✼ দম্ভ ✼ দর্প ✼ অহমিকা ✼ অপরিচ্ছন্ন কর্ম ✼ মিথ্যাবাদিতা ✼ অতৃপ্ত কাম ✼ ক্রোধ ✼ কটুতা ✼ অজ্ঞানতা ✼ মিথ্যা অহংকার ✼ মিথ্যা প্রতিপত্তি ✼ ক্রুদ্ধ হওয়া ✼ মায়াগ্রস্থ ✼ আত্ম প্রসন্ন ✼ নির্লজ্জ ✼ সম্পদের দ্বারা প্রতারণা করা ✼ জীবনের লক্ষ্য সম্বন্ধে অজ্ঞানতা ✼ অভদ্র আচরণ ✼ জগৎকে মিথ্যা ও অবাস্তব মনে করা ✼ জগৎ ভগবান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয় ✼ যৌন বাসনা দ্বারা জগতের সৃষ্টি হয়েছে ✼ অস্থায়ী বস্তুর দ্বারা আকৃষ্ট ✼ অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন ✼ দুশ্চিন্তার কারণে হতবৃদ্ধি ✼ শারীরিক এবং মানসিক শক্তির মধ্যে আনন্দ উপভােগ ✼ অনুপকারী, অনৈতিক এবং ভয়ংকর কর্মের দ্বারা পৃথিবী ধ্বংসে লিপ্ত ✼ যজ্ঞের নিয়ম-কানুন অনুসরণ করে না ✼ পরমেশ্বর ভগবানর প্রতি হিংসা ভাবাপন্ন ✼ প্রকৃত ধর্মের (সনাতন ধর্ম) নিন্দা করা
✼ ভয়শূন্যতা ✼ দান ✼ আত্ম-সংযম ✼ তপস্যা ✼ দৃঢ়তা ✼ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও ভদ্রতা ✼ শিষ্টাচার ✼ সরলতা ✼ অহিংসা ✼ সত্যবাদিতা ✼ বৈরাগ্য ✼ শাস্ত্র ✼ উৎসাহ ✼ ক্ষমাপরায়ণতা ✼ দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ✼ সত্ত্বার পবিত্রতা ✼ আধ্যাত্মিক জ্ঞানের অনুশীলন ✼ যজ্ঞ সম্পাদন ✼ বৈদিক শাস্ত্র অধ্যয়ন ✼ ক্রোধ শূন্যতা ✼ অন্যের দোষ দর্শন না করা ✼ সমস্ত জীবে দয়া ✼ লােভহীনতা ✼ মাৎসর্য শূন্যতা ✼ অভিমান শূন্যতা।
নিয়তি অর্থাৎ আমাদেরই পূর্বজঃ কর্মের কর্মফলকে আমরা ভাগ্য বা নিয়তি রূপে এই জন্মে পাই। যোগশাস্ত্রে একে *প্রারব্ধ* বলেছে, সাধারণ মানুষ *কপাল* বলে থাকে এবং এবং জ্যোতিষ শাস্ত্রে ভাগ্য ও নিয়তি বলে। যেহেতু নিয়তির লিখনকে স্থূল চক্ষুর দ্বারা দেখা সম্ভব না তাই তাকে চলতি কথায় অদৃষ্ট বলা হয়ে থাকে। বিভিন্ন শাস্ত্রে ভাষা আলাদা কিন্তু মূল জিনিস একই। প্রারদ্ধ বা নিয়তির লিখন থাকে আমাদের *কুটস্থে*, যা স্থূল শরীরের মধ্যে থাকা সুক্ষ শরীর, তার মধ্যে থাকা কারণ শরীরে আজ্ঞা চক্রের কুটস্থ মধ্যে অবস্থিত। কর্ম এই কুটস্থে সঞ্চিত হয়। প্রত্যেক জন্মে মানুষ যে যে কর্ম করে সেগুলি কুটস্থে সঞ্চিত হয়। এবং সেই সঞ্চিতের স্ফুটের মধ্যে যে যে স্ফুট গুলি দীর্ঘতম হয়, সেইগুলি পরবর্তী জন্মে প্রারব্ধ বা নিয়তি রূপে আসে। ভাগ্য / অদৃষ্ট কে স্থূল চক্ষুর দ্বারা দেখতে পাওয়া যায় না কিন্তু দিব্য চক্ষুর দ্বারা অবশ্যই দেখতে পাওয়া যায়। নিয়তিকে গণনা অবশ্যই করা যায়, কিন্তু ত্রিলোকের কোনো শক্তি নিয়তিকে খন্ডন করেন না। নিয়তিকে যদি কোন ভাবে খন্ডন করা হয় তাহলে তার প্রতিক্রিয়ায় প্রকৃতি সেই খন্ডিত নিয়তির ভোগকে ছয় গুন মাত্রায় বৃদ্ধি করে পরবর্তী জীবনে ভোগায়। সাধারণ মানুষ 2টি কর্মের ফল ভোগে, যথা:- ১. প্রারব্ধ বা নিয়তি (পূর্বজঃ কর্মের কর্মফল) ২. আরদ্ধ (কামনা বাসনা করে