পরমা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য
একাদশী পালনের সঠিক নিয়ম গুলি হল-
যিনি একাদশী পালন করবেন তিনি দশমীতে- একাহার, একাদশীতে- নিরাহার তথা উপবাস এবং দ্বাদশীতে একাহার করবেন। যদি সম্পূর্ণ সক্ষম না হন তাহলে কেবলমাত্র একাদশীতে উপবাস করবেন। আর যদি তাহাতেও সক্ষম না হন, তাহলে একাদশীতে পঞ্চ রবিশষ্য বর্জন করে- ফল মূলাদি এবং অনুকল্প গ্রহণের বিধান রয়েছে।
একাদশী পালনের ক্ষেত্রে যে পাঁচ প্রকার রবিশস্য বর্জনের বিধান রয়েছে তা হলো- চাল, গম, যব, ডাল ও সরিষা বা সরিষা থেকে তৈরি যেকোনো প্রকার খাদ্যদব্য। এইদিন একাদশী পালন করলে চা, কফি, পান, বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদির নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
যারা একাদশী ব্রত পালন করবেন তাদের আগের দিন রাত বারোটার পূর্বে অন্ন ভোজন করে নেওয়া প্রয়োজন।
একাদশীর দিন ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথমে সংকল্প গ্রহণ করতে হয়। একাদশীর সংকল্প মন্ত্র টি হল-
"একাদশ্যাং নিরাহারঃ স্থিত্বা অহম অপরেহহানি, ভোক্ষ্যামি পুন্ডরিকাক্ষ শরণম মে ভবাচ্যুত"
একাদশী ব্রত পালন কেবলমাত্র উপবাস করা নয় তার সাথে সাথে নিরন্তর শ্রীভগবান কে স্মরণ করা এবং ব্রত কথা পাঠ, শ্রবণ ও কির্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করা। এই দিন পরনিন্দা-পরচর্চা, মিথ্যা কথা বলা, ক্রোধ,দুরাচার,স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
একাদশীতে বিভিন্ন খুঁটিনাটি কাজ যেমন সবজি কাটার সময় সতর্ক থাকতে হবে।যাতে রক্তক্ষরণ না হয়। কারণ একাদশীর দিন রক্তক্ষরণ খুবই অশুভ বলে গণ্য।একাদশীর দিন শরীরে প্রসাধনী ব্যবহার নিষিদ্ধ অর্থাৎ তেল, সুগন্ধি, সাবান-শ্যাম্পু ইত্যাদি বর্জনীয় এবং সকল প্রকার ক্ষৌরকর্ম করা অর্থাৎ চুল ও নখ কাটা ইত্যাদি বর্জনীয়।
একাদশীর দিন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সন্ধ্যেবেলায় শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে একটি ঘিয়ের প্রদীপ নিবেদন করা।
একাদশী তিথির পরদিন অর্থাৎ দ্বাদশীর দিন একাদশীর পারণ ক্রিয়া সমাপ্ত করতে হয়। এই পারণ ক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মন্ত্র উচ্চারণ করে সম্পন্ন করতে হয়।
এই নির্দিষ্ট পারনের সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশষ্য ভগবানকে নিবেদন করার পর প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করে পারন করা একান্ত আবশ্যক। নচেৎ একাদশীর কোনো ফল লাভ হয় না। পারনের সময় যে মন্ত্রটি পাঠ করতে হয় সেটি হল-
"অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
অথবা
"একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
কামদা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য
একাদশী পালনের সঠিক নিয়ম গুলি হল-
যিনি একাদশী পালন করবেন তিনি দশমীতে- একাহার, একাদশীতে- নিরাহার তথা উপবাস এবং দ্বাদশীতে একাহার করবেন। যদি সম্পূর্ণ সক্ষম না হন তাহলে কেবলমাত্র একাদশীতে উপবাস করবেন। আর যদি তাহাতেও সক্ষম না হন, তাহলে একাদশীতে পঞ্চ রবিশষ্য বর্জন করে- ফল মূলাদি এবং অনুকল্প গ্রহণের বিধান রয়েছে।
একাদশী পালনের ক্ষেত্রে যে পাঁচ প্রকার রবিশস্য বর্জনের বিধান রয়েছে তা হলো- চাল, গম, যব, ডাল ও সরিষা বা সরিষা থেকে তৈরি যেকোনো প্রকার খাদ্যদব্য। এইদিন একাদশী পালন করলে চা, কফি, পান, বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদির নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
যারা একাদশী ব্রত পালন করবেন তাদের আগের দিন রাত বারোটার পূর্বে অন্ন ভোজন করে নেওয়া প্রয়োজন।
একাদশীর দিন ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথমে সংকল্প গ্রহণ করতে হয়। একাদশীর সংকল্প মন্ত্র টি হল-
"একাদশ্যাং নিরাহারঃ স্থিত্বা অহম অপরেহহানি, ভোক্ষ্যামি পুন্ডরিকাক্ষ শরণম মে ভবাচ্যুত"
একাদশী ব্রত পালন কেবলমাত্র উপবাস করা নয় তার সাথে সাথে নিরন্তর শ্রীভগবান কে স্মরণ করা এবং ব্রত কথা পাঠ, শ্রবণ ও কির্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করা। এই দিন পরনিন্দা-পরচর্চা, মিথ্যা কথা বলা, ক্রোধ,দুরাচার,স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
একাদশীতে বিভিন্ন খুঁটিনাটি কাজ যেমন সবজি কাটার সময় সতর্ক থাকতে হবে।যাতে রক্তক্ষরণ না হয়। কারণ একাদশীর দিন রক্তক্ষরণ খুবই অশুভ বলে গণ্য।একাদশীর দিন শরীরে প্রসাধনী ব্যবহার নিষিদ্ধ অর্থাৎ তেল, সুগন্ধি, সাবান-শ্যাম্পু ইত্যাদি বর্জনীয় এবং সকল প্রকার ক্ষৌরকর্ম করা অর্থাৎ চুল ও নখ কাটা ইত্যাদি বর্জনীয়।
একাদশীর দিন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সন্ধ্যেবেলায় শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে একটি ঘিয়ের প্রদীপ নিবেদন করা।
একাদশী তিথির পরদিন অর্থাৎ দ্বাদশীর দিন একাদশীর পারণ ক্রিয়া সমাপ্ত করতে হয়। এই পারণ ক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মন্ত্র উচ্চারণ করে সম্পন্ন করতে হয়।
এই নির্দিষ্ট পারনের সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশষ্য ভগবানকে নিবেদন করার পর প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করে পারন করা একান্ত আবশ্যক। নচেৎ একাদশীর কোনো ফল লাভ হয় না। পারনের সময় যে মন্ত্রটি পাঠ করতে হয় সেটি হল-
"অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
অথবা
"একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
পদ্মিনী একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য
একাদশী পালনের সঠিক নিয়ম গুলি হল-
যিনি একাদশী পালন করবেন তিনি দশমীতে- একাহার, একাদশীতে- নিরাহার তথা উপবাস এবং দ্বাদশীতে একাহার করবেন। যদি সম্পূর্ণ সক্ষম না হন তাহলে কেবলমাত্র একাদশীতে উপবাস করবেন। আর যদি তাহাতেও সক্ষম না হন, তাহলে একাদশীতে পঞ্চ রবিশষ্য বর্জন করে- ফল মূলাদি এবং অনুকল্প গ্রহণের বিধান রয়েছে।
একাদশী পালনের ক্ষেত্রে যে পাঁচ প্রকার রবিশস্য বর্জনের বিধান রয়েছে তা হলো- চাল, গম, যব, ডাল ও সরিষা বা সরিষা থেকে তৈরি যেকোনো প্রকার খাদ্যদব্য। এইদিন একাদশী পালন করলে চা, কফি, পান, বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদির নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
যারা একাদশী ব্রত পালন করবেন তাদের আগের দিন রাত বারোটার পূর্বে অন্ন ভোজন করে নেওয়া প্রয়োজন।
একাদশীর দিন ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথমে সংকল্প গ্রহণ করতে হয়। একাদশীর সংকল্প মন্ত্র টি হল-
"একাদশ্যাং নিরাহারঃ স্থিত্বা অহম অপরেহহানি, ভোক্ষ্যামি পুন্ডরিকাক্ষ শরণম মে ভবাচ্যুত"
একাদশী ব্রত পালন কেবলমাত্র উপবাস করা নয় তার সাথে সাথে নিরন্তর শ্রীভগবান কে স্মরণ করা এবং ব্রত কথা পাঠ, শ্রবণ ও কির্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করা। এই দিন পরনিন্দা-পরচর্চা, মিথ্যা কথা বলা, ক্রোধ,দুরাচার,স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
একাদশীতে বিভিন্ন খুঁটিনাটি কাজ যেমন সবজি কাটার সময় সতর্ক থাকতে হবে।যাতে রক্তক্ষরণ না হয়। কারণ একাদশীর দিন রক্তক্ষরণ খুবই অশুভ বলে গণ্য।একাদশীর দিন শরীরে প্রসাধনী ব্যবহার নিষিদ্ধ অর্থাৎ তেল, সুগন্ধি, সাবান-শ্যাম্পু ইত্যাদি বর্জনীয় এবং সকল প্রকার ক্ষৌরকর্ম করা অর্থাৎ চুল ও নখ কাটা ইত্যাদি বর্জনীয়।
একাদশীর দিন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সন্ধ্যেবেলায় শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে একটি ঘিয়ের প্রদীপ নিবেদন করা।
একাদশী তিথির পরদিন অর্থাৎ দ্বাদশীর দিন একাদশীর পারণ ক্রিয়া সমাপ্ত করতে হয়। এই পারণ ক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মন্ত্র উচ্চারণ করে সম্পন্ন করতে হয়।
এই নির্দিষ্ট পারনের সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশষ্য ভগবানকে নিবেদন করার পর প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করে পারন করা একান্ত আবশ্যক। নচেৎ একাদশীর কোনো ফল লাভ হয় না। পারনের সময় যে মন্ত্রটি পাঠ করতে হয় সেটি হল-
"অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
অথবা
"একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
পাপমোচনী একাদশীর ব্রত মাহাত্ম্য
একাদশী পালনের সঠিক নিয়ম গুলি হল-
যিনি একাদশী পালন করবেন তিনি দশমীতে- একাহার, একাদশীতে- নিরাহার তথা উপবাস এবং দ্বাদশীতে একাহার করবেন। যদি সম্পূর্ণ সক্ষম না হন তাহলে কেবলমাত্র একাদশীতে উপবাস করবেন। আর যদি তাহাতেও সক্ষম না হন, তাহলে একাদশীতে পঞ্চ রবিশষ্য বর্জন করে- ফল মূলাদি এবং অনুকল্প গ্রহণের বিধান রয়েছে।
