পুরশ্চরণ কি?
মহানীল শাস্ত্র এ সম্মন্ধে বলা হয়েছে:---
“পূর্যতে চরণং তস্য জপ হোমাদিতপর্ণৈঃ”
অর্থাৎ যাতে জপ হোম ও তর্পণ দ্বারা ইষ্টের চরনবন্দনা করা হয়। আবার যামলশাস্ত্রমতে, মন্ত্রের সিদ্ধির জন্য প্রথমেই যে ক্রিয়া করতে হয়, তাকে পুরশ্চরণ বলা হয়।
এই পুরশ্চরণের পাঁচটি অঙ্গ আছে। জপ, হোম, তর্পণ, অভিষেক ও ব্রাহ্মনভোজন।
আর ক্রিয়াযোগ এর বীরপুরশ্চরণের সাতটি অঙ্গ, জপ, হোম, তর্পণ, অভিষেক , ব্রাহ্মনভোজন, শক্তিপূজো ও কুমারীপূজো। পুরশ্চরণ ছাড়া মন্ত্র / ক্রিয়াযোগ সিদ্ধ হয়না।
এজন্য নিরুক্তশাস্ত্র এ বলা হয়েছে, ক্রমসঙ্কেত, পূজোসঙ্কেত, মন্ত্রসঙ্কেত ও যন্ত্রের লিখন গুরু পরম্পরায় জানতে হবে। যিনি সঙ্কেতজ্ঞ নন তার সাধনা নিস্ফল তো বটেই, বরং পদে পদে বিপদ তথা প্রাণণাশ হতে পারে।
রুদ্রযামল শাস্ত্র এ বলা হয়েছে, “বীরভাবে মন্ত্রসিদ্ধিঃ দ্বৈতাচারলক্ষনম্” অর্থাৎ বীরাচারী সাধক অদ্বৈতভাবের সাধক। পরশুরামকল্পসূত্রের একটি তন্ত্রমার্গে বলা রয়েছে যে, যিনি প্রতিযোগী, তিনিই বীরাচারী। যিনি ইদং পদার্থকে অহং পদার্থে বিলীন করতে পেরেছেন , এবং যার মন সর্বদা আনন্দে নিমগ্ন , তিনিই বীর । এই সুত্রের তাৎপর্য প্রসঙ্গে আবার কৌলমার্গরহস্যে বলা হয়েছে, অহং অর্থাৎ আত্মা এবং ইদং শব্দের অর্থ অহং এর প্রতিযোগী, অর্থাৎ আমি বাদে সমগ্র জগৎ ও জাগতিক বস্তু। যে সাধক সাধনার দ্বারা অদ্বৈতভাব প্রাপ্ত হয়ে সমগ্র জগৎ ও জাগতিক বস্তুকে অহং বা আমি নিজে বলে মনে করতে পারেন, তার কাছে অহং বা আমি ভিন্ন আর কোনো পদার্থের অস্তিত্ব থাকেনা। ইদং বা জগৎ তখন অহং এ বিলীন হয়ে যায়---তিনিই বীর ।তাই বীরাচারী সাধক ছাড়া এই সাধনা সম্ভব নয়। শাস্ত্র এ বলা হয়েছে, বীরাচারী সাধক নির্ভীক, অভয়দানকারী, বলবান, যোদ্ধা, মহাযোগী, মহাবুদ্ধিসম্পন্ন, মহা সাহসী ও মহোৎসাহী হবেন। এমন বীরাচারী সাধকের সাধনমাত্রেই শীঘ্র ফলদায়ক।
এজন্য নিরুক্তশাস্ত্র এ বলা হয়েছে, ক্রমসঙ্কেত, পূজোসঙ্কেত, মন্ত্রসঙ্কেত ও যন্ত্রের লিখন গুরু পরম্পরায় জানতে হবে। যিনি সঙ্কেতজ্ঞ নন তার সাধনা নিস্ফল তো বটেই, বরং পদে পদে বিপদ তথা প্রাণণাশ হতে পারে।
কৌলাবলী নির্নয় গ্রন্থে বলা হয়েছে যে শাস্ত্রসন্মত ভাবে সাধনা করা হলে সাধক সিদ্ধিলাভ নিশ্চয় করবেন। তবে একটি সতর্কবার্তাও আছে। কোনো ব্যক্তির অকল্যানের জন্য বা নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এই সাধনা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
হরি ওঁ তৎসৎ