আদ্যাশক্তি মহামায়া কালীরূপে জাগ্রতা হন। এই রূপে তিনি যেমন একাধারে ভয়ঙ্করী, অপরদিকে অভয়দায়িনী। কালী মন্ত্র জপ করে পুজো-অর্চনা করলে ফল পাওয়া যায়। কতকগুলি শক্তিশালী কালী মন্ত্র বদলে দিতে পারে আপনার জীবন।
কালী বীজ মন্ত্র - ওঁ ক্রীং কালী। এই মন্ত্র জপ করলে ব্যক্তি নেতিবাচক শক্তির প্রভাব থেকে মুক্তি পায়। এই মন্ত্র ব্যক্তিকে পূর্ণ জ্ঞান, শুভ শক্তি, আত্মার উন্নতি ও মুক্তি প্রদান করতে সক্ষম।
কালী মন্ত্র - ওঁ ক্রীং কালিকায়ৈ নমঃ। শাস্ত্র মতে কালীর এই মন্ত্র জপ করলে ব্যক্তি শুদ্ধ চেতনা লাভ করে।
কালিকায়ি মন্ত্র - ওঁ ক্লীং কালিকায়ি নমঃ। এই মন্ত্র ব্যক্তিকে সমস্ত ধরনের জটিলতর সমস্যা থেকে মুক্তি প্রদান করে। এই মন্ত্রের প্রভাবে ব্যক্তি সচেতন ও অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ চিন্তাভাবনার অধিকারী হন।
মহাকালী মন্ত্র - ওঁ শ্রী মহা কালিকায়ৈ নমঃ। এই মন্ত্র জপ করলে কালীর আশীর্বাদ পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি ব্যক্তি শক্তি লাভ করে।
15 অক্ষরী কালী মন্ত্র:- ওঁ হৃীং শ্রীং ক্লীং আদ্যা কালিকা পরমং ঈশ্বরী স্বাহা।
এই মন্ত্র জপ করলে ব্যক্তির আধ্যাত্মিক শক্তি দ্রুতহারে বৃদ্ধি পায়।
শ্রীশ্রীকালী গায়ত্রী:---
ওঁ কালিকায়ৈ বিদ্মহে শ্মশানবসিন্যৈ ধীমহি
তন্নো দেবী প্রচোদয়াৎ।।
পদার্থ:-
শ্মশানবাসিন্যৈ কালিকায়ৈ (নমঃ)= শ্মশানবাসিনী কালিকাকে নমস্কার করি;
(বয়ং ত্বাং)বিদ্মহে= আমরা তাঁহাকে জানি;
ধীমহি(ধ্যায়েম চ)= এবং ধ্যান করি;
(সা) দেবী= সেই প্রসিদ্ধা কালিকা দেবী;
তৎ(তৎপ্রীত্যর্থশুভকর্ম্মণি)= তদীয় প্রীতি উৎপাদক চতুর্বর্গসাধনরূপ শুভকর্ম্মে;
নঃ= আমাদিগকে বা আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিকে;
প্রচোদয়াৎ(প্রচোদয়েৎ)= যথোচিত প্রেরণা দান করুন।
বঙ্গার্থ:-
শ্মশানবাসিনী কালিকাকে নমস্কার,
আমরা তাঁহাকে জানি এবং ধ্যান করি,
সেই প্রসিদ্ধা দেবী তাঁর উৎপাদক চতুর্বর্গ সাধনরূপ শুভকর্ম্মে সাধনে আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিকে যথোচিত প্রেরণা দান করুন।
শাস্ত্র মতে এই মন্ত্র জপের প্রভাবে ব্যক্তির মনের উচ্চ অবস্থার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। কালীর পথ প্রদর্শনের ফলে ব্যক্তি একটি স্পষ্ট ও সতর্ক অবস্থানে প্রবেশ করে।
প্রার্থনা মন্ত্র - ওম কালী কালী মহাকালী কালীকে পাপহারিণী, ধর্মার্থমোক্ষদে দেবী নারায়ণী নমোস্তুতে। এই মন্ত্র ব্যক্তিকে অজ্ঞানতা ও মৃত্যুভয় থেকে মুক্তি দেয়।
তবে মনে রাখতে হবে, সকল ধরনের মন্ত্র জপ সকলের জন্য কিন্তু একেবারেই মঙ্গলজনক নয়। মহাকালীর অভূতপূর্ব তেজ ধারণ করা সকলের সাধ্য নয়।
তাই, শরীর-মন প্রস্তুত না থাকলে কখনওই মায়ের মন্ত্র জপ করা উচিৎ নয়। গুরু দ্বারা দীক্ষিত ব্যক্তিরাই কালী মন্ত্র জপ করবেন, নতুবা নয়।
ছট পূজা কার্তিক মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে পালন করা হয়। সূর্যদেব এবং আর তাঁর স্ত্রী ঊষাকে (মতান্তরে ওনার বোন) আরাধনার মাধ্যমে এই পূজা করা হয়ে থাকে। বলা হয় কার্তিক মাসের শুক্লা ষষ্ঠী তিথিতে এই ব্রত উদযাপিত হওয়ার কারণে এর নাম ছট(ষষ্ঠী->ষষ্ঠ->ষট->ছট) রাখা হয়েছে। চৈত্র মাসের ষষ্ঠী তিথিতে আরও একটি ছট পূজা করা হয়, যাকে বলে চৈতি ছট। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে দীপাবলি শেষ হয়ে যাবার পর কার্তিক শুক্লা চতুর্থী থেকে কার্তিক শুক্লা সপ্তমী অবধি চার দিন ধরে ছট পূজা করা হয়ে থাকে। 