একাদশী পালনের ক্ষেত্রে যে পাঁচ প্রকার রবিশস্য বর্জনের বিধান রয়েছে তা হলো- চাল, গম, যব, ডাল ও সরিষা বা সরিষা থেকে তৈরি যেকোনো প্রকার খাদ্যদব্য। এইদিন একাদশী পালন করলে চা, কফি, পান, বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদির নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
যারা একাদশী ব্রত পালন করবেন তাদের আগের দিন রাত বারোটার পূর্বে অন্ন ভোজন করে নেওয়া প্রয়োজন।
একাদশীর দিন ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথমে সংকল্প গ্রহণ করতে হয়। একাদশীর সংকল্প মন্ত্র টি হল-
"একাদশ্যাং নিরাহারঃ স্থিত্বা অহম অপরেহহানি, ভোক্ষ্যামি পুন্ডরিকাক্ষ শরণম মে ভবাচ্যুত"
একাদশী ব্রত পালন কেবলমাত্র উপবাস করা নয় তার সাথে সাথে নিরন্তর শ্রীভগবান কে স্মরণ করা এবং ব্রত কথা পাঠ, শ্রবণ ও কির্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করা। এই দিন পরনিন্দা-পরচর্চা, মিথ্যা কথা বলা, ক্রোধ,দুরাচার,স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
একাদশীতে বিভিন্ন খুঁটিনাটি কাজ যেমন সবজি কাটার সময় সতর্ক থাকতে হবে।যাতে রক্তক্ষরণ না হয়। কারণ একাদশীর দিন রক্তক্ষরণ খুবই অশুভ বলে গণ্য।একাদশীর দিন শরীরে প্রসাধনী ব্যবহার নিষিদ্ধ অর্থাৎ তেল, সুগন্ধি, সাবান-শ্যাম্পু ইত্যাদি বর্জনীয় এবং সকল প্রকার ক্ষৌরকর্ম করা অর্থাৎ চুল ও নখ কাটা ইত্যাদি বর্জনীয়।
একাদশীর দিন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সন্ধ্যেবেলায় শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে একটি ঘিয়ের প্রদীপ নিবেদন করা।
একাদশী তিথির পরদিন অর্থাৎ দ্বাদশীর দিন একাদশীর পারণ ক্রিয়া সমাপ্ত করতে হয়। এই পারণ ক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মন্ত্র উচ্চারণ করে সম্পন্ন করতে হয়।
এই নির্দিষ্ট পারনের সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশষ্য ভগবানকে নিবেদন করার পর প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করে পারন করা একান্ত আবশ্যক। নচেৎ একাদশীর কোনো ফল লাভ হয় না। পারনের সময় যে মন্ত্রটি পাঠ করতে হয় সেটি হল-
"অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
অথবা
"একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
আমলকী একাদশীর ব্রত মাহাত্ম্য
একাদশী পালনের সঠিক নিয়ম গুলি হল-
যিনি একাদশী পালন করবেন তিনি দশমীতে- একাহার, একাদশীতে- নিরাহার তথা উপবাস এবং দ্বাদশীতে একাহার করবেন। যদি সম্পূর্ণ সক্ষম না হন তাহলে কেবলমাত্র একাদশীতে উপবাস করবেন। আর যদি তাহাতেও সক্ষম না হন, তাহলে একাদশীতে পঞ্চ রবিশষ্য বর্জন করে- ফল মূলাদি এবং অনুকল্প গ্রহণের বিধান রয়েছে।
একাদশী পালনের ক্ষেত্রে যে পাঁচ প্রকার রবিশস্য বর্জনের বিধান রয়েছে তা হলো- চাল, গম, যব, ডাল ও সরিষা বা সরিষা থেকে তৈরি যেকোনো প্রকার খাদ্যদব্য। এইদিন একাদশী পালন করলে চা, কফি, পান, বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদির নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
যারা একাদশী ব্রত পালন করবেন তাদের আগের দিন রাত বারোটার পূর্বে অন্ন ভোজন করে নেওয়া প্রয়োজন।
একাদশীর দিন ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথমে সংকল্প গ্রহণ করতে হয়। একাদশীর সংকল্প মন্ত্র টি হল-
"একাদশ্যাং নিরাহারঃ স্থিত্বা অহম অপরেহহানি, ভোক্ষ্যামি পুন্ডরিকাক্ষ শরণম মে ভবাচ্যুত"
একাদশী ব্রত পালন কেবলমাত্র উপবাস করা নয় তার সাথে সাথে নিরন্তর শ্রীভগবান কে স্মরণ করা এবং ব্রত কথা পাঠ, শ্রবণ ও কির্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করা। এই দিন পরনিন্দা-পরচর্চা, মিথ্যা কথা বলা, ক্রোধ,দুরাচার,স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
একাদশীতে বিভিন্ন খুঁটিনাটি কাজ যেমন সবজি কাটার সময় সতর্ক থাকতে হবে।যাতে রক্তক্ষরণ না হয়। কারণ একাদশীর দিন রক্তক্ষরণ খুবই অশুভ বলে গণ্য।একাদশীর দিন শরীরে প্রসাধনী ব্যবহার নিষিদ্ধ অর্থাৎ তেল, সুগন্ধি, সাবান-শ্যাম্পু ইত্যাদি বর্জনীয় এবং সকল প্রকার ক্ষৌরকর্ম করা অর্থাৎ চুল ও নখ কাটা ইত্যাদি বর্জনীয়।
একাদশীর দিন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সন্ধ্যেবেলায় শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে একটি ঘিয়ের প্রদীপ নিবেদন করা।
একাদশী তিথির পরদিন অর্থাৎ দ্বাদশীর দিন একাদশীর পারণ ক্রিয়া সমাপ্ত করতে হয়। এই পারণ ক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মন্ত্র উচ্চারণ করে সম্পন্ন করতে হয়।
এই নির্দিষ্ট পারনের সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশষ্য ভগবানকে নিবেদন করার পর প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করে পারন করা একান্ত আবশ্যক। নচেৎ একাদশীর কোনো ফল লাভ হয় না। পারনের সময় যে মন্ত্রটি পাঠ করতে হয় সেটি হল-
"অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
অথবা
"একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
বিজয়া একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য
একাদশী পালনের সঠিক নিয়ম গুলি হল-
যিনি একাদশী পালন করবেন তিনি দশমীতে- একাহার, একাদশীতে- নিরাহার তথা উপবাস এবং দ্বাদশীতে একাহার করবেন। যদি সম্পূর্ণ সক্ষম না হন তাহলে কেবলমাত্র একাদশীতে উপবাস করবেন। আর যদি তাহাতেও সক্ষম না হন, তাহলে একাদশীতে পঞ্চ রবিশষ্য বর্জন করে- ফল মূলাদি এবং অনুকল্প গ্রহণের বিধান রয়েছে।
একাদশী পালনের ক্ষেত্রে যে পাঁচ প্রকার রবিশস্য বর্জনের বিধান রয়েছে তা হলো- চাল, গম, যব, ডাল ও সরিষা বা সরিষা থেকে তৈরি যেকোনো প্রকার খাদ্যদব্য। এইদিন একাদশী পালন করলে চা, কফি, পান, বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদির নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
যারা একাদশী ব্রত পালন করবেন তাদের আগের দিন রাত বারোটার পূর্বে অন্ন ভোজন করে নেওয়া প্রয়োজন।
একাদশীর দিন ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথমে সংকল্প গ্রহণ করতে হয়। একাদশীর সংকল্প মন্ত্র টি হল-
"একাদশ্যাং নিরাহারঃ স্থিত্বা অহম অপরেহহানি, ভোক্ষ্যামি পুন্ডরিকাক্ষ শরণম মে ভবাচ্যুত"
একাদশী ব্রত পালন কেবলমাত্র উপবাস করা নয় তার সাথে সাথে নিরন্তর শ্রীভগবান কে স্মরণ করা এবং ব্রত কথা পাঠ, শ্রবণ ও কির্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করা। এই দিন পরনিন্দা-পরচর্চা, মিথ্যা কথা বলা, ক্রোধ,দুরাচার,স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
একাদশীতে বিভিন্ন খুঁটিনাটি কাজ যেমন সবজি কাটার সময় সতর্ক থাকতে হবে।যাতে রক্তক্ষরণ না হয়। কারণ একাদশীর দিন রক্তক্ষরণ খুবই অশুভ বলে গণ্য।একাদশীর দিন শরীরে প্রসাধনী ব্যবহার নিষিদ্ধ অর্থাৎ তেল, সুগন্ধি, সাবান-শ্যাম্পু ইত্যাদি বর্জনীয় এবং সকল প্রকার ক্ষৌরকর্ম করা অর্থাৎ চুল ও নখ কাটা ইত্যাদি বর্জনীয়।
একাদশীর দিন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সন্ধ্যেবেলায় শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে একটি ঘিয়ের প্রদীপ নিবেদন করা।
একাদশী তিথির পরদিন অর্থাৎ দ্বাদশীর দিন একাদশীর পারণ ক্রিয়া সমাপ্ত করতে হয়। এই পারণ ক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মন্ত্র উচ্চারণ করে সম্পন্ন করতে হয়।
এই নির্দিষ্ট পারনের সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশষ্য ভগবানকে নিবেদন করার পর প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করে পারন করা একান্ত আবশ্যক। নচেৎ একাদশীর কোনো ফল লাভ হয় না। পারনের সময় যে মন্ত্রটি পাঠ করতে হয় সেটি হল-
"অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
অথবা
"একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
একাদশী পালনের সঠিক নিয়ম গুলি হল-
যিনি একাদশী পালন করবেন তিনি দশমীতে- একাহার, একাদশীতে- নিরাহার তথা উপবাস এবং দ্বাদশীতে একাহার করবেন। যদি সম্পূর্ণ সক্ষম না হন তাহলে কেবলমাত্র একাদশীতে উপবাস করবেন। আর যদি তাহাতেও সক্ষম না হন, তাহলে একাদশীতে পঞ্চ রবিশষ্য বর্জন করে- ফল মূলাদি এবং অনুকল্প গ্রহণের বিধান রয়েছে।
একাদশী পালনের ক্ষেত্রে যে পাঁচ প্রকার রবিশস্য বর্জনের বিধান রয়েছে তা হলো- চাল, গম, যব, ডাল ও সরিষা বা সরিষা থেকে তৈরি যেকোনো প্রকার খাদ্যদব্য। এইদিন একাদশী পালন করলে চা, কফি, পান, বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদির নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
