শৌচ
পাতঞ্জলি অষ্টাঙ্গ যোগে দ্বিতীয় হলো নিয়ম। এই নিয়মের ৫ টি ভাগের মধ্যে সর্বপ্রথম হলো শৌচ।
সর্বপ্রকারের শুদ্ধিকে (আহার শুদ্ধি ব্যাতিত ) শৌচ বলা হয়।
(১) "বাহ্য শরীর শুদ্ধি" :- সাবান, শ্যাম্পু, বডি ওয়াশ , তেল, ক্রিম, ওষুধ এবং পরিষ্কার জলের দ্বারা বাহ্য শরীরের পূর্ণ স্নান করাই হলো বাহ্য শরীর শুদ্ধি।
(২) "রক্ত শুদ্ধি এবং মুখ শুদ্ধি " :- শীতলী প্রাণায়াম এর দ্বারা রক্ত শুদ্ধি ও মুখ শুদ্ধি করা প্রয়োজন।
(৩)
"হৃৎপিণ্ড শুদ্ধি" :- ভোস্তিকা ক্রিয়া ও বিপরীতকরনি মুদ্রা দ্বারা হৃৎপিণ্ড শুদ্ধি করা প্রয়োজন।
(৪) "নাড়ি শুদ্ধি" :- সহিত প্রাণায়ামের দ্বারা নাড়ি শুদ্ধি করা প্রয়োজন।
(৫) "উপর পেট শুদ্ধি" :- ধৌতি ক্রিয়ার দ্বারা উপর পেট শুদ্ধি করা প্রয়োজন।
(৬) "তল পেট শুদ্ধি" :- বস্তি ক্রিয়া দ্বারা তল পেট শুদ্ধি করা প্রয়োজন।
(৭) " নাসিকা শুদ্ধি " :- নেতি বা নৌলকি ক্রিয়া দ্বারা নাসিকা শুদ্ধি করা প্রয়োজন।
(৮) " কপাল কুহর শুদ্ধি " :- কপালভাতি ক্রিয়ার দ্বারা কপাল কুহর শুদ্ধি করা প্রয়োজন।
(৯) " কণ্ঠ বা গলা শুদ্ধি " :- জালন্দর বদ্ধ ক্রিয়া দ্বারা কণ্ঠ বা গলা শুদ্ধি করা প্রয়োজন।
(১০) "নাভি এবং যকৃৎ শুদ্ধি " :- অগ্নিসার ক্রিয়া দ্বারা নাভি এবং যকৃৎ শুদ্ধি করা প্রয়োজন।
(১১) "কর্ণ শুদ্ধি " :- ভ্রামরী প্রাণায়াম দ্বারা কর্ণ শুদ্ধি করা প্রয়োজন।
(১২) "চক্ষু শুদ্ধি" :- ত্রাটক ক্রিয়ার দ্বারা চক্ষু শুদ্ধি করা প্রয়োজন।
(১৩) "অঙ্গুলি - পা - হাত " :- বিভিন্ন প্রকার অঙ্গ মুদ্রার দ্বারা পা - হাত - অঙ্গুলি এবং নখ শুদ্ধি করা প্রয়োজন।
(১৪) "পেচ্ছাপ দ্বার শুদ্ধি" :- অমরালি মুদ্রা এবং পেক্ষাল ক্রিয়া দ্বারা পেচ্ছাপ দ্বার শুদ্ধি করা প্রয়োজন।
উপরোক্ত সমস্ত ক্রিয়া গুলি করিলে দেহের আভ্যন্তরী ও বাহ্যিক শুদ্ধি হয়। ইহাকেই পূর্ণরূপে শৌচ বলা হয়।
ক্রিয়াযোগ দীক্ষার পূর্বে অবশ্যই উপরোক্ত সমস্ত প্রক্রিয়ার দ্বারা দেহ শুদ্ধি করা অত্যন্ত আবশ্যক। দেহশুদ্ধি না করিলে ক্রিয়াযোগ দীক্ষা পাইলেও সাধন পথে উন্নতি খুব কঠিন হইয়া দাঁড়ায় এবং বহু সময় অপব্যয় হয়, তাই ক্রিয়াযোগে দীক্ষার পূর্বে উপরোক্ত ক্রিয়াযোগ দ্বারা দেহের শুদ্ধি করা অত্যন্ত আবশ্যক।
যদিও যে ব্যাক্তি উপরোক্ত পদ্ধতিতে দেহ শুদ্ধিরূপী সম্পূর্ণ শৌচ হইবার পর ক্রিয়াযোগ দীক্ষা নেন তার আর ভবিষ্যতে শৌচ পুনঃ পুনঃ করিতে হয় না। যেটি আবশ্যক সেইটুকু করিলে হয়।