অতিরিক্ত যে কর্মফল হয়) ভবিতব্যের উপর চিন্তা না করে যারা নিশ্চিন্তে সমর্পণ ভাবনা নিয়ে থাকে তাদের আরদ্ধ কর্ম উৎপন্ন হয় না। এবং আরদ্ধ জনিত যে কল্পনায় সুখ ও দুঃখ সেইগুলো সেই ব্যাক্তি প্রাপ্ত হয়না। প্রশ্ন: তাহলে সেই ব্যাক্তি কতটা বা কতগুলো সুখ র দুঃখ প্রাপ্ত হয়? উঃ- সেই ব্যাক্তির নিয়তিতে যতটা বা যতগুলো সুখ আর দুঃখ লেখা আছে ততটাই প্রাপ্ত হয়। সাধারন মানুষ মূলত •প্রারব্ধ + আরদ্ধ• এই দুই ভোগে যেমন:- ধরা যাক নিয়তিতে / ভাগ্যে আছে 30 আর কামনা বাসনা করে আরদ্ধ হয়েছে 3000 তাহলে সে 3030 পরিমাণ সুখ ও দুঃখ ভুগতে থাকবে। অদৃষ্ট / নিয়তি / ভাগ্য / কপাল/ প্রারব্ধ:--- ১) স্থান ২) কাল ৩) পাত্র ৪) ক্রম ৫) ঘটনা উদাহরণ:- ধরা যাক কাউকে বলা হল যে কাল সকাল 1০টার সময় দুর্গাপুরে একটি 5০0 ফুট উচ্চতা থেকে 50 কেজি ওজনের একটা পাথর আপনার মাথায় পড়তে চলেছে। এখানে দুর্গাপুর হলো "স্থান"; কাল সকাল ১০টা হল "সময় বা কাল"; আপনি অর্থাৎ যার সাথে ঘটনাটি ঘটবে, হলেন "পাত্র"; এবং ওই পাঁচ কেজি ওজনের পাথরটা হল "ক্রম", অর্থাৎ যার সাহায্যে ঘটনাটি ঘটবে এবং পাথরটা আপনার মাথায় পড়বে এটা হল "ঘটনা"। নিয়তিকে কেউ পরিবর্তন করতে সমর্থ্য নয় এই অনুসারে নিয়তির এই পাঁচটি অর্থাৎ স্থান- কাল -পাত্র -ক্রম এবং ঘটনা এগুলির পরিবর্তন সম্ভব না, কিন্তু এবার শাস্ত্রজ্ঞান এবং শাস্ত্রবিধির মাধ্যমের সাহায্যে নিয়তির ঘটনার পূর্ব জ্ঞান হতো সেই ব্যক্তিকে সকাল ন'টায় একটা মোটা স্টিলের হেলমেট পরিয়ে দেওয়া হল- তারপর সকাল দশটায় নিয়তির অনুসারে ওই ঘটনা ঘটলো। যেহেতু নিয়তির পরিবর্তন সম্ভব নয় সেহেতু মূল ঘটনা ঘটবে কিন্তু সেই ব্যক্তিকে আগের থেকে মোটা স্টিলের হেলমেট পরিয়ে দেওয়ার জন্য তার কুপ্রভাব অবশ্যই এই প্রতিক্রিয়াকে 50%-60% কমানো সম্ভব, অর্থাৎ পাথর আপনার মাথায় অবশ্যই পড়বে কিন্তু ওই 'সুরক্ষা' থাকার দরুণ আপনার আঘাত কম লাগবে। যেখানে আপনার মৃত্যু হতে পারতো বা আপনি কোমায় চলে যেতে পারতেন, সুরক্ষা থাকার জন্য সেখানে আপনার অল্প মাত্রায় চোট লাগবে। এই ভাবেই প্রকৃত শাস্ত্র জ্ঞান এবং শাস্ত্র প্রদেশের দ্বারা নিয়তিকে খন্ডন করা না গেলেও নিয়তির দ্বারা গঠিত ঘটনার কুপ্রভাবকে অবশ্যই কমানো যায়। এই পাঁচটার সংযোগ ঘটলে, নিয়তি ঘটে। এই নিয়তি কে কেউ পরিবর্তন করতে সমর্থনা ইহা অনিবার্য, পৃথিবীতে এমন কোন পদ্ধতি নেই যে পদ্ধতির দ্বারা নিয়তির অল্পতম ফের বদল করা সম্ভব তাই নিয়তি অনিবার্য। শাস্ত্রজ্ঞান এবং শাস্ত্রবিধির মাধ্যম দ্বারা নিয়তির কুপ্রভাবকে কম করা অবশ্যই যেতে পারে। তার জন্য শাস্ত্রজ্ঞ ব্যক্তির পরামর্শ এবং উপদেশ মেনে চলা অত্যন্ত আবশ্যক। কিন্তু যে ব্যক্তি নিজের শাস্ত্র জ্ঞান নেই এবং কোন শাস্ত্রজ্ঞ ব্যক্তির উপদেশ বা পরামর্শ গ্রহণ করেনি- এই ধরনের ব্যক্তির নিয়তি এবং তার কুপ্রভাব পূর্ণমাত্রায় ভোগ করে । কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বুদ্ধিমান মনুষ্য—- নিজে শাস্ত্র জ্ঞান লাভ করে অথবা কোন শাস্ত্র ব্যক্তির উপদেশ এবং পরামর্শে চলে নিজের নিয়তি কে পরিবর্তন করতে না পারলেও নিয়তির কুপ্রভাব এর মাত্র 30%-40% ই ভোগ করে, বাকি নিয়তিকে পরিবর্তন না করতে পারলেও নিয়তির 60%-70% কুপ্রভাব থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারে । ইহাই শাস্ত্রজ্ঞান বা শাস্ত্রব্যক্তির পরামর্শ ও উপদেশে চলার সুফল। অনেকে নিজের অহংকারবশত এবং বুদ্ধিহীনতা বসত বলে থাকেন যে নিয়তিতে যা আছে তাই হবে তাই কোন শাস্ত্রজ্ঞ ব্যক্তির পরামর্শ দরকার নেই। এরকম ব্যক্তিরাই নিয়তির পূর্ণ ফল এবং তার কুপ্রভাব এর পূর্ণ ফল অবশ্যই ভোগ করে । কিন্তু সেইখানেই শাস্ত্রজ্ঞ ব্যক্তির উপদেশ এবং পরামর্শে চলে নিয়তিকে পরিবর্তন করতে না পারলেও নিয়তির কুপ্রভাব এর বেশিরভাগ অংশ থেকেই সুরক্ষিত রাখতে পারে। ইহাই শাস্ত্র জ্ঞানের মহিমা। আর যিনি নিজের অহংকার এবং নিজের দুরবুদ্ধি বসত নিজেকে শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিমান এবং শাস্ত্র জ্ঞানের থেকেও অধিক জ্ঞান সম্পন্ন মনে করেন তারাই পূর্ণমাত্রায় সম্পূর্ণ কুপ্রভাব সম্পূর্ণ মাত্রই ভোগ করেন এবং সেরকম অহংকারী ব্যক্তিকে শাস্ত্রজ্ঞদের নিজের থেকে যেচে কোন উপদেশ দেওয়া অবশ্যই বারণ করা আছে। তাই শাস্ত্রজ্ঞানহীন ব্যক্তির চরিত্র এবং শাস্ত্র জ্ঞান বা উপদেশ বা পরামর্শে চলা ব্যক্তির চরিত্রের ভিন্নতা অবশ্যই হয়ে থাকে। নিয়তিকে বিচার করার ত্রিবিধ উপায় আছে :- 1. যেকোনো দিব্যচক্ষু সম্পন্ন মহাপুরুষ, ব্যক্তির কপালের দিকে তাকিয়ে তা বলে দিতে পারেন। 2. যে ব্যক্তির কর্মের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিচার জ্ঞান আছে। 3. জ্যোতিষের সাহায্যে। (যেহেতু প্রতিটি ক্রিয়ার একটি বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে, তাই যে ব্যাক্তি কর্ম বিচার করতে জানেন তিনি অবশ্যই বলতে পারবেন যে কোন কর্ম কতটা সুদূর প্রসারী এবং তার ফলস্বরূপ কি হতে পারে।) এই ত্রিবিধ উপায়ে নিয়তিকে খন্ডন না করা গেলেও তার প্রতিক্রিয়াকে অবশ্যই কমানো যায় শাস্ত্রজ্ঞান এবং শাস্ত্রবিধির মাধ্যমে দ্বারা। গুরু কৃপায় অকাল মৃত্যুও রোধ করা সম্ভব। কাল মৃত্যু:- অর্থাৎ প্রত্যেক ব্যক্তির নিজ নিজ আয়ুষ্কাল সম্পূর্ণ হলে যে মৃত্যু হয় তাকেই কাল মৃত্যু বলা হয়। অকাল মৃত্যু:- অকাল মৃত্যু হল স্বাভাবিক বয়সের অথবা পূর্ণ আয়ুষ্কালের আগেই মৃত্যু। যারা সদগুরুর শিষ্য হন এবং নিজ জীবনে ধর্মের পথকে অনুসরণ করে চলেন তারা তাদের গুরুদেবের সংরক্ষণ শক্তির দ্বারা সুরক্ষিত থাকেন। তাদের ক্ষেত্রে নিয়তির প্রতিক্রিয়াকে 60%-80% কমানো যায়। জাতস্য হি ধ্রুবমৃত্যু মৃত্যুধ্রুব জন্ম মৃতস্য চ
তস্মাদ অপরিহার্যে ন ত্বং শচিতুমরহসি।