যারা একাদশী ব্রত পালন করবেন তাদের আগের দিন রাত বারোটার পূর্বে অন্ন ভোজন করে নেওয়া প্রয়োজন।
একাদশীর দিন ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথমে সংকল্প গ্রহণ করতে হয়। একাদশীর সংকল্প মন্ত্র টি হল-
"একাদশ্যাং নিরাহারঃ স্থিত্বা অহম অপরেহহানি, ভোক্ষ্যামি পুন্ডরিকাক্ষ শরণম মে ভবাচ্যুত"
একাদশী ব্রত পালন কেবলমাত্র উপবাস করা নয় তার সাথে সাথে নিরন্তর শ্রীভগবান কে স্মরণ করা এবং ব্রত কথা পাঠ, শ্রবণ ও কির্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করা। এই দিন পরনিন্দা-পরচর্চা, মিথ্যা কথা বলা, ক্রোধ,দুরাচার,স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
একাদশীতে বিভিন্ন খুঁটিনাটি কাজ যেমন সবজি কাটার সময় সতর্ক থাকতে হবে।যাতে রক্তক্ষরণ না হয়। কারণ একাদশীর দিন রক্তক্ষরণ খুবই অশুভ বলে গণ্য।একাদশীর দিন শরীরে প্রসাধনী ব্যবহার নিষিদ্ধ অর্থাৎ তেল, সুগন্ধি, সাবান-শ্যাম্পু ইত্যাদি বর্জনীয় এবং সকল প্রকার ক্ষৌরকর্ম করা অর্থাৎ চুল ও নখ কাটা ইত্যাদি বর্জনীয়।
একাদশীর দিন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সন্ধ্যেবেলায় শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে একটি ঘিয়ের প্রদীপ নিবেদন করা।
একাদশী তিথির পরদিন অর্থাৎ দ্বাদশীর দিন একাদশীর পারণ ক্রিয়া সমাপ্ত করতে হয়। এই পারণ ক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মন্ত্র উচ্চারণ করে সম্পন্ন করতে হয়।
এই নির্দিষ্ট পারনের সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশষ্য ভগবানকে নিবেদন করার পর প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করে পারন করা একান্ত আবশ্যক। নচেৎ একাদশীর কোনো ফল লাভ হয় না। পারনের সময় যে মন্ত্রটি পাঠ করতে হয় সেটি হল-
"অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
অথবা
"একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
মাঘ মাসের কৃষ্ণপক্ষের ‘ষটতিলা’ একাদশীর মাহাত্ম্য ভবিষ্যোত্তরপুরাণে বর্ণিত আছে। যুধিষ্ঠির মহারাজ বললেন- হে জগন্নাথ! মাঘ মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথির নাম কি, বিধিই বা কি এবং তার কি ফল, সবিস্তারে বর্ণনা করুন। যাতে তারা নরক গতি থেকে রক্ষা পায়, তা যথাযথভাবে আমাকে উপদেশ করুন। অনায়াসে সাধন করা যায় এমন কোন কাজের মাধ্যমে যদি তাদের এই পাপ থেকে উদ্ধারের কোন উপায় থাকে, তবে তা বলুন। ঋষি পুলস্ত্য বললেন, হে মহাভাগ! তুমি একটি গোপনীয় উত্তম বিষয়ের প্রশ্ন করেছ। মাঘ মাসে শুচি, জিতেন্দ্রিয়, কাম, ক্রোধ আদি শূন্য হয়ে স্নানের পর সর্বদেবেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের পূজা করবে। পূজাতে কোন বিঘ্ন ঘটলে কৃষ্ণনাম স্মরণ করবে। রাত্রিতে অর্চনান্তে হোম করবে। তারপর চন্দন, অগুরু, কর্পুর ও শর্করা প্রভৃতি দ্বারা নৈবেদ্য প্রস্তুত করে ভগবানকে নিবেদন করবে। কুষ্মান্ড, নারকেল অথবা একশত গুবাক দিয়ে অর্ঘ্য প্রদান করবে ‘কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃপালুস্তমগতীনাং গতির্ভব’ ইত্যাদি মন্ত্রে শ্রীকৃষ্ণের পূজা করতে হয়। ‘কৃষ্ণ আমার প্রতি প্রীত হোন’ বলে যথাশক্তি ব্রাহ্মণকে জলপূর্ণ কলস, ছত্র, বস্ত্র, পাদুকা, গাভী ও তিলপাত্র দান করবে। স্নান, দানাদি কার্যে কালো তিল অত্যন্ত শুভ। হে দ্বিজত্তম! ঐ প্রদত্ত তিল থেকে পুনরায় যে তিল উৎপন্ন হয়, ততো বছর দানকারী স্বর্গলোকে বাস করে। তিলদ্বারা স্নান, তিল শরীরে ধারণ, তিল জলে মিশিয়ে তা দিয়ে তর্পণ, তিল ভোজন এবং তিল দান- এই ছয় প্রকার বিধানে সর্বপাপ বিনষ্ট হয়ে থাকে। এই জন্য এই একাদশীর নাম ষটতিলা। হে যুধিষ্ঠির! একসময় নারদও এই ষটতিলা একাদশীর ফল ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চাইলে যে কাহিনী আমি বলেছিলাম তা এখন তোমার কাছে বর্ণনা করছি। তদুত্তরে ভগবান বললেন- হে রাজন! এই একাদশী ‘ষটতিলা’ নামে জগতে বিদিত। একসময় দালভ্য ঋষি মুনিশ্রেষ্ঠ পুলস্তকে জিজ্ঞাসা করেন- মর্ত্যলোকে মানুষেরা ব্রহ্মহত্যা, গোহত্যা, অন্যের সম্পদ হরণ আদি পাপকর্ম দ্বারা নরকে গমন করে। পুরাকালে মর্ত্যলোকে এক ব্রাহ্মণী বাস করত। সে প্রত্যহ ব্রত আচরণ ও দেবপূজাপরায়ণা ছিল। উপবাস ক্রমে তার শরীর অত্যন্ত ক্ষীণ হয়ে গিয়েছিল। সেই মহাসতী ব্রহ্মণী অন্যের কাছ থেকে দ্রব্যাদি গ্রহণ করে দেবতা, ব্রাহ্মণ, কুমারীদের ভক্তিভরে দান করত। কিন্তু কখনও ভিক্ষুককে ভিক্ষাদান ও ব্রাহ্মণকে অন্নদান করেনি। এইভাবে বহু বছর অতিক্রান্ত হল। আমি চিন্তা করলাম, কষ্টসাধ্য বিভিন্ন ব্রত করার ফলে এই ব্রাহ্মণীর শরীরটি শুকিয়ে যাচ্ছে। সে যথাযথভাবে বৈষ্ণবদের অর্চনও করেছে, কিন্তু তাদের পরিতৃপ্তির জন্য কখনও অন্ন দান করেনি। তাই আমি একদিন কাপালিক রূপ ধারণ করে তামার পাত্র হাতে নিয়ে তার কাছে গিয়ে ভিক্ষা প্রার্থনা করলাম। ব্রাহ্মণী বলল-হে ব্রাহ্মণ! তুমি কোথা থেকে এসেছ, কোথায় যাবে, তা আমাকে বলো। আমি বললাম- হে সুন্দরী! আমাকে ভিক্ষা দাও। তখন সে ক্রুদ্ধ হয়ে আমার পাত্রে একটি মাটির ঢেলা নিক্ষেপ করল। তারপর আমি সেখান থেকে চলে গেলাম। বহুকাল পরে সেই ব্রাহ্মণী ব্রতপ্রভাবে স্বশরীরে স্বর্গে গমন করল। মাটির ঢেলা দানের ফলে একটি মনোরম গৃহ সে প্রাপ্ত হল। কিন্তু হে নারদ! সেখানে কোন ধান ও চাল কিছুই ছিল না। গৃহশূন্য দেখে মহাক্রোধে সে আমার কাছে এসে বলল-আমি ব্রত, কৃচ্ছ্রসাধন ও উপবাসের মাধ্যমে নারায়ণের আরাধনা করেছি। এখন হে জনার্দন! আমার গৃহে কিছুই দেখছি না কেন? হে নারদ! তখন আমি তাকে বললাম- তুমি নিজ গৃহে দরজা বন্ধ করে বসে থাকো। মর্ত্যলোকের মানবী স্বশরীরে স্বর্গে এসেছে শুনে দেবতাদের পত্নীরা তোমাকে দেখতে আসবে। কিন্তু তুমি দরজা খুলবে না। তুমি তাদের কাছে ষটতিলা ব্রতের পুণ্যফল প্রার্থনা করবে। যদি তারা সেই ফল প্রদানে রাজি হয়, তবেই দরজা খুলবে। এরপর দেবপত্নীরা সেখানে এসে তার দর্শন প্রার্থনা করল। তাদের মধ্যে এক দেবপত্নী তাঁর ষটতিলা ব্রতজনিত পুণ্যফল তাকে প্রদান করল। তখন সেই ব্রাহ্মণী দিব্যকান্তি বিশিষ্টা হল এবং তার গৃহ ধনধান্যে ভরে গেল। দ্বার উদঘাটন করলে দেবপত্নীরা তাকে দর্শন করে বিস্মিত হলেন। হে নারদ! অতিরিক্ত বিষয়বাসনা করা উচত নয়। বিত্ত শাঠ্যও অকর্তব্য। নিজ সাধ্যমতো তিল, বস্ত্র ও অন্ন দান করবে। ষটতিলা ব্রতের প্রভাবে দারিদ্রতা, শারীরিক কষ্ট, দুর্ভাগ্য প্রভৃতি বিনষ্ট হয়। এই বিধি অনুসারে তিলদান করলে মানুষ অনায়াসে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়। একাদশী পালনের সঠিক নিয়ম গুলি হল- যিনি একাদশী পালন করবেন তিনি দশমীতে- একাহার, একাদশীতে- নিরাহার তথা উপবাস এবং দ্বাদশীতে একাহার করবেন। যদি সম্পূর্ণ সক্ষম না হন তাহলে কেবলমাত্র একাদশীতে উপবাস করবেন। আর যদি তাহাতেও সক্ষম না হন, তাহলে একাদশীতে পঞ্চ রবিশষ্য বর্জন করে- ফল মূলাদি এবং অনুকল্প গ্রহণের বিধান রয়েছে। একাদশী পালনের ক্ষেত্রে যে পাঁচ প্রকার রবিশস্য বর্জনের বিধান রয়েছে তা হলো- চাল, গম, যব, ডাল ও সরিষা বা সরিষা থেকে তৈরি যেকোনো প্রকার খাদ্যদব্য। এইদিন একাদশী পালন করলে চা, কফি, পান, বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদির নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন। যারা একাদশী ব্রত পালন করবেন তাদের আগের দিন রাত বারোটার পূর্বে অন্ন ভোজন করে নেওয়া প্রয়োজন। একাদশীর দিন ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথমে সংকল্প গ্রহণ করতে হয়। একাদশীর সংকল্প মন্ত্র টি হল- "একাদশ্যাং নিরাহারঃ স্থিত্বা অহম অপরেহহানি, ভোক্ষ্যামি পুন্ডরিকাক্ষ শরণম মে ভবাচ্যুত" একাদশী ব্রত পালন কেবলমাত্র উপবাস করা নয় তার সাথে সাথে নিরন্তর শ্রীভগবান কে স্মরণ করা এবং ব্রত কথা পাঠ, শ্রবণ ও কির্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করা। এই দিন পরনিন্দা-পরচর্চা, মিথ্যা কথা বলা, ক্রোধ,দুরাচার,স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। একাদশীতে বিভিন্ন খুঁটিনাটি কাজ যেমন সবজি কাটার সময় সতর্ক থাকতে হবে।যাতে রক্তক্ষরণ না হয়। কারণ একাদশীর দিন রক্তক্ষরণ খুবই অশুভ বলে গণ্য।একাদশীর দিন শরীরে প্রসাধনী ব্যবহার নিষিদ্ধ অর্থাৎ তেল, সুগন্ধি, সাবান-শ্যাম্পু ইত্যাদি বর্জনীয় এবং সকল প্রকার ক্ষৌরকর্ম করা অর্থাৎ চুল ও নখ কাটা ইত্যাদি বর্জনীয়। একাদশীর দিন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সন্ধ্যেবেলায় শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে একটি ঘিয়ের প্রদীপ নিবেদন করা। একাদশী তিথির পরদিন অর্থাৎ দ্বাদশীর দিন একাদশীর পারণ ক্রিয়া সমাপ্ত করতে হয়। এই পারণ ক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মন্ত্র উচ্চারণ করে সম্পন্ন করতে হয়। এই নির্দিষ্ট পারনের সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশষ্য ভগবানকে নিবেদন করার পর প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করে পারন করা একান্ত আবশ্যক। নচেৎ একাদশীর কোনো ফল লাভ হয় না। পারনের সময় যে মন্ত্রটি পাঠ করতে হয় সেটি হল- "অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব" অথবা "একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"একাদশী পালনের নিয়মাবলী
