প্রতিদিন গুরু প্রদত্ত বীজ মন্ত্র 108 জপ পদ্ধতি
যেদিন হইতে যে ব্যক্তির বীজ এবং গায়ত্রী দীক্ষা হয়েছে বা হবে সেইদিন সেই মুহূর্ত থেকেই সেই ব্যক্তি শাস্ত্রসম্মত অনুসারে দ্বিজত্ত্ব অবস্থা লাভ অবশ্যই করবে l
গুরু প্রদত্ত বীজ এবং গায়ত্রী মন্ত্র প্রতিদিন 108 কমপক্ষে জপ করা উচিত, নিচে তার বিশদ পদ্ধতি দেওয়া হইলো l গুরু প্রদত্ত গায়েত্রী বীজমন্ত্র জপের আগে জপ না করিলে জপের ফল বিশেষ হয় না তাই বীজ দীক্ষার সঙ্গে গায়েত্রী দীক্ষা অত্যন্ত আবশ্যক ।
গুরু প্রদত্ত বীজ এবং গায়ত্রী মন্ত্র সর্বদা উপরোক্ত জপ পদ্ধতি গুলির মধ্যে চতুর্থ
পদ্ধতি অর্থাৎ মানসিক জপ পদ্ধতি মাধ্যমে জপ অবশ্যই করিতে হইবে l
প্রতিদিন গুরু প্রদত্ত বীজ মন্ত্র 108 জপ পদ্ধতি
1. সর্বপ্রথমে ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু—-10 বার জপ করিতে হইবে l
2. তারপর গুরু প্রদত্ত গায়ত্রী মন্ত্র মানসিকভাবে 3 বার জপ
করিতে হইবে l
3. তারপর গুরু প্রদত্ত বীজ মন্ত্র মানসিকভাবে 108 বার জপ
করিতে হইবে l
4. তারপর আবার গুরু প্রদত্ত গায়ত্রী মন্ত্র মানসিকভাবে 3 বার জপ করিতে হইবে l
5. তারপর আবার ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু—-10 বার জপ করিতে হইবে l
6. তারপর জপ সমর্পণ পদ্ধতি ধারা 108 জপ পদ্ধতি সমাপ্ত
করিতে হইবে l
জপ সমর্পণ করার প্রয়োজনীয়তা
শাস্ত্র অনুসারে উন্নত ধার্মিক লোক কল্যাণকর ধর্মযুক্ত কর্মকেই যজ্ঞ বলে ধরা হয়, আর সেই যজ্ঞের ফল স্বরূপ গুরু ভগবান বিষ্ণুর স্থিতি স্বরূপ প্রশন্তি নাদস্তর থেকে শিষ্যের আত্মজ্ঞান বা পরম মুক্তির জন্য যে মন্ত্র নির্বাচন করে শিষ্যের অনাহত চক্রের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করে দেন- আর শিষ্য সেই গুরু প্রদত্ত মন্ত্র জপ করে যদি কর্মফলদাতা ঈশ্বরকে জপ সমর্পণ না করে তাহলে সে শাস্ত্র অনুসারে চোর সমতুল্য বা চোর হয়,-- ইহাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতাতে তৃতীয় অধ্যায় 12 শ্লোক এ বলেছেন যে:--
ইষ্টান্ ভোগান্ হি বো দেবা দাস্যন্তে যজ্ঞভাবিতাঃ।
তৈর্দত্তানপ্রদায়ৈভ্যো যো ভুঙক্তে স্তেন এব সঃ।।12।।
অনুবাদঃ যজ্ঞের (লোককল্যাণকর ধর্মযুক্তকর্ম ) ফলে সন্তুষ্ট হয়ে কর্মফলদাতা ঈশ্বর তোমাদের মহাকল্যাণকর মুক্তিপ্রদায়িনী বাঞ্ছিত দিব্য বস্তু ( সদ্গুরুর মাধ্যমে পরমমুক্তি প্রদানকারী ইষ্টমন্ত্র ) প্রদান করবেন। কিন্তু সেই মহাকল্যাণকর মুক্তিপ্রদায়িনী বাঞ্ছিত দিব্য প্রদত্ত বস্তু ( ইষ্টমন্ত্র ) কর্মফলদাতা ঈশ্বরকে নিবেদন না করে, সে নিশ্চয়ই চোর।
তাই প্রত্যেক ব্যক্তির গুরু প্রদত্ত দীক্ষা বা ইস্ট মন্ত্র জপ করার পর শাস্ত্র বিধি অনুসারে কর্মফলদাতা ঈশ্বরকে জপ সমর্পণ করা উচিত –তাছাড়া জপ করা জনিত কোন শুভ কর্মফল তার উদয় হয় না এবং সে চোর এ পরিণত হয়
জপ সমর্পণ পদ্ধতি
গুরু প্রদত্ত মন্ত্র আসনে বসে জপ সম্পূর্ণ করার পর ডান হাতের তালুতে জল নিয়ে নিচের মন্ত্র বলে জল মাটিতে বা কোন পূজা সম্বন্ধীয় পাত্রে ফেলতে হবে I
মন্ত্র:---- “ ওঁ নমঃ গুহ্যতি গুহ্য গোপ্তাত্বং গৃহাণাস্মৎ কৃতং জপং ।
সিদ্বি ভবতু-মে দেব ত্বৎ প্রসাদাৎ জনার্দ্দন।।”
অর্থঃ :- হে পরম দেব, পরমপ্রিয় কর্মফলদাতা ঈশ্বর তুমি গুহ্য ও অতি গুহ্য বস্তুকে রক্ষা কর। অতএব আমার এই জপ তুমি গ্রহন কর এবং হে দেব তোমার প্রসাদে আমার সর্বসিদ্ধি লাভ হউক।
ক্ষমা প্রার্থনা মন্ত্রঃ- ( বুকের কাছে দুই হাত জোড় করে নমস্কার এর মতন করে বলতে হবে)
“নমো যদরং পরিভ্রস্টং মাত্রা হিনঞ্চ যদ ভবেৎ।
পূর্নং ভবতু তৎ সর্বং ত্বৎ প্রসাদাত জনার্দ্দন ॥”
অর্থঃ- আমার উক্ত কার্যে যদি কোন আচার বাদ যাইয়া থাকে বা মাত্রা বিবর্তিত থাকে হে ভগবান তোমার অনুগ্রহে তা পূর্নত্ব প্রাপ্ত হউক।
তারপর নিচের মন্ত্রটি বলতে হবে—( বুকের কাছে দুই হাত জোড় করে নমস্কার এর মতন করে বলতে হবে)
“ ওঁ প্রীয়তাং পুন্ডরীকাক্ষ সর্বযজ্ঞঈশ্বর হরি
তস্মিন তুষ্ট জগৎ তুষ্ট প্রনিতে প্রণীতং জগৎ”
ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু—-10 বার জপ করে শেষ করতে হবে