"প্রকৃত মহাপুরুষ " এর সাধন যোগ্যতা-লক্ষণ কি কি? অথবা কোন ব্যক্তিকে "প্রকৃত মহাপুরুষ " বলা যেতে পারে? কোন কোন সাধন লক্ষণ যোগ্যতা থাকলে কোন ব্যক্তিকে "প্রকৃত মহাপুরুষ " বলা যেতে পারে??”
কিন্তু আমরা শাস্ত্রানুসারে "প্রকৃত মহাপুরুষ " তাকেই বলবো - যিনি “আত্মজ্ঞান-পরমাত্মজ্ঞান এবং ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করে পরম মুক্তি" প্রাপ্ত হয়েছেন l তাই যিনি “আত্মজ্ঞান-পরমাত্মজ্ঞান এবং ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করে পরম মুক্তি" প্রাপ্ত হয়েছেন তাকে আমরা "প্রকৃত মহাত্মা"এর সঙ্গে সঙ্গে তাকে আমরা শাস্ত্রানুসারে "সদগুরু / ব্রহ্মজ্ঞানী / মহাপুরুষ / মুক্তপুরুষ /প্রকৃত মহাপুরুষ " বলতে পারি l
তাই যিনি "মহাপুরুষ" তিনি "প্রকৃত মহাত্মা" তো তিনি আগেই হয়েছেন কিন্তু যিনি "প্রকৃত মহাত্মা" তার মুক্তি এখনো বাকি -তিনি এখনো সাধন পথে ব্রতী l আর যিনি "মহাপুরুষ" তিনি সাধনা সাম্যক রূপে সিদ্ধি করেছেন -তার পরম মুক্তি লাভ হয়ে গিয়েছে -তার যার সাধনা বাকি নেই -তিনি শুধু পরমমুক্তির পথ-প্রদর্শক l
তাহলে বোঝা গেলো যে যিনি -"প্রকৃত মহাত্মা" -তিনি ধৰ্ম উপদেশ দিতে পারেন কিন্তু দীক্ষা দিতে পারেন না অথবা এক কথায় বলা যায় যে -শাস্ত্রানুসারে যিনি "প্রকৃত মহাত্মা" তিনি ধৰ্ম উপদেশ দিতে পারলেও দীক্ষা দেওয়ার অধিকার শাস্ত্রানুসারে তার নেই l তাই শাস্ত্রানুসারে যিনি "প্রকৃত মহাত্মা" হয়েও যদি তিনি দীক্ষা দেন তো শাস্ত্রানুসারে তাকে " ধর্মেরগ্লানিকারী / ভন্ড / শাস্ত্রাদ্রোহী / গুরুদ্রোহী " বলে l
একমাত্র যিনি " “আত্মজ্ঞান/পরমাত্মজ্ঞান / ব্রহ্মজ্ঞান /পরম মুক্তি" / কৈবল্য / ব্রহ্মজ্ঞান-ব্রহ্মস্থিতি " লাভ করেছেন তারই দীক্ষা দেওয়ার শাস্ত্রসম্মত অধিকার হয়েছে এবং তাকেই একমাত্র আমরা শাস্ত্র অনুসারে " প্রকৃত মহাপুরুষ " বলতে পারি l
শাস্ত্র যদি দশ সাধন যোগ্যতা-লক্ষণএর কোনো এক একটা সাধন যোগ্যতা-লক্ষণ লাভকারী "প্রকৃত মহাত্মা" কেও দীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করলে " ধর্মেরগ্লানিকারী / ভন্ড / শাস্ত্রাদ্রোহী / গুরুদ্রোহী " বলে , তাহলে চিন্তা করুন আজ এই কলি যুগে দশ সাধন যোগ্যতা-লক্ষণএর কোনো এক একটা সাধন যোগ্যতা-লক্ষণ লাভ না করেও যারা দীক্ষা দেন তাদিকে তাহলে কি বলা যাবে ????
তাহলে বোঝা গেলো যে একমাত্র যিনি "" “আত্মজ্ঞান/পরমাত্মজ্ঞান / ব্রহ্মজ্ঞান /পরম মুক্তি" / কৈবল্য / ব্রহ্মজ্ঞান-ব্রহ্মস্থিতি " লাভ করেছেন তারই দীক্ষা দেওয়ার শাস্ত্রসম্মত অধিকার হয়েছে এবং তাকেই একমাত্র আমরা শাস্ত্র অনুসারে "প্রকৃত মহাপুরুষ " বলতে পারি এবং " প্রকৃত মহাপুরুষ "রুপি সাধন যোগ্যতা-লক্ষণ ব্যাক্তিই একমাত্র "প্রকৃত দীক্ষা " দেওয়ার শাস্ত্র অনুসারে অধিকারী এবং ঐরকম সাধন যোগ্যতা-লক্ষণ সম্পন্ন " প্রকৃত মহাপুরুষ " এর কাছে কেও যদি দীক্ষা প্রাপ্ত হয় তবেই আত্ম-উন্নতির রাস্তায় সেই দীক্ষা প্রাণবন্ত হয় নচেৎ নিস্প্রান-ভন্ড দীক্ষায় কি উন্নতি হয় ????