ভোরে শয্যা ত্যাগ করে শুচিশুদ্ধ হয়ে শ্রীহরির মঙ্গল আরতিতে অংশগ্রহণ করতে হয়। শ্রীহরির পাদপদ্মে প্রার্থনা করতে হয়, “হে শ্রীকৃষ্ণ, আজ যেন এই মঙ্গলময়ী পবিত্র একাদশী সুন্দরভাবে পালন করতে পারি, আপনি আমাকে কৃপা করুন।” একাদশীতে গায়ে তেল মাখা, সাবান মাখা, পরনিন্দা-পরচর্চা, মিথ্যাভাষণ, ক্রোধ, দিবানিদ্রা, সাংসারিক আলাপাদি বর্জনীয়। এই দিন গঙ্গা আদি তীর্থে স্নান করতে হয়। মন্দির মার্জন, শ্রীহরির পূজার্চনা, স্তবস্তুতি, গীতা-ভাগবত পাঠ আলোচনায় বেশি করে সময় অতিবাহিত করতে হয়।
এই তিথিতে গোবিন্দের লীলা স্মরণ এবং তাঁর দিব্য নাম শ্রবণ করাই হচ্ছে সর্বোত্তম। শ্রীল প্রভুপাদ ভক্তদের একাদশীতে পঁশিচ মালা বা যথেষ্ট সময় পেলে আরো বেশি জপ করার নির্দেশ দিয়েছেন। একাদশীর দিন ক্ষৌরকর্মাদি নিষিদ্ধ। একাদশী ব্রত পালনে ধর্ম অর্থ, কাম, মোক্ষ আদি বহু অনিত্য ফলের উল্লেখ শাস্ত্রে থাকলেও শ্রীহরিভক্তি বা কৃষ্ণপ্রেম লাভই এই ব্রত পালনের মুখ্য উদ্দেশ্য। ভক্তগণ শ্রীহরির সন্তোষ বিধানের জন্যই এই ব্রত পালন করেন। পদ্মপুরাণ, ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ, বরাহপুরাণ, স্কন্দপুরাণ ও বৈষ্ণবস্মৃতিরাজ শ্রীহরিভক্তিবিলাস আদি গ্রন্থে এ সকল কথা বর্ণিত আছে।
যুধিষ্ঠির বললেন- হে কৃষ্ণ! পৌষ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীর নাম কি, বিধিই বা কি, কোন দেবতা ঐ দিনে পূজিত হন এবং আপনি কার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে সেই ব্রতফল প্রদান করেছিলেন কৃপা করে আমাকে সবিস্তারে তা বলুন।
শ্রীকৃষ্ণ বললেন- হে মাহারাজ! এই একাদশী ‘পুত্রদা’ নামে প্রসিদ্ধ। সর্বপাপবিনাশিনী এই একাদশীর অধিষ্ঠাতৃ দেবতা হলেন সিদ্ধিদাতা নারায়ণ। ত্রিলোকে এর মতো শ্রেষ্ঠ ব্রত নেই। এই ব্রতকারীকে নারায়ণ বিদ্ধান ও যশস্বী করে তোলেন। এখন আমার কাছে ব্রতের মাহাত্ম্য শ্রবণ করুন।
ভদ্রাবতী পুরীতে সুকেতুমান নামে এক রাজা ছিলেন। তার রানীর নাম ছিল শেব্যা। রাজদম্পতি বেশ সুখেই দিনযাপন করছিলেন।
বংশরক্ষার জন্য বহুদিন ধরে ধর্ম-কর্মের অনুষ্ঠান করেও যখন পুত্রলাভ হল না, তখন রাজা দুশ্চিন্তায় কাতর হয়ে পড়লেন। তাই সকল ঐশ্বর্যবান হয়েও পুত্রহীন রাজার মনে কোন সুখ ছিল না।
তিনি ভাবতেন পুত্রহীনের জন্ম বৃথা ও গৃহশূণ্য। পিতৃ-দেব-মনুষ্যলোকের কাছে যে ঋণ শাস্ত্রে উল্লেখ আছে, তা পুত্র বিনা পরিশোধ হয় না।
পুত্রবানজনের এ জগতে যশলাভ ও উত্তম গতি লাভ হয় এবং তাদের আয়ু, আরোগ্য, সম্পত্তি প্রভৃতি বিদ্যমান থাকে। নানা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত রাজা আত্মহত্যা করবেন বলে স্থির করলেন।
কিন্তু পরে বিচার করে দেখলেন- ‘আত্মহত্যা মহাপাপ, এরফলে কেবল দেহের বিনাশমাত্র হবে, কিন্তু আমার পুত্রহীনতা তো দূর হবে না।
তারপর একদিন রাজা নিবিড় বনে গমন করলেন। বন ভ্রমণ করতে করতে দ্বিপ্রহর অতিক্রান্ত হলে রাজা ক্ষুধা-তৃষ্ণায় অত্যন্ত কাতর হলেন। এদিক ওদিক জলাদির অনুসন্ধান করতে লাগলেন।
তিনি চক্রবাক, রাজহংস এবং নানারকম মাছে পরিপূর্ণ একটি মনোরম সরোবর দেখতে পেলেন। সরোবর দেখতে পেলেন। সরোবরের কাছে মুনিদের একটি আশ্রম ছিল।
তিনি সেখানে উপস্থিত হলেন। সরোবর তীরে মুনিগণ বেদপাঠ করছিলেন। মুনিবৃন্দের শ্রীচরণে তিনি দন্ডবৎ প্রণাম করলেন।
মুনিগণ রাজাকে বললেন-হে মহারাজ! আমরা ‘বিশ্বদেব’ নামে প্রসিদ্ধ। এই সরোবরে স্নান করতে এসেছি। আজ থেকে পাাঁচদিন পরেই মাঘ মাস আরম্ভ হবে। আজ পুত্রদা একাদশী তিথি। পুত্র দান করে বলেই এই একাদশীর নাম ‘পুত্রদা’।
তাঁদের কথা শুনে রাজা বললেন-হে মুনিবৃন্দ! আমি অপুত্রক। তাই পুত্র কামনায় অধীর হয়ে পড়েছি। এখন আপনাদের দেখে আমার হৃদয়ে আশার সঞ্চার হয়ে। এ দুর্ভাগা পুত্রহীনের প্রতি অনুগ্রহ করে একটি পুত্র প্রদান করুন।
মুনিগণ বললেন- হে মহারাজ! আজ সেই পুত্রদা একাদশী তিথি। তাই এখনই আপনি এই ব্রত পাল করুন। ভগবান শ্রীকেশবের অনুগ্রহে অবশ্যই আপনার পুত্র লাভ হবে।
মুনিদের কথা শোনার পর যথাবিধানে রাজা কেবল ফলূমূলাদি আহার করে সেই ব্রত অনুষ্ঠান করলেন। দ্বাদশী দিনে উপযুক্ত সময়ে শস্যাদি সহযোগে পারণ করলেন। মুনিদের প্রণাম নিবেদন করে নিজগৃহে ফিরে এলেন। প্রতভাবে রাজার যথাসময়ে একটি তেজস্বী পুত্র লাভ হল।
হে মাহারাজ! এ ব্রত সকলেরই পালন করা কর্তব্য। মানব কল্যাণ কামনায় আপনার কাছে আমি এই ব্রত কথা বর্ণনা করলাম।
নিষ্ঠাসহকারে যারা এই পুত্রদা একাদশী ব্রত পালন করবে, তারা ‘পুত’ নামক নরক থেকে পরিত্রাণ লাভ করবে। আর এই ব্রত কথা শ্রবণ কীর্তনে অগ্নিষ্টোম যজ্ঞের ফল পাওয়া যায়। ব্রহ্মান্ডপুরাণে এই মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়েছে।
একাদশী পালনের সঠিক নিয়ম গুলি হল-
যিনি একাদশী পালন করবেন তিনি দশমীতে- একাহার, একাদশীতে- নিরাহার তথা উপবাস এবং দ্বাদশীতে একাহার করবেন। যদি সম্পূর্ণ সক্ষম না হন তাহলে কেবলমাত্র একাদশীতে উপবাস করবেন। আর যদি তাহাতেও সক্ষম না হন, তাহলে একাদশীতে পঞ্চ রবিশষ্য বর্জন করে- ফল মূলাদি এবং অনুকল্প গ্রহণের বিধান রয়েছে।
একাদশী পালনের ক্ষেত্রে যে পাঁচ প্রকার রবিশস্য বর্জনের বিধান রয়েছে তা হলো- চাল, গম, যব, ডাল ও সরিষা বা সরিষা থেকে তৈরি যেকোনো প্রকার খাদ্যদব্য। এইদিন একাদশী পালন করলে চা, কফি, পান, বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদির নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
যারা একাদশী ব্রত পালন করবেন তাদের আগের দিন রাত বারোটার পূর্বে অন্ন ভোজন করে নেওয়া প্রয়োজন।
একাদশীর দিন ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথমে সংকল্প গ্রহণ করতে হয়। একাদশীর সংকল্প মন্ত্র টি হল-
"একাদশ্যাং নিরাহারঃ স্থিত্বা অহম অপরেহহানি, ভোক্ষ্যামি পুন্ডরিকাক্ষ শরণম মে ভবাচ্যুত"
একাদশী ব্রত পালন কেবলমাত্র উপবাস করা নয় তার সাথে সাথে নিরন্তর শ্রীভগবান কে স্মরণ করা এবং ব্রত কথা পাঠ, শ্রবণ ও কির্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করা। এই দিন পরনিন্দা-পরচর্চা, মিথ্যা কথা বলা, ক্রোধ,দুরাচার,স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
একাদশীতে বিভিন্ন খুঁটিনাটি কাজ যেমন সবজি কাটার সময় সতর্ক থাকতে হবে।যাতে রক্তক্ষরণ না হয়। কারণ একাদশীর দিন রক্তক্ষরণ খুবই অশুভ বলে গণ্য।একাদশীর দিন শরীরে প্রসাধনী ব্যবহার নিষিদ্ধ অর্থাৎ তেল, সুগন্ধি, সাবান-শ্যাম্পু ইত্যাদি বর্জনীয় এবং সকল প্রকার ক্ষৌরকর্ম করা অর্থাৎ চুল ও নখ কাটা ইত্যাদি বর্জনীয়।
একাদশীর দিন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সন্ধ্যেবেলায় শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে একটি ঘিয়ের প্রদীপ নিবেদন করা।
একাদশী তিথির পরদিন অর্থাৎ দ্বাদশীর দিন একাদশীর পারণ ক্রিয়া সমাপ্ত করতে হয়। এই পারণ ক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মন্ত্র উচ্চারণ করে সম্পন্ন করতে হয়।
এই নির্দিষ্ট পারনের সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশষ্য ভগবানকে নিবেদন করার পর প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করে পারন করা একান্ত আবশ্যক। নচেৎ একাদশীর কোনো ফল লাভ হয় না। পারনের সময় যে মন্ত্রটি পাঠ করতে হয় সেটি হল-
"অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
অথবা
"একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