1. ব্রতের প্রথম দিনে ব্রতী ঘরবাড়ি পরিষ্কার করে স্নান সেরে নিরামিষ ভোজন করে। একে বলা হয় নাহাই-খাই। 2.দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ পঞ্চমীতে ব্রতীরা পুরো দিন উপবাস পালন করে। তারা সূর্যাস্তের আগে এক ফোঁটা জলও খায় না। সন্ধ্যায় একটি বিশেষ ক্ষীর বা পায়েস এবং চাপাতি যা রুটির মতো এই দিয়ে একটি বিশেষ প্রসাদ প্রস্তুত করা হয়। এই বিশেষভাবে তৈরি প্রসাদ এবং কলা, মূলা, আদা, কচুর পাতা,কালো এলাচ এবং লবঙ্গ জাতীয় মশলা দিয়ে ব্রতীরা ছটী মাইয়ার উপাসনা করে। পূজার পরে প্রসাদ খেয়ে তাদের উপবাস ভঙ্গ করে এবং এটি পরিবার এবং বন্ধুদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। এই দিনটি খরনা নামে পরিচিত। 3.তৃতীয় দিনে কাছাকাছি কোন নদী বা জলাশয়ের ঘাটে গিয়ে অন্যান্য ব্রতীদের সাথে অস্তগামী সূর্যকে দুধ অর্পণ করে অর্ঘ্য করা হয়। এছাড়াও এইদিন কোশিয়া করা হয়। যে পরিবারে কোন শিশু জন্মগ্রহণ করেছে বা সম্প্রতি বিয়ে হয়েছে, তারাই এই কোশিয়া পালন করে। এখানে পাঁচটি আখের কাঠি ব্যবহার করে একটি ছাউনি তৈরি করা হয়। আখের কাঠিগুলি হলুদ কাপড়ের মাধ্যমে একত্রে বেঁধে দেওয়া হয় এবং প্রদীপ আর মাটির হাঁড়িগুলি ছাউনির নীচে রাখা হয়। আখের পাঁচটি লাঠি আসলে ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ , ব্যোম এই পাঁচটি উপাদানের প্রতীক। আলোকিত মাটির প্রদীপগুলি সৌরশক্তির প্রতীক। এই আচারটি হয় বাড়ির উঠোনে বা ছাদে হয়। পরে এগুলো নদীর তীরে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে তাদের আবার আলোকিত করা হয় এবং এই অনুষ্ঠানের পরে তাদের আবার বাড়িতে পাঠানো হয়। 4.ব্রতের শেষদিনে পুনরায় ঘাটে গিয়ে উদীয়মান সূর্যকে পবিত্র চিত্তে অর্ঘ্যপ্রদানের পর উপবাসভঙ্গ করে পূজার প্রসাদরূপে বাঁশ নির্মিত পাত্রে সুপ, গুড়, মিষ্টান্ন, ক্ষীর, ঠেকুয়া, ভাতের নাড়ু এবং আখ, কলা, মিষ্টি লেবু প্রভৃতি ফল জনসাধারণকে দেওয়া হয়। ছট পূজার পেছনে বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনীর প্রচলন আছে। একটি প্রচলিত কাহিনী অনুযায়ী শ্রীরাম, শ্রীলঙ্কা জয়ের পর দীপাবলির দিন অযোধ্যা ফিরে আসেন। সেইদিন রাজ্যের সকল প্রজারা মিলে রাজ্য জুড়ে ঘি এর প্রদীপ জ্বালিয়েছিল। এরপর রামের রাজ্যাভিষেক হয় এবং রামরাজ্য স্থাপনের উদ্দেশ্যে শ্রীরাম এবং সীতা কার্তিক মাসের শুক্লা ষষ্ঠীতে উপবাস করে ভগবান সূর্যের আরাধনা করেন। আর সপ্তমীর সূর্যোদয়ে আবার সূর্য আরাধনা করে রামরাজ্যের সূচনা করেন।
1. ভ্রাতৃদ্বিতীয়া 2. যম দ্বিতীয়া 3. ধর্মরাজ পূজা 4. যম - যমুনা - চিত্রগুপ্ত - যমদূত পূজা এবং যম অর্ঘ্য দান যম - যমুনা - চিত্রগুপ্ত - যমদূত পূজা মন্ত্র :- আচারাৎ ভ্রাতা চ ভাগনী হস্তাদ্ যত্নেন ভোক্তব্যঞ্চ | ভগিণ্যভ্রাতৃপূজনমাবশ্যকাম্, ভ্রাতৃ ললাটে - তিলকদানম্|| তিলক দানের পাঠ্য মন্ত্র :- ভ্রাতস্তব ললাটে হি দদামি তিলকং শুভম্ | অতঃপরং যমদ্বারে ময়াদত্তং হি কন্টকম || ভ্রাতা চ ভগিনীভ্য বস্ত্রাদিকং দেয়ম্ || প্রচলিত বাংলা প্রবচন :- ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা যমদুয়ারে পড়লো কাঁটা যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা আমি দিই ভাইকে ফোঁটা যম যেমন চিরজীবী আমার ভাই যেনো হয় চিরজীবী l l অন্নদানে ভগিনীর পাঠ্য মন্ত্র :- ভ্রাতস্তবানুজাতাহং - ভুঙক্ষ- ভক্তমিদং শুভম্ | প্রীতয়ে যমরাজস্য - যমুনায়া বিশেষতঃ || জ্যেষ্ঠা ভগিনী চেৎ ভ্রাতস্তবাগ্রজাতাহমিত্যাদি পঠেৎ শুভ ভাইফোঁটা।