আর একটা কথা - "প্রকৃত মহাত্মা" এর কথা -বার্তায় একটু ভালো করে লক্ষ্য করলে বোঝা যায় যে উনি শাস্ত্র অনুসারে দশ সাধন যোগ্যতা-লক্ষণএর কোনো এক একটা সাধন যোগ্যতা-লক্ষণ লাভ করেছেন কিন্তু " প্রকৃত মহাপুরুষ " এর সঙ্গে বছরের পর বছর মিশলেও তার আচার -আচরণে , কথা-বার্তায় (একমাত্র যদি উনি নিজে কাহাকেও ইচ্ছাকৃত ধরা না দেন ) কেও কোনো ভাবে মোটেও বুঝতে পারে না যে উনি একজন " প্রকৃত মহাপুরুষ " l
তাহলে বোঝা গেলো - "প্রকৃত মহাত্মা" আর " প্রকৃত মহাপুরুষ " এর তফাৎ কি ???
" প্রকৃত মহাপুরুষ " যিনি - একমাত্র যদি উনি নিজে কাহাকেও ইচ্ছাকৃত ধরা না দেন তাহলে সেই " প্রকৃত মহাপুরুষকে " বাইরে থেকে চিনিবার উপায় কি ? বা শাস্ত্রে কি কিছু এমন লক্ষন দেওয়া আছে যার দ্বারা সাধারণ মানুষ ও সে সব লক্ষন এর দ্বারা " প্রকৃত মহাপুরুষকে " ( তাতে যদি উনি নিজে কাহাকেও ইচ্ছাকৃত ধরা না দেন তাহলেও ) চিনতে পারা যাবে ?????
হাঁ - বৈদিক শাস্ত্রে এমন কিছু শরীর লক্ষন দেওয়া আছে যার দ্বারা সাধারণ মানুষ ও সে সব শরীর লক্ষন (মিলিয়ে ) এর দ্বারা " প্রকৃত মহাপুরুষ" কে তা অতি সহজেই ( তাতে যদি উনি নিজে কাহাকেও ইচ্ছাকৃত ধরা না দেন তাহলেও ) চিনতে পারা যাবে l সেগুলো বৈদিক শাস্ত্রে " প্রকৃত মহাপুরুষ" এর 32 শরীর লক্ষন বলে বিস্তারিত দেওয়া আছে l এই 32 শরীর লক্ষন যে কোনো " প্রকৃত মহাপুরুষ / মুক্তপুরুষ / পরমমুক্তিপুরুষ / কৈবল্যপুরুষ / ব্রহ্মজ্ঞান-ব্রহ্মস্থিতিমহাপুরুষ / সিদ্ধপুরুষ " এর রক্ত-মাংসের শরীরে বিদ্যমান থাকে -যা বাইরে থেকে ভালোকরে পরিলক্ষ্য করলে জানা যায় যে উনি " প্রকৃত মহাপুরুষ " না " প্রকৃত মহাপুরুষ' নন l এই লক্ষন জ্ঞান থাকলে "ভন্ডপুরুষ" আর " প্রকৃত মহাপুরুষ " এর জ্ঞান উৎপন্ন হয় - যার ফলে "ভন্ডপুরুষ" এর পাল্লায় পড়ে দিকভ্রষ্ট বা প্রতারিত হতে হয় না l
এই লক্ষন জ্ঞান দ্বারা কে " প্রকৃত মহাপুরুষ " !!!!- এটা জেনে সেই " প্রকৃত মহাপুরুষ " এর চরণ বন্দনা করে দীক্ষা প্রার্থনা দ্বারা যদি সেই " প্রকৃত মহাপুরুষ " কৃপাতে সে " প্রকৃত মহাপুরুষ " এর কাছে দীক্ষা পাওয়া সম্ভব হয় তাহলে "পরম মুক্তির প্রকৃত রাস্তা" পাওয়া সম্ভব হয় - এটাকেই শাস্ত্রে সদগুরু দীক্ষা প্রাপ্তি বলে --- ইহাই প্রাণবন্ত দীক্ষা l