পৌষ মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশীর নাম ‘সফলা’। ব্রহ্মান্ডপুরাণে যুধিষ্ঠির শ্রীকৃষ্ণ সংবাদে এই তিথির মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়েছে। যুধিষ্ঠির বললেন- হে প্রভু! পৌষ মাসের কৃষ্ণপক্ষীয়া একাদশীর নাম, বিধি এবং পূজ্যদেবতা বিষয়ে আমার কৌতুহল নিবারণ করুন। শ্রীকৃষ্ণ বললেন- হে মহারাজ! আপনার প্রতি স্নেহবশত সেই ব্রত কথা বিষয়ে বলছি। এই ব্রত আমাকে যেরকম সন্তুষ্ট করে, বহু দানদক্ষিণাযুক্ত যজ্ঞাদি দ্বারা আমি সেইরকম সন্তুষ্ট হই না। তাই যত্নসহকারে এই ব্রত পালন করা কর্তব্য। পৌষ মাসের কৃষ্ণপক্ষীয়া একাদশীর নাম ‘সফলা’। নাগদের মধ্যে যেমন শেষনাগ, পক্ষীদের মধ্যে গরুড়, মানুষের মধ্যে ব্রাহ্মণ, দেবতাদের মধ্যে নারায়ণ সর্বশ্রেষ্ঠ; তেমনই সকল ব্রতের মধ্যে একাদশী ব্রতই সর্বশ্রেষ্ঠ। হে মহারাজ! যারা এই ব্রত পালন করেন, তারা আমার অত্যন্ত প্রিয়। তাদের এজগতে ধনলাভ ও পরজগতে মুক্তি লাভ হয়। হাজার বছর তপস্যায় যে ফল লাভ হয় না, একমাত্র সফলা একাদশীতে রাত্রি জাগরণের ফলে তা অনায়াসে প্রাপ্ত হওয়া যায়। মহিষ্মত নামে এক রাজা প্রসিদ্ধ চম্পাবতী নগরে বাস করতেন। রাজার চারজন পুত্র ছিল। কিন্তু তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র লুম্ভক সর্বদা পরস্ত্রীগমন, মদ্যপান প্রভৃতি অসৎ কার্যে রত ছিল। সে সর্বক্ষণ ব্রাহ্মণ, বৈষ্ণব ও দেবতাদের নিন্দা করত। পুত্রের এই আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে রাজা তাকে রাজ্য থেকে বার করে দিলেন। স্ত্রী-পুত্র, পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন পরিত্যক্ত হয়ে সে এক গভীর বনে প্রবেশ করল। সেখানে কখনও জীবহত্যা আবার কখনও চুরি করে জীবন ধারণ করতে লাগল। কিছুদিন পরে একদিন সে নগরে প্রহরীদের কাছে ধরা পড়ল। কিন্তু রাজপুত্র বলে সেই অপরাধ থেকে সে মু্ক্তি পেল। পুনরায় সে বনে ফিরে গিয়ে জীবহত্যা ও ফলমূল আহার করে দিন যাপন করতে লাগল। ঐ বনে বহু বছরের পুরানো একটি বিশাল অশ্বত্থ বৃক্ষ ছিল। সেখানে ভগবান শ্রীবাসুদেব বিরাজমান বলে বৃক্ষটি দেবত্ব প্রাপ্ত হয়েছে। সেই বৃক্ষতলে পাপবুদ্ধি লুম্ভক বাস করত। বহুদিন পর তার পূর্বজন্মের কোন পুণ্য ফলে সে পৌষ মাসের দশমী দিনে কেবল ফল আহারে দিন অতিবাহিত করল। কিন্তু রাত্রিতে অসহ্য শীতের প্রকোপে সে মৃতপ্রায় হয়ে রাত্রিযাপন করল। পরদিন সূর্যোদয় হলেও সে অচেতন হয়েই পড়ে রইল। দুপুরের দিকে তার চেতনা ফিরল। ক্ষুধা নিবারণের জন্য সে অতিকষ্টে কিছু ফল সংগ্রহ করল। এরপর সেই বৃক্ষতলে এসে পুনরায় বিশ্রাম করতে থাকল। রাত্রিতে খাদ্যাভাবে সে দুর্বল হয়ে পড়ল। সে প্রাণরক্ষার্থে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে ফলগুলি নিয়ে-‘হে ভগবান! আমার কি গতি হবে’ বলে অশ্রুপাত করতে করতে সেই বৃক্ষমূলে, ‘হে লক্ষ্মীপতি নারায়ণ! আপনি প্রসন্ন হোন’ বলে নিবেদন করল। এইভাবে সে অনাহারে ও অনিদ্রায় সেই রাত্রি যাপন করল। ভগবান নারায়ণ সেই পাপী সুম্ভকের রাত্রি জাগরণকে একাদশীর জাগরণ এবং ফল অর্পণকে পূজা বলে গ্রহণ করলেন। এইভাবে অজ্ঞাতসারে লুম্ভকের সফলা একাদশী ব্রত পালন হয়ে গেল। প্রাতঃ কালে আকাশে দৈববাণী হল-হে পুত্র, তুমি সফলা ব্রতের পুণ্য প্রভাবে রাজ্য প্রাপ্ত হবে। সেই দৈববাণী শোনামাত্র লুম্ভক দিব্যরূপ লাভ করল। তার পাপবুদ্ধি দূর হল। সে পুনরায় নিষ্কণ্টক রাজ্য লাভ করল। স্ত্রীপুত্রসহ কিছুকাল রাজ্যসুখ ভোগের পর পুত্রের ওপর রাজ্যের ভার দিয়ে সে সন্ন্যাস আশ্রম গ্রহণ করল। অবশেষে মৃত্যুকালে সে অশোক অভয় ভগবানের কাছে ফিরে গেল । হে মহারাজ! এভাবে সফলা একাদশী যিনি পালন করেন, তিনি জাগতিক সুখ ও পরে মুক্তি লাভ করেন। এই ব্রতে যারা শ্রদ্ধাশীল, তাঁরাই ধন্য। তাঁদের জন্ম সার্থক, এতে কোন সন্দেহ নেই। এই ব্রত মাহাত্ম্য পাঠ ও শ্রবণে মানুষের রাজসূয় যজ্ঞের ফল লাভ হয়।
জ্যৈষ্ঠ শুক্লপক্ষের এই নির্জলা একাদশী ব্রত সম্পর্কে ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে শ্রীভীমসেন-ব্যাসসংবাদে বর্ণিত হয়েছে। মহারাজ যুধিষ্ঠির বললেন- হে জনার্দন! আমি অপরা একাদশীর সমস্ত মাহাত্ম্য শ্রবণ করলাম এখন জ্যৈষ্ঠ শুক্লপক্ষের একাদশীর নাম ও মাহাত্ম্য কৃপাপূর্বক আমার কাছে বর্ণনা করুন।
শ্রীকৃষ্ণ বললেন, এই একাদশীর কথা মহর্ষি ব্যাসদেব বর্ণনা করবেন। কেননা তিনি সর্বশাস্ত্রের অর্থ ও তত্ত্ব পূর্ণরূপে জানেন। রাজা যুধিষ্ঠির ব্যাসদেবকে বললেন- হে মহর্ষি দ্বৈপায়ন! আমি মানুষের লৌকিক ধর্ম এবং জ্ঞানকান্ডের বিষয়ে অনেক শ্রবণ করেছি। আপনি যথাযথভাবে ভক্তিবিষয়িনী কিছু ধর্মকথা এখন আমায় বর্ণনা করুন।
শ্রীব্যাসদেব বললেন- হে মহারাজ! তুমি যেসব ধর্মকথা শুনেছ এই কলিযুগের মানুষের পক্ষে সে সমস্ত পালন করা অত্যন্ত কঠিন। যা সুখে, সামান্য খরচে, অল্প কষ্টে সম্পাদন করা যায় অথচ মহাফল প্রদান করে এবং সমস্ত শাস্ত্রের সারস্বরূপ সেই ধর্মই কলিযুগে মানুষের পক্ষে করা শ্রেয়। সেই ধর্মকথাই এখন আপনার কাছে বলছি।
উভয় পক্ষের একাদশী দিনে ভোজন না করে উপবাস ব্রত করবে। দ্বাদশী দিনে স্নান করে শুচিশুদ্ধ হয়ে নিত্যকৃত সমাপনের পর শ্রীকৃষ্ণের অর্চন করবে। এরপর ব্রাহ্মণদেরকে প্রসাদ ভোজন করাবে। অশৌচাদিতেও এই ব্রত কখনও ত্যাগ করবে না।
যে সকল ব্যক্তি স্বর্গে যেতে চায়, তাদের সারা জীবন এই ব্রত পালন করা উচিত। পাপকর্মে রত ও ধর্মহীন ব্যক্তিরাও যদি এই একাদশী দিনে ভোজন না করে, তবে তারা যমযাতনা থেকে রক্ষা পায়।
শ্রীব্যাসদেবের এসব কথা শুনে গদাধর ভীমসেন অশ্বত্থ পাতার মতো কাঁপতে কাঁপতে বলতে লাগলেন- হে মহাবুদ্ধি পিতামহ! মাতা কুন্তী, দ্রৌপদী, ভ্রাতা যুধিষ্ঠির, অর্জুন, নকুল ও সহদেব এরা কেউই একাদশীর দিনে ভোজন করে না। আমাকেও অন্ন গ্রহণ করতে নিষেধ করে। কিন্তু দঃসহ ক্ষুধাযন্ত্রণার জন্য আমি উপবাস করতে পারি না।
ভীমসেনের এরকম কথায় ব্যাসদেব বলতে লাগলেন- যদি স্বর্গাদি দিব্যধাম লাভে তোমার একান্ত ইচ্ছা থাকে, তবে উভয় পক্ষের একাদশীতে ভোজন করবে না ।
তদুত্তরে ভীমসেন বললেন- আমার নিবেদন এই যে, উপবাস তো দুরের কথা, দিনে একবার ভোজন করে থাকাও আমার পক্ষে অসম্ভব। কারণ আমার উদরে ‘বৃক’ নামে অগ্নি রয়েছে। ভোজন না করলে কিছুতেই সে শান্ত হয় না। তাই প্রতিটি একাদশী পালনে আমি একেবারেই অপারগ।
হে মহর্ষি! বছরে একটি মাত্র একাদশী পালন করে যাতে আমি দিব্যধাম লাভ করতে পারি এরকম কোন একাদশীর কথা আমাকে নিশ্চয় করে বলুন।
তখন ব্যাসদেব বললেন- জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী তিথিতে জলপান পর্যন্ত না করে সম্পূর্ণ উপবাস থাকবে। তবে আচমনে দোষ হবে না। ঐদিন অন্নাদি গ্রহণ করলে ভ্রত ভঙ্গ হয়।
একাদশীর দিন সূর্যোদয় থেকে দ্বাদশীর দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত জলপান বর্জন করলে অনায়াসে বারোটি একাদশীর ফল লাভ হয়। বছরের অন্যান্য একাদশী পালনে অজান্তে যদি কখনও ব্রতভঙ্গ হয়ে যায়, তা হলে এই একটি মাত্র একাদশী পালনে সেই সব দোষ দূর হয়। দ্বাদশী দিনে বাহ্মমুহূর্তে স্নানাদিকার্য সমাপ্ত করে শ্রীহরির পূজা করবে। সদাচারী ব্রাহ্মণদের বস্ত্রাদি দানসহ ভোজন করিয়ে আত্মীয়স্বজন সঙ্গে নিজে ভোজন করবে। এরূপ একাদশী ব্রত পালনে যে প্রকার পূণ্য সঞ্চিত হয়, এখন তা শ্রবণ কর।
সারা বছরের সমস্ত একাদশীর ফলই এই একটি মাত্র ব্রত উপবাসে লাভ করা যায়। শঙ্খ, চক্র, গদা, পদ্মধারী ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আমাকে বলেছেন- ‘বৈদিক ও লৌকিক সমস্ত ধর্ম পরিত্যাগ করে যারা একমাত্র আমার শরণাপন্ন হয়ে এই নির্জলা একাদশী ব্রত পালন করে তারা সর্বপাপ মুক্ত হয়।
বিশেষত কলিযুগে ধন-সম্পদ দানের মাধ্যমে সদগতি বা স্মার্ত সংস্কারের মাধ্যমেও যথার্থ কল্যাণ লাভ হয় না। কলিযুগে দ্রব্যশুদ্ধি নেই। কলিতে শাস্ত্রোক্ত সংস্কার বিশুদ্ধ হয় না। তাই বৈদিক ধর্ম কখনও সুসম্পন্ন হতে পারে না।
হে ভীমসেন! তোমাকে বহূ কথা বলার আর প্রয়োজন কি? তুমি উভয় পক্ষের একাদশীতে ভোজন করবে না। যদি তাতে অসমর্থ হও তবে জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীতে অবশ্যই নির্জলা উপবাস করবে। এই একাদশী ব্রত ধনধান্য ও পুন্যদায়িনী। যমদূতগণ এই ব্রত পালনকারীকে মৃত্যুর পরও স্পর্শ করতে পারে না। পক্ষান্তরে বিষ্ণুদুতগণ তাঁকে বিষ্ণুলোকে নিয় যান।
শ্রীভীসেন ঐদিন থেকে নির্জলা একাদশী পালন করতে থাকায় এই একাদশী ‘পান্ডবা নির্জলা বা ভীমসেনী একাদশী’ নামে প্রসিদ্ধ হয়েছে। এই নির্জলা একাদশীতৈ পবিত্র তীর্থে স্নান, দান, জপ, কীর্তন ইত্যাদি যা কিছু মানুষ করে তা অক্ষয় হয়ে যায়। যে ব্যক্তি ভক্তিসহকারে এই একাদশী মহাত্ম্য পাঠ বা শ্রবণ করেন তিনি বৈকুণ্ঠধাম প্রাপ্ত হন।
সমস্ত ব্রতকারী দিবারাত্রি ভক্তিপরায়ণ হয়ে এই একাশীর উৎপত্তির কথা শ্রবণ-কীর্তন করলে শ্রীহরির আশীর্বাদ লাভে ধন্য হবে।
একাদশী পালনের সঠিক নিয়ম গুলি হল-
যিনি একাদশী পালন করবেন তিনি দশমীতে- একাহার, একাদশীতে- নিরাহার তথা উপবাস এবং দ্বাদশীতে একাহার করবেন। যদি সম্পূর্ণ সক্ষম না হন তাহলে কেবলমাত্র একাদশীতে উপবাস করবেন। আর যদি তাহাতেও সক্ষম না হন, তাহলে একাদশীতে পঞ্চ রবিশষ্য বর্জন করে- ফল মূলাদি এবং অনুকল্প গ্রহণের বিধান রয়েছে।
