, আবার কোথাও বা তিনি বাকশক্তি প্রদায়িনী সাক্ষাৎ ব্রহ্মমহিষী। শঙ্করাচার্য্য সরস্বতীর নয়টি শক্তির কথা উল্লেখ করেছেন- "মেধা- প্রভা- বিদ্যা- ধী- ধৃতি- স্মৃতি- বুদ্ধয়ঃ। বিদ্যেশ্বরীতি সংপ্রোক্তা ভারত্যাঃ নবশক্তয়ঃ।।" ---মেধা, প্রভা, ধী, বিদ্যা, স্মৃতি ইত্যাদি নয়টি মূর্তিতে সরস্বতী সর্বজীবের অন্তঃস্থলে নিবাস করেন। লক্ষণীয়, উপরোক্ত নয়টি নামই শ্রীশ্রীচণ্ডীর "বিষ্ণুমায়া স্তুতি"-তে খুঁজে পাওয়া যায়। দেবী দুর্গার ন্যায় দেবী সরস্বতীরও অসংখ্য রূপভেদ লক্ষ্য করা যায়। তন্মধ্যে দেবীর অষ্টমূর্তি অধিক প্রসিদ্ধ। ব্রহ্মবিদ্যা সরস্বতীর অষ্টমূর্তি সম্বন্ধে শাস্ত্রে বলা হয়েছে- লক্ষ্মীর্মেধা ধরা পুষ্টিঃ গৌরী তুষ্টিঃ প্রভাধৃতিঃ। এতাভিঃ পাহি তনুভিঃ অষ্টাভির্মাং সরস্বতী।। ---লক্ষ্মী, মেধা, ধরা, পুষ্টি, গৌরী, তুষ্টি, প্রভা ও ধৃতি এই অষ্টপ্রতিমায় দেবী সরস্বতী প্রকাশিতা। লক্ষণীয়, এখানে লক্ষ্মী ও সরস্বতীকে অভিন্নরূপে প্রতিপাদন করা হয়েছে। শ্রীশ্রীচণ্ডীতেও উপরোক্ত দৈবী বিভূতিসমূহকে মহামায়া পরাশক্তির প্রকাশভেদ বলে দেবগণ স্তব করেছেন। ঋগ্বেদের "শ্রীসুক্তে"-ও একই সত্য ধ্বনিত হয়েছে- সিদ্ধলক্ষ্মী মোক্ষলক্ষ্মী জয়লক্ষ্মী সরস্বতী। শ্রীলক্ষ্মী বরলক্ষীস্চ প্রসন্না ভব সর্বদা।। এখানে সিদ্ধলক্ষী, মোক্ষলক্ষ্মী, বরলক্ষী, জয়লক্ষী ইত্যাদি লক্ষ্মীদেবীর বিভন্ন বিভূতির মধ্যে সরস্বতী দেবীর নামও উল্লেখিত হয়েছে। যিনি ব্রহ্মশক্তিরূপে ব্রহ্মজ্ঞান বিকিরণ করেন, তিনিই নারায়ণীশক্তিরূপে শাশ্বত সম্পদ অর্থাৎ ভুক্তিমুক্তি প্রদান করেন। তিনিই আবার এই সরস্বতী নামধারী আদ্যা জননী, যিনি নিজ ঔজ্জ্বল্য দ্বারা পৃথিবী ও স্বর্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল দীপ্তিময় করে রাখেন। মাতা সরস্বতী স্বয়ং মেধারূপিণী, ধীবুদ্ধিরূপা- অর্থাৎ ধারণাশক্তি,সবকিছু বোঝবার ক্ষমতা। তত্ত্বজ্ঞান উপলব্ধি করবার প্রতিভা ও ক্ষমতা- দুইই সরস্বতীর কৃপাকটাক্ষের উপর নির্ভরশীল। ঔপনিষদিক যুগে এই মেধা দেবী সরস্বতীর অষ্টমূর্তির একজন ছিলেন বলে জানা যায়। ঋকবেদে দশটি ঋকমন্ত্রে এই মেধারূপী শুক্লবর্ণা সরস্বতীর বন্দনা করা হয়েছে। সেই মন্ত্রসমষ্টির নাম "মেধাসুক্ত"। বেদে এও বলা হয়েছে ইনি ব্রহ্মসাক্ষাৎকার করান, আবার ইনিই নির্গুণ ব্রহ্মের সগুণাত্মিক সাত্ত্বিকী প্রতিমা। পদ্মপুরাণে এই দেবী মেধার অধিষ্ঠান ক্ষেত্র হিসেবে কাশ্মীর মণ্ডলকে চিহ্নিত করা হয়েছে। অন্যান্য পুরাণে এনাকেই বিদ্যাশক্তি ও অবিদ্যাশক্তি উভয়মূর্তিতেই স্তব করা হয়েছে। তন্ত্রে ইনিই দশমহাবিদ্যার অন্যতম নবম মহাবিদ্যা মাতঙ্গী। নানা শাস্ত্রে এই পরাৎপরা সরস্বতীর অনন্ত মহিমা বারংবার গীত হয়েছে
ভৈরব্যুবাচ। কালীপূজা শ্ৰুতা নাথ ভাবাশ্চ বিবিধাঃ প্রভো। ইদানীং শ্রোতুমিচ্ছামি কবচং পূৰ্ব্বসুচিতম্৷। ত্বমেব শরণং নাথ ত্রাহি মাং দুঃখসঙ্কটাৎ।। ভৈরব উবাচ। রহস্য শৃণু বক্ষ্যামি ভৈরবি প্রাণবল্লভে। শ্রীজগন্মঙ্গলং নাম কবচম্ মন্ত্ৰবিগ্ৰহম্ ৷৷
পঠিত্বা ধারয়িত্বা বা ত্রৈলোক্যং মোহয়েৎ ক্ষণাৎ। নারায়ণোঽপি যদ্ধত্বা নারী ভূত্বা মহেশ্বরম্ ।। যোগেশং ক্ষোভমনয়দ যদ্ধত্বা চ রঘুদ্বহঃ। বরদৃপ্তান জঘানৈব রাবণাদি নিশাচরান।।
যস্য-প্রসাদাদীশোহহং ত্রৈলোক্যবিজয়ী প্রভুঃ।। ধনাধিপঃ কুবেরোঽপি সুরেশোঽভূচ্ছচীপতিঃ। এবং হি সকলা দেবীঃ সৰ্ব্বসিদ্ধীশ্বরাঃ প্রিয়ে। শ্রীজগন্মঙ্গলস্যাপি কবচস্য ঋষিঃ শিবঃ।
ছন্দোহনুষ্টুপ দেবতা চ কালিকা দক্ষিণেরিতা। জগতাং মোহনে দুষ্টনিগ্রহে ভুক্তিমুক্তিযু।। যোষিদাকর্ষণে চৈব বিনিয়োগঃ প্রকীর্তিতঃ। ওঁ শিরো মে কালিকা পাড়ু ক্রীংকারৈকাক্ষরী পরা। ক্রীং ক্রীং ক্রীং মে ললাটঞ্চ কালিকা খড়াধারিণী। হুং হুং পাতু নেত্রযুগ্মং হ্রী হ্র পাতু শ্রুতী নন।। দক্ষিণে কালিকে পাড়ু ঘ্রাণযুগ্মং মহেশ্বরী ।।
ক্রীং ক্রীং ক্রীং রসনাং পাতু হুং হুং পাতু কপোলকম্। বদনং সকলং পাতু হ্রীঁ হ্রী স্বাহা স্বরূপিণী।। দ্বাবিংশত্যক্ষরী স্কন্ধৌ মহাবিদ্যা সুখপ্রদা। খড়্গানুগুধরা কালী সর্ব্বাঙ্গমভিতো বড়। ক্রীং হুং হ্রীং ব্রক্ষরী পাতু চামুণ্ডা হৃদয়ং মম।।
এই হুং ও এং স্তনদ্বয়ং ক্রীং কট্ স্বাহা ককুৎস্থলম্। অষ্টাক্ষরী মহাবিদ্যা ভুজৌ পাতু সকর্তৃকা । ক্রীং ক্রীং হুং হুং হ্রীং হ্রীং করৌ পাতু ষড়ক্ষরী মন। ক্রীং নাভিং মধ্যদেশঞ্চ দক্ষিণে কালিকেহবতু ৷৷
ক্রীং স্বাহা পাতু পৃষ্ঠস্ত কালিকা যা দশাক্ষরী। হ্রীং হ্রীং দক্ষিণে কালিকে হুং হ্রীং পাতু কটিদ্বয়ম্ ।। কালী দশাক্ষরী বিদ্যা স্বাহা পাতুরুযুগ্মকম্। ওঁ হ্রীং ক্রীং মে স্বাহা পাতু কালিকা জানুনী মম।