এই ভাইফোঁটা কেন পালন করা হয় তা আমরা অনেকেই জানি না। নরকাসুরকে বধ করে এইদিন বোন সুভদ্রার কাছে গিয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ তখন এই দিনে সুভদ্রা দাদাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন চন্দনের ফোটা কপালে দিয়ে এবং ফুল-মিষ্টান্ন দিয়ে ও আরতিও করেছিলেন। তাই সেই সময় থেকে বহুজন শ্রীকৃষ্ণ আর সুভদ্রা এই ভাই-বোনের ভাইফোঁটা প্রথা পালন করে আর একটি বেশি প্রচলিত কাহিনী হল, যমরাজ গিয়েছিলেন বোন যমুনার কাছে। যমুনা বা যমীও এইভাবে অগ্রজকে বরণ করে নিয়েছিলেন। সেই থেকে সহোদরের মঙ্গলকামনায় প্রবর্তিত ভ্রাতৃদ্বিতীয়া। ভাইফোঁটা এমন এক উত্সব যেখানে ব্রাহ্মণ পুজারীর দরকার হয় না। তবু বিশেষ না হলেও এর জন্যেও আছে কিছু রীতি রেওয়াজ। ভোরে স্নান সেরে শুদ্ধ বস্ত্রে ফোঁটা দেওয়া নেওয়াই রেওয়াজ। ফোঁটাগ্রহণের আগে উপবাস রাখা হয়। ফোঁটা বা তিলকদানের পর্ব মিটলে ভঙ্গ করা হয় উপবাস। ঘাসের ডগায় যে ভোরের শিশির থাকে তা দিয়েই বাটতে হয় চন্দন। মূলত এটাই ফোঁটার প্রধান উপকরণ। এছাড়া প্রদীপের জল, ঘি ইত্যাদি দিয়েও ভাইফোঁটা দেওয়া হয়। বরণডালা সাজিয়ে ভাইকে আরতি করা হয়। এক এক বাড়ির নিয়ম অনুযায়ী এক এক রকম জিনিস থাকে সেই ডালায়। তবে প্রদীপ ধূপকাঠি পান সুপারি হরিতকি ইত্যাদি দ্রব্যই সাধারণত থাকেই।
চৌদ্দ বছর বনবাসান্তে ভগবান শ্রীরামচন্দ্র ও ভ্রাতা লক্ষণ, রাবণকে বিজয়াদশমী দিনে বধ করেন। আর এই দিপাবলি তিথিতে অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তন করেন। অযোধ্যাবাসীগণ ভগবান রামচন্দ্রের প্রত্যাবর্তনে যেন প্রাণ ফিরে পেলেন। তাই ভগবদ্বিরহ অমানিশার ঘোর কালিমা ঘুচিয়ে তাঁরা আত্মহারা হয়ে গৃহচূড়ায়-বাতায়নে-মাঠেঘাটে নগরীর প্রাসাদে দীপমালিকা প্রজ্জ্বলন করে তাঁদের প্রভুকে বরণ করেছিলেন। সেই উৎসব স্মরণেই দীপাবলি উৎসব পালিত হয়। এই দিনই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দামবন্ধন লীলা সংঘটিত হয়।
এইদিন :- কি কি করা যায় বা কি কি করতে হবে 1. চতুর্দশ শাক ভক্ষণম (চোদ্দ রকম শাক ভক্ষণ) :- ১. ওল, ২. কেউ ৩. বেতো, ৪. কলকাসুন্দে, ৫. নিমপাতা, ৬. জয়ন্তী, ৭. সরিষা, ৮. শাঞ্চে, ৯. হিলঞ্চ, ১০. পলতা, ১১. শুলফা, ১২. গুলঞ্চ, ১৩. ঘেঁটু, ১৪. শুষনী । 2. শ্রী শ্রী ধর্মরাজ পূজা 3. ভূত চতুর্দশী, যম তর্পণ, নরক চতুর্দশী ( সন্ধ্যা 5: 28 মিনিটের মধ্যে করতে হবে ) । মন্ত্র :- নমঃ পিতৃভ্য প্রেতেভ্যো নমো ধর্মায় বিষ্ণবে । নমো ধূম্রায় রুদ্রায় কান্তারপতয়ে নমঃ ।। 4. শ্রী শ্রী হনুমান জয়ন্তী 5. চতুর্দশী দ্বীপদান 6. অমাবস্যার নিশি পালন 7. শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা ও কালী পূজা (রাত 10:56 মিনিট থেকে 11:44 মিনিটের মধ্যে হবে )। 8. ভৈরবী চক্র অনুষ্ঠান 9. শ্রী শ্রী মহা লক্ষ্মী ও শ্রী শ্রী অলক্ষ্মী পূজা (সন্ধ্যা 4:54 মিনিটের মধ্যে হবে )। 10. দীপাবলি 11. সুখ রাত্রি অনুষ্ঠান 12. পার্বণ শ্রাদ্ধ 13. উল্কাদান উল্কা গ্রহণ মন্ত্র :- " শস্ত্রাশস্ত্র হতানাঞ্চ ভূতানাং ভূতদর্শয়োঃ । উজ্জ্বল জ্যোতিষা দেহং দহেয়ং ব্যোমবহ্নিনা | |" উল্কা দান মন্ত্র :- " অগ্নি দগ্ধাশ্চ যে জীবাঃ যেহপ্যদগ্ধা কুলে মম। উজ্জ্বল জ্যোতিষা দগ্ধাস্তে যান্ত পরমাং গতিম | |" উল্কা বিসর্জন মন্ত্র :- " যমলোকং পরিত্যজ্য আগতা যে মহালয়ে ৷ উজ্জ্বল জ্যোতিষা বর্ত্মপ্রপশ্যন্তো ব্রজন্ততে ৷৷ " অমাবস্যা -- কার্তিক শুক্লপক্ষ প্রতিপদ শুরু হবে 1. গো সহস্ত্রী যোগ 2. গঙ্গা স্নান 3. গোবর্ধন পূজা 4. অন্নকূট মহাৎসব 5. দৈত্যরাজ বলিরাজের পূজা 6.অমাবস্যার একদিষ্ট এবং স্বপিন্ডকরন শ্রাদ্ধ