একাদশী পালনের ক্ষেত্রে যে পাঁচ প্রকার রবিশস্য বর্জনের বিধান রয়েছে তা হলো- চাল, গম, যব, ডাল ও সরিষা বা সরিষা থেকে তৈরি যেকোনো প্রকার খাদ্যদব্য। এইদিন একাদশী পালন করলে চা, কফি, পান, বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদির নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
যারা একাদশী ব্রত পালন করবেন তাদের আগের দিন রাত বারোটার পূর্বে অন্ন ভোজন করে নেওয়া প্রয়োজন।
একাদশীর দিন ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথমে সংকল্প গ্রহণ করতে হয়। একাদশীর সংকল্প মন্ত্র টি হল-
"একাদশ্যাং নিরাহারঃ স্থিত্বা অহম অপরেহহানি, ভোক্ষ্যামি পুন্ডরিকাক্ষ শরণম মে ভবাচ্যুত"
একাদশী ব্রত পালন কেবলমাত্র উপবাস করা নয় তার সাথে সাথে নিরন্তর শ্রীভগবান কে স্মরণ করা এবং ব্রত কথা পাঠ, শ্রবণ ও কির্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করা। এই দিন পরনিন্দা-পরচর্চা, মিথ্যা কথা বলা, ক্রোধ,দুরাচার,স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
একাদশীতে বিভিন্ন খুঁটিনাটি কাজ যেমন সবজি কাটার সময় সতর্ক থাকতে হবে।যাতে রক্তক্ষরণ না হয়। কারণ একাদশীর দিন রক্তক্ষরণ খুবই অশুভ বলে গণ্য।একাদশীর দিন শরীরে প্রসাধনী ব্যবহার নিষিদ্ধ অর্থাৎ তেল, সুগন্ধি, সাবান-শ্যাম্পু ইত্যাদি বর্জনীয় এবং সকল প্রকার ক্ষৌরকর্ম করা অর্থাৎ চুল ও নখ কাটা ইত্যাদি বর্জনীয়।
একাদশীর দিন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সন্ধ্যেবেলায় শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে একটি ঘিয়ের প্রদীপ নিবেদন করা।
একাদশী তিথির পরদিন অর্থাৎ দ্বাদশীর দিন একাদশীর পারণ ক্রিয়া সমাপ্ত করতে হয়। এই পারণ ক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মন্ত্র উচ্চারণ করে সম্পন্ন করতে হয়।
এই নির্দিষ্ট পারনের সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশষ্য ভগবানকে নিবেদন করার পর প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করে পারন করা একান্ত আবশ্যক। নচেৎ একাদশীর কোনো ফল লাভ হয় না। পারনের সময় যে মন্ত্রটি পাঠ করতে হয় সেটি হল-
"অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
অথবা
"একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
একাদশী পালনের সঠিক নিয়ম গুলি হল-
যিনি একাদশী পালন করবেন তিনি দশমীতে- একাহার, একাদশীতে- নিরাহার তথা উপবাস এবং দ্বাদশীতে একাহার করবেন। যদি সম্পূর্ণ সক্ষম না হন তাহলে কেবলমাত্র একাদশীতে উপবাস করবেন। আর যদি তাহাতেও সক্ষম না হন, তাহলে একাদশীতে পঞ্চ রবিশষ্য বর্জন করে- ফল মূলাদি এবং অনুকল্প গ্রহণের বিধান রয়েছে।
একাদশী পালনের ক্ষেত্রে যে পাঁচ প্রকার রবিশস্য বর্জনের বিধান রয়েছে তা হলো- চাল, গম, যব, ডাল ও সরিষা বা সরিষা থেকে তৈরি যেকোনো প্রকার খাদ্যদব্য। এইদিন একাদশী পালন করলে চা, কফি, পান, বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদির নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
যারা একাদশী ব্রত পালন করবেন তাদের আগের দিন রাত বারোটার পূর্বে অন্ন ভোজন করে নেওয়া প্রয়োজন।
একাদশীর দিন ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথমে সংকল্প গ্রহণ করতে হয়। একাদশীর সংকল্প মন্ত্র টি হল-
"একাদশ্যাং নিরাহারঃ স্থিত্বা অহম অপরেহহানি, ভোক্ষ্যামি পুন্ডরিকাক্ষ শরণম মে ভবাচ্যুত"
একাদশী ব্রত পালন কেবলমাত্র উপবাস করা নয় তার সাথে সাথে নিরন্তর শ্রীভগবান কে স্মরণ করা এবং ব্রত কথা পাঠ, শ্রবণ ও কির্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করা। এই দিন পরনিন্দা-পরচর্চা, মিথ্যা কথা বলা, ক্রোধ,দুরাচার,স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
একাদশীতে বিভিন্ন খুঁটিনাটি কাজ যেমন সবজি কাটার সময় সতর্ক থাকতে হবে।যাতে রক্তক্ষরণ না হয়। কারণ একাদশীর দিন রক্তক্ষরণ খুবই অশুভ বলে গণ্য।একাদশীর দিন শরীরে প্রসাধনী ব্যবহার নিষিদ্ধ অর্থাৎ তেল, সুগন্ধি, সাবান-শ্যাম্পু ইত্যাদি বর্জনীয় এবং সকল প্রকার ক্ষৌরকর্ম করা অর্থাৎ চুল ও নখ কাটা ইত্যাদি বর্জনীয়।
একাদশীর দিন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সন্ধ্যেবেলায় শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে একটি ঘিয়ের প্রদীপ নিবেদন করা।
একাদশী তিথির পরদিন অর্থাৎ দ্বাদশীর দিন একাদশীর পারণ ক্রিয়া সমাপ্ত করতে হয়। এই পারণ ক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মন্ত্র উচ্চারণ করে সম্পন্ন করতে হয়।
এই নির্দিষ্ট পারনের সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশষ্য ভগবানকে নিবেদন করার পর প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করে পারন করা একান্ত আবশ্যক। নচেৎ একাদশীর কোনো ফল লাভ হয় না। পারনের সময় যে মন্ত্রটি পাঠ করতে হয় সেটি হল-
"অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
অথবা
"একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
একাদশী পালনের সঠিক নিয়ম গুলি হল-
যিনি একাদশী পালন করবেন তিনি দশমীতে- একাহার, একাদশীতে- নিরাহার তথা উপবাস এবং দ্বাদশীতে একাহার করবেন। যদি সম্পূর্ণ সক্ষম না হন তাহলে কেবলমাত্র একাদশীতে উপবাস করবেন। আর যদি তাহাতেও সক্ষম না হন, তাহলে একাদশীতে পঞ্চ রবিশষ্য বর্জন করে- ফল মূলাদি এবং অনুকল্প গ্রহণের বিধান রয়েছে।
একাদশী পালনের ক্ষেত্রে যে পাঁচ প্রকার রবিশস্য বর্জনের বিধান রয়েছে তা হলো- চাল, গম, যব, ডাল ও সরিষা বা সরিষা থেকে তৈরি যেকোনো প্রকার খাদ্যদব্য। এইদিন একাদশী পালন করলে চা, কফি, পান, বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদির নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
যারা একাদশী ব্রত পালন করবেন তাদের আগের দিন রাত বারোটার পূর্বে অন্ন ভোজন করে নেওয়া প্রয়োজন।
একাদশীর দিন ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথমে সংকল্প গ্রহণ করতে হয়। একাদশীর সংকল্প মন্ত্র টি হল-
"একাদশ্যাং নিরাহারঃ স্থিত্বা অহম অপরেহহানি, ভোক্ষ্যামি পুন্ডরিকাক্ষ শরণম মে ভবাচ্যুত"
একাদশী ব্রত পালন কেবলমাত্র উপবাস করা নয় তার সাথে সাথে নিরন্তর শ্রীভগবান কে স্মরণ করা এবং ব্রত কথা পাঠ, শ্রবণ ও কির্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করা। এই দিন পরনিন্দা-পরচর্চা, মিথ্যা কথা বলা, ক্রোধ,দুরাচার,স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
একাদশীতে বিভিন্ন খুঁটিনাটি কাজ যেমন সবজি কাটার সময় সতর্ক থাকতে হবে।যাতে রক্তক্ষরণ না হয়। কারণ একাদশীর দিন রক্তক্ষরণ খুবই অশুভ বলে গণ্য।একাদশীর দিন শরীরে প্রসাধনী ব্যবহার নিষিদ্ধ অর্থাৎ তেল, সুগন্ধি, সাবান-শ্যাম্পু ইত্যাদি বর্জনীয় এবং সকল প্রকার ক্ষৌরকর্ম করা অর্থাৎ চুল ও নখ কাটা ইত্যাদি বর্জনীয়।
একাদশীর দিন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সন্ধ্যেবেলায় শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে একটি ঘিয়ের প্রদীপ নিবেদন করা।
একাদশী তিথির পরদিন অর্থাৎ দ্বাদশীর দিন একাদশীর পারণ ক্রিয়া সমাপ্ত করতে হয়। এই পারণ ক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মন্ত্র উচ্চারণ করে সম্পন্ন করতে হয়।
এই নির্দিষ্ট পারনের সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশষ্য ভগবানকে নিবেদন করার পর প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করে পারন করা একান্ত আবশ্যক। নচেৎ একাদশীর কোনো ফল লাভ হয় না। পারনের সময় যে মন্ত্রটি পাঠ করতে হয় সেটি হল-
"অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
অথবা
"একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
একাদশী তিথি ভগবান বিষ্ণুর কাছে অত্যন্ত প্রিয়। একাদশীর উপবাসের প্রভাবে ব্যক্তি মোক্ষ লাভ করে এবং সমস্ত কাজ সিদ্ধ হয়, দারিদ্র্য দূর হয়, অকালমৃত্যুর ভয় থাকে না, শত্রু বিনষ্ট হয়, ধন-সম্পদ, খ্যাতি, পিতৃপুরুষের আশীর্বাদ প্রাপ্ত হয়।
বছরে 24টি একাদশী হয়। একাদশীর উপবাস প্রতি মাসে দুবার পালন করা হয়, একটি কৃষ্ণপক্ষে এবং একটি শুক্লপক্ষে। কিন্তু অতিরিক্ত মাস বা মলমাসের কারণে কখনো কখনো 26টি একাদশীও পালন করা হয়। মলমাস বা পুরুষোত্তম মাস নামেও পরিচিত। অতিরিক্ত মাসের কারণে এবার অতিরিক্ত 2টি একাদশী পালন করা হবে। তাই 2023 সালে 26 টি একাদশী পড়বে।
সমস্ত ব্রতকারী দিবারাত্রি ভক্তিপরায়ণ হয়ে এই একাশীর উৎপত্তির কথা শ্রবণ-কীর্তন করলে শ্রীহরির আশীর্বাদ লাভে ধন্য হবে।
একাদশী পালনের সঠিক নিয়ম গুলি হল-