কালী হৃন্নামবিদ্যেয়ং চতুৰ্ব্বর্গফলপ্রদা। ক্রীং হুং হ্রীং পাতু সা গুল দক্ষিণে কালিকে বতু ।। ক্রীং হুং হ্রীং স্বাহা পাতু চতুদশাক্ষরী মম।। খড়া মুণ্ড ধরা কালী বরদা ভয়হারিণী। বিদ্যাভিঃ সকলাভিঃ সা সৰ্ব্বাঙ্গনভিতোহবত্ব। কালী কপালিনী কুল্লা কুরুকুল্লা বিরোধিনী। বিপ্রচিত্তা তথাগ্রোগ্নপ্রভা দীপ্তা ঘনত্বঃ ।।
লীলা ঘনা বলাকা চ মাত্রা মুদ্রা মিতা চ মাম্।। এতাং সৰ্ব্বাঃ খড়্গাধরা মুণ্ডমালাবিভূষিতাঃ। রক্ষন্তু দিগ্বিদিক্ষু মাং ব্রাহ্মী নারায়ণী তথা। মহেশ্বরী চ চামুণ্ডা কৌমারী চাপরাজিতা। বারাহী নারসিংহী চ সর্ব্বশ্চামিতভূষণাঃ।
রক্ষন্তু সায়ুধৈদ্দিক্ষু বিদিক্ষু মং যথা তথা। ইত্যেবং কথিতং দিব্যং কবচং পরমাদ্ভুতম্। শ্রীজগন্মঙ্গলং নাম মহামন্ত্রৌঘবিগ্ৰহম্। ত্রৈলোক্যাকর্ষণং ব্রহ্মকবচং মম্মুখোদিতম্। গুরুপূজাং বিধায়াথ গৃহীয়াং “কবচৎ ততঃ।
কবচং ক্রিঃ সকৃদ্বাপি যাবজ্জীবঞ্চ বা পুনঃ। এতচ্ছুভাদ্বমাবৃত্তা ত্রৈলোক্যবিজয়ী ভবেৎ। ত্রৈলোক্যঃ ক্ষোভয়ত্যের কবচস্য প্রসাদতঃ। মহাকবিৰ্ভবেন্মাসাৎ সৰ্ব্বসিদ্ধীশ্বরো ভবেৎ। পুষ্পাঞ্জলীন্ কালিকায়ৈ মূলেনৈব পঠেৎ সকৃৎ।
শতবর্ষ সহস্রাণাং পূজায়াঃ ফলমাপুয়াৎ।। ভুজ্জে বিলিখিতঞ্চৈতৎ স্বর্ণস্থং ধারয়েদ যদি। শিখায়াং দক্ষিণে বাহৌ কণ্ঠে বা ধারয়েদ যদি। ত্রৈলোক্যং মোহয়েৎ ক্রোধাৎ ত্রৈলোক্যং চূর্ণয়েৎ ক্ষণাৎ।
পুত্রবান্ বলবান্ শ্ৰীমান্ নানাবিদ্যানিধিৰ্ভবেৎ। ব্রহ্মাস্ত্রাদীনি শস্ত্রাণি তদ্ গাত্ৰ স্পৰ্শনে ততঃ। নাশমায়ান্তি যা নারী বন্ধ্যা বা মৃতপুত্রিণী ৷৷ কণ্ঠে বা বামবাহৌ বা কবচস্য চ ধারণাৎ। বহুপত্যা জীববৎসা ভবত্যেব ন সংশয় ৷
ন দেয়ং পরশিষ্যেভ্যো হাভক্তেভ্যো বিশেষতঃ। শিষ্যেভ্যো ভক্তিযুক্তেভ্যশ্চান্যথা মৃত্যুমাপুয়াৎ।। স্পর্দ্ধামুর্দ্ধয় কমলা বাগ্দেবী তন্মুখে বসেৎ। পৌত্রান্তং স্থৈর্য্যমাস্থায় নিবসত্যেব নিশ্চিতম্ ।।
ইদং কবচমজ্ঞাত্বা যো জপেৎ কালী দক্ষিণাম্ । শতলক্ষং প্রজা হি তস্য বিদ্যা ন সিধ্যাতি৷৷ নশস্ত্রঘাতমাপ্নোতি সোহচিরামৃত্যুমাপুয়াৎ।
—ইতি ভৈরবতন্ত্রে ভৈরবীভৈরব সংবাদে কালী কল্পে কালীকবচং সমাপ্তম্।