অজপা গায়ত্রী
নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের সময়ে 'হং' শব্দের সঙ্গে বায়ু বাইরে আসে এবং 'স' শব্দের সঙ্গে পুনরায় প্রবেশ করে। জীব স্বভাবতঃ সর্বদাই হংস মন্ত্র জপ করছে। দিবা-রাত্রিতে 21600 বার প্রত্যেকেই এই মন্ত্র জপ করে। (প্রতি মিনিটে 15 বার শ্বাস-প্রশ্বাস হয় এই হিসাবে 24 X 60 X 15 = 21600 বার) প্রত্যেক শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে যে হংস জপ চলছে, তা যদি মনোযোগের সঙ্গে শ্বাস প্রশ্বাসের গতি লক্ষ্য করে অনুভব করতে অভ্যাস করা যায়, তবে অজপা সাধন হয়। ঠোঁট, জিহ্বা বা মনের সাহায্যে বিশেষ কোন বীজমন্ত্রকে বারবার
উচ্চারণ করে এই জপ করা হচ্ছে না, তাই এর নাম অজপা। অজপা গায়ত্রী যোগীগণের মোক্ষদায়িনী। সিদ্ধ মহাপুরুষ ছাড়া আর কারও পক্ষে এই কৌশল ধরবার এবং সেই পথে চালনা করবার ক্ষমতা নেই।
হন্তি গচ্ছিন্তি কৃৎস্ন - শরীরং ব্যাপ্য বর্ততে ইতি হংসঃ প্রাণঃ জীবচৈতন্যম্' অর্থাৎ সমস্ত শরীর ব্যেপে বর্তমান থাকেন এবং এক শরীর হতে অন্য শরীরে সংসরণ করে এই ব্যুৎপত্তিগত অর্থেও জীব চৈতন্য হংস নামে সংঞ্জিত হয়।
হংস যোগের সাধনায় সিদ্ধিলাভ করতে হলে "হংসবতী ঋক" এবং "শ্রীরূদ্রহৃদয়োপনিষৎ" এর মন্ত্রগুলিকে নিত্যপাঠ করতে হয়, মন্ত্রের মর্মার্থ ও প্রতিদিন মনন করতে হয়।যোগশাস্ত্রে এবং শৈবাগমতন্ত্রে হংস মন্ত্রকেই অজপা বলা হয়। হংসবতী ঋক মন্ত্রে 'হংস' পদ এবং আথর্বণী শ্রুতি এবং শ্বেতাশ্বতর উপনিষদের 'হংস' পদ হল বৈদিক মূল।