যিনি একাদশী পালন করবেন তিনি দশমীতে- একাহার, একাদশীতে- নিরাহার তথা উপবাস এবং দ্বাদশীতে একাহার করবেন। যদি সম্পূর্ণ সক্ষম না হন তাহলে কেবলমাত্র একাদশীতে উপবাস করবেন। আর যদি তাহাতেও সক্ষম না হন, তাহলে একাদশীতে পঞ্চ রবিশষ্য বর্জন করে- ফল মূলাদি এবং অনুকল্প গ্রহণের বিধান রয়েছে।
একাদশী পালনের ক্ষেত্রে যে পাঁচ প্রকার রবিশস্য বর্জনের বিধান রয়েছে তা হলো- চাল, গম, যব, ডাল ও সরিষা বা সরিষা থেকে তৈরি যেকোনো প্রকার খাদ্যদব্য। এইদিন একাদশী পালন করলে চা, কফি, পান, বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদির নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
যারা একাদশী ব্রত পালন করবেন তাদের আগের দিন রাত বারোটার পূর্বে অন্ন ভোজন করে নেওয়া প্রয়োজন।
একাদশীর দিন ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথমে সংকল্প গ্রহণ করতে হয়। একাদশীর সংকল্প মন্ত্র টি হল-
"একাদশ্যাং নিরাহারঃ স্থিত্বা অহম অপরেহহানি, ভোক্ষ্যামি পুন্ডরিকাক্ষ শরণম মে ভবাচ্যুত"
একাদশী ব্রত পালন কেবলমাত্র উপবাস করা নয় তার সাথে সাথে নিরন্তর শ্রীভগবান কে স্মরণ করা এবং ব্রত কথা পাঠ, শ্রবণ ও কির্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করা। এই দিন পরনিন্দা-পরচর্চা, মিথ্যা কথা বলা, ক্রোধ,দুরাচার,স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
একাদশীতে বিভিন্ন খুঁটিনাটি কাজ যেমন সবজি কাটার সময় সতর্ক থাকতে হবে।যাতে রক্তক্ষরণ না হয়। কারণ একাদশীর দিন রক্তক্ষরণ খুবই অশুভ বলে গণ্য।একাদশীর দিন শরীরে প্রসাধনী ব্যবহার নিষিদ্ধ অর্থাৎ তেল, সুগন্ধি, সাবান-শ্যাম্পু ইত্যাদি বর্জনীয় এবং সকল প্রকার ক্ষৌরকর্ম করা অর্থাৎ চুল ও নখ কাটা ইত্যাদি বর্জনীয়।
একাদশীর দিন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সন্ধ্যেবেলায় শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে একটি ঘিয়ের প্রদীপ নিবেদন করা।
একাদশী তিথির পরদিন অর্থাৎ দ্বাদশীর দিন একাদশীর পারণ ক্রিয়া সমাপ্ত করতে হয়। এই পারণ ক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মন্ত্র উচ্চারণ করে সম্পন্ন করতে হয়।
এই নির্দিষ্ট পারনের সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশষ্য ভগবানকে নিবেদন করার পর প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করে পারন করা একান্ত আবশ্যক। নচেৎ একাদশীর কোনো ফল লাভ হয় না। পারনের সময় যে মন্ত্রটি পাঠ করতে হয় সেটি হল-
"অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
অথবা
"একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
মোক্ষদা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য যুধিষ্ঠির বললেন-হে বিষ্ণো! আপনাকে আমি বন্দনা করি। আপনি ত্রিলোকের সুখদায়ক, বিশ্বেশ্বর, বিশ্বপালক ও পুরুষোত্তম। আমার একটি সংশয় আছে। অগ্রাহায়ণ মাসের শুক্লপক্ষের যে একাদশী তার নাম কি, বিধিই বা কি ও কোন দেবতা এই একাদশীতে পূজিত হন, তা আমায় বলুন। শ্রীকৃষ্ণ বললেন-হে মহারাজ! আপনি উত্তম প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন, যার মাধ্যমে আপনার যশ চতুর্দিকে বিস্তৃত হবে। এখন এই একাদশীর কথা আমি বর্ণনা করছি যা শোনা মাত্রই বাজপেয় যজ্ঞের ফল লাভ হয়। অগ্রাহয়ণ মাসের শুক্লপক্ষের এই একাদশী ‘মোক্ষদা’ নামে পরিচিত। সর্বপাপনাশিনী ও ব্রত মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠা এই একাদশীর দেবতা শ্রীদামোদর। তুলসী, তুলসী মঞ্জুরী, ধূপ, দীপ, ইত্যাদি উপচারে শাস্ত্রবিধি অনুসারে শ্রীদামোদরের পূজা করতে হবে। পূর্ববর্ণিত বিধি অনুসারে দশমী ও একাদশী পালন করতে হবে। এই উপবাস দিনে স্তবস্তুতি, নৃত্য-গীত আদি সহ রাত্রিজাগরণ করা কর্তব্য। হে মহারাজ! প্রসঙ্গক্রমে একটি অলৌকিক কাহিনী আমি বলছি। মনোযোগ দিয়ে এই ইতিহাস শ্রবণ মাত্রই সর্বপাপ ক্ষয় হয়। যে পিতৃপুরুষেরা নিজ নিজ পাপে অধঃযোনি প্রাপ্ত হয়েছে, এই ব্রত পালনের পুণ্যফল বিন্দু মাত্র তাদেরকে দান করলে তারাও মুক্তিলাভের যোগ্য হন। কোন এক সময় মনোরম চম্পক নগরে বৈখানস নামে এক রাজা ছিলেন। তিনি ছিলেন সমস্ত সদগুণে বিভূষিত। প্রজাদের তিনি পুত্রের মতো পালন করতেন। তাঁর রাজ্যে বহু বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ বাস করতেন। রাজ্যের সকলেই ছিল বেশ সমৃদ্ধশালী। একবার রাজা স্বপ্নে দেখলেন যে তার পিতা নরকে পতিত হয়েছেন। তা দেখে তিনি অত্যন্ত হলেন। পরদিন ব্রাহ্মণদের ডেকে বলতে লাগলেন- হে ব্রাহ্মণগণ। গতরাত্রিতে স্বপ্নে নরকযাতনায় পিতাকে কষ্ট পেতে দেখে আমার হৃদয় বিদীর্ণ হচ্ছে। তিনি আমাকে লক্ষ্য করে বলতে লাগলেন- হে পুত্র, তুমি আমাকে নরকসমুদ্র থেকে উদ্ধার কর। তাঁর সেই অবস্থা দেখে আমার অন্তরে সুখ নেই। আমার এই বিশাল রাজ্য, স্ত্রী-পুত্র, কিছুতেই আমি শান্তি পাচ্ছি না। কি করি, কোথায় যাই কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। আমার পুর্বপুরুষেরা মুক্তিলাভ করতে পারেন এমন কোন পুণ্যব্রত, তপস্যা ও যোগের কথা আমাকে উপদেশ করুন। আমি তা অনুষ্ঠান করব। আমার মতো পুত্র বর্তমান থাকা সত্ত্বেও যদি পিতামাতা পূর্বপুরুষেরা যদি নরকযন্ত্রণা ভোগ করতে থাকেন, তবে সে পুত্রের কি প্রয়োজন? ব্রাহ্মণগণ বললেন- হে মহারাজ! আপনার রাজ্যের কাছেই মহর্ষি পর্বত মুনির আশ্রম রয়েছে। তিনি ত্রিকালজ্ঞ। তাঁর কাছে আপনার মুক্তির উপায় জানতে পারবেন। ব্রহ্মণদের উপদেশ শ্রবণ করে মহাত্মা বৈখানস তাঁদের সঙ্গে নিয়ে সেই পর্বত মুনির আশ্রমে গমন করলেন। তাঁরা দূর থেকে ঋষিবরকে সষ্টাঙ্গ প্রণাম করে তার কাছে গেলেন। মুনিবর রাজার কুশলবার্তা জিজ্ঞাসা করলেন। রাজা বললেন- হে প্রভু! আপনার কৃপায় আমার সবই কুশল। তবে আমি একদিন স্বপ্নযোগে পিতার নরকযন্ত্রণা ও কাতর আর্তনাদ্ শুনে অত্যন্ত দুঃখিত ও চিন্তাগ্রস্ত হয়েছি। হে ঋষিবর! কোন পুণ্যের ফলে তিনি সেই দুর্দশা থেকে মুক্তি পাবেন, তার উপায় জানতেই আপনার শরণাগত হয়েছি। রাজার কথা শুনে পর্বত মুনি কিছুক্ষণ ধ্যানস্থ হয়ে বললেন- হে মহারাজ! পূর্বজন্মে তোমার পিতা অত্যন্ত কামাচারী হওয়ায় তার এরকম অধোগতি লাভ হয়েছে। এখন এই পাপ থেকে মুক্তির উপায় বর্ণনা করছি। অগ্রহায়ণ মাসের শুক্লপক্ষের মোক্ষদা একাদশী পালন করে সেই পুণ্যফল পিতাকে প্রদান কর। সেই পুণ্য প্রভাবে তোমার পিতার মুক্তি লাভ হবে। মুনির কথা শোনার পর রাজা নিজগৃহে ফিরে এলেন। সেই পবিত্র তিথির আবির্ভাবে তিনি স্ত্রী-পুত্রাদিসহ যথাবিধি মোক্ষদা একাদশী ব্রত পালন করলেন। ব্রতের পুণ্যফল পিতার উদ্দেশ্যে প্রদান করলেন। ঐ পুণ্যফল দানের সঙ্গে সঙ্গে আকাশ থেকে পুষ্পবৃষ্টি হতে লাগল। ‘হে পুত্র তোমার মঙ্গল হোক।’ এই বলতে বলতে বৈখানস রাজার পিতা নরক থেকে মুক্ত হয়ে স্বর্গে গমন করলেন। হে মহারাজ যুধিষ্ঠির! যে ব্যক্তি এই মঙ্গলদায়িনী মোক্ষদা একাদশী ব্রত পালন করে, তার সমস্ত পাপ বিনষ্ট হয় এবং মৃত্যুর পর মুক্তি লাভ করে। এই ব্রতের পুণ্যসংখ্যা আমিও জানি না। চিন্তামণির মতো এই ব্রতটি আমার অত্যন্ত প্রিয়। এই ব্রত কথা যিনি পাঠ করেন এবং যিনি শ্রবণ করেন, উভয়েই বাজপেয় যজ্ঞের ফল প্রাপ্ত হন।
উৎপন্না একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য অর্জুন বললেন-হে দেব! অগ্রহায়ণের পুণ্যপ্রদায়ী কৃষ্ণপক্ষের একাদশীকে কেন ‘উৎপন্না’ বলা হয় এবং কি জন্যই বা এই একাদশী পরম পবিত্র ও দেবতাদেরও প্রিয়, তা জানতে ইচ্ছা করি। আপনি কৃপা করে আমাকে তা বলুন। শ্রীভগবান বললেন- হে পৃথাপুত্র! পূর্বে সত্যযুগে ‘মুর’ নামে এক দানব ছিল। অদ্ভুত আকৃতিবিশিষ্ট সেই দানবের স্বভাব ছিল অত্যন্ত কোপন। সে দেবতাদেরও ভীতিপ্রদ ছিল। যুদ্ধে দেবতাদের এমনকি স্বর্গরাজ ইন্দ্রকে পর্যন্ত পরাজিত করে স্বর্গ থেকে বিতারিত করেছিল। এইভাবে দেবতারা পৃথিবীতে বিচরণ করতে বাধ্য হয়েছিল। তখন দেবতারা মহাদেবের কাছে গিয়ে নিজেদের সমস্ত দুঃখ সবিস্তারে জানালেন। শুনে মহাদেব বললেন- হে দেবরাজ! যেখানে শরণাগতবৎসল জগন্নাথ, গরুধ্বজ বিরাজ করছেন, তোমরা সেখানে যাও। তিনি আশ্রিতদের পরিত্রাণকারী। তিনি নিশ্চয়ই তোমাদের মঙ্গল বিধান করবেন। দেবাদিদেবের কথামতো দেবরাজ ইন্দ্র দেবতাদের নিয়ে ক্ষীরসমুদ্রের তীরে গমন করলেন। জলে শায়িত শ্রীবিষ্ণুকে দর্শন করে দেবতারা হাতজোড় করে তাঁর স্তব করতে লাগলেন। স্তুতির মাধ্যমে নিজ নিজ দৈন্য ও দুঃখের কথা তাঁরা ভগবানকে জানালেন। ইন্দ্রের কথা শুনে ভগবান নারায়ণ বললেন- হে ইন্দ্র! সেই মুর দানব কি রকম, সে কেমন শক্তিশালী, তা আমায় বল। ইন্দ্র বললেন-হে ভগবান! প্রাচীনকালে ব্রহ্ম বংশে তালজঙঘা নামে এক অতি পরাক্রমী অসুর ছিল। তারই পুত্র সেই ‘মুর’ অত্যন্ত বলশালী, ভীষণ উৎকট ও