আশ্বিন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের শেষে চতুর্দশীতে পালিত হয় l । পৌরাণিক মতে, নরকাশুর কালী পুজোর আগের দিন ভূত চতুর্দশী তিথিতে মর্ত্যে আসেন পুজো নিতে, সঙ্গে থাকে নরকাশুরের অসংখ্য অনুচর হিসাবে পরলোক জগতের ভূত প্রেতেরা -- এইদিন গৃহস্থে প্রেত শক্তির প্রবেশ ঘটে । তাদের গৃহস্থে প্রবেশ বাধা দিতে জ্বালানো হয় আলো । এইদিন প্রতিটি ঘরে প্রেত শক্তির গৃহে প্রবেশ এ বাধা দিতে এবং বংশের পুর্ব পুরুষদের আশীর্বাদ নিতে 14 টি প্রদীপ দিয়ে সাজানো হয় । ঘরের প্রতিটি কোণে রাখা হয় প্রদীপ ।যেহেতু চতুর্দশী রাত তাই তিথির সংখ্যা ধরে এবং বংশের পূর্বের ১৪ পুরুষকে স্মরণ করে -- সংখ্যায় 14 টি প্রদীপ দেওয়া হয় । এইদিনে বংশের পূর্ব পুরুষের আত্মাও গৃহস্থে ও আসে। পরিবারের সুখ শান্তি আশীর্বাদ ও করে যান তারা ।
বারানসী তে ধনতেরাস উৎসব, মা অন্নপূর্ণার দ্বার খুলবে, ধন বিতরণ হবে মা বছরে মাত্র চারদিন দর্শন দেন অন্নকূটের দিন মা অন্নপূর্ণাকে 56 প্রকার ভোগ নিবেদন করা হবে। বারাণসী। ধনতেরাসে অন্নপূর্ণা মন্দির খুলেছে আজ ধনতেরাস উৎসব। মা অন্নপূর্ণার দর্শনের জন্য দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা বিষণ্ণ চোখে অপেক্ষা করছেন। আজ কাশীতে অন্নের দেবী অন্নপূর্ণার দরবারের দরজা খুলবে। আর এদিন বিতরণ করা হবে মা অন্নপূর্ণার ধন। কোষাগারে ধান, লাভাসহ রৌপ্য মুদ্রা পাওয়া যাবে। কথিত আছে যে এই প্রসাদ আপনার সিন্দুকে রাখলে আর্থিক সচ্ছলতা বৃদ্ধি পায়। এবং ব্যক্তি ধনী হয়। মা বছরে মাত্র চারদিন দর্শন দেন। অন্নকূট উৎসবের দিন মা অন্নপূর্ণাকে 56 প্রকার ভোগ নিবেদন করা হবে। মাত্র একদিনে ভাগ হবে মায়ের ধন:- সারা পৃথিবীতে শুধু কাশীতেই অন্নের দেবী মা অন্নপূর্ণার সোনার মূর্তি দেখা যায়। এ বছর ধনতেরাসে খুলবে মা অন্নপূর্ণার দরবার। আর অন্নকূট পর্যন্ত চারদিন ভক্তরা মায়ের সোনার মূর্তির দর্শন ও পূজা করতে পারবেন। মায়ের ধন বণ্টন হবে একদিন।
নবদুর্গা দেবী দুর্গার নয়টি ভিন্ন রূপ, যা নবদুর্গা নামেও পরিচিত, নবরাত্রি উৎসবের সময় শ্রদ্ধা ও পূজা করা হয়। মা দুর্গার 9 টি রূপ। 1.শৈলপুত্রী 2.ব্রহ্মচারিনী 3.চন্দ্রঘণ্টা 4.কুশমণ্ডা 5.স্কন্দমাতা 6.কাত্যায়নী 7.কালরাত্রি 8.মহাগৌরি 9.সিদ্ধিদাত্রী মাতৃদেবী নিজেকে সকল রূপে প্রকাশ করে এবং সকল নাম ধারণ করে। নবরাত্রি উদযাপন করা হচ্ছে মা দুর্গার নয়টি রূপ এবং প্রতিটি নামে একটি ঈশ্বরিক শক্তিকে বোঝায়ঃ । নয়দিনের অপার আনন্দ ও আনন্দের সমাপ্তি ঘটে, যা শুভ শক্তির বিজয়ের প্রতীক। নবরাত্রি উৎসবের মা দূর্গা দেবীর 9 টি ভিন্ন রূপকে উৎসর্গ করা হয় যা নব দুর্গা নামে পরিচিত। ***************************************************************** দেবীপক্ষ:::আশ্বিনী শুক্লা প্রতিপদ আশ্বিনী শুক্লা প্রতিপদ:: আশ্বিনী শুক্লা প্রতিপদ তিথি অর্থাৎ নবরাত্রির প্রথম দিনে মায়ের নবদূর্গার প্রথম নাম "শৈল্যপুত্রী "। মা দুর্গার প্রথম রূপ শৈলপুত্রী পূজা করা হয় নবরাত্রির প্রথম দিনে। সাদা পোশাক পরিহিত মা শৈলপুত্রীর ডান হাতে ত্রিশূল এবং বাম হাতে পদ্ম। মায়ের কপালে শোভা পায় চাঁদ। এই নন্দী ষাঁড়ের উপর চড়ে সমগ্র হিমালয়ে বসে আছে। শৈলপুত্রী মা বৃষরুদা ও উমা নামেও পরিচিত। মা শৈলপুত্রী পাহাড় রাজা হিমালয়ের ঘরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যার কারণে তিনি শৈলপুত্রী নামটি পেয়েছিলেন। দেবীর এই রূপকে সহানুভূতি ও স্নেহের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মা শৈলপুত্রী, যিনি কঠোর তপস্যা করেন, তাকে সকল জীবের রক্ষক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পূজা পদ্ধতি: নবরাত্রির প্রথম দিন সকালে খুব ভোরে উঠে স্নান করার পর পরিষ্কার কাপড় পরুন। তারপর একটি চৌকিতে দেবী দুর্গার মূর্তি এবং কালাশ স্থাপন করুন। তারপর মা শৈলপুত্রীর ধ্যান করার পর উপবাসের সমাধান করুন। সাদা রঙের জিনিস মা শৈলপুত্রীর কাছে খুবই প্রিয়, তাই চন্দন-রোলি দিয়ে টিকার পর মায়ের প্রতিমাকে সাদা পোশাক এবং সাদা ফুল দেওয়া উচিত। এর সাথে সাদা রঙের মিষ্টির ভোগও মায়ের খুব পছন্দ। পরে শৈলপুত্রী মাতার কাহিনী আবৃত্তি করুন এবং দুর্গা সাপ্তসী পাঠ করুন। এর পরে দুর্গা চালিসা পাঠ করুন। পরে মায়ের আরতি করুন। মা শৈলপুত্রীর মন্ত্র: ওঁ দেবী শৈলপুত্রয়ায় নম:। বন্দে বঞ্চিতলাভয় চন্দ্রধাকৃতশেখরম। বৃষরূধন শূলধরণ শৈলপুত্রিন যশস্বিনী।। *************************************************************** দেবীপক্ষ::::দ্বিতীয়া তিথি দ্বিতীয়া তিথি : নবদূর্গার 2য় দিন -আজ মায়ের নবদূর্গার নাম "ব্রহ্মচারিনী "। দেবী ব্রহ্মচারিণীর পূজা একজন ব্যক্তির দৃঢ়তা ত্যাগ, বিচ্ছিন্নতা, পুণ্য, সংযম বৃদ্ধি করে। জীবনের কঠিন সময়েও তার মন কর্তব্যের পথ থেকে বিচ্যুত হয় না। দেবী তার অন্বেষকদের অশ্লীলতা, দুর্ভাগ্য এবং ত্রুটি দূর করে। দেবীর কৃপায় সর্বত্রই সাফল্য ও বিজয়। মা ভগবতীকে নবরাত্রির দ্বিতীয় দিনে চিনি দেওয়া উচিত, মা চিনি পছন্দ করেন। শুধু চিনি ব্রাহ্মণদের দান করা উচিত। এটা বিশ্বাস করা হয় যে এটি করলে দীর্ঘায়ু হয়। তাদের পূজা করলে তপস্যা, ত্যাগ, পুণ্য ইত্যাদি বৃদ্ধি পায়। ব্রহ্মচারিনী দেবীর পূজা হয় নবরাত্রির দ্বিতীয় দিনে। দেবী ব্রহ্মচারিণীর রূপ ভাস্বর। মা দুর্গার নয়টি শক্তির মধ্যে এটি দ্বিতীয়। তাপসচারিনী, অপর্ণা এবং উমা তার অন্য নাম। দেবী ব্রহ্মচারিণীর পূজা করার সময় প্রথমে তার হাতে একটি ফুল নিয়ে তার ধ্যান করুন। প্রার্থনা করার সময় নিচের মন্ত্রটি পাঠ করুন। "দাধানা করপদ্মভ্যমাক্ষমালকমণ্ডলু। দেবী প্রসিদাতু মায়ি ব্রহ্মচারিণ্যুত্তমা ||" যা দেবী সর্বভূতেষু মা ব্রহ্মচারিনী রূপেন প্রতিষ্ঠিতা । নমস্তস্য নমস্তস্য নমস্তস্য নমো নম। ******************************************************************* দেবীপক্ষ::::তৃতীয়া তিথি তৃতীয়া তিথি : নবদূর্গার 3য় রূপের - মায়ের নবদূর্গার নাম "চন্দ্রঘন্টা "। মা চন্দ্রঘণ্টার রূপ খুবই কোমল। মা সুগন্ধি পছন্দ করে। তার বাহন সিংহ। তার দশটি হাত আছে। প্রতিটি হাতে বিভিন্ন অস্ত্র আছে। তারা রাক্ষসী শক্তি থেকে রক্ষা করে। যারা মা চন্দ্রঘণ্টা পূজা করে তাদের অহংকার নষ্ট হয় এবং তারা সৌভাগ্য, শান্তি এবং বৈভব পায়। মা দুর্গার তৃতীয় রূপের নাম চন্দ্রঘণ্টা। তার মাথায় একটি ঘন্টার আকৃতির অর্ধচন্দ্র রয়েছে, এজন্য তাকে চন্দ্রঘণ্টা বলা হয়। মা চন্দ্রঘণ্টা সিংহের উপর বসে আছেন। দেবী চন্দ্রঘণ্টা দেবীর রূপ স্বর্ণের মতো উজ্জ্বল। মাতৃদেবীর দশটি বাহু এবং দশটি হাতে একটি ছুরি এবং একটি তীর রয়েছে। মা চন্দ্রঘণ্টার গলায় সাদা ফুলের মালা আছে। মা চন্দ্রঘণ্টা পূজার মাধ্যমে, মা ভক্তদের সমস্ত পাপ দূর করে এবং তার কাজের পথে যে বাধা আসে তা ধ্বংস করে। মা চন্দ্রঘণ্টা সিংহের