দেবতাদেরও ভয় উৎপাদনকারী। সে চন্দ্রাবতী নামে এক পুরীতে বাস করে। স্বর্গ থেকৈ আমাদের বিতাড়িত করে তার স্বজাতি কাউকে রাজা, কাউকে অন্যান্য দিকপালরূপ প্রতিষ্ঠিত করে এখন সে দেবলোক সম্পূর্ণ অধিকার করেছে। তার প্রবল প্রতাপে আজ আমরা পৃথিবীতে বিচরণ করছি। ইন্দ্রের কথা শুনে ভগবান দেবদ্রোহীদের প্রতি অত্যন্ত ক্রোধান্বিত হলেন। তিনি দেবতাদের সঙ্গে চন্দ্রাবতী পুরীতে গেলেন। সেই দৈত্যরাজ শ্রীনারায়ণকে দর্শন করে পুনঃ পুনঃ গর্জন করতে লাগল। দেবতা ও অসুরের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। যুদ্ধে দেবতারা পরাজিত হয়ে এদিক ওদিক পালিয়ে গেল। তখন যুদ্ধক্ষেত্রে শ্রীনারয়ণকে একা দেখে সেই দানব তাঁকে ‘দাঁড়াও দাঁড়াও’ বলতে লাগল। শ্রীভগবানও ক্রোধে গর্জন করে বললেন- রে দুরাচার দানব আমার বাহুবল দেখ। এই বলে অসুরপক্ষীয় সমস্ত যোদ্ধাদের দিব্য বাণের আঘাতে নিহত করতে লাগলেন। তখন তারা প্রাণভয়ে নানা দিকে পালাতে লাগল। সেই সময় নারায়ণ দৈত্য সৈন্যদের মধ্যে সুদর্শন চক্র নিক্ষেপ করলেন। ফলে সমস্ত সৈন্য ধ্বংসপ্রাপ্ত হল। একমাত্র মুর অসুরই জীবিত ছিল। সে অস্ত্রযুদ্ধে নারায়ণকেও পরাজিত করল। তখন নারায়ণ দৈত্যের সাথে বাহুযুদ্ধে লিপ্ত হলেন। এইভাবে দেবতাদের হিসাবে এক হাজার বছর যুদ্ধ করেও ভগবান তাকে পরাজিত করতে পারলেন না। তখন শ্রীহরি বিশেষ চিন্তান্বিত হয়ে বদরিকা আশ্রমে গমন করলেন। সেখাতে সিংহাবতী নামে একটি গুহা আছে। এই গুহাটি এক-দ্বার বিশিষ্ট এবং বারোযোজন অর্থাৎ 86 মাইল বিস্তৃত। ভগবান বিষ্ণু সেই গুহার মধ্যে শয়ন করলেন। সেই দৈত্যও তার পিছন পিছন ধাবিত হয়ে গুহার ভিতরে প্রবেশ করল। সে বিষ্ণুকে নিদ্রিত বুঝতে পারল। অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে গোপনে শুয়ে আছে। এখন আমি তাকে অবশ্যই বধ করব। দানবের এইরকম চিন্তার সঙ্গে সঙ্গে শ্রীবিষ্ণুর শরীর থেকে একটি কন্যা উৎপন্ন হল। এই কন্যাই ‘উৎপন্না’ একাদশী। তিনি রূপবতী, সৌভাগ্যশালিনী, দিব্য অস্ত্র-শস্ত্রধারিনী ও বিষ্ণু তেজসম্ভুতা বলে মহাপরাক্রমশালী ছিলেন। দৈত্যরাজ সেই স্ত্রীরূপিনী দেবীর সাথে তুমুল যুদ্ধ শুরু করল। কিছুকাল যুদ্ধের পর দেবীর দিব্য তেজে অসুর ভস্মীভূত হয়ে গেল। তারপর বিষ্ণু জেগে উঠে সেই ভস্মীভূত দানবকে দেখে বিস্মিত হলেন। এক দিব্যকন্যাকে তাঁর পাশে হাত জোর করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন। বিষ্ণু বললেন- হে মহাপরাক্রান্ত উগ্রমূর্তি! এই মুর দানবকে কে বধ করল? যিনি একে হত্যা করেছে তিনি নিশ্চয়ই প্রশংসনীয় কর্ম করেছে। সেই কন্যা বললেন- হে প্রভু! আমি আপনার শরীর থেকে উৎপন্ন হয়েছি। আপনি যখন ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন এই দানব আপনাকে বধ করতে চেয়েছিল। তা দেখে আমি তাকে বধ করেছি। আপনাদের কৃপাতেই আমি তাকে বধ করতে পেরেছি। একথা শুনে ভগবান বললেন- আমার পরাশীক্ত তুমি একাদশীতে উৎপন্ন হয়েছ। তাই তোমার নাম হবে একাদশী। আমি এই ত্রিলোকে দেবতা ও ঋষিদের অনেক বর প্রদান করেছি। হে ভদ্রে! তুমিও তোমার মনমতো বর প্রার্থনা কর, আমি তোমাকে তা প্রদান করব। একাদশী বললেন- হে দেবেশ! ত্রিভুবনের সর্বত্র আপনার কৃপায় সর্ববিঘ্ননাশিনী ও সর্বদায়িনী রূপে যেন পরম পূজ্য হতে পারি, এ বিধান করুন। আপনার প্রতি ভক্তিবশতঃ যারা শ্রদ্ধাসহকারে আমার ব্রত-উপবাস করবে, তাদের সর্বসিদ্ধি লাভ হবে-এই বর প্রদান করুন। বিষ্ণু বললেন-হে কল্যাণী! তাই হোক। ‘উৎপন্না’ নামে প্রসিদ্ধ তোমার ব্রত পালনকারীর সমস্ত ইচ্ছা পূর্ণ হবে। তুমি তাদের সকল মনোবাসনা পূর্ণ করবে, এতে কোন সন্দেহ নেই। তোমাকে আমার শক্তি বলে মনে করি। তাই তোমার ব্রত পালকারী সকলে আমারই পূজা করবে। এর ফলে তারা মুক্তি লাভ করবে। তুমি হরিপ্রিয়া নামে জগতে বিখ্যাত হবে। তুমি ব্রতপালনকারীর শত্রুবিনাশ, পরমগতি দান এবং সর্বসিদ্ধি প্রদান করতে সমর্থ হবে। ভগবান বিষ্ণু এইভাবে ‘উৎপন্না’ একাদশীকে বরদান করে অন্তর্হিত হলেন।
একাদশী পালনের সঠিক নিয়ম গুলি হল-
যিনি একাদশী পালন করবেন তিনি দশমীতে- একাহার, একাদশীতে- নিরাহার তথা উপবাস এবং দ্বাদশীতে একাহার করবেন। যদি সম্পূর্ণ সক্ষম না হন তাহলে কেবলমাত্র একাদশীতে উপবাস করবেন। আর যদি তাহাতেও সক্ষম না হন, তাহলে একাদশীতে পঞ্চ রবিশষ্য বর্জন করে- ফল মূলাদি এবং অনুকল্প গ্রহণের বিধান রয়েছে।
একাদশী পালনের ক্ষেত্রে যে পাঁচ প্রকার রবিশস্য বর্জনের বিধান রয়েছে তা হলো- চাল, গম, যব, ডাল ও সরিষা বা সরিষা থেকে তৈরি যেকোনো প্রকার খাদ্যদব্য। এইদিন একাদশী পালন করলে চা, কফি, পান, বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদির নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
যারা একাদশী ব্রত পালন করবেন তাদের আগের দিন রাত বারোটার পূর্বে অন্ন ভোজন করে নেওয়া প্রয়োজন।
একাদশীর দিন ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথমে সংকল্প গ্রহণ করতে হয়। একাদশীর সংকল্প মন্ত্র টি হল-
"একাদশ্যাং নিরাহারঃ স্থিত্বা অহম অপরেহহানি, ভোক্ষ্যামি পুন্ডরিকাক্ষ শরণম মে ভবাচ্যুত"
একাদশী ব্রত পালন কেবলমাত্র উপবাস করা নয় তার সাথে সাথে নিরন্তর শ্রীভগবান কে স্মরণ করা এবং ব্রত কথা পাঠ, শ্রবণ ও কির্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করা। এই দিন পরনিন্দা-পরচর্চা, মিথ্যা কথা বলা, ক্রোধ,দুরাচার,স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
একাদশীতে বিভিন্ন খুঁটিনাটি কাজ যেমন সবজি কাটার সময় সতর্ক থাকতে হবে।যাতে রক্তক্ষরণ না হয়। কারণ একাদশীর দিন রক্তক্ষরণ খুবই অশুভ বলে গণ্য।একাদশীর দিন শরীরে প্রসাধনী ব্যবহার নিষিদ্ধ অর্থাৎ তেল, সুগন্ধি, সাবান-শ্যাম্পু ইত্যাদি বর্জনীয় এবং সকল প্রকার ক্ষৌরকর্ম করা অর্থাৎ চুল ও নখ কাটা ইত্যাদি বর্জনীয়।
একাদশীর দিন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সন্ধ্যেবেলায় শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে একটি ঘিয়ের প্রদীপ নিবেদন করা।
একাদশী তিথির পরদিন অর্থাৎ দ্বাদশীর দিন একাদশীর পারণ ক্রিয়া সমাপ্ত করতে হয়। এই পারণ ক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মন্ত্র উচ্চারণ করে সম্পন্ন করতে হয়।
এই নির্দিষ্ট পারনের সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশষ্য ভগবানকে নিবেদন করার পর প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করে পারন করা একান্ত আবশ্যক। নচেৎ একাদশীর কোনো ফল লাভ হয় না। পারনের সময় যে মন্ত্রটি পাঠ করতে হয় সেটি হল-
"অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
অথবা
"একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব, প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব"
আশ্বিন শুক্লাপক্ষীয়া পাশাঙ্কুশা একাদশী মাহাত্ম্য ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে বর্ণিত আছে। যুধিষ্ঠির বললেন- হে মধুসুদন! আশ্বিন শুক্লপক্ষের একাদশীর নাম কি? তদুত্তরে শ্রীকৃষ্ণ বললেন- হে রাজেন্দ্র! আশ্বিনের শুক্লপক্ষীয়া একাদশী ‘পাশাঙ্কুশা’ নামে প্রসিদ্ধা। কেউ কেউ একে পাপাঙ্কুশাও বলে থাকেন। এই একাদশীতে অভিষ্ট ফল লাভের জন্য মুক্তিদাতা পদ্মনাভের পূজা করবে। শ্রীহরির নাম-সংকীর্তন দ্বারা পৃথিবীর সর্ব তীর্থের ফল লাভ হয়। বদ্ধ জীব মোহবশত বহু পাপকর্ম করেও ভগবান শ্রীহরির শরণাপন্ন হয়ে প্রণাম নিবেদনে নরকযাতনা থেকে রক্ষা পায়। এই একাদশীর মহিমা শোনার ফলে নিদারুণ যমদণ্ড থেকে মুক্তি লাভ হয়। শ্রীহরিবাসর ব্রতের মতো ত্রিভুবনে পবিত্রকারী আর কোন বস্তু নেই। হাজার হাজার অশ্বমেধ যজ্ঞ এবং শত শত রাজসূয় যজ্ঞ এই ব্রতের শতভাগের একাংশের সমান হয় না। এই ব্রত পালনে স্বর্গবাস হয়। মুক্তি, দীর্ঘায়ু, আরোগ্য, সুপত্নী, বন্ধু প্রভৃতি অনায়াসে লাভ করা যায়। হে রাজন! গয়া, কাশী এমনকি কুরুক্ষেত্রও শ্রীহরিবাসর অপেক্ষা পূণ্যস্থান নয়। হে ভূপাল! একাদশী উপবাস ব্রত করে রাত্রি জাগরণ করলে অনায়াসে বিষ্ণুলোকে গতি হয়। এই পাশাঙ্কুশা ব্রতের ফলে মানুষ সর্বপাপ মুক্ত হয়ে গোলোকে গমন করতে সমর্থ হয়। এই পবিত্র দিনে যিনি স্বর্ণ, তিল, গাভী, অন্ন, বস্ত্র, জল, ছত্র, পাদুকা দান করেন, তাকে আর যমালয়ে যেতে হয় না। যারা এসকল পুণ্যকার্য করে না, তাদের জীবন কামারশালার হাপরের মতো বিফল। নিষ্ঠার সাথে এই ব্রত পালনে উচ্চকুলে নিরোগ ও দীর্ঘায়ু শরীর লাভ হয়। অত্যন্ত পাপাচারীও যদি এই পুণ্যব্রতের অনুষ্ঠান করে তবে সেও রৌরব নামক মহাযন্ত্রনা থেকে মুক্ত হয়ে বৈকুণ্ঠসুখ লাভ করে। কৃষ্ণভক্তি লাভই শ্রীএকাদশী ব্রতের মুখ্য ফল। তবে আনুষাঙ্গিকরূপে স্বর্গ, ঐশ্বর্যাদি অনিত্য ফল লাভ হয়ে থাকে।