উপর আরোহণ করছেন, তাই যিনি তাঁর পূজা করেন তিনি পরাক্রমশালী এবং নির্ভীক হন। অর্ধচন্দ্র মা চন্দ্রঘণ্টার কপালে শোভিত, তাই তাঁর পূজা করলে প্রকৃতিতে নম্রতা আসে না, বরং মুখ, চোখ এবং সারা শরীরে তেজ বৃদ্ধি পায়। যাদের দুর্বল চিত্ত তারা এই পুজো থেকে বিশেষ আত্মবল প্রাপ্ত হয় । মন্ত্র: পিন্ডজপ্রভাররুদা চণ্ডকোপস্ত্রকার্যুত। প্রসাদম তনুতে মহা চন্দ্রঘনতেতি বিশ্রুতা। *************************************************************** দেবীপক্ষ::::চতুর্থী তিথি চতুর্থী তিথি : নবদূর্গার 4য় রূপের - মায়ের নবদূর্গার নাম "কুশমণ্ডা "। আজ নবরাত্রির চতুর্থ দিন। নবরাত্রির চতুর্থ দিনে দেবী কুশমণ্ডা দেবীর পূজা করা হয়। মা কুশমণ্ডার আটটি বাহু রয়েছে। তাঁর সাত হাতে যথাক্রমে কমণ্ডল, ধনুক তীর, পদ্ম-ফুল, অমৃত-ভরা কলস, চক্র এবং গদা রয়েছে। অষ্টম হাতে একটি জপমালা আছে যা সমস্ত সিদ্ধি এবং বিদ্যা প্রদান করে। সিংহ তার পরিবহন। যে কোনো ব্যক্তি কর্ম যোগী জীবন অবলম্বন করে দ্রুত আত্মউন্নতি করতে অনুপ্রাণিত করে। তার মিষ্টি হাসি আমাদের জীবনীশক্তি বৃদ্ধি করে এবং সবচেয়ে কঠিন পথে হেঁটে সাফল্য অর্জন অনুপ্রাণিত করে । মায়ের দিব্য রূপের ধ্যান, আমাদের আধ্যাত্মিক জ্ঞান প্রদান করে, আমাদের বুদ্ধি জাগ্রত করে এবং আমাদের বুদ্ধিকে যথাযথ ও মহৎ কাজে নিয়োজিত করতে অনুপ্রাণিত করে। প্রথমে, তাকে মায়ের ধ্যান মন্ত্র পাঠ করে আহ্বান করা হয় এবং তারপর উৎস মন্ত্র দিয়ে তাকে পূজা করা হয়। এর পরে আসে পূজার মন্ত্রের পালা। আসুন আমরা আপনাকে এই মন্ত্রটি ক্রমানুসারে বলি: সুরা সম্পূর্ন কালশাম হয়ধিরপ্লুটমেভা চ। দঘানা হস্তপদ্মভায়াম কুশমণ্ডা শুভকামনায়। ****************************************************************** দেবীপক্ষ::::পঞ্চমী তিথি পঞ্চমী তিথি : নবদূর্গার পঞ্চম রূপের - মায়ের নবদূর্গার নাম "স্কন্দমাতা"। নবরাত্রির পঞ্চম দিন। নবরাত্রির পঞ্চম দিনে "দেবী স্কন্দমাতা" পূজা করা হয়। পঞ্চম নবরাত্রি, দেবী স্কন্দমাতা ভক্তদের সমস্ত ইচ্ছা পূরণ করে। মা স্কন্দমাতাকে যব-বাজরা দেওয়া হয়, কিন্তু শারীরিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে মাকে কলা দিন। স্কন্দ কুমার কার্তিকেয়ার মায়ের কারণে তার নাম স্কন্দমাতা। ভগবান স্কন্দ শিশু কোলে তার কোলে বসে আছেন। মায়ের চারটি বাহু, যার দুই হাতেই পদ্ম ফুল ধরে আছে। দেবী স্কন্দমাতা এক হাতে কার্তিকেয়কে কোলে ধরে আছেন এবং অন্য হাতে তিনি তাঁর ভক্তদের আশীর্বাদ দিচ্ছেন। স্কন্দমাতার মন্ত্র: - দেবী সর্বভূতেষু মা স্কন্দমাতা রূপেনা প্রতিষ্ঠান। নমস্তস্য নমস্তস্য নমস্তস্য নমো নমো। অথবা সিংহাসনগীত নিত্যম পদ্মশ্রিতকারদব্য। শুভদস্তু সদ দেবী স্কন্দমাতা যশস্বিনী ওম দেবী স্কন্দমতাই নম:। ******************************************************************** দেবীপক্ষ::::ষষ্ঠী তিথি ষষ্ঠী তিথি : নবদূর্গার ষষ্ঠ রূপের - মায়ের নবদূর্গার নাম "কাত্যায়ণীমাতা "। নবরাত্রির ষষ্ঠ দিন। নবরাত্রির ষষ্ঠ দিনে "দেবী কাত্যায়ণী" পূজা করা হয়। এই দিনে যারা মায়ের পুজো করেন তারা উপযুক্ত বর পান। মা কাত্যায়নীকে শত্রু এবং ঝামেলা মুক্ত বলে মনে করা হয়। বলা হয়ে থাকে যে, দেবীই অসুরদের থেকে দেবতাদের রক্ষা করেছিলেন। মা মহিষাসুরকে হত্যা করেছিলেন এবং তার পরে শুম্ভ এবং নিশুম্ভকেও হত্যা করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, নয়টি গ্রহও তাদের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছিল। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে স্নান করুন এবং সমস্ত রুটিন কাজ থেকে অবসর নিন। প্রথমে গনেশ পূজা করুন। তারপর একটি চৌকিতে দেবীর মূর্তি বা মূর্তি স্থাপন করুন। তারপর একটি ফুল হাতে নিন এবং নিম্নলিখিত মন্ত্রটি জপ করুন। "দেবী সর্বভূতেষু শক্তির প্রতিষ্ঠান। নমস্তস্য নমস্তাসায় নমস্তস্য নমো নম:।। কাত্যায়নী মহামায়, মহাযোগিনীধীশ্বরী। নন্দগোপসুতম দেবী, পতি মে কুরু তে নম:।। চন্দ্র হাসোজ্জ ভালকার শার্দুলভার বাহন। কাত্যায়নী শুভনাদ্যা দেবী দানব ঘাতিনী।।" চন্দ্র হাসোজ্জ ভালকার শার্দুলভার বাহন। কাত্যায়নী শুভনাদ্যা দেবী দানব ঘটিনী।" এর পর, মায়ের পায়ে ফুলটি অর্পণ করুন। তারপর দেবীকে লাল কাপড়, হলুদ, 3 হলুদ ফুল, ফল, নৈবেদ্য ইত্যাদি নৈবেদ্য দিন।এর পরে দুর্গা চালিসা পাঠ করুন। মায়ের মন্ত্র জপ করুন এবং আরতি পাঠ করুন।মা কাত্যায়নীকে মধু অর্পণ করুন। এতে মা খুশি হন। এই দিনে মাকে লাল ফুল দিন। ************************************************************* দেবীপক্ষ::::সপ্তমী তিথি সপ্তমী তিথি :: নবদূর্গার সপ্তম রূপের - মায়ের নবদূর্গার নাম "মাতা কালরাত্রি "। নবরাত্রির সপ্তম দিন। নবরাত্রির সপ্তম দিনে "দেবী কালরাত্রি" পূজা করা হয়। মা কালরাত্রিকে বলা হয় যন্ত্র, মন্ত্র ও তন্ত্রের দেবী। বলা হয়ে থাকে যে, দেবী দুর্গা রক্তবীজ দানবকে বধ করার জন্য তাঁর তেজ দিয়ে কালরাত্রি সৃষ্টি করেছিলেন। ভূত, ভূত, অসুর, অসুর এবং সমস্ত অসুর শক্তি তাদের নামের নিছক উচ্চারণ থেকে পালিয়ে যায়। তিনি সবসময় শুভ ফল দেন। এজন্য তার একটি নামও শুভ। তাদের গায়ের রং কালো। মা কালরাত্রি গলায় নরমুণ্ডের মালা আছে। কালরাত্রির তিনটি চোখ এবং তার চুল খোলা। মা গর্দভ (গাধা) চড়েছেন। মায়ের চার হাত, এক হাতে ছুরি আর এক হাতে লোহার কাঁটা। মায়ের পূজার জন্য লাল রঙের পোশাক পরা উচিত। মকর এবং কুম্ভ রাশির মানুষকে অবশ্যই কালরাত্রি পূজা করতে হবে। আপনি যদি সমস্যায় থাকেন, তাহলে দেবীকে সাত বা একশো লেবুর মালা অর্পণ করুন। সপ্তমীর রাতে তিল বা সরিষার তেলের অখণ্ড শিখা জ্বালান। সিদ্ধকুঞ্জিকা স্তোত্র, অর্গলা স্তোত্রম, কালী চালিসা, কালী পুরাণ পাঠ করতে হবে। যতদূর সম্ভব, এই রাতে পুরো দুর্গা সপ্তশতী পাঠ করুন। মাতা কালরাত্রিr মন্ত্র:............ "জয়ন্তী মঙ্গল কালী ভদ্রকালী কাপালিনী। দুর্গা ক্ষমা শিব ধাত্রী স্বাহা স্বাধ নমোস্তু তে। জয় ত্বম দেবী চামুণ্ডে জয় ভূতারতিহারিনী। জয় সর্বগতে দেবী কালরাত্রি নমোস্তু তে।" ********************************************************* দেবীপক্ষ::::অষ্টমী তিথি অষ্টমী তিথি : নবদূর্গার অষ্টম রূপের - মায়ের নবদূর্গার নাম "মাতা মহাগৌরী "। নবরাত্রির অষ্টম দিন। নবরাত্রির অষ্টম দিনে "দেবী মহাগৌরীর " পূজা করা হয়। পুরাণ মতে, তাঁর দীপ্তিতে সমগ্র বিশ্ব আলোকিত। দুর্গা সপ্তশতীর মতে, শুম্ভ নিশুম্ভের কাছে পরাজিত হওয়ার পর, দেবতারা গঙ্গা নদীর তীরে তাদের সুরক্ষার জন্য দেবী মহাগৌরীর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। শারীরিক ক্ষমতার বিকাশের পাশাপাশি মায়ের এই রূপের পূজা করলে মানসিক শান্তি বাড়ে। মায়ের এই রূপকে অন্নপূর্ণা, জ্ঞানপ্রদিনী, চৈতন্যময়ীও বলা হয়। মহাগৌরীর পূজার পদ্ধতি: এদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে পরিষ্কার কাপড় পরুন। এর পরে একটি কাঠের চৌকি নিন এবং তার উপর একটি মূর্তি বা ছবি প্রতিষ্ঠা করুন। তাকে ফুল উপহার দিন এবং মায়ের ধ্যান করুন। তারপর মায়ের সামনে একটি প্রদীপ জ্বালান। তারপর মাকে ফল, ফুল এবং নৈবেদ্য অর্পণ করুন। এই দিনে মাকে নারকেল দেওয়া হয়। এই দিনে কন্যা পূজার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।মায়ের আরতি করুন এবং মন্ত্র জপ করুন। এই দিনে কুমারী কন্যা পূজা হয়। এই দিনে নয়টি মেয়ে এবং একটি ছেলের পূজা করা হয়। তাদের বাড়িতে ডাকা হয় এবং খাওয়ানো হয়। মেয়ে এবং শিশুদের তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী উপস্থাপন করা উচিত। তারপর তাদের পা স্পর্শ করে আশীর্বাদ নিন এবং তাদের বিদায় করুন। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, মা পার্বতী ভগবান শিবকে স্বামী হিসেবে পেতে এবং শিবকে স্বামী হিসেবে পেতে তার পূর্বজন্মে কঠোর তপস্যা করেছিলেন। মা যখন শিবকে তার স্বামী হিসেবে পাওয়ার জন্য কঠোর তপস্যা করেছিলেন, তখন মা গৌরীর দেহ ধুলো -মাটি দিয়ে ঢাকা হয়ে গিয়ে ছিল। এর পরে, ভগবান শিব গঙ্গাজল দিয়ে মায়ের দেহ ধুয়ে দিয়েছিলেন । তারপর গৌরীর দেহ উজ্জ্বল ও দীপ্তিময় হয়ে উঠল। তারপর তিনি দেবী মহাগৌরী হিসাবে বিখ্যাত হয়েছিলেন। মা মহাগৌরীর মন্ত্র: বন্দে কাম্যার্থে কামারথে চন্দ্রগৃক্ত শোখরাম। সিংহরুধা চতুর্ভুজ মহাগৌরী যশস্বনীম পূর্ণান্দু নিভানা গৌরী সোমচক্রাসিতম অষ্টম মহাগৌরী ত্রিনিট্রম। ভারভিতিকরণ ত্রিশুল দামরুধরম মহাগৌরী ভজেম। পাতম্বর পরিচ্ছদ মৃদু নানালঙ্কার ভূষিতম। ***************************************************** দেবীপক্ষ::::নবমী তিথি নবমী তিথি : নবদূর্গার নবম রূপের - মায়ের নবদূর্গার নাম "মাতা সিদ্ধিদাত্রী "। নবরাত্রির নবম দিন। নবরাত্রির নবম দিনে "দেবী সিদ্ধিদাত্রী " পূজা করা হয়। মার্কণ্ডেয় পুরাণ অনুসারে, অনিমা, মহিমা, গরিমা লঘিমা, প্রাপ্তি প্রকাম্য, ঈশিত্ব এবং বশিত্ব নামে আটটি সিদ্ধি আছে। এসবের দাতা সিদ্ধিদাত্রী মাতা হিসেবে বিবেচিত। নবরাত্রিতে নবমীর দিনে তাদের আহ্বান করা হয়, ধ্যান করা হয় এবং পূজা করা হয়। দেবী পুরাণ অনুসারে, ভগবান শঙ্কর তাঁর পূজা করে সিদ্ধি লাভ করেছিলেন। যার কারণে তার শরীরের অর্ধেকটা হয়ে গিয়েছিল একজন নারীর। এই কারণে শিব অর্ধনারীশ্বর নামে বিখ্যাত হয়েছিলেন। সিদ্ধিদাত্রীর চারটি বাহু, ডান দুই বাহুতে একটি গদা এবং একটি চক্র এবং বাম দুই বাহুতে একটি পদ্মা এবং একটি শঙ্খ রয়েছে। তার মাথায় সোনার মুকুট এবং গলায় সাদা ফুলের মালা। তিনি পদ্মের উপর বসে আছেন এবং কেবল মানুষই নয়, সিদ্ধ, গন্ধর্ব, যক্ষ, দেবতা এবং অসুররাও তাঁর পূজা করেন। নবরাত্রি -র নবমীর দিন তার পূজা করা হয় যাতে পৃথিবীর সব জিনিস সহজে এবং সহজে পাওয়া যায়। বলা হয়ে থাকে যে, সিদ্ধিদাত্রীর পূজা করলে ভক্ত ও অন্বেষীদের সকল প্রকার জাগতিক, অতীত কামনা পূর্ণ হয়। মা সিদ্ধিদাত্রী, যিনি সহজেই সন্তুষ্ট, নবদুর্গদের মধ্যে সর্বশেষ। নবরাত্রির শেষ দিনে, দেবী দুর্গা -র নবম শক্তি এবং যিনি ভক্তদের সকল প্রকার সাধন দান করেন, তাদের দেবী সিদ্ধিদাত্রীর পূজা করার নিয়ম রয়েছে। শাস্ত্রীয় আচার অনুযায়ী অন্যান্য আটটি দুর্গাকে পূজা করার সময়, ভক্তরা দুর্গাপূজার নবম দিনে তাদের পূজা করে। নবরাত্রির শেষ দিনে তাদের পূজায় এই মন্ত্রগুলি জপ করতে হবে:------ সিদ্ধা গন্ধর্ব যজ্ঞাদির সুরার মররপি, সেবামান সর্বদা ভূয়াত সিদ্ধি সিদ্ধি দায়িনী । অথবা যা দেবী সর্বভূতেষু মা সিদ্ধিদাত্রী রূপেন প্রতিষ্টিতা । নমস্তস্য নমস্তাসায় নমস্তস